‘জীবন গাড়ির নাই রে ব্যাক গিয়ার…।’

গত মঙ্গলবার নিজের ফেসবুক পেজে এই ছোট্ট স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন রাজশাহীর জনপ্রিয় বাউলশিল্পী তরিকুল ইসলাম, যিনি ‘গামছা বাউল ডালিম’ নামে এলাকায় পরিচিত ছিলেন। কে জানত, মাত্র দুদিন পরই এই বাক্য যেন সত্য হয়ে যাবে তাঁর জীবনের জন্য! গত বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দুপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে প্রাণ হারান ৩৪ বছর বয়সী এই শিল্পী।

তরিকুল ইসলাম ওরফে ডালিম ছিলেন দুর্গাপুর পৌর এলাকার হরিপুর মহল্লার বাসিন্দা। তাঁর মাথায় গামছা বাঁধা ছিল এক অনন্যপরিচয়। টেলিভিশনের পর্দা থেকে শুরু করে ঘরোয়া মঞ্চ—সবখানেই তাঁকে দেখা যেত, সেই গামছা বেঁধে গান গাইতে। ফেসবুক পেজের নামটাও তা–ই ছিল, ‘গামছা বাউল ডালিম’।

সেই পেজে ঢুকলেই চোখে পড়ছে তাঁর অসংখ্য গানের ভিডিও, ‘মায়ের এক ধার দুধের দাম, কাটিয়া গায়ের চাম’, ‘নিথুয়া পাথারে নেমেছি বন্ধুরে’, ‘পাগলা ঘণ্টা বানাইছে রে বড় পাগলে’, ‘আমায় কি মনে পড়ে না’, ‘রসিক আমার মন বান্ধিয়া পিঞ্জর বানাইছে’, ‘চাতুরি করিয়া মোরে সাদা দিলে কাদা লাগাই গেলি’, ‘কলিজাতে দাগ লেগেছে’, কিংবা ‘আগে কী সুন্দর দিন কাটাইতাম’—এসব গান কখনো স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের শেখাচ্ছেন, কখনো মঞ্চে বা ওষুধ কোম্পানির অনুষ্ঠানে গাইছেন।

বাউলশিল্পী তরিকুল ইসলাম.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

প্রবাসীদের হয়রানি

বিমানবন্দরে প্রবাসীদের হয়রানি কোনো নতুন ঘটনা নয়। দীর্ঘদিন ধরে এ অনাকাঙ্ক্ষিত প্রবণতা বিদ্যমান থাকলেও এর পরিবর্তনে এখনো তেমন কোনো কার্যকর উদ্যোগ লক্ষ করা যাচ্ছে না।

দূর প্রবাসে কঠোর পরিশ্রম করে দেশের অর্থনীতিকে সচল রাখেন যে লাখ লাখ প্রবাসী, দেশে ফেরার পথে কিংবা প্রবাসে আসার সময় তাঁরাই বারবার বিভিন্ন ধরনের অযৌক্তিক হয়রানির শিকার হন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন সময়ের ভিডিও চিত্রে দেখা যায়, চেকিংয়ের নামে অযথা সময়ক্ষেপণ, প্রয়োজনহীন প্রশ্ন, কৃত্রিম জটিলতা সৃষ্টি এবং বৈধ কাগজপত্র থাকার পরও ইমিগ্রেশন বিভাগে অপ্রয়োজনীয় বাধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে অনেককে। ফলে কেউ কেউ মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন, এমনকি ফ্লাইট মিস করার মতো দুর্ভাগ্যজনক ঘটনাও ঘটে।

বিশেষ করে যাঁরা শ্রমনির্ভর পেশায় নিয়োজিত এবং প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় তুলনামূলকভাবে পিছিয়ে, তাঁদের হয়রানির শিকার হওয়ার আশঙ্কা বেশি। অথচ মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পাঠানো তাঁদের রেমিট্যান্স দেশের অর্থনীতির অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তি।

বাংলাদেশের বিমানবন্দরে যাত্রীসেবার মানোন্নয়ন এখন সময়ের দাবি। নিয়ম লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। তবে সেই সঙ্গে নিশ্চিত করতে হবে, সৎ ও আইন মেনে চলা প্রবাসীরা যেন কোনোভাবেই অযথা হয়রানির শিকার না হন।

এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কার্যকর, সুদৃশ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপ আমরা প্রত্যাশা করি।

এম কামিল আহমেদ

শিক্ষার্থী, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

সম্পর্কিত নিবন্ধ