বসন্তের সময়গুলো কেমন যেন। সবাই ভাবে বসন্তে চারপাশে বইবে প্রশান্তির সুবাতাস। অথচ এ সময়টায় কখনও ঠান্ডা অনুভব হয়, আবার কখনও বা ভ্যাপসা গরম। সেই সঙ্গে বাতাসে ভেসে বেড়ায় ধুলাবালি, ফুলের রেণু। এসব থেকে অ্যালার্জির সমস্যা বেড়ে যায়। বেড়ে যায় চুলকানি ও ত্বকের অন্যান্য সমস্যা। তাই বসন্তে ত্বকের ব্যাপারে যত্নশীল হতে হবে। নয়তো অল্পতেই ব্রণ, অ্যাগজিমাসহ নানা ধরনের সমস্যা দেখা দেবে।
ভেষজ পণ্যের প্রতিষ্ঠান আমলকীর সিইও নন্দিতা শারমিন জানান, সারাবছরই ত্বকের যত্ন সঠিকভাবে নিতে হবে। ঘুম থেকে ওঠে, বাইরে থেকে ফিরে ভালো মানের ক্লিনজার কিংবা ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধুতে হবে। সেই সঙ্গে ত্বকে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে।
তিনি জানান, শীত-গরম কিংবা বসন্ত, সবসময়ই ত্বককে ময়েশ্চারাইজড রাখতে হবে। বসন্তে হালকা বাতাস থাকার কারণে ত্বকে টানটান অনুভব হয়। তাই শীতে যে ধরনের লোশন বা ক্রিম ব্যবহার করা হয়, এ সময়ও সেগুলো ব্যবহার করা যেতে পারে। যাদের ব্রণের সমস্যা নেই তারা চাইলে তেল মালিশ করতে পারেন। বসন্তে বাইরে রোদের দাপট থাকে। বাইরে গেলে অবশ্যই সানস্ক্রিন লাগাতে হবে। ট্যান দূর করার জন্য বিভিন্ন ধরনের ফেসপ্যাক ব্যবহার করতে পারেন। বেসনের সঙ্গে হলুদের গুঁড়া ও দুধ মিশিয়ে ফেসপ্যাক বানিয়ে লাগাতে পারেন। এতে রোদে পোড়া দাগ দূর হবে। আবার ধুলাবালি থেকে ত্বকে সমস্যা হলে তা দূর হবে– জানান নন্দিতা।
কোন ধরনের ক্লিনজার ও ময়েশ্চারাইজার?
শিওর সেল মেডিকেলের চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডা.
ইরিন জানান, যাদের ত্বক স্বাভাবিক তারা ভিটামিন-ই, অ্যান্টিঅক্সিডেন্টযুক্ত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে পারেন। অবশ্য সব ঋতুতে ত্বকে হায়ালুরনিক এসিডযুক্ত সিরাম ব্যবহার করা যেতে পারে। এটি সব ধরনের ত্বকের জন্য মানানসই। শুষ্ক ও স্বাভাবিক ত্বকের ক্ষেত্রে এর সঙ্গে আরও কিছু ময়েশ্চারাইজার উপাদান মেশাতে হবে। যাদের ত্বক অনেক শুষ্ক, তারা সিরামাইড, লিপিড ফ্যাটি এসিডযুক্ত ক্রিমি ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে পারেন।
প্রাকৃতিক উপাদানে রূপচর্চা
lত্বকের সৌন্দর্য বাড়াতে ঘরে বসেই রূপচর্চা করতে পারেন। এ জন্য শসা কুচি করে তা থেকে রস বের করে নিন। এর সঙ্গে এক চামচ চিনি ভালো করে মিশিয়ে কিছুক্ষণ ফ্রিজে রেখে দিন। এটি ত্বকে মেখে ১০ মিনিট রেখে ধুয়ে নিন। শসার রস ত্বককে সতেজ ও কোমল করবে। এর ব্যবহারে ত্বকের পোড়া ভাব দূর হবে।
lএকটি টমেটো চটকে তার সঙ্গে আধা চা চামচ মধু মিশিয়ে নিন। এই প্যাক নিয়মিত ব্যবহারে ত্বকের দাগছোপ মিলিয়ে যাবে।
lচাইলে মসুর ডাল দিয়েও রূপচর্চা করতে পারেন। এ জন্য দুই চামচ মসুর ডাল সারারাত ভিজিয়ে রেখে পরদিন সকালে তা বেটে নিন। তার সঙ্গে অল্প দুধ ও আমন্ড তেল মিশিয়ে একটা মিশ্রণ তৈরি করে নিন। এই প্যাক মুখে মেখে ১০ মিনিট অপেক্ষা করুন। এরপর পানি দিয়ে ধুয়ে নিন। মসুর ডাল ত্বকের ঔজ্জ্বল্য বাড়াতে কাজ করবে।
lএকটি ডিমের সাদা অংশের সঙ্গে অর্ধেক লেবুর রস মিশিয়েও ত্বকে লাগাতে পারেন। ২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। এতেও ত্বক কোমল ও টানটান হবে। যাদের লেবুর রসে এলার্জি হয়, তারা এটি এড়িয়ে চলুন।
lযাদের ত্বক অনেক শুষ্ক তারা পাকা কলা বা পাকা পেঁপের সঙ্গে কয়েক ফোঁটা মধু মিশিয়ে নিন। এটি মুখে লাগিয়ে ১০ মিনিট অপেক্ষা করুন। এরপর ধুয়ে ফেলুন।
lযাদের ত্বক তৈলাক্ত, তারা শসা, আপেল, কমলার রস ও টক দই একসঙ্গে মিশিয়ে নিন। এ মিশ্রণ মুখে লাগিয়ে ১০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন।
lসপ্তাহে একদিন ত্বক স্ক্রাব করা জরুরি। এ জন্য চিনি, লেবুর রস, অলিভ অয়েল ও চালের গুঁড়া একসঙ্গে মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণ দিয়ে কিছুক্ষণ ত্বক ম্যাসাজ করে ধুয়ে নিন।
বাড়তি টিপস
ত্বক সতেজ ও সুন্দর রাখতে আর্দ্রতা রক্ষা করতে হবে। এ জন্য প্রতিদিন ৮-১০ গ্লাস পানি পান করতে হবে। মৌসুমি ফল ও সবজি বেশি করে খেতে হবে। ভাজাপোড়া ও তৈলাক্ত খাবার বাদ দিতে হবে। রাত না জেগে পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমাতে হবে। কেননা ঠিকভাবে না ঘুমালে ত্বকের কোলাজেন কমে যায়, ত্বকে বয়সের ছাপ পড়ে। v
মডেল: হৃদি; ছবি: আর্কাইভ
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র ব যবহ র করত ১০ ম ন ট এ জন য ধরন র বসন ত সমস য
এছাড়াও পড়ুন:
‘ক্ষুদে ম্যারাডোনা’ জিসানের দায়িত্ব নিলেন তারেক রহমান
কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার জালালপুর ইউনিয়নের ফেকামারা ডুলিকান্দা গ্রামের ক্ষুদে ফুটবলার জিসানের পাশে দাঁড়িয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। স্থানীয়রা ফুটবলে জিসানের দক্ষতায় মুগ্ধ হয়ে তাকে ‘ক্ষুদে ম্যারাডোনা’ বলে ডাকেন।
তারেক রহমানের পক্ষে সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে জিসানের গ্রামের বাড়িতে যান বিএনপির ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক এবং জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল হক। তিনি জিসানের বাবা ও এলাকাবাসীকে এ খবরটি জানিয়ে আসেন।
উপজেলার জালালপুর ইউনিয়নের ফেকামারা ডুলিকান্দা গ্রামের অটোরিকশাচালক জজ মিয়ার ছেলে জিসান। মাত্র ১০ বছর বয়সী এই প্রতিভাবান ফুটবলারের অসাধারণ দক্ষতার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়। স্থানীয় চর ঝাকালিয়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির ছাত্র সে।
কখনও এক পায়ে, কখনও দু’পায়ে, কখনও পিঠে ফুটবল রেখে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কসরত করে জিসান। দেখে মনে হবে, ফুটবল যেনো তার কথা শুনছে। এসব কসরতের ভিডিও নেট দুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে।
অনলাইনে জিসানের ফুটবল নৈপুণ্য দেখে মুগ্ধ হন তারেক রহমান। তিনি জিসানের ভবিষ্যৎ গড়ার দায়িত্ব নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তার পক্ষে গতকাল সোমবার বিকেলে জিসানের বাড়িতে যান বিএনপির ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক এবং জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল হক।
জিসানকে উপহার হিসেবে বুট, জার্সি ও ফুটবলসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম তুলে দেন তিনি। এছাড়া জিসানের পরিবারকে আর্থিক সহায়তাও দেওয়া হয়।
জিসানের ফুটবল খেলা নিজ চোখে দেখে মুগ্ধ আমিনুল হক বলেন, “জিসান ফুটবলে ন্যাচারাল ট্যালেন্ট। তারেক রহমান জিসানের প্রশিক্ষণ, লেখাপড়া ও ভবিষ্যতের সকল দায়িত্ব নিয়েছেন। তাছাড়া প্রতিমাসে জিসানের লেখাপড়া, ফুটবল প্রশিক্ষণ ও পরিবারের ব্যয়ভারের জন্য টাকা পাঠানো হবে।”
জিসান জানায়, মোবাইলে ম্যারাডোনা, মেসি ও রোনালদোর খেলা দেখে নিজেই ফুটবলের নানা কৌশল শিখেছে। নিজ চেষ্টায় সে এসব রপ্ত করেছে।
জিসানের বাবা জজ মিয়া বলেন, “আমি বিশ্বাস করতাম, একদিন না একদিন কেউ না কেউ আমার ছেলের পাশে দাঁড়াবে। আজ আমার সেই বিশ্বাস পূর্ণ হয়েছে।”
ঢাকা/রুমন/এস