শোয়েবের চোখে অধিনায়কই ‘সবচেয়ে বাজে’ পাকিস্তান দলে
Published: 22nd, September 2025 GMT
দলের অন্য কেউ নন, সরাসরি অধিনায়কের জায়গা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন পাকিস্তানের কিংবদন্তি শোয়েব আখতার। এশিয়া কাপের সুপার ফোরে গতকাল ভারতের কাছে পাকিস্তানের হারের পর ক্ষোভ প্রকাশ করেন শোয়েব। অধিনায়কত্বের সমালোচনা করে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দ্রুততম ডেলিভারির রেকর্ড গড়া সাবেক এই পেসার বলেছেন, পাকিস্তানের দলে দুর্বলতম দিক হচ্ছেন সালমান আগা।
দুবাইয়ে গতকাল আগে ব্যাট করে ১৭১ রান তুলে ভারতের কাছে ৬ উইকেটে হারে পাকিস্তান। প্রথম পর্বেও ভারতের কাছে হেরেছে তারা। দুটি ম্যাচে সেভাবে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতাই গড়তে পারেনি সালমান আগার দল। গত মার্চে নিউজিল্যান্ড সফরের আগে সালমানকে পাকিস্তানের টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়কের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
এশিয়া কাপে প্রথম পর্বে ভারতের কাছে হারের পর থেকেই সমালোচিত হচ্ছে সালমানের অধিনায়কত্ব। কালকের ম্যাচে যেমন হাসান নেওয়াজকে দলের বাইরে রাখায় ও সালমান নিজে ছয়ে ব্যাটিংয়ে নামায় সমালোচিত হচ্ছেন। পাশাপাশি ম্যাচে সালমানের বিভিন্ন সিদ্ধান্তও সমালোচিত হচ্ছে। পাকিস্তানের স্ট্রিমিং প্লার্টফর্ম ‘ট্যাপম্যাড’-এ সালমানের কিছু সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলে শোয়েব বলেছেন, নেওয়াজকে চারে খেলালে পাকিস্তান আরও বড় সংগ্রহ পেতে পারত। অধিনায়ক হিসেবে কী করা উচিত, সালমান সেটাই বুঝতে পারছেন না বলে মন্তব্য করেন শোয়েব।
পাকিস্তানের সাবেক পেসার শোয়েব আখতার.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ট্রাম্প–মামদানি কি সমানে সমান
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সবচেয়ে প্রিয় কাজগুলোর একটি হলো—নতুন রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের সঙ্গে লড়াইয়ে নামা।
কিন্তু দেশটির নিউইয়র্ক শহরের নবনির্বাচিত মেয়র জোহরান মামদানির মধ্যে কি ট্রাম্প এবার নিজের সমকক্ষ প্রতিদ্বন্দ্বী পেয়ে গেছেন?
এই রিপাবলিকান নেতার সঙ্গে তরুণ ডেমোক্র্যাট সমাজতান্ত্রিক মামদানির মুখোমুখি লড়াই ট্রাম্পের প্রেসিডেন্সির পরবর্তী ধাপ নির্ধারণ করতে পারে।
মনে হচ্ছে, মামদানিকে প্রতিপক্ষ হিসেবে পেয়ে ট্রাম্প বেশ আনন্দই পাচ্ছেন। তিনি তাঁকে ‘কমিউনিস্ট’ আখ্যা দিচ্ছেন। যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় শহরের প্রথম মুসলিম ও দক্ষিণ এশীয় এই মেয়রের নাম নিয়ে তিনি ঠাট্টা করছেন। এমনকি নিউইয়র্ক শহরের জন্য ফেডারেল তহবিল বন্ধের হুমকিও দিচ্ছেন ট্রাম্প।
আরও পড়ুনজোহরান মামদানির ‘ট্রানজিশন’ দলের সবাই নারী২০ ঘণ্টা আগেকিন্তু মামদানি দেখিয়েছেন, ট্রাম্পের মতো কৌশলেই তিনিও খেলতে জানেন।
রিয়েলিটি টিভি তারকা থেকে রাজনীতিক রূপে আবির্ভূত হওয়া ট্রাম্পকে অন্য কেউ ছাপিয়ে যান—এমনটা দেখা তাঁর জন্য সহজ কোনো বিষয় নয়। কিন্তু ৩৪ বছর বয়সী মামদানি সেটিই করে দেখালেন।
গত মঙ্গলবার রাতের বিজয় সমাবেশে মামদানি বলেছিলেন, ‘ডোনাল্ড ট্রাম্প, আমি জানি আপনি দেখছেন। আপনার জন্য আমার কয়েকটা শব্দ আছে—আওয়াজটা বাড়িয়ে দিন!’
মামদানির বক্তব্য শেষ হতেই তাঁর সমর্থকেরা উল্লাসে ফেটে পড়েন।
পরদিন হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র ক্যারোলিন লেভিট সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেন, ট্রাম্প সত্যিই মামদানির ভাষণ দেখেছিলেন তাঁর এয়ারফোর্স ওয়ানে বসে।
আরও পড়ুনজোহরান মামদানির জয়ে ভারতের মুসলিমরা খুশি হলেও বিজেপি-সমর্থকেরা চুপ কেন৩ ঘণ্টা আগে‘আমাদের মধ্য দিয়েই যেতে হবে’
ট্রাম্প ও মামদানি এমন প্রতিদ্বন্দ্বী, যাঁরা অন্তত কিছুটা হলেও একে অপরের উপস্থিতি থেকে পরস্পর লাভবান হচ্ছেন।
বামপন্থী মামদানি তাঁর পুরো নির্বাচনী প্রচারে ট্রাম্পকে একধরনের ভয়ের প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করেছেন। তিনি তাঁকে ‘ফ্যাসিস্ট’ বলেছেন। রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী ট্রাম্পকে তিনি সেসব বাড়িওয়ালার সঙ্গে তুলনা করেছেন, যাঁরা নিউইয়র্কবাসীর পকেট কাটছেন।
মামদানি নিজেকে একটি প্রতিরোধশক্তির অংশ হিসেবে তুলে ধরেছেন। যে প্রেসিডেন্ট তাঁর ক্ষমতার সীমা ছাড়িয়ে গেছেন, ডেমোক্র্যাট–নিয়ন্ত্রিত শহরগুলোতে ন্যাশনাল গার্ড পাঠিয়েছেন, তাঁর বিরুদ্ধেই মামদানির এই প্রতিরোধ।
বিজয় সমাবেশে মামদানি বলেছিলেন, ‘আমাদের কারও কাছে যেতে হলে আপনাকে (ট্রাম্প) আমাদের সবার মধ্য দিয়ে যেতে হবে।’
আরও পড়ুনমামদানিপত্নী কে এই রমা, কীভাবে তাঁদের প্রেম–পরিণয়২০ ঘণ্টা আগেসাম্প্রতিক মাসগুলোতে ট্রাম্পের আক্রমণে চাপে থাকা ডেমোক্র্যাটদের জন্য মামদানি যেন প্রতি-আক্রমণের বহু প্রতীক্ষিত সুযোগ এনে দিয়েছেন।
অন্যদিকে ডানপন্থীদের কাছে মামদানি এখন ট্রাম্পের জন্য একদম আদর্শ প্রতিপক্ষ, যাঁর বিরুদ্ধে তাঁরা ইচ্ছেমতো আক্রমণ চালাতে পারেন।
নিউইয়র্ক, ভার্জিনিয়া ও নিউ জার্সির ভোটে পরাজয়ের পর রিপাবলিকানরা যখন ধাক্কা সামলাচ্ছিলেন, তখন বুধবার মায়ামিতে ট্রাম্প বলেন, ‘আমেরিকানদের এখন বেছে নিতে হবে—কমিউনিজম নাকি বাস্তববোধ।’
আরও পড়ুনমামদানি স্বপ্ন দেখছেন, স্বপ্ন দেখাচ্ছেন০৬ নভেম্বর ২০২৫‘সতর্কতার লালবাতি’
তবে এই লড়াই শুধু কথার নয়; ঝুঁকি অনেক বেশি।
ট্রাম্প একাধিকবার হুমকি দিয়ে বলেছেন, তিনি তাঁর প্রিয় শহর নিউইয়র্ককেও লস অ্যাঞ্জেলেস ও শিকাগোর মতো ফেডারেল নজরদারির আওতায় আনবেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার ওভাল অফিসে সাংবাদিকদের ট্রাম্প বললেন, ‘যদি সে (মামদানি) কমিউনিস্ট হয়, তাহলে তো শহরে তেমন কোনো কাজ হবে না। তাই নিউইয়র্কের জন্য যেসব সেতু, টানেল আর উন্নয়ন প্রকল্পের পরিকল্পনা করা হয়েছিল, তা–ও প্রয়োজন হবে না।’
ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ অনেকে আশঙ্কা করছেন, তিনি হয়তো আগুন নিয়ে খেলছেন। কারণ, মামদানির উত্থান ঘটেছে সেই জীবনযাত্রার ব্যয়ের সংকটকে ঘিরে, যা এখন ভোটে রিপাবলিকানদের বিপদে ফেলছে।
আরও পড়ুনজোহরান মামদানিকে বেছে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র সার্বভৌমত্ব হারিয়েছে: ডোনাল্ড ট্রাম্প০৬ নভেম্বর ২০২৫সাবেক হোয়াইট হাউস কৌশলবিদ স্টিভ ব্যানন পলিটিকোকে বলেন, ‘ট্রাম্পের জন্য সব জায়গায় সতর্কতার লালবাতি জ্বলছে। সবাই বুঝে নিক, তাঁদের সামনে এখন সত্যিকারের এক যোদ্ধা এসেছেন।’
তবে ট্রাম্প ও মামদানি দুজনই ইঙ্গিত দিয়েছেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে শেষ পর্যন্ত এই সংঘাত হয়তো কিছুটা প্রশমিত হতে পারে।
ট্রাম্প একদিকে বলছেন, তিনি নিউইয়র্ককে ভালোবাসেন বলে মামদানিকে ‘সফল হতে সাহায্য করতে চান’। আবার সঙ্গে সঙ্গেই তিনি মামদানিকে উপদেশ দিচ্ছেন, ‘ওয়াশিংটনের প্রতি একটু শ্রদ্ধাশীল হও।’
আরও পড়ুনজোহরান মামদানির ঐতিহাসিক জয়ের রহস্য কী০৫ নভেম্বর ২০২৫আর মামদানিও জানেন, যদি ট্রাম্প ফেডারেল তহবিল বন্ধ করেন, তাহলে বিনা মূল্যে বাস পরিষেবা, শিশুযত্ন কেন্দ্র বা সিটি কর্তৃপক্ষ পরিচালিত মুদিদোকানের মতো তাঁর নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিগুলো বাস্তবায়ন কঠিন করা হয়ে যাবে।
গত বুধবার মামদানি বলেন, ‘আমি এখনো আগ্রহী প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনা করতে, কীভাবে আমরা একসঙ্গে কাজ করে নিউইয়র্কবাসীর সেবা করতে পারি।’
আরও পড়ুনবিজয়ভাষণে ট্রাম্পকে মামদানি বললেন, ‘আওয়াজ বাড়ান’০৫ নভেম্বর ২০২৫