ভয়ঙ্কর রূপে হাজির ‘ইনসাফ’-এর মোশাররফ করিম
Published: 4th, May 2025 GMT
চোখে সানগ্লাস, মুখে ফ্রেঞ্চকাট দাড়ি, পোশাকে রক্তের ছিটেফোঁটা, হাতে কুড়াল, ঘাড়ে ঝুলানো থেটোস্কোপ, মেরে পায়ের নিচে ফেলে রেখেছেন একজনকে– দেখেই বোঝা যাচ্ছে, প্রতিশোধের নেশায় দাঁড়িয়ে আছেন অভিনেতা মোশাররফ করিম।
এমন ভয়ঙ্কর চরিত্রে মোশাররফ করিমকে আগে দেখা যায়নি কখনও। দেখা যাবে হয়তো এমনটি তার দর্শকরা ভাবেওনি। অথচ সেই ভয়ঙ্কর রূপেই অভিনেতাকে এবার দেখলেন; যা একেবারে চেনা ছকের বাইরে, ভিন্ন একজন।
রোববার সন্ধ্যায় নির্মাতা সঞ্জয় সমদ্দারের ‘ইনসাফ’ সিনেমায় দ্বিতীয় পোস্টার প্রকাশ করা হয়। পোস্টারটিতেই মোশাররফ করিমকে এমন ভয়ঙ্কর রূপে দেখা গেল। সেই সঙ্গে পরিচালক ইঙ্গিত দিলেন ঈদুল আজহায় যে মোশাররফ সামনে আসছেন তিনি। চিরচেনা নন। ভিন্ন একজন, ভয়ঙ্কর একজন।
নির্মাতা আগেই জানিয়েছিলেন, অ্যাকশন থ্রিলার গল্পের সিনেমা ‘ইনসাফ’। এতে দানবীয় ও ভয়ঙ্কর রূপে দেখা যাবে মোশাররফ করিমকে। পোস্টার উন্মোচন যেন সেটারই আভাস দিল। ‘ইনসাফ’ সিনেমায় নায়ক হিসেবে আছেন শরীফুল রাজ। ধুন্ধুমার অ্যাকশন অবতারে এতে রাজকে উপস্থাপন করা হবে। সিনেমায় শরীফুল রাজের বিপরীতে নায়িকা হিসেবে থাকছেন তাসনিয়া ফারিণ। আর এ সিনেমার মাধ্যমেই ঢাকার চলচ্চিত্রের পুরোপুরি কমার্শিয়াল সিনেমার নায়িকা হিসেবে অভিষেক হচ্ছে তার।
গত ২৫ এপ্রিল প্রকাশিত হয় ফার্স্ট লুক পোস্টার। হাতে রক্তাক্ত কুড়াল, ঠোঁটে মুচকি হাসি, চেহারায় রক্তের দাগ নিয়ে হাজির করা হয় রাজকে। পোস্টারটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করে লেখা হয়েছে, ‘ইনসাফ শুধু একটি শব্দ নয়, এটি একটি জীবনবোধ!’ সে পোস্টারে সিনেমাটির নায়ক শরিফুল রাজকে পরিচিত করা হয়। সেই ধারাবাহিকতায় এবার এলো মোশাররফ করিমের পরিচিতি। তবে এ সিনেমায় মোশাররফ করিম নেতিবাচক না ইতিবাচক, সে কথা খোলাসা করেননি।
গত ফেব্রুয়ারিতে শুরু হয়েছে ইনসাফের শুটিং। এখন চলছে শেষ অংশের কাজ। ঈদুল আজহায় মুক্তি পাবে ‘ইনসাফ’। বাংলাদেশে প্রথম হলেও ইনসাফ সঞ্জয় সমদ্দারের দ্বিতীয় সিনেমা। এর আগে জিৎকে নিয়ে টালিউডে ‘মানুষ’ নামের সিনেমা বানিয়েছিলেন তিনি।
সিনেমাটি প্রযোজনা করছে তিতাস কথাচিত্র। এ সিনেমা দিয়ে দীর্ঘদিন পর চলচ্চিত্র প্রযোজনায় এসেছে প্রতিষ্ঠানটি। সঙ্গে রয়েছে টিওটি ফিল্মস। সিনেমাটিতে শরিফুল রাজের সঙ্গে অভিনয় করেছেন নাটকের অভিনেত্রী তাসনিয়া ফারিণ। এই ছবির মাধ্যমে পুরোপুরি কমার্শিয়াল ছবির নায়িকা হয়ে আসছেন তিনি।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
মাইক্রোবাসের সূত্র ধরে গ্রেপ্তার মিরপুরে গুলি ছুড়ে টাকা ছিনতাইয়ে জড়িতরা
রাজধানীর মিরপুরে প্রকাশ্যে গুলি ছুড়ে ও ছুরিকাঘাত করে মানি এক্সচেঞ্জ ব্যবসায়ীর ২১ লাখ টাকা ও বৈদেশিক মুদ্রা লুটে জড়িত ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ছিনতাইয়ে ব্যবহৃত মাইক্রোবাসের সূত্র ধরে তাদের শনাক্ত করা সম্ভব হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মো. জাফর (৩৩), মোস্তাফিজুর রহমান (৪০), সৈকত হোসেন ওরফে দিপু মৃধা (৫২), সোহাগ হাসান (৩৪), জলিল মোল্লা (৫২) ও পলাশ আহমেদ (২৬)। মঙ্গলবার ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ধারাবাহিক অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। তারা গত ২৪ জানুয়ারি কামরাঙ্গীরচর থানা এলাকায় গুলি করে ৫০ ভরি স্বর্ণ লুট এবং গত ২০ অক্টোবর সাত মসজিদ রোড ধানমন্ডি থানা এলাকায় গুলি করে ৫২ লাখ টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় নিজেদের সম্পৃক্ততা স্বীকার করেছেন।
এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডের ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে ডিবির যুগ্ম কমিশনার (দক্ষিণ) মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম জানান, গত ২৭ মে সকাল সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মাহমুদ মানি এক্সচেঞ্জের মালিক রাসেল ও তার ভগ্নিপতি জাহিদুল হক চৌধুরী তাদের মিরপুর-১১ নম্বরের সি-ব্লকের বাসা থেকে একটি কালো ব্যাগে ব্যবসার ২১ লাখ টাকা ও বেশ কিছু বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের (মিরপুর ১০ নম্বর) উদ্দেশে হেঁটে রওনা হন। তারা সকাল আনুমানিক ৯টা ৪০ মিনিটে শেরেবাংলা ন্যাশনাল স্টেডিয়াম ও ফায়ার সার্ভিসের মাঝের গলির মাথায় পৌঁছালে সেখানে আগে থেকে চারটি মোটরসাইকেলে ওত পেতে থাকা অজ্ঞাতপরিচয় ৭-৮ জন মাস্ক পরা দুর্বৃত্ত তাদের পথরোধ করে। তাদের একজন জাহিদুল হক চৌধুরীর মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে তার হাতে থাকা টাকা ভর্তি ব্যাগটি ছিনিয়ে নেয়। জাহিদুল হক এবং তার শ্যালক রাসেল ডাকাত দলকে প্রতিরোধ করার চেষ্টা করলে মুখোশধারী একজন ফাঁকা গুলি করে ভীতির সৃষ্টি করে এবং অপর একজন ধারালো চাপাতি দিয়ে জাহিদুলের কোমরের বাম পাশে আঘাত করে। চাপাতির আঘাতে জাহিদুল গুরুতর জখম হয়ে রাস্তায় লুটিয়ে পড়লে অজ্ঞাতপরিচয় দুর্বৃত্তরা টাকার ব্যাগটি নিয়ে মোটরসাইকেলে দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে মিরপুর-১ নম্বরের দিকে পালিয়ে যায়। এ ঘটনাটি একজন পথচারী তার ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করলে তা ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। এ ঘটনায় জাহিদুল হক চৌধুরীর অভিযোগের ভিত্তিতে রাজধানীর মিরপুর মডেল থানায় একটি মামলা হয়।
ডিবি সূত্র জানায়, চাঞ্চল্যকর এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ডিবির একাধিক টিম ঘটনার রহস্য উদঘাটন, জড়িতদের গ্রেপ্তার, ব্যবহৃত অস্ত্র ও গাড়ি উদ্ধারের লক্ষ্যে মাঠে নামে। তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে এবং গোয়েন্দা তথ্য বিশ্লেষণে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে ডিবির টিম ঘটনায় ব্যবহৃত একটি হাইয়েস মাইক্রোবাস শনাক্ত করে অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে মাইক্রোবাসটির চালক জাফরকে গ্রেপ্তার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জাফর মাইক্রোবাসটি ডাকাতির কাজে ব্যবহারের কথা স্বীকার করেন। ডিবি টিম তার দেওয়া তথ্য মতে গাজীপুর টঙ্গী এলাকা থেকে মাইক্রোবাসটি জব্দ করে।
ডিবি সূত্র আরও জানায়, তথ্যপ্রযুক্তির চূড়ান্ত বিশ্লেষণে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে ডিবির একাধিক টিম একইসঙ্গে ঢাকা, বরিশাল, পটুয়াখালী, ময়মনসিংহ ও যশোর জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে ডাকাতির সঙ্গে সরাসরি জড়িত ডাকাতদলের মূল পরিকল্পনাকারী জলিল মোল্লাসহ অপরাপর সদস্য মোস্তাফিজ, পলাশ, দিপু ও সোহাগকে গ্রেপ্তার করে। তাদের কাছ থেকে লুণ্ঠিত পাঁচ লাখ তিন হাজার টাকা ও ১০৬ টি বিভিন্ন মানের বৈদেশিক মুদ্রা, দুই লাখ ১২ হাজার টাকা মানের জাল নোট এবং ঘটনায় ব্যবহৃত তিনটি মোটরসাইকেল ও একটি মাইক্রোবাস উদ্ধার করা হয়। এছাড়া ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত একটি বিদেশি পিস্তল, দুই রাউন্ড গুলি, একটি চাপাতি এবং তিনটি খেলনা পিস্তল উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেপ্তাররা পেশাদার ডাকাত এবং তাদের বিরুদ্ধে ঢাকা মহানগরীসহ দেশের বিভিন্ন থানায় ডাকাতি, খুন, অস্ত্রসহ বিভিন্ন অপরাধের একাধিক মামলা রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন। মামলার তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে এবং ঘটনায় জড়িত অন্যান্যদের গ্রেপ্তারসহ অবশিষ্ট মালামাল উদ্ধারে প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।