প্রতিযোগিতা কমিশনে গ্রামীণফোনের বিরুদ্ধে অভিযোগ রবি ও বাংলালিংকের
Published: 22nd, September 2025 GMT
দেশের শীর্ষ মোবাইল অপারেটর গ্রামীণফোনের বিরুদ্ধে সিম বিক্রিতে প্রতিযোগিতা আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ করেছে দুই অপারেটর রবি আজিয়াটা ও বাংলালিংক। তারা প্রতিযোগিতা কমিশনে এ অভিযোগ করে।
রবির অভিযোগের পর গ্রামীণফোন এ বিষয়ে প্রতিযোগিতা কমিশনের বিচারিক এখতিয়ার নিয়ে চ্যালেঞ্জ করেছিল, যা আজ সোমবার খারিজ করে অভিযোগ আমলে নিয়েছে কমিশন।
প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারপারসন এ এইচ এম আহসান প্রথম আলোকে বলেন, অভিযোগ আমলে নেওয়া হয়েছে এবং পরবর্তী সময়ে শুনানির তারিখ জানানো হবে।
রবি গত জানুয়ারিতে গ্রামীণফোনের বিরুদ্ধে প্রতিযোগিতা কমিশনে অভিযোগ করেছিল। বিষয়টি নিয়ে ১৭ সেপ্টেম্বর প্রতিযোগিতা কমিশনের কার্যালয়ে শুনানি হয়। এতে তিন অপারেটরের আইনজীবী অংশ নেন। শুনানিতে গ্রামীণফোন ও রবি তাদের বক্তব্য তুলে ধরে। তবে বাংলালিংক আরও সময় চেয়ে আবেদন করে।
রবির অভিযোগে বলা হয়েছে, গ্রামীণফোন বাজার প্রতিযোগিতায় আগ্রাসী কৌশল ব্যবহার করে কৃত্রিমভাবে সিমের দাম কমাচ্ছে, প্রতারণামূলক মূল্য নির্ধারণ করছে এবং খুচরা বিক্রেতাদের নিয়ন্ত্রণে বৈষম্যমূলক শর্ত আরোপ করছে। এর ফলে প্রতিযোগিতা আইনের লঙ্ঘন হয়েছে। এতে প্রতিযোগী অপারেটরদের বাজারে প্রবেশাধিকার সীমিত হচ্ছে এবং দীর্ঘ মেয়াদে একচেটিয়া পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে।
বাংলালিংকও প্রায় একই অভিযোগ করেছে। এ অভিযোগের শুনানি হবে আগামী মাসে।
রবি ও বাংলালিংক কমিশনের কাছে গ্রামীণফোনের সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম তদন্ত করা, উৎপাদন ও বিপণন খরচের চেয়ে কম দামে সিম বিক্রি বন্ধে নির্দেশনা, অস্বাভাবিক মূল্য নির্ধারণ রোধ করা, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া এবং বাজারে ন্যায্য প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করতে পদক্ষেপ চেয়েছে।
রবির চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অফিসার সাহেদ আলম প্রথম আলোকে বলেন, রবি কমিশনকে পূর্ণ সহযোগিতা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং বাজারে সুস্থ প্রতিযোগিতা জোরদার করে, এমন নীতি ও অনুশীলনের পক্ষে তাদের সমর্থন থাকবে।
গ্রামীণফোন কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে প্রথম আলোকে জানিয়েছে, অভিযোগ আমলে নেওয়ার বিষয়ে প্রতিযোগিতা কমিশনের আদেশের কথা তারা জানতে পেরেছে। তবে আদেশের কোনো প্রত্যয়িত অনুলিপি পায়নি। তাই এ বিষয়ে এখনই বিস্তারিত মন্তব্য তারা করতে পারছে না।
বিবৃতিতে বলা হয়, গ্রামীণফোন প্রতিযোগিতা আইন মেনে ব্যবসা করছে। তারা কোনো প্রতিযোগিতাবিরোধী কার্যকলাপে জড়িত নয়। দেশের টেলিযোগাযোগ খাত বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। বিটিআরসি নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে বাজারে প্রবেশ, মূল্য নির্ধারণ এবং সব প্রতিযোগিতামূলক কার্যক্রমের তদারকি করে থাকে। গ্রামীণফোন এখন একটি সিগনিফিকেন্ট মার্কেট পাওয়ার বা তাৎপর্যপূর্ণ বাজার ক্ষমতাসম্পন্ন (এসএমপি) অপারেটর হিসেবে কঠোর নিয়ন্ত্রক নির্দেশনার ভিত্তিতে পরিচালিত হচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগগুলো ভিত্তিহীন।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বন্দরে গ্যারেজে সন্ত্রাসী হামলা, ভাংচুর, লুট : আহত ৪
বন্দরে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের সন্ত্রাসী হামলায় ৪ যুবক জখমসহ গ্যারেজ ভাংচুর চালিয়ে অটোগাড়ী ও মোটরসাইকেল ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে।
সন্ত্রাসী হামলার ঘটনার ৩ দিন পর এ ব্যাপারে আহতের বড় বোন সিমা বেগম বাদী হয়ে সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে হামলাকারি সন্ত্রাসী ইফতি, আসলাম, আওলাদ, আজিজ, রোহান ও বিনা বেগমের নাম উল্লেখ্য করে আরো ৪/৫ জনকে অজ্ঞাত আসামী করে বন্দর থানায় এ অভিযোগ দায়ের করেন তিনি।
এর আগে গত শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৫টায় ও একই দিন রাত সাড়ে ৯টায় বন্দর থানার ২১ নং ওয়ার্ডের সোনাকান্দা কেল্লা সংলগ্ন পাঁকা রাস্তার উপরে দুই দফা সন্ত্রাসী হামলার ঘটনাটি ঘটে।
সন্ত্রাসী হামলায় আহতরা হলো বন্দর থানার সোনাকান্দা কড়ইতলা এলাকার তাহের আলী মিয়ার ছেলে দেবর সাইফুল (২৫) একই থানার বন্দর রুপালী আবাসিক এলাকার রিজন মিয়ার ছেলে এলাহি (২৩) সোনাকান্দা কড়ইতলা এলাকার খোকন মিয়ার ছেলে সুজন (২৫) ও রুপালী আবাসিক এলাকার বাসিন্দা লিমন (৩০)।
স্থানীয় এলাকাবাসী আহতদের মারাত্মক জখম অবস্থায় উদ্ধার করে বন্দর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ৪ জনের মধ্যে গুরুত্বর জখম এলাহিকে ঢামেক হাসপাতালে প্রেরণ করলে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক এলাহিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা শ্যামলী প্রাইমা অর্থোপেডিক হাসপাতলে প্রেরণ করে।
অভিযোগের তথ্য সূত্রে জানা গেছে, বন্দর থানার সোনাকান্দা চৌধুরীপাড়া এলাকার তাহের আলী ছেলে ও অভিযোগের বাদিনী দেবর সাইফুলের সাথে মোবাইল বিক্রি টাকা নিয়ে একই এলাকার আব্দুল্লাহ মিয়ার ছেলে প্রতিপক্ষ ইফতি একই এলাকার মৃত সাহাদাত মিয়ার ছেলে আসলাম একই এলাকার মৃত আলিম উদ্দিনের ছেলে তাওলাদ, মানিক মিয়ার ছেলে আজিজ ও তার স্ত্রী বিনা বেগম ও ছেলে রোহানের সাথে দীর্ঘ দিন ধরে বিরোধ চলছিল।
উল্লেখিত বিরোধের জের ধরে লেডি সন্ত্রাসী বিনা বেগমের হুকুমে ইফতি, আসলাম, তাওলাদ, আজিজ ও তার ছেলে রোহানসহ অজ্ঞাত নামা ৪/৫ জন সন্ত্রাসী দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে অভিযোগের বাদিনী দেবর সাইফুলের উপর অর্তকিত হামলা চালায়।
লোক মারফতে খবর পেয়ে বাদিনীর ছোট ভাই মোঃ এলাহি (২৫) ঘটনাস্থলে আসলে ওই সময় ৫নং বিবাদী বিনা বেগমের হুকুমে ১নং বিবাদী ইফতি বাদিনীর ভাই এলাহিকে হত্যার উদ্দেশ্যে ধারালো সুইচ গিয়ার চাকু দিয়ে বাম হাতের কুনুইয়ে কোপ দিয়ে হাতের এপার ওপারে করে ফেলে এবং ও ৬নং বিবাদী ধারালো সুইচ গিয়ার চাকু দিয়ে কোপ দিয়ে বাম পায়ের গোড়ালির উপরে মারাত্মক কাটা রক্তাক্ত জখম করে।
এ ছাড়াও বিবাদী আসলাম, তাওলাদ, আজিজ ও তার স্ত্রী বিনা বেগমসহ অজ্ঞাত ৪/৫ জন সন্ত্রাসী ক্ষিপ্ত হয়ে অটো গ্যারেজে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে একটি ব্যাটারিচালিত অটো যাহার আনুমানিক মূল্য ১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা ও একটি রানার ব্রান্ডের মোটরসাইকেল যাহার আনুমানিক মূল্য ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
আহত যুবকের পরিবার সূত্রে জানা গেছে বর্তমানে আহত যুবক এহাহি মুমূর্ষু অবস্থায় ঢাকা শ্যামলী প্রাইমা অর্থোপেডিক হাসপাতলে আইসিওতে লাইফ সাপোর্টে রয়েছে। তার অবস্থা আংশকাজনক বলে আরো জানা গেছে। অভিযোগ পেয়ে বন্দর থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।