ভালো শেয়ারের দরপতনে কমল সূচক ও লেনদেন
Published: 7th, August 2025 GMT
ভালো মৌলভিত্তির শেয়ারের মূল্য সংশোধনে আবারও বড় ধাক্কা খেয়েছে শেয়ারবাজারের সূচক ও লেনদেন। কয়েক দিনের ব্যবধানে লেনদেন প্রায় ৪০০ কোটি টাকার বেশি কমে গেছে। আর এই কয় দিনে সূচকও কমেছে ১০০ পয়েন্টের বেশি।
দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আজ বৃহস্পতিবার ৬৩ পয়েন্ট বা ১ শতাংশের বেশি কমে গেছে। তাতে দিন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমে দাঁড়ায় ৫ হাজার ৪০৮ পয়েন্টে। সূচকের এই পতনের পেছনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছে কয়েকটি ব্যাংকসহ ভালো মৌলভিত্তির কোম্পানির শেয়ারের দরপতন। ঢাকার বাজারে আজ দিন শেষে লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৭০৬ কোটি টাকা, যা আগের দিনের চেয়ে ১৮৪ কোটি টাকা কম।
দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্রোকারেজ হাউস লঙ্কাবাংলা সিকিউরিটিজের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ঢাকার বাজারে আজ সূচকের পতনে যে ১০টি কোম্পানির শেয়ারের দরপতন সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছে সেগুলো হলো ইসলামী ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজ, সিটি ব্যাংক, লাফার্জহোলসিম সিমেন্ট, পূবালী ব্যাংক, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, বেক্সিমকো ফার্মা, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন (বিএসসি) ও প্রাইম ব্যাংক। এই ১০ কোম্পানির শেয়ারের দরপতনে ডিএসইএক্স সূচকটি আজ প্রায় ২৯ পয়েন্ট কমেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি কমেছে ইসলামী ব্যাংকের শেয়ারের দরপতনে। আজ ডিএসইতে ব্যাংকটির প্রতিটি শেয়ারের দাম ১ টাকা ১০ পয়সা বা প্রায় আড়াই শতাংশ কমেছে। তাতে ডিএসইএক্স সূচকটি কমেছে সাড়ে ৬ পয়েন্টের বেশি।
বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, গত এক মাসে শেয়ারবাজার উত্থানে ইসলামী ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংকসহ ভালো মৌলভিত্তির কিছু কোম্পানির শেয়ারের দাম উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়েছে। এরপর কয়েক দিন ধরে এসব কোম্পানির শেয়ারের কিছুটা মূল্য সংশোধন হচ্ছে। তাতে সূচক ও লেনদেনেও নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।
ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, গত ২৩ জুন ইসলামী ব্যাংকের প্রতিটি শেয়ারের বাজারমূল্য ছিল ৩৩ টাকা। সেখান থেকে তা বেড়ে ৪ আগস্ট ৪৮ টাকায় উঠেছে। সেই হিসাবে এক মাসের কিছু বেশি সময়ের ব্যবধানে ব্যাংকটির শেয়ারের দাম ১৫ টাকা বা ৪৫ শতাংশের বেশি বেড়েছে। এরপর দুই দিন ধরে কিছুটা মূল্য সংশোধন হচ্ছে এটির শেয়ারের। একই অবস্থা ব্র্যাক ব্যাংক, লাফার্জহোলসিম, স্কয়ার ফার্মা, বিএসসি, পূবালী ব্যাংকসহ ভালো মৌলভিত্তির বেশ কিছু শেয়ারের। এসব শেয়ারের দাম অল্প সময়ে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বৃদ্ধির পর এখন কিছুটা মূল্য সংশোধন হচ্ছে।
ঢাকার বাজারে আজ লেনদেন হওয়া ৩৬ ব্যাংকের মধ্যে ২৮টিরই দরপতন হয়েছে। দাম বেড়েছে ৩টির আর অপরিবর্তিত ছিল ৫টির দাম। বেশির ভাগ ব্যাংকের শেয়ারের এই দরপতন সূচক ও লেনদেনেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, শেয়ারবাজারে কিছু শেয়ারের দাম উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বৃদ্ধির পর কিছুটা মূল্য সংশোধন হবে, এটাই স্বাভাবিক। সেটিও এখন হচ্ছে শেয়ারবাজারে। এতে আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই বলে মনে করছেন বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে শীর্ষস্থানীয় একটি ব্রোকারেজ হাউসের প্রধান নির্বাহী বলেন, কয়েকটি শেয়ারে ৩০-৪০ শতাংশ মূল্যবৃদ্ধির পর বিনিয়োগকারীদের বড় একটি অংশ ওই শেয়ার থেকে মুনাফা তুলে নেবেন, এটাই স্বাভাবিক। মূল্য সংশোধনে দাম কমার ফলে নতুন করে আবার ওই শেয়ারে বিনিয়োগ হবে। এভাবেই উত্থান-পতনে শেয়ারের দাম টেকসই হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র শ য় র র দরপতন ড এসইএক স শ য় রব জ র পর ম ণ ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
ধারাবাহিক পতন: ৪ মাস আগের অবস্থানে ডিএসইর সূচক
চলতি সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবস বুধবার (৫ নভেম্বর) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচকের বড় পতনের মধ্যে দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। এনিয়ে টানা ৪ কার্যদিবস পুঁজিবাজারে পতন ঘটেছে। এর ফলে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৪ হাজার পয়েন্টের ঘরে নেমে এসেছে, যা চার মাস আগের অস্থানে নেমে এসেছে।
এদিন আগের কার্যদিবসের চেয়ে ডিএসই ও সিএসইতে লেনদেন কিছুটা বেড়েছে। তবে উভয় পুঁজিবাজারে লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার এবং মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিটের দাম কমেছে।
বাজার পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, অনেক দিন ধরে পুঁজিবাজারে লেনদেনের শুরুতে সূচকের উত্থান দেখা গেলেও লেনদেন শেষে তা পতনে রূপ নেয়। বুধবার সকাল থেকেই ডিএসইএক্স সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় লেনদেন শুরু হয়। লেনদেন চলাকালে বেশ কয়েকবার সূচকের উত্থান-পতন লক্ষ্য করা গেছে। তবে লেনদেন শেষে তা পতনে রূপ নেয়। কয়েক মাসের ব্যবধানে পুঁজিবাজারে লেনদেন অনেক কমে গেছে।
ডিএসই ও সিএসই সূত্রে জানা গেছে, দিনশেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ৩২.১৭ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৪ হাজার ৯৮৬ পয়েন্টে। এর আগে চলতি বছরের ৮ জুলাই ডিএসইএক্স সূচক ছিল ৪ হাজার ৯৮২ পয়েন্টে। এদিন ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১১.৩৭ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৪৪ পয়েন্টে এবং ডিএস৩০ সূচক ৫.৭৪ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৯৪০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
ডিএসইতে মোট ৪০০টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে ৭০টি কোম্পানির, কমেছে ২৬৭টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৬৩টির।
এদিন, ডিএসইতে মোট ৪৮৫ কোটি ৪৯ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৪৫৩ কোটি ৫৭ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট।
অন্যদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সিএসসিএক্স সূচক আগের দিনের চেয়ে ৬৮.৮৬ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৮ হাজার ৬৫২ পয়েন্টে। সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১০৫.৮১ পয়েন্ট কমে ১৪ হাজার ২৮ পয়েন্টে, শরিয়াহ সূচক ১০.৭৩ পয়েন্ট কমে ৮৭৮ পয়েন্টে এবং সিএসই ৩০ সূচক ৮৬.৮৫ পয়েন্ট কমে ১২ হাজার ৫৫৯ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
সিএসইতে মোট ১৮৬টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে ৪০টি কোম্পানির, কমেছে ১২১টির এবং অপরিবর্তিত আছে ২৫টির।
সিএসইতে ২৪ কোটি ৬ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ১৮ কোটি ৭৪ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট।
ঢাকা/এনটি/ইভা