Samakal:
2025-12-02@18:29:09 GMT

এ সময়ে ত্বকের যত্ন

Published: 4th, February 2025 GMT

এ সময়ে ত্বকের যত্ন

বসন্তের সময়গুলো কেমন যেন। সবাই ভাবে বসন্তে চারপাশে বইবে প্রশান্তির সুবাতাস। অথচ এ সময়টায় কখনও ঠান্ডা অনুভব হয়, আবার কখনও বা ভ্যাপসা গরম। সেই সঙ্গে বাতাসে ভেসে বেড়ায় ধুলাবালি, ফুলের রেণু। এসব থেকে অ্যালার্জির সমস্যা বেড়ে যায়। বেড়ে যায় চুলকানি ও ত্বকের অন্যান্য সমস্যা। তাই বসন্তে ত্বকের ব্যাপারে যত্নশীল হতে হবে। নয়তো অল্পতেই ব্রণ, অ্যাগজিমাসহ নানা ধরনের সমস্যা দেখা দেবে।
ভেষজ পণ্যের প্রতিষ্ঠান আমলকীর সিইও নন্দিতা শারমিন জানান, সারাবছরই ত্বকের যত্ন সঠিকভাবে নিতে হবে। ঘুম থেকে ওঠে, বাইরে থেকে ফিরে ভালো মানের ক্লিনজার কিংবা ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধুতে হবে। সেই সঙ্গে ত্বকে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। 
তিনি জানান, শীত-গরম কিংবা বসন্ত, সবসময়ই ত্বককে ময়েশ্চারাইজড রাখতে হবে। বসন্তে হালকা বাতাস থাকার কারণে ত্বকে টানটান অনুভব হয়। তাই শীতে যে ধরনের লোশন বা ক্রিম ব্যবহার করা হয়, এ সময়ও সেগুলো ব্যবহার করা যেতে পারে। যাদের ব্রণের সমস্যা নেই তারা চাইলে তেল মালিশ করতে পারেন। বসন্তে বাইরে রোদের দাপট থাকে। বাইরে গেলে অবশ্যই সানস্ক্রিন লাগাতে হবে। ট্যান দূর করার জন্য বিভিন্ন ধরনের ফেসপ্যাক ব্যবহার করতে পারেন। বেসনের সঙ্গে হলুদের গুঁড়া ও দুধ মিশিয়ে ফেসপ্যাক বানিয়ে লাগাতে পারেন। এতে রোদে পোড়া দাগ দূর হবে। আবার ধুলাবালি থেকে ত্বকে সমস্যা হলে তা দূর হবে– জানান নন্দিতা। 
কোন ধরনের ক্লিনজার ও ময়েশ্চারাইজার?    
শিওর সেল মেডিকেলের চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডা.

তাওহীদা রহমান ইরিন জানান, বসন্তে ত্বকের ধরন অনুযায়ী যত্ন ভিন্ন হবে। বসন্তকালে সকালে জোজোবা অয়েলযুক্ত ক্লিনজার দিয়ে মুখ ধুতে পারেন। এতে ত্বক ভালো থাকবে। রাতে গ্লাইকোলিক এসিডযুক্ত বা স্যালিসালিক এসিডযুক্ত ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধুলে উপকার পাবেন। শুষ্ক ত্বকের অধিকারীরা সারাবছর গোট মিল্ক বা ক্যামোমাইলের নির্যাসযুক্ত ক্লিনজার ব্যবহার করতে পারেন।
ইরিন জানান, যাদের ত্বক স্বাভাবিক তারা ভিটামিন-ই, অ্যান্টিঅক্সিডেন্টযুক্ত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে পারেন। অবশ্য সব ঋতুতে ত্বকে হায়ালুরনিক এসিডযুক্ত সিরাম ব্যবহার করা যেতে পারে। এটি সব ধরনের ত্বকের জন্য মানানসই। শুষ্ক ও স্বাভাবিক ত্বকের ক্ষেত্রে এর সঙ্গে আরও কিছু ময়েশ্চারাইজার উপাদান মেশাতে হবে। যাদের ত্বক অনেক শুষ্ক, তারা সিরামাইড, লিপিড ফ্যাটি এসিডযুক্ত ক্রিমি ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে পারেন। 
প্রাকৃতিক উপাদানে রূপচর্চা
lত্বকের সৌন্দর্য বাড়াতে ঘরে বসেই রূপচর্চা করতে পারেন। এ জন্য শসা কুচি করে তা থেকে রস বের করে নিন। এর সঙ্গে এক চামচ চিনি ভালো করে মিশিয়ে কিছুক্ষণ ফ্রিজে রেখে দিন। এটি ত্বকে মেখে ১০ মিনিট রেখে ধুয়ে নিন। শসার রস ত্বককে সতেজ ও কোমল করবে। এর ব্যবহারে ত্বকের পোড়া ভাব দূর হবে। 
lএকটি টমেটো চটকে তার সঙ্গে আধা চা চামচ মধু মিশিয়ে নিন। এই প্যাক নিয়মিত ব্যবহারে ত্বকের দাগছোপ মিলিয়ে যাবে।
lচাইলে মসুর ডাল দিয়েও রূপচর্চা করতে পারেন। এ জন্য দুই চামচ মসুর ডাল সারারাত ভিজিয়ে রেখে পরদিন সকালে তা বেটে নিন। তার সঙ্গে অল্প দুধ ও আমন্ড তেল মিশিয়ে একটা মিশ্রণ তৈরি করে নিন। এই প্যাক মুখে মেখে ১০ মিনিট অপেক্ষা করুন। এরপর পানি দিয়ে ধুয়ে নিন। মসুর ডাল ত্বকের ঔজ্জ্বল্য বাড়াতে কাজ করবে।  
lএকটি ডিমের সাদা অংশের সঙ্গে অর্ধেক লেবুর রস মিশিয়েও ত্বকে লাগাতে পারেন। ২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। এতেও ত্বক কোমল ও টানটান হবে। যাদের লেবুর রসে এলার্জি হয়, তারা এটি এড়িয়ে চলুন।
lযাদের ত্বক অনেক শুষ্ক তারা পাকা কলা বা পাকা পেঁপের সঙ্গে কয়েক ফোঁটা মধু মিশিয়ে নিন। এটি মুখে লাগিয়ে ১০ মিনিট অপেক্ষা করুন। এরপর ধুয়ে ফেলুন।
lযাদের ত্বক তৈলাক্ত, তারা শসা, আপেল, কমলার রস ও টক দই একসঙ্গে মিশিয়ে নিন। এ মিশ্রণ মুখে লাগিয়ে ১০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। 
lসপ্তাহে একদিন ত্বক স্ক্রাব করা জরুরি। এ জন্য চিনি, লেবুর রস, অলিভ অয়েল ও চালের গুঁড়া একসঙ্গে মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণ দিয়ে কিছুক্ষণ ত্বক ম্যাসাজ করে ধুয়ে নিন। 
বাড়তি টিপস 
ত্বক সতেজ ও সুন্দর রাখতে আর্দ্রতা রক্ষা করতে হবে। এ জন্য প্রতিদিন ৮-১০ গ্লাস পানি পান করতে হবে। মৌসুমি ফল ও সবজি বেশি করে খেতে হবে। ভাজাপোড়া ও তৈলাক্ত খাবার বাদ দিতে হবে। রাত না জেগে পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমাতে হবে। কেননা ঠিকভাবে না ঘুমালে ত্বকের কোলাজেন কমে যায়, ত্বকে বয়সের ছাপ পড়ে। v
মডেল: হৃদি; ছবি: আর্কাইভ

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র ব যবহ র করত ১০ ম ন ট এ জন য ধরন র বসন ত সমস য

এছাড়াও পড়ুন:

সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক: গ্রাহক নেই, কাজও নেই

একসময় গ্রাহকের ভিড় সামলাতেই যাদের ঘাম ছুটে যেত, এখন তারা অলস সময় পার করছেন ব্যাংকের মধ্যে বসে। শাখা পর্যায়ে এখনো অর্থ ছাড় না হওয়ায় গ্রাহকের আনাগোনা শুরু হয়নি এসব ব্যাংকে। কাজ নিয়েও দেখা যায়নি ব্যতিব্যস্ততা।

লুটপাটে ফোকলা করে ফেলা দেশের পাঁচটি শরিয়াভিত্তিক ব্যাংককে বাঁচিয়ে রাখতে এগুলোর কার্যক্রম এক ছাতার নিচে নিয়ে এসেছে বাংলাদেশ ব্যাংক; ব্যাংকগুলো মিলে ‘সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক’ নামে একটি একক ব্যাংক যাত্রা শুরু করেছে, ২ ডিসেম্বর যার লাইসেন্সও দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগের প্রজ্ঞাপনের মাধ‌্যমে ‘সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক পিএলসি’কে তফসিলি ব্যাংকের মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। তবে ২ ডিসেম্বর পর্যন্ত কোনো শাখা অর্থ পায়নি।

মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) রাজধানী ঢাকার মতিঝিল, পল্টন, তোপখানা রোড ও কাকরাইলে একীভূত হওয়া ব্যাংকগুলোর বেশ কয়েকটি শাখায় ঘুরে দেখা যায়, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাজের কোনো চাপ নেই; গ্রাহকদেরও উপস্থিতি নেই।

একীভূত হওয়া পাঁচ ব্যাংক হলো ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক ও এক্সিম ব্যাংক।

এগুলোর মধ্যে মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের তোপখানা রোড শাখায় গিয়ে দেখা যায় সুনশান নীরবতা। কর্মকর্তারা নিজেদের ডেস্কে কাজ করছেন। কাউন্টারে নেই কোনো ভিড়। টাকা গণনার মেশিনের কট কট শব্দ নেই। ডিজিটাল কাউন্টিং মেশিনে সিরিয়াল দেওয়া-নেওয়ার কোনো ব‌্যস্ততাও দেখা গেল না।

প্রায় এক ঘণ্টার মধ্যে শাখাটিতে এলেন মাত্র একজন গ্রাহক। কথা হলো তার সঙ্গে। মাসিক সঞ্চয় প্রকল্পের (ডিপিএস) টাকা জমা দিতে এসেছেন তিনি। কয়েক মিনিটের মধ্যে আরেকজন গ্রাহককে পাওয়া গেল। তবে তারও একই প্রয়োজন।

প্রথম যে গ্রাহক ব‌্যাংকটির এই শাখায় আসেন তার নাম আবুল হোসেন। তিনি বলেন, “আমার পাঁচ বছর মেয়াদি একটা ডিপিএস আছে। সেই ডিপিএসের মাসিক কিস্তির টাকা জমা দিতে এসেছি। শুনেছি কয়েকটি ব‌্যাংক একত্র করে একটি ব‌্যাংক করেছে সরকার; যার মধ‌্যে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকও রয়েছে। যেহেতু সরকার ব‌্যাংকের দায়িত্ব নিয়েছে, তাই  বিশ্বাস আরো বেড়ে গেছে। ডিপিএসের টাকা পাবই। তাই নিয়মিত টাকা জমা দিয়ে যাচ্ছি।”

একীভূত ব্যাংকের মূলধন হিসেবে সরকার দিয়েছে ২০ হাজার কোটি টাকা। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ থেকে এই টাকা ব্যাংকটির অ্যাকাউন্টে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। আর আমানতকারীদের শেয়ার থেকে ১৫ হাজার কোটি টাকা নিয়ে মোট মূলধন করা হচ্ছে ৩৫ হাজার কোটি টাকা।

এই বিষয়ে জানতে কথা হয় ফার্স্ট সিকিউরিটির তোপখানা রোড শাখার ব‌্যবস্থাপক তৌফিক এলাহীর সঙ্গে। তিনি বলেন, “শুনেছি সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংকের জন্য বাজেট থেকে ২০ হাজার কোটি টাকা দিয়েছে সরকার। কিন্তু আমাদের শাখা পর্যায়ে এখনো কোনো টাকা বা নির্দেশনা পৌঁছায়নি।”

সাধারণ গ্রাহকদের টাকা দেওয়ার মতো অবস্থা তাদের শাখার এখনো হয়নি জানিয়ে তৌফিক এলাহী বলেন, “ব্যাংকের লিখিত নির্দেশনা ছাড়া আমরা কিছুই করতে পারব না। আমরা অপেক্ষায় আছি। আমাদের শাখায় অর্থ ও নির্দেশনা এলে সেই মোতাবেক গ্রাহক সেবায় নিয়োজিত হব।”

গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের নয়াপল্টন শাখায় গিয়ে প্রায় একই চিত্র দেখা গেছে। অফিসের ভেতর সুনশান অবস্থা। কর্মকর্তারা নিজেদের ডেস্কে অলস সময় পার করছেন। নেই কোনো গ্রাহক উপস্থিতি।

দুপুরের পর এক্সিম ব্যাংকের মতিঝিল শাখায় গিয়ে কোনো কর্মচাঞ্চল্য চোখে পড়েনি। অথচ এই শাখায় একসময় গ্রাহকদের ভিড় সামলাতে হিমশিম খেতে হতো কর্মকর্তা-কর্মচারীদের।

এই শাখার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে অনুমতি না থাকায় তারা সংবাদমাধ্যমকে কিছু জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এমনকি শাখা ব‌্যবস্থাপকও কথা বললেন না। তিনি শুধু এতটুকু বলেন যে, “ওপর থেকে নিষেধ রয়েছে যেন গণমাধ‌্যমের সঙ্গে আলাপ না করি।”

একীভূতি ব্যাংকটিকে গ্রাহকের আস্থায় ফেরাতে বাংলাদেশ ব্যাংক তৎপর রয়েছে। সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংকের নবনিযুক্ত চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে একীভূত ব্যাংকটির সার্বিক কার্যক্রম শুরু করার বিষয়ে কথা হয়। গভর্নরের কাছ থেকে বিস্তারিত দিকনির্দেশনা পেয়েছেন তিনি।

বৈঠক শেষে আইয়ুব মিয়া বলেন, “গ্রাহকের আস্থা ফেরানোই হবে সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংকের প্রথম কাজ।”

“সরকারি মালিকানায় একটি ইসলামী ব্যাংক কার্যক্রম শুরু করেছে, এটা জাতির জন্য সুসংবাদ,“ যোগ করেন তিনি।

 ব্যাংকটি সঠিকভাবে প্রতিষ্ঠা করতে অনেক কারিগরি টিম কাজ করছে জানিয়ে আইয়ুব মিয়া বলেন,“দায়িত্ব নেওয়ার পর আমাদের প্রধান কাজ হবে আমানতকারীদের আস্থা ফেরান। সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক জাতির কাছে আস্থার প্রতীক হয়ে উঠবে।”

গভর্নরের সঙ্গে সাক্ষাৎ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “ব্যাংকের যাবতীয় কার্যক্রম সম্পর্কে ধারণা নেওয়া, আইন-কানুন পর্যালোচনা করা এবং ব্যাংকের ভিশন ও মিশন সম্পর্কে ধারণা নেওয়া বৈঠকের প্রধান লক্ষ্য ছিল। পাঁচটি মিলে একটি পূর্ণাঙ্গ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করাই প্রধান চ্যালেঞ্জ।”

সোমবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে লাইসেন্স ইস্যুর পর মঙ্গলবার থেকে সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংকের কার্যক্রম শুরু হয়ে গেছে বলেও মন্তব্য করেন সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংকের নতুন এই চেয়ারম্যান।

ঢাকা/রাসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ