বরাবরই গ্ল্যামার আর শক্তিশালী নারী চরিত্রে ভরপুর লারা দত্তের অভিনয়জীবন। একাধিকবার নিজেকে প্রমাণের সুযোগও পেয়েছেন এই বলিউড অভিনেত্রী। অনেক আগেই চল্লিশের কোঠা পেরিয়েছে তাঁর বয়স। এবার প্রায় মধ্যবয়সে দাঁড়িয়ে অভিনয়জীবনের এক নতুন অধ্যায় শুরু করেছেন তিনি। ওটিটি প্ল্যাটফর্ম তাঁর জন্য হয়ে উঠেছে নতুন এক মঞ্চ। একের পর এক ভিন্নধর্মী চরিত্রে কাজ করছেন। ব্যক্তিগত জীবনেও স্বামী মহেশ ভূপতি ও কন্যাসন্তানকে নিয়ে লারার সুখের সংসার। সম্প্রতি ফিল্মফেয়ারকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নিজের বয়স, ক্যারিয়ার ও জীবনদর্শন নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন এই সাবেক বিশ্বসুন্দরী।

সাক্ষাৎকারে লারা বলেছেন, ‘নিজেকে দুর্বল না মনে করলে আপনি মানুষই নন। এখন আমি চল্লিশের মাঝামাঝি বয়সে। এ সময় নানা নতুন ভয় তাড়া করে। আমরা এক স্যান্ডউইচ প্রজন্মে বাস করি; একদিকে আমাদের মা–বাবারা বয়সজনিত নানা সমস্যায় ভুগছেন, অন্যদিকে আমাদের কিশোর সন্তানের ভবিষ্যৎ গড়ার দায়িত্ব। দুই দিক সামলাতে গিয়ে উৎকণ্ঠা তৈরি হয় বটে, কিন্তু আমরা চাই, আমাদের প্রিয় মানুষদের পাশে সব সময় দাঁড়াতে।’
ক্যারিয়ার নিয়ে বরাবরই সন্তুষ্ট লারা, ‘আমার কাজ নিয়ে আমি খুবই আশাবাদী। যখন যেমন, তখন তেমন। সময়ের সঙ্গে জীবনে যে বদল আসে, সেটা আমি হাসিমুখে মেনে নিয়েছি। দেখুন, পরিবর্তনের সঙ্গে লড়াই করে লাভ নেই। একে গ্রহণ করাই একমাত্র পথ। আর পরিবর্তনের মধ্যেও কিছু ইতিবাচক দিক থাকে, সেগুলো উদ্‌যাপন করতে জানতে হবে।’

নিজের জীবনচক্রটা উপভোগ করছেন লারা। ‘আমি একজন কিশোর সন্তানের মা। বুঝতে পারছি, আমাকে সব দিক থেকেই আরও দৃঢ় হতে হবে। আমি চাই, ৫০–৬০ বছর বয়সেও যেন আমি শক্ত-সক্ষম থাকি। মেয়ের সঙ্গে সারা পৃথিবী ঘুরে বেড়াতে চাই। কখনোই চাই না যে তার জন্য আমি বোঝা হয়ে উঠি।’
বলিউডের মতো প্রতিযোগিতাপূর্ণ দুনিয়ায় লারার কোনো ‘গডফাদার’ ছিল না। কোনো তারকা পরিবার থেকেও তিনি আসেননি। তাঁর বাবা ছিলেন ভারতীয় বিমানবাহিনীর উইং কমান্ডার।

একেবারে বহিরাগত হয়ে সিনেমাজগতে আসা ও দীর্ঘ সময় ধরে নিজেকে টিকিয়ে রাখার অভিজ্ঞতা প্রসঙ্গে লারা বলেন, ‘আমার অভিনয়ের পেছনে কোনো প্রথাগত প্রশিক্ষণ ছিল না। বলিউডের এই সমুদ্রে টিকে থাকতে হলে সাঁতার জানতেই হবে, নয়তো ডুবে যেতে হবে। প্রতিটি প্রকল্পেই নিজেকে নতুন করে প্রমাণ করতে হয়। করছিও।’ একই সঙ্গে এই তারকার মতে, পরিবারের সহায়তা তাঁর সবচেয়ে বড় শক্তি। তিনি বলেন, ‘আমার পরিবার সব সময় আমার পাশে থেকেছে। সবচেয়ে বড় কথা, তারকাখ্যাতি থেকে আমার পরিবার সব সময় দূরে থেকেছে। এ বিষয়টি আমাকে বাস্তবতার মাটিতে দাঁড়িয়ে থাকতে সাহায্য করেছে।’

এ প্রসঙ্গে আনুশকা শর্মার কথাও টানলেন লারা, ‘আনুশকাও আমার মতো সার্ভিস ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে এসেছে। আমি দেখেছি, ওর পরিবারও ওর তারকাখ্যাতি থেকে একধরনের দূরত্ব বজায় রেখেছে, যেটা অনেক জরুরি। এসবই আপনাকে শিকড়ের সঙ্গে জুড়ে থাকতে শেখায়।’
গ্ল্যামার দুনিয়ার ঝলমলে আলোয় থেকেও মাটির কাছাকাছি থাকার দর্শনে বিশ্বাস করেন লারা। তাঁর ভাষায়, ‘চকচকে জীবন আমাকে মুগ্ধ করে না। আমি নিজের সত্যিকারের জায়গায় থাকতে চাই।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পর ব র র পর ব

এছাড়াও পড়ুন:

রোনালদো বললেন, ‘স্পেনের চেয়ে সৌদি আরবে গোল করা কঠিন’

ব্রিটিশ সাংবাদিক পিয়ার্স মরগানকে দেওয়া সাক্ষাৎকারের প্রথম পর্বে কথার আগল খুলে দিয়েছিলেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। অন্তরঙ্গ এই সাক্ষাৎকারে রোনালদো তাঁর ক্যারিয়ার, অর্জন, অবসর এবং ফুটবলের প্রতি ভালোবাসা নিয়ে কথা বলেছেন।

একই সাক্ষাৎকারের দ্বিতীয় অংশেও সামনে এসেছে ‘সিআর সেভেনের’ চমকপ্রদ সব মন্তব্য। যেখানে তিনি দিয়েগো জোতার শেষকৃত্যে না যাওয়ার কারণ ব্যাখ্যার পাশাপাশি কথা বলেছেন নিজের গোল করার ক্ষমতা, সৌদি ফুটবল ও বিশ্বকাপ নিয়েও।

লিভারপুল ও পর্তুগালের ফরোয়ার্ড দিয়োগো জোতা এবং তাঁর ভাই আন্দ্রে সিলভা গত জুলাই মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় মর্মান্তিকভাবে মারা যান। ক্লাব ও জাতীয় দলের বেশ কিছু সতীর্থ পর্তুগালে অনুষ্ঠিত জোতা ও তাঁর ভাইয়ের শেষকৃত্যে যোগ দিলেও রোনালদো ছিলেন অনুপস্থিত। রোনালদো বলেছেন, তিনি জোতার শেষকৃত্যে যাননি। কারণ, তিনি চাননি বিষয়টা ‘একটা সার্কাস’–এ পরিণত হোক।

আরও পড়ুনবিশ্বকাপ জিতলেই কি ইতিহাসের সেরা খেলোয়াড় হয় কেউ—প্রশ্ন রোনালদোর০৫ নভেম্বর ২০২৫

পিয়ার্স মরগানকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রোনালদো বলেন, ‘মানুষ আমার অনেক সমালোচনা করে। আমি তাতে কিছু মনে করি না। যখন তোমার বিবেক পরিষ্কার থাকে, তখন কে কী বলল, তা নিয়ে চিন্তা করার প্রয়োজন নেই। আমি একটা কাজ আর করি না, আমার বাবা মারা যাওয়ার পর থেকে আমি আর কখনো কবরস্থানে যাইনি। আমাকে যারা চেনে, তারা বিষয়টা জানে। আমি যেখানে যাই, সেখানে ভিড় জমে, হইচই হয়, মানে একরকম সার্কাস শুরু হয়ে যায়।’

রোনালদো যোগ করেন, ‘আমি বাইরে যাই না। কারণ, গেলে সবার দৃষ্টি আমার দিকেই চলে যায়। আমি এমন মনোযোগ চাই না। আমি দেখছিলাম যে কিছু লোক সেই সংবেদনশীল মুহূর্তে সাক্ষাৎকার নিচ্ছিল বা ফুটবল নিয়ে কথা বলছিল, আমি এটা পছন্দ করি না।’

পিয়ার্স মরগানকে দেওয়া সাক্ষাৎকারের দ্বিতীয় অংশে রোনালদো কথা বলেছেন নিজের গোল করার ক্ষমতা নিয়েও, ‘বাজে একটি মৌসুমেও যখন আল নাসর কোনো ট্রফি জেতেনি, তখনো আমি ২৫টি গোল করেছি। যদি আমি প্রিমিয়ার লিগে খেলতাম, তাহলে এখনো একই রকম গোল করতাম। ভালো দলে থাকলে ৪০ বছর বয়সেও একই রকম পারফর্ম করতাম।’

সাংবাদিক পিয়ার্স মরগানকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো

সম্পর্কিত নিবন্ধ