ঢাকার বাইরে যেতে চান না সমবায় কর্মকর্তারা, মাঠপর্যায়ে অনিয়ম
Published: 5th, July 2025 GMT
সমবায় অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ে কর্মরত ক্যাডারভুক্ত অনেক কর্মকর্তা ঢাকার বাইরে যেতে চান না। ফলে ঢাকার বাইরের কার্যালয়গুলোতে গুরুত্বপূর্ণ পদ ফাঁকা পড়ে আছে। এ বিষয়টির পাশাপাশি জনবলসংকটের কারণে সমবায় সমিতিগুলোর কার্যক্রম সঠিকভাবে নজরদারি হচ্ছে না। এ সুযোগে সমিতিগুলো অনিয়ম করছে।
অধিদপ্তরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ক্যাডার কর্মকর্তা হয়েও অনেকে চাকরিজীবনের অর্ধেক সময় কাটিয়ে দিয়েছেন অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ে। ঢাকার বাইরে বদলি করা হলেও অনেকে যেতে চান না। এর প্রভাব পড়ছে মাঠপর্যায়ে।
বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কর্মকর্তাদের প্রতি মাসে নির্ধারিত সংখ্যক সমবায় সমিতি পরিদর্শনের কথা। কিন্তু জনবলসংকটের কারণে তা হচ্ছে না। অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, এই সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে অনেক সমবায় সমিতি।
অধিদপ্তরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ক্যাডার কর্মকর্তা হয়েও অনেকে চাকরিজীবনের অর্ধেক সময় কাটিয়ে দিয়েছেন অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ে। ঢাকার বাইরে বদলি করা হলেও অনেকে যেতে চান না। এর প্রভাব পড়ছে মাঠপর্যায়ে।গত বছরের ২ মে অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ের যুগ্ম নিবন্ধক রিক্তা দত্তকে বরিশাল বিভাগীয় সমবায় কার্যালয়ে বদলি করা হয়েছিল। কিন্তু তিনি সেখানে যুগ্ম নিবন্ধক হিসেবে যোগ দেননি।
এ বিষয়ে বিসিএস ২১ ব্যাচের সমবায় ক্যাডারের কর্মকর্তা রিক্তা দত্ত গত বৃহস্পতিবার প্রথম আলোকে বলেন, তিনি তাঁর চাকরিজীবনে কখনো ঢাকার বাইরে কাজ করেননি। তাই ঢাকার বাইরে যেতে তাঁর আগ্রহ নেই। বিষয়টি তিনি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানালে তাঁর বদলি আদেশ স্থগিত করা হয়।
কর্মকর্তাদের প্রতি মাসে নির্ধারিত সংখ্যক সমবায় সমিতি পরিদর্শনের কথা। কিন্তু জনবলসংকটের কারণে তা হচ্ছে না।একইভাবে প্রধান কার্যালয়ে কর্মরত অতিরিক্ত নিবন্ধক জেবুন নাহার, যুগ্ম নিবন্ধক রাশিদা মুসতারীন, উপনিবন্ধক সামিয়া সুলতানাকে গত বছর ঢাকার বাইরে বদলি করা হয়েছিল। যদিও পরে তা স্থগিত করা হয়।
অধিদপ্তরের প্রশাসন শাখার তথ্য অনুসারে, চাকরিজীবনের বেশির ভাগ সময় ঢাকায় কাটিয়ে দেওয়া কর্মকর্তাদের মধ্যে আরও আছেন অতিরিক্ত নিবন্ধক মোহাম্মদ হাফিজুল হায়দার চৌধুরী, যুগ্ম নিবন্ধক মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, যুগ্ম নিবন্ধক মো.
ঢাকা বিভাগীয় সমবায় কার্যালয়ে আট বছর ধরে উপনিবন্ধক পদে কর্মরত আছেন নূর-ই-জান্নাত। তিনি গতকাল শুক্রবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘বদলি আমাদের ইচ্ছায় হয় না। বদলি করে থাকে মন্ত্রণালয়। আমি নিজেও বদলি হতে চাই। কিন্তু করা হয় না। কেন বদলি করা হয় না, আমি জানি না।’
এ নিয়ে মাঠপর্যায়ে থাকা ক্যাডারভুক্ত কর্মকর্তাদের মধ্যে অসন্তোষ আছে। তাঁরা বলছেন, এঁদের জন্যই তাঁরা ঢাকায় আসতে পারছেন না।
জানতে চাইলে সমবায় অধিদপ্তরের নিবন্ধক ও মহাপরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মুনিমা হাফিজ গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘তদবির করে অনেকে থেকে যাচ্ছেন। এই দপ্তরে আমি অতিরিক্ত দায়িত্বে আছি। এসব আমার দেখার বিষয় নয়।’
এমন প্রেক্ষাপটে আজ ৫ জুলাই পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক সমবায় দিবস। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘কো-অপারেটিভস: ড্রাইভিং ইনক্লুসিভ অ্যান্ড সাসটেইনেবল সলিউশনস ফর আ বেটার ওয়ার্ল্ড’। দিবসটি উপলক্ষে ঢাকায় প্রধান কার্যালয়ে আলোচনা সভার আয়োজন করেছে সমবায় অধিদপ্তর। আলোচনা সভায় স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়ার উপস্থিত থাকার কথা।
বদলি আমাদের ইচ্ছায় হয় না। বদলি করে থাকে মন্ত্রণালয়। আমি নিজেও বদলি হতে চাই। কিন্তু করা হয় না। কেন বদলি করা হয় না, আমি জানি নাঢাকা বিভাগীয় সমবায় কার্যালয়ে উপনিবন্ধক নূর-ই-জান্নাতনজরদারির ঘাটতি, ঝুঁকিতে হাজারো সমিতি
কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলার শিমুলকান্দি ইউনিয়নের বাসিন্দা রোকেয়া বেগম (৪০)। তিনি চাঁনপুর মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড নামের একটি সমবায় সমিতিতে ৩০ লাখ টাকা রেখেছিলেন। সমিতির কার্যালয়ে এখন তালা ঝুলছে। সমিতির চেয়ারম্যান মো. শাহ আলম উধাও। টাকা ফেরত পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তায় রোকেয়া।
জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলায় গত এপ্রিলে গ্রাহকের টাকা নিয়ে একসঙ্গে ২৩টি সমবায় সমিতি হাওয়া হয়ে যায়। এসব সমিতিতে গ্রাহকের জমার পরিমাণ ৭৩০ কোটি টাকা। সমিতিগুলোর কয়েক হাজার গ্রাহক এখন নিঃস্ব।
গ্রাহকের টাকা নিয়ে সমিতি উধাও, সঞ্চয় হারিয়ে মানুষের কান্না, প্রতিবাদে সরকারি দপ্তর ঘেরাও—সমবায় সমিতি নিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানের গ্রাহকদের এমন অভিজ্ঞতার কথা প্রায়ই সামনে আসে।
সম্প্রতি সমবায় অধিদপ্তর দেশের ১ হাজার ২৪১টি সমবায় সমিতিকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। গত ৫ মার্চ অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ের সভাকক্ষে একটি সমন্বয় সভা হয়। সভায় এ তথ্য তুলে ধরেন অধিদপ্তরের উপনিবন্ধক মোহাম্মদ ইমরান হাবীব।
অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, নজরদারির ঘাটতির পাশাপাশি রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে অনিয়মকারী সমবায় সমিতিগুলোকে ধরা যাচ্ছে না। তারা নানা কৌশলে পার পেয়ে যাচ্ছে।সভায় বলা হয়, এই সমবায় সমিতিগুলো কোনো ধরনের নিয়মনীতি মানছে না। তারা প্রতিনিয়ত আইন ভাঙছে। আটটি বিভাগের এসব সমবায় সমিতিকে নজরদারিতে এনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে সভায় জানানো হয়।
অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, নজরদারির ঘাটতির পাশাপাশি রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে অনিয়মকারী সমবায় সমিতিগুলোকে ধরা যাচ্ছে না। তারা নানা কৌশলে পার পেয়ে যাচ্ছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, সমবায় সমিতিগুলোর সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের সঙ্গে রাজনৈতিক নেতাদের সুসম্পর্ক থাকে। সে কারণে সমিতিগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যায় না।
সমবায় অধিদপ্তরে নানা সমস্যা। সমবায় সমিতিগুলো নজরদারিতে নেই। এসব অনিয়মের সঙ্গে কর্মকর্তারা জড়িত থাকেন। এই অধিদপ্তরে মহাপরিচালক দেওয়া হয় অন্য ক্যাডার থেকে। কিন্তু সমবায় ক্যাডার থেকেই মহাপরিচালক হওয়া উচিত ছিল। বর্তমান কাঠামো দিয়ে সমবায় চলবে না। পেশাদার লোক দিয়ে সমবায়কে চালাতে হবে।স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ও স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের প্রধান অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদকমিশনের সুপারিশ
অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সমবায় অধিদপ্তর ও বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ডকে (বিআরডিবি) একীভূত করে একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান গড়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া সমবায় ক্যাডারকে অন্য প্রাসঙ্গিক ক্যাডারের সঙ্গে একীভূত করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে সমবায় ও খাদ্য ক্যাডারকে প্রশাসনিক সার্ভিসের সঙ্গে একীভূত করার সুপারিশ করা হয়েছে।
স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ও স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের প্রধান অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, সমবায় অধিদপ্তরে নানা সমস্যা। সমবায় সমিতিগুলো নজরদারিতে নেই। এসব অনিয়মের সঙ্গে কর্মকর্তারা জড়িত থাকেন। এই অধিদপ্তরে মহাপরিচালক দেওয়া হয় অন্য ক্যাডার থেকে। কিন্তু সমবায় ক্যাডার থেকেই মহাপরিচালক হওয়া উচিত ছিল। বর্তমান কাঠামো দিয়ে সমবায় চলবে না। পেশাদার লোক দিয়ে সমবায়কে চালাতে হবে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সমব য় ক য ড র স থ ন য় সরক র র র কর মকর ত কর মকর ত দ র প রথম আল ক কর মকর ত র ম ঠপর য য় ক সমব য় নজরদ র পর য য় গ র হক ও অন ক বলছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
গাজায় ব্যাংক খুলেছে, নেই নগদ অর্থ
ইসরায়েলের আগ্রাসনের শিকার ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতির ফলে কিছু কিছু ব্যাংক খুলেছে। তবে নগদ অর্থের ঘাটতির কারণে বড় সমস্যায় পড়েছেন গাজাবাসী। নগদ অর্থসংকটের কারণে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে তাঁদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। সার্বিক পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে ব্যবসায়ীরা সবকিছুর দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন।
দুই বছর ধরে গাজায় নির্বিচার হামলায় ঘরবাড়ি, স্কুল এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মতো অনেক ব্যাংক ধ্বংস বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গত ১০ অক্টোবর যুদ্ধবিরতি ঘোষণার ছয় দিন পর ১৬ অক্টোবর থেকে কিছু ব্যাংক খোলা শুরু করে। এসব ব্যাংক থেকে অর্থ তুলতে বিপুলসংখ্যক মানুষ ভিড় করেন। কিন্তু দীর্ঘ সময় অপেক্ষার পর তাঁদের বেশির ভাগকে হতাশা নিয়েই বাড়ি ফিরতে হচ্ছে।
যুদ্ধবিরতি কার্যকরের পরও গাজায় ইসরায়েলের সেনাদের হামলায় দুই শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে গাজায় নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬৮ হাজার ৫২৭। যুদ্ধবিরতির পরও গাজায় ত্রাণসহ যেকোনো কিছু ঢুকছে ইসরায়েলের নজরদারিতেই।
নগদ অর্থের জন্য মধ্য গাজার নুসেইরাতে ব্যাংক অব প্যালেস্টাইনের বাইরে সারিতে দাঁড়িয়ে ছিলেন ওয়ায়েল আবু ফারেস (৬১)। তিনি বলেন, ব্যাংকে কোনো অর্থ নেই। নগদ অর্থের সঞ্চালন নেই। হতাশার সুরে ছয় সন্তানের এই বাবা বলেন, ব্যাংকে এসে কাগজপত্রের লেনদেন করে চলে যাওয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই।
গাজায় খাবার কেনা বা বিভিন্ন পরিষেবার বিল দেওয়ার মতো প্রায় সব দৈনন্দিন লেনদেন নগদ অর্থে করতে হয়। কিন্তু ২০২৩ সালের অক্টোবরে হামলা শুরু হওয়ার পর গাজা অবরুদ্ধ করে রেখেছেন ইসরায়েলি সেনারা। ফলে সেখানে নিত্যপণ্য ও অন্যান্য সরঞ্জামের মতো নগদ অর্থও ঢুকতে পারছে না। যদিও যুদ্ধবিরতির পর এখন কিছু কিছু ত্রাণবাহী ট্রাক ঢুকছে।
গাজাভিত্তিক অর্থনীতিবিদ মোহাম্মদ আবু জাইয়্যাব বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ব্যাংক খোলা আছে, শীতাতপ যন্ত্রও চালু আছে। কিন্তু ইলেকট্রনিক লেনদেন ছাড়া মূলত আর কিছুই হচ্ছে না। কারণ, কোনো আমানত নেই। তাই নগদ অর্থ তোলা সম্ভব হচ্ছে না।
আবু জাইয়্যাব বলেন, ব্যাংক যেহেতু নগদ অর্থ দিতে পারছে না, তাই বেতন ক্যাশ করতে মানুষজন কিছু লোভী ব্যবসায়ীর কাছে যাচ্ছেন। তাঁদের ২০ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত বেশি অর্থের বিনিময়ে বেতন ক্যাশ করতে হচ্ছে।
‘আমরা আর পারছি না’
গাজায় একসময় ব্যাংক লেনদেন এক ঘণ্টার কম সময়ের মধ্যে শেষ হয়ে যেত জানিয়ে সাত সন্তানের মা ইমান আল-জাবারি বলেন, ‘এখন ব্যাংকে লেনদেন করতে আপনাকে দুই বা তিন দিন যেতে হয়। একাধিকবার যাতায়াত করতে হয়। পুরোটা সময় দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। এত কিছু করে আপনি ৪০০-৫০০ শেকেলের (১২৩-১৫৩ ডলার) মতো তুলতে পারবেন। বর্তমানে অতি উচ্চমূল্যের বাজারে এই অর্থ দিয়ে কী কেনা যায় বলেন? আমরা আর পারছি না।’
নগদ অর্থের ঘাটতি অধিকাংশ গাজাবাসীর জন্য সমস্যা সৃষ্টি করলেও কিছু মানুষ এই সংকটকে জীবিকার উপায় হিসেবে কাজে লাগাচ্ছেন। মানাল আল-সাইদির মতো কেউ কেউ ছেঁড়া-ফাটা ব্যাংক নোট জোড়াতালি দেওয়ার কাজ করছেন। এতে তাঁদের রুটি-রুজি জুটছে। ৪০ বছর বয়সী এই নারী বলেন, ‘কাজ করে আমি দৈনিক ২০-৩০ শেকেল (৬-৯ ডলার) আয় করতে পারি। যা আয় হয়, তা দিয়ে আমি একটি রুটি, অল্প শিম ও ভাজাপোড়াসহ টুকটাক কিছু কিনতে পারি।’
ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া গাজায় সবজির দাম আকাশছোঁয়া। মানাল আল-সাইদি বলেন, ‘সবজি বা এ জাতীয় অন্য কিছু কেনার মতো অর্থ আমি আয় করতে পানি না। আমার যা আয় হয়, তা দিয়ে কোনোমতে দিন চলে যায়।’
নগদ অর্থসংকটে জর্জরিত গাজার অনেক মানুষকে ডিম বা চিনির মতো প্রয়োজনীয় জিনিস কেনার জন্যও ব্যাংক অ্যাপের মাধ্যমে ইলেকট্রনিক লেনদেনে ভরসা করতে হচ্ছে। এই সংকটে বিক্রেতারা অতিরিক্ত দাম আদায় করছেন।
নগদ অর্থ কখন ব্যাংকে আসবে ঠিক নেই
গাজায় বর্তমানে ত্রাণ সরবরাহ নজরদারি করছে ইসরায়েলে সেনাবাহিনীর ‘কো-অর্ডিনেটর অব গভর্নমেন্ট অ্যাকটিভিটিজ ইন দ্য টেরিটরিজ (সিওজিএটি)’ নামের একটি শাখা। কখন বা কীভাবে নগদ অর্থ গাজায় প্রবেশের অনুমোদন দেওয়া হবে, তা জানতে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা তাৎক্ষণিকভাবে মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
নগদ অর্থের ঘাটতি গাজাবাসীর সংকটকে নানা দিক থেকে আরও নাজুক করে তুলেছে। তাঁবু, খাবার ও ওষুধ কিনতে অনেকে এরই মধ্যে সব সঞ্চয় শেষ করে ফেলেছেন ও হাতের কাছে যে সম্বল ছিল, তা-ও বিক্রি করে দিয়েছেন। কিছু মানুষ টিকে থাকার জন্য বিনিময় পদ্ধতিতে প্রয়োজনীয় জিনিস সংগ্রহ করছেন।
ফিলিস্তিনি ব্যবসায়ী সামির নামরাউতি (৫৩) জানান, এমন কিছু টাকা হাতে আসছে, যা অতিব্যবহারের ফলে চেনার উপায় নেই। কিন্তু তা সত্ত্বেও তিনি এসব টাকা নিচ্ছেন। নামরাউতির ভাষায়, ‘আমার কাছে নোটের সিরিয়াল নম্বর গুরুত্বপূর্ণ। যতক্ষণ সিরিয়াল নম্বর আছে, ততক্ষণ আমি নোটকে টাকা হিসেবে বিবেচনা করি।’