নির্বাচন বানচাল করার চেষ্টা করবে যারা, তাদের ছাড নয় : মুফতি মনির হোসাইন কাসেমী
Published: 29th, August 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা কুতুবপুরে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ সাইনবোর্ড জোন শাখার প্রতিনিধি সম্মেলন ২০২৫ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (২৯শে আগস্ট) বিকাল ৩:৩০ মিনিটে পাসপোর্ট অফিস সংলগ্ন এলাকায় এই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ, নারায়ণগঞ্জ জেলা সভাপতি মুফতি মনির হোসাইন কাসেমী বলেন। সামনের নির্বাচনকে যেসব মহল ইনিয়ে-বিনিয়ে ভিন্ন শর্ত আর কন্ডিশন চাপিয়ে বানচাল করার চেষ্টা করবে, তাদের একটাকেও ছেড়ে দেওয়া হবে না। বাংলাদেশের জনগণের অধিকার নিয়ে কেউ ছিনিমিনি খেলতে পারবে না। আপনারা কোন কচু! এদেশের জনগণের সময় নাই এগুলো দেখার।
তিনি আরও বলেন, আমি সবাইকে সাবধান করে দিচ্ছি। বিশেষ করে যারা জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিতে চায় তাদের উদ্দেশ্যে বলছি এদেশের ওলামায়ে কেরাম অতীতে যেমন ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করেছেন, তেমনি আবারও আমরা সেই ঐক্যের পথে এগিয়ে যাব। ইসলামি মূল্যবোধ রক্ষা করতে, দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে আমরা আপসহীন থাকব। জনগণের বিশ্বাসকে ভেঙে দেওয়া যাবে না। আমরা স্পষ্ট জানিয়ে দিচ্ছি মানুষের ভোটাধিকার হরণ করার ষড়যন্ত্র কোনোভাবেই বরদাস্ত করা হবে না।
সম্মেলনের প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ, নারায়ণগঞ্জ জেলা সাধারণ সম্পাদক মাওলানা ফেরদাউসুর রহমান।
তিনি বলেন, জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা নিয়ে ছিনিমিনি খেলার দিন শেষ। এদেশে ইসলামপ্রেমী উলামায়ে কেরাম জনগণের পাশে ছিল, আছে, থাকবে। ২০০১ সালে যেভাবে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করা হয়েছিল, আজও সেই ঐক্যের ধারা বজায় থাকবে।
সভাপতিত্ব ও বিশেষ অতিথিবৃন্দ, সম্মেলনের সভাপতিত্ব করেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ সাইনবোর্ড জোন শাখার সভাপতি মোহাম্মদ উসমান গনী।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, মুফতি হারুনুর রশিদ, সহ-সাধারণ সম্পাদক, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ, নারায়ণগঞ্জ জেলা। মাওলানা কামাল উদ্দিন দায়েমী, সভাপতি, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ, নারায়ণগঞ্জ মহানগর। মাওলানা মনাওয়ার হোসাইন, সাধারণ সম্পাদক, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ, নারায়ণগঞ্জ জেলা
সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, মাওলানা তাইজুল ইসলাম আব্বাস, মাওলানা আবু বক্কর, মাওলানা তৈয়বুল হোসেন, হাজী শাহীন, মাহবুবুর রহমান, ছাত্রনেতা মিরাজ, শেখ হিরা ইসলাম, মাওলানা সালাউদ্দিন, মাওলানা সাজ্জাদ, মাওলানা কামরুল হাসান দায়েমীসহ অঙ্গ-সংগঠনের অসংখ্য নেতৃবৃন্দ।
.উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: র জন ত ন র য়ণগঞ জ ন র য়ণগঞ জ ইসল ম ব জনগণ র উল ম য
এছাড়াও পড়ুন:
সংবিধান সংস্কার জনগণের মতামতের ভিত্তিতে হওয়া উচিত: ড. কামাল হোসেন
সংবিধান সংস্কার জনগণের মতামতের ভিত্তিতে হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের সংবিধানের অন্যতম প্রণেতা ও গণফোরামের ইমেরিটাস সভাপতি ড. কামাল হোসেন। তিনি বলেছেন, সংবিধান হচ্ছে রাষ্ট্র পরিচালনার দলিল। বিগত ৫৩ বছর যাবৎ এই সংবিধানে নানা পরিবর্তন হয়েছে। সংবিধান সংস্কার একটি সংবেদনশীল বিষয়, এ প্রক্রিয়া অবশ্যই জনগণের মতামতের ভিত্তিতে পরিচালিত হওয়া উচিত।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে ‘বাংলাদেশের সংবিধান ও সংস্কার প্রস্তাব’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন ড. কামাল হোসেন। তিনি অসুস্থ থাকায় লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান।
বর্তমান পটভূমিতে সংবিধান পর্যালোচনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করেন ড. কামাল হোসেন। তিনি বলেন, ‘তবে যেকোনো সংস্কারের সময় আমাদের মনে রাখতে হবে, সংবিধান আমাদের স্বাধীন বাংলাদেশের ভিত্তি, বাংলাদেশের সব মানুষের ত্যাগ ও একতাবদ্ধ আকাঙ্ক্ষার ফসল। কোনো ব্যক্তিই এককভাবে সংবিধান পরিবর্তন করার অধিকার রাখেন না। সংস্কারের প্রস্তাবগুলোতে অবশ্যই জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন হতে হবে এবং সমাজের বর্তমান চাহিদার সঙ্গে আমাদের মৌলিক মূল্যবোধের সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে।’
সরকারের স্বৈরতান্ত্রিক আচরণ এবং গণতন্ত্রহীনতার জন্য শুধু সংবিধানকে দায়ী করার প্রবণতা থেকে বের হওয়ার আহ্বান জানান ড. কামাল হোসেন। সেখানে সরকার ও রাজনৈতিক দলের মধ্যে গণতন্ত্র চর্চার ওপর গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
বিগত সময়ে দেশের যেসব সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান দলীয়করণের ফলে জন–আকাঙ্ক্ষা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে, সেগুলোর সংস্কার জরুরি বলে উল্লেখ করেন কামাল হোসেন। তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এ বিষয়ে জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে না পারলে গণতন্ত্র কখনোই প্রাতিষ্ঠানিক রূপ লাভ করবে না।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন গণফোরামের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সুব্রত চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের সংবিধান ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে, ৩০ লাখ শহীদের রক্তের মধ্য দিয়ে লেখা হয়েছে। সেই সংবিধান অক্ষত থাকবে। এটার ওপর হাত দেওয়ার সাধ্য এই সরকারের নেই।’
সংস্কারের বিষয়গুলো জাতীয় সংসদের ওপর ছেড়ে দেওয়ার আহ্বান জানান সুব্রত চৌধুরী। সংস্কার নিয়ে ঐক্যের পরিবর্তে বিভেদ সৃষ্টি করার জন্য এই সরকারকে কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের উদ্দেশে সুব্রত চৌধুরী বলেন, ‘আপনি তাদের (ছাত্রদের) রাজনীতির মাঠে নামিয়ে এবং তাদের আবার তৃতীয় শক্তি বানিয়েছেন। বিএনপি, জামায়াত আবার এনসিপি। বাংলাদেশে যেন আর কোনো রাজনৈতিক দল নেই। মামার বাড়ির আবদার।’
অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্রদের বিপথগামী করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন সুব্রত চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘তাদের পরিবার-পরিজনকেও আপনি অসম্মানের জায়গায় নিয়ে গেছেন। আজকে সব জায়গায় তাদের নিয়ে কথাবার্তা হয়, নানান জায়গায় তারা অপকর্ম করছে। তারা সরকারের বিভিন্ন জায়গায় বসে বসে, সরকারের অংশীদারত্ব তারা উপভোগ করছে। তারা বিভিন্ন জায়গায় পদ–পদবি নিচ্ছে, নিয়োগ–বাণিজ্য করছে, ট্রান্সফার করছে, ব্যবসা–বাণিজ্য করছে।’
আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান, নারীপক্ষের সভাপতি শিরীন হক প্রমুখ বক্তব্য দেন।