Samakal:
2025-11-03@11:02:07 GMT

এ সময়ে ত্বকের যত্ন

Published: 4th, February 2025 GMT

এ সময়ে ত্বকের যত্ন

বসন্তের সময়গুলো কেমন যেন। সবাই ভাবে বসন্তে চারপাশে বইবে প্রশান্তির সুবাতাস। অথচ এ সময়টায় কখনও ঠান্ডা অনুভব হয়, আবার কখনও বা ভ্যাপসা গরম। সেই সঙ্গে বাতাসে ভেসে বেড়ায় ধুলাবালি, ফুলের রেণু। এসব থেকে অ্যালার্জির সমস্যা বেড়ে যায়। বেড়ে যায় চুলকানি ও ত্বকের অন্যান্য সমস্যা। তাই বসন্তে ত্বকের ব্যাপারে যত্নশীল হতে হবে। নয়তো অল্পতেই ব্রণ, অ্যাগজিমাসহ নানা ধরনের সমস্যা দেখা দেবে।
ভেষজ পণ্যের প্রতিষ্ঠান আমলকীর সিইও নন্দিতা শারমিন জানান, সারাবছরই ত্বকের যত্ন সঠিকভাবে নিতে হবে। ঘুম থেকে ওঠে, বাইরে থেকে ফিরে ভালো মানের ক্লিনজার কিংবা ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধুতে হবে। সেই সঙ্গে ত্বকে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। 
তিনি জানান, শীত-গরম কিংবা বসন্ত, সবসময়ই ত্বককে ময়েশ্চারাইজড রাখতে হবে। বসন্তে হালকা বাতাস থাকার কারণে ত্বকে টানটান অনুভব হয়। তাই শীতে যে ধরনের লোশন বা ক্রিম ব্যবহার করা হয়, এ সময়ও সেগুলো ব্যবহার করা যেতে পারে। যাদের ব্রণের সমস্যা নেই তারা চাইলে তেল মালিশ করতে পারেন। বসন্তে বাইরে রোদের দাপট থাকে। বাইরে গেলে অবশ্যই সানস্ক্রিন লাগাতে হবে। ট্যান দূর করার জন্য বিভিন্ন ধরনের ফেসপ্যাক ব্যবহার করতে পারেন। বেসনের সঙ্গে হলুদের গুঁড়া ও দুধ মিশিয়ে ফেসপ্যাক বানিয়ে লাগাতে পারেন। এতে রোদে পোড়া দাগ দূর হবে। আবার ধুলাবালি থেকে ত্বকে সমস্যা হলে তা দূর হবে– জানান নন্দিতা। 
কোন ধরনের ক্লিনজার ও ময়েশ্চারাইজার?    
শিওর সেল মেডিকেলের চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডা.

তাওহীদা রহমান ইরিন জানান, বসন্তে ত্বকের ধরন অনুযায়ী যত্ন ভিন্ন হবে। বসন্তকালে সকালে জোজোবা অয়েলযুক্ত ক্লিনজার দিয়ে মুখ ধুতে পারেন। এতে ত্বক ভালো থাকবে। রাতে গ্লাইকোলিক এসিডযুক্ত বা স্যালিসালিক এসিডযুক্ত ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধুলে উপকার পাবেন। শুষ্ক ত্বকের অধিকারীরা সারাবছর গোট মিল্ক বা ক্যামোমাইলের নির্যাসযুক্ত ক্লিনজার ব্যবহার করতে পারেন।
ইরিন জানান, যাদের ত্বক স্বাভাবিক তারা ভিটামিন-ই, অ্যান্টিঅক্সিডেন্টযুক্ত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে পারেন। অবশ্য সব ঋতুতে ত্বকে হায়ালুরনিক এসিডযুক্ত সিরাম ব্যবহার করা যেতে পারে। এটি সব ধরনের ত্বকের জন্য মানানসই। শুষ্ক ও স্বাভাবিক ত্বকের ক্ষেত্রে এর সঙ্গে আরও কিছু ময়েশ্চারাইজার উপাদান মেশাতে হবে। যাদের ত্বক অনেক শুষ্ক, তারা সিরামাইড, লিপিড ফ্যাটি এসিডযুক্ত ক্রিমি ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে পারেন। 
প্রাকৃতিক উপাদানে রূপচর্চা
lত্বকের সৌন্দর্য বাড়াতে ঘরে বসেই রূপচর্চা করতে পারেন। এ জন্য শসা কুচি করে তা থেকে রস বের করে নিন। এর সঙ্গে এক চামচ চিনি ভালো করে মিশিয়ে কিছুক্ষণ ফ্রিজে রেখে দিন। এটি ত্বকে মেখে ১০ মিনিট রেখে ধুয়ে নিন। শসার রস ত্বককে সতেজ ও কোমল করবে। এর ব্যবহারে ত্বকের পোড়া ভাব দূর হবে। 
lএকটি টমেটো চটকে তার সঙ্গে আধা চা চামচ মধু মিশিয়ে নিন। এই প্যাক নিয়মিত ব্যবহারে ত্বকের দাগছোপ মিলিয়ে যাবে।
lচাইলে মসুর ডাল দিয়েও রূপচর্চা করতে পারেন। এ জন্য দুই চামচ মসুর ডাল সারারাত ভিজিয়ে রেখে পরদিন সকালে তা বেটে নিন। তার সঙ্গে অল্প দুধ ও আমন্ড তেল মিশিয়ে একটা মিশ্রণ তৈরি করে নিন। এই প্যাক মুখে মেখে ১০ মিনিট অপেক্ষা করুন। এরপর পানি দিয়ে ধুয়ে নিন। মসুর ডাল ত্বকের ঔজ্জ্বল্য বাড়াতে কাজ করবে।  
lএকটি ডিমের সাদা অংশের সঙ্গে অর্ধেক লেবুর রস মিশিয়েও ত্বকে লাগাতে পারেন। ২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। এতেও ত্বক কোমল ও টানটান হবে। যাদের লেবুর রসে এলার্জি হয়, তারা এটি এড়িয়ে চলুন।
lযাদের ত্বক অনেক শুষ্ক তারা পাকা কলা বা পাকা পেঁপের সঙ্গে কয়েক ফোঁটা মধু মিশিয়ে নিন। এটি মুখে লাগিয়ে ১০ মিনিট অপেক্ষা করুন। এরপর ধুয়ে ফেলুন।
lযাদের ত্বক তৈলাক্ত, তারা শসা, আপেল, কমলার রস ও টক দই একসঙ্গে মিশিয়ে নিন। এ মিশ্রণ মুখে লাগিয়ে ১০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। 
lসপ্তাহে একদিন ত্বক স্ক্রাব করা জরুরি। এ জন্য চিনি, লেবুর রস, অলিভ অয়েল ও চালের গুঁড়া একসঙ্গে মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণ দিয়ে কিছুক্ষণ ত্বক ম্যাসাজ করে ধুয়ে নিন। 
বাড়তি টিপস 
ত্বক সতেজ ও সুন্দর রাখতে আর্দ্রতা রক্ষা করতে হবে। এ জন্য প্রতিদিন ৮-১০ গ্লাস পানি পান করতে হবে। মৌসুমি ফল ও সবজি বেশি করে খেতে হবে। ভাজাপোড়া ও তৈলাক্ত খাবার বাদ দিতে হবে। রাত না জেগে পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমাতে হবে। কেননা ঠিকভাবে না ঘুমালে ত্বকের কোলাজেন কমে যায়, ত্বকে বয়সের ছাপ পড়ে। v
মডেল: হৃদি; ছবি: আর্কাইভ

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র ব যবহ র করত ১০ ম ন ট এ জন য ধরন র বসন ত সমস য

এছাড়াও পড়ুন:

প্রস্থেটিক মেকআপ আর্টে সোনালী মিতুয়ার বাজিমাত

বাংলাদেশের মেকআপ আর্ট জগতে নীরবে নতুনত্ব যোগ করে যাচ্ছেন সোনালী মিতুয়া। তার শৈল্পিক ইলিউশন এবং বডি পেইন্টিংগুলো আন্তর্জাতিক মানের, যা দেখে চোখ ফেরানো দায়। বর্তমানে ফিনল্যান্ডে মেকআপের ওপর উচ্চশিক্ষা নিচ্ছেন এই শিল্পী, যার ক্যানভাসে শৈশবের প্রথম গন্ধ ছিল তেল রং আর থিনারের তীব্রতা। মেকআপ ব্যবহার করে তিনি যে ক্যানভাস তৈরি করেন-তা এক কথায় অনন্য, অসাধারণ। 

সোনালী মিতুয়া কখনও তার মুখে ফুটে ওঠে ফাটল ধরা পৃথিবী, যেখান থেকে গজিয়ে ওঠে সবুজ লতা। কখনও দেখা যায় তার মুখটাই এক অর্ধেক যন্ত্র, অর্ধেক প্রকৃতি, যেন মানুষ আর মেশিনের মাঝের এক অদ্ভুত, কাব্যময় দ্বন্দ্ব।আর কখনও সেই মুখটাই অন্ধকারে মিলিয়ে যায়, শুধু দেখা যায় এক ভয়ঙ্কর কালো গহ্বর — যেন মানুষের শূন্য আত্মা। এগুলো কোনো সিনেমার দৃশ্য না।এগুলো এক তরুণী মেকআপ আর্টিস্টের সৃষ্ট জীবন্ত শিল্পকর্ম।

আরো পড়ুন:

একা বাস করতে পারে যে পাখি

কেউ কটূক্তি করলে কী করবেন?

সোনালী মিতুয়ার মেকআপে একটা গল্প, একটা দর্শন, একটা গভীর বার্তা লুকিয়ে থাকে। যেখানে অধিকাংশ মানুষ মেকআপকে শুধু প্রসাধনের জগতে দেখে, সে সেখানে মেকআপকে তুলেছে এক উচ্চমাত্রার শিল্প হিসেবে। তার হাতে রঙ মানে—চামড়ার ওপরে নয়, বরং আত্মার ভাষা প্রকাশের এক মাধ্যম।

তার কাজে দেখা যায় প্রস্থেটিক মেকআপের প্রভাব— যেখানে মুখ বদলে যায়, গড়ে ওঠে নতুন রূপ, নতুন চরিত্র। এমন কৌশল একদিন তাকে সিনেমার পর্দায় প্রস্থেটিক আর্টিস্ট হিসেবে বড় জায়গায় নিয়ে যাবে—
এ কথা বলার জন্য বিশেষজ্ঞও হতে হয় না। 

এই মেয়েটির সবচেয়ে বড় শক্তি তার কল্পনাশক্তি। সে মুখের ভেতরেই ফুটিয়ে তোলে গল্প—একদিকে প্রকৃতি, ফুল, প্রজাপতি; অন্যদিকে প্রযুক্তি, ধ্বংস আর শূন্যতা। দেখলে মনে হয়, এই দুইয়ের টানাপোড়েনেই গড়ে উঠেছে তার শিল্পজগৎ।

বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের জন্য এই মেয়েটি এক অনুপ্রেরণা। সে প্রমাণ করছে—শিল্পের ভাষা যদি শক্ত হয়, তাহলে দেশের সীমা পেরিয়ে বিশ্বেও পৌঁছানো যায়। যেখানে মেকআপকে এখনো অনেকেই কেবল সাজের কাজ মনে করেন, এই মেয়েটি সেখানে দেখিয়েছে — মেকআপও হতে পারে দর্শন, প্রতিবাদ আর সৃষ্টির ক্যানভাস। 

তিনি জানেন,  প্রস্থেটিক আর্টে (বিশেষত কৃত্রিম অঙ্গ, ক্ষত বা ফ্যান্টাসি চরিত্র তৈরি) করা যায় দক্ষতার সাথে।  বর্তমানে বাংলাদেশের সিনেমায় যেখানে প্রস্থেটিকের ব্যবহার খুবই সীমিত, সেখানে সোনালী মিতুয়ার মতো একজন আন্তর্জাতিক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিল্পী আছেন, তার হাতেই তৈরি হতে পারে বাংলাদেশের ইতিহাসের চরিত্রদের নিখুঁত রূপ, অথবা আমাদের ফ্যান্টাসি সিনেমার ভিনগ্রহের প্রাণী।

সোনালী মিতুয়ার কাজগুলো দেখলেই বোঝা যায়, তিনি মেকআপকে স্রেফ সৌন্দর্যবর্ধনের মাধ্যম হিসেবে দেখেন না, বরং এটিকে একটি শক্তিশালী গল্প বলার হাতিয়ার মনে করেন। 

একটা ছবিতে দেখা যাচ্ছে একজন মানুষ প্রকৃতির মাঝে ফাটল ধরা পাথরের মতো এক রূপ ধারণ করেছেন। সবুজ, হলুদ ও লালের মিশ্রণে চোখের অংশটি গভীর এবং রহস্যময়, আর ফাটলের ভেতর দিয়ে বেরিয়ে আসা লতা-পাতা জীবনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। এটি তার পরিবেশ-সচেতনতা এবং ফ্যান্টাসি আর্টের দক্ষতা প্রমাণ করে।

সাদাকালো স্কেচের মতো দেখতে এই মেকআপটি অত্যন্ত কঠিন এবং চোখে পড়ার মতো। মুখের প্রতিটি অংশে পেন্সিল বা চারকোল দিয়ে আঁকা হ্যাচিংয়ের মতো স্ট্রোকগুলো ত্রিমাত্রিক চেহারাটিকে দ্বিমাত্রিক কমিক-বুক বা নয়ার চলচ্চিত্রের চরিত্র হিসেবে ফুটিয়ে তুলেছে।

চোখ ও মুখের চারপাশে মাকড়সার জাল এবং ফুলা, রক্তবর্ণ চোখের পাপড়ি ভীতি ও কষ্টের এক শক্তিশালী অনুভূতি জাগায়। এটি বিশেষ করে হ্যালোইন বা হরর থিমের জন্য পারফেক্ট।

গভীর অন্ধকারে তোলা এই ছবিটি ‘অন্ধকার গহ্বর’ বা ‘কৃষ্ঞগহ্বর’ থিমের একটি চমকপ্রদ ইলিউশন মেকআপ। নিখুঁত কনট্যুরিং এবং রঙের ব্যবহারে মুখের এক অংশে যেন সত্যিই একটি ফাঁকা, গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কারা বেশি কাঁদেন? 
  • বর্তমান সংকটের জন্য সরকার দায়ী, দলগুলোর চাপে সিদ্ধান্ত বদল
  • প্রস্থেটিক মেকআপ আর্টে সোনালী মিতুয়ার বাজিমাত