রংপুরে সাংবাদিককে হেনস্থার প্রতিবাদে মানববন্ধন, থানায় মামলা
Published: 22nd, September 2025 GMT
রংপুরের জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক লিয়াকত আলীকে (বাদল) ‘মব সৃষ্টি করে’ হেনস্তার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন স্থানীয় সাংবাদিকেরা। আজ সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রংপুর প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধনে রংপুরে কর্মরত প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকেরা অংশ নেন।
বেলা দেড়টায় মানববন্ধন শেষ হয়। আগামীকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টার মধ্যে আসামিরা গ্রেপ্তার না হলে পরের দিন মেট্রোপলিটন পুলিশের কার্যালয় ঘেরাওয়ের ঘোষণা দেন সাংবাদিক নেতারা।
আরও পড়ুনরংপুরে ‘মব’ করে সাংবাদিককে হেনস্তার অভিযোগ ‘জুলাই যোদ্ধার’ বিরুদ্ধে২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫রংপুর সম্মিলিত সাংবাদিক সমাজের ব্যানারে মানববন্ধনে অংশ নেন রংপুর সাংবাদিক ইউনিয়ন (আরপিইউজে), রংপুর প্রেসক্লাব, রংপুর রিপোর্টাস ক্লাব, রিপোর্টাস ক্লাব রংপুর, সিটি প্রেসক্লাব, রংপুর রিপোর্টাস ইউনিটি, বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন রংপুর, টেলিভিশন ক্যামেরা জার্নালিস্ট অ্যাসোশিয়েশন রংপুর, রংপুর অনলাইন জানালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনসহ স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরা।
মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করেন, লিয়াকত আলী রংপুর সিটি করপোরেশনের অটোরিকশা লাইসেন্স বাণিজ্যে পাঁচ কোটি টাকার দুর্নীতির খবর প্রকাশ করায় হামলার শিকার হয়েছেন। ওই প্রতিবেদন প্রকাশের পর লাইসেন্স বিতরণ বন্ধ হয়ে যায়। এতে ক্ষুব্ধ হওয়া চক্র তাঁকে তুলে নিয়ে হত্যাচেষ্টা চালায়। সেই সঙ্গে সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে তাঁকে ক্ষমা চাওয়ানোর চেষ্টা চালান।
রংপুর সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সরকার মাযহারুল মান্নান কাল রাত ১২টার মধ্যে হামলার সঙ্গে জড়িত মব সৃষ্টিকারী ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের দাবি করেন। রংপুর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহীকে প্রত্যাহার এবং প্রতিবাদ জানাতে যাওয়া সাংবাদিকদের হামলাকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া না হলে আগামী বুধবার দুপুর ১২টায় রংপুর মেট্রোপলিন পুলিশের কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি পালন করা হবে।
সংবাদ প্রকাশের জেরে গতকাল রোববার দুপুর ১২টার দিকে রংপুরের জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক লিয়াকত আলীকে নগরের কাচারিবাজার থেকে তুলে নিয়ে মারধর করা হয়। তিনি দৈনিক সংবাদের বিভাগীয় প্রতিনিধি। হেনস্তার শিকার এই সাংবাদিক বলেন, ‘আমার ওপর যে হামলা হয়েছে, তা পরিকল্পিত। আমাকে ধরে আনলে, মব করলে, মারি ফেললে, পঙ্গু করলে তো আমি আর রিপোর্ট করব না, সে জন্যই তারা কাল আমাকে তুলে আনে। দেশের সাংবাদিক ভাইদের কাছে আমার আবেদন, সবাই প্রতিরোধ গড়ে তুলুন।’
রংপুর নগরের কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আতাউর রহমান বলেন, হামলার শিকার সাংবাদিক লিয়াকত আলী ১৪ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত ৩০ থেকে ৪০ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
নান্দাইলের ইউএনও’র দুর্নীতি তদন্তের দাবিতে মানববন্ধন
ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার সদ্য সাবেক নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সারমিনা সাত্তারের বিরুদ্ধে ওঠা ৩ কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত ও বিচার দাবিতে মানববন্ধন করেছে বিভিন্ন ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও স্থানীয়রা।
মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) দুপুর ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়কের নান্দাইল নতুন বাজার এলাকায় ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন করেন তারা।
আরো পড়ুন:
রাজশাহীতে ৫ কোল পরিবারকে উচ্ছেদের প্রতিবাদে মানববন্ধন
বিএলআরআই নিয়োগবিধিতে বৈষম্যের অভিযোগে গবিতে মানববন্ধন
উপজেলার শেরপুর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মাসহুদ পারভেজসহ অন্যান্য ইউপি সদস্যরা গত ২৮ মার্চ ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনারের কাছে সারমিনা সাত্তারের বিরুদ্ধে ৩ কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ করেন।
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা থাকাকালীনও সারমিনা সাত্তারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠে। যা নিয়ে তখন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর নান্দাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হিসেবে সারমিনা সাত্তার যোগ দেন। এরপর থেকে সীমাহীন দুর্নীতি করেছেন। উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজার ইজারা, পাথর কেলেঙ্কারি, খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির ডিলার নিয়োগ, নামজারিতে অতিরিক্ত টাকা আদায়, ভুয়া প্রকল্প থেকে টাকা উত্তোলনসহ নানা দুর্নীতি করেছেন।
বক্তব্যে ইউপি সদস্য মাসহুদ পারভেজ বলেন, ‘‘সারমিনা সাত্তার শুধু অনিয়ম-দুর্নীতিতে সীমাবদ্ধ ছিলেন না, ইউপি সদস্যদের সঙ্গে অসদাচরণসহ মিথ্যা মামলার হুমকিও দিয়েছেন। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে অভিযোগ দিয়েছি।’’
মানববন্ধনে আরো উপস্থিত ছিলেন খারুয়া ইউনিয়নের ইউপি সদস্য আব্দুস কদ্দুস মুন্সি, বাচ্চু মিয়া, শেরপুর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য শাহজাহান প্রমুখ।
এ বিষয়ে জানতে সারমিনা সাত্তারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
ঢাকা/মিলন/বকুল