পুলিৎজার পেল রয়টার্স, ওয়াশিংটন পোস্ট ও নিউ ইয়র্ক টাইমস
Published: 6th, May 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের মর্যাদাপূর্ণ সাংবাদিকতা পুরস্কার ‘পুলিৎজার’-এ এবার ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স পেয়েছে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা পুরস্কার। যুক্তরাষ্ট্রে অন্যতম প্রাণঘাতী মাদক ফেন্টানিলের সহজলভ্যতা এবং এর শিথিল নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নির্ভীক অনুসন্ধানী প্রতিবেদন করে এ বছর (২০২৫ সাল) পুরস্কার পেয়েছে সংস্থাটি।
স্থানীয় সময় সোমবার (৬ মে) এবারের পুলিৎজার পাওয়া ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নাম ঘোষণা করা হয়। খবর রয়টার্সের।
ব্রেকিং নিউজের জন্য এবারের সম্মানজনক পুলিৎজার পুরস্কার পেয়েছে ওয়াশিংটন পোস্ট। আর নিউ ইয়র্ক টাইমস এবার চারটি শাখায় পুলিৎজার জিতেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় পর্যায়ের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এ পুরস্কার সাংবাদিকতার ‘নোবেল’ হিসেবেও খ্যাত। ১৯১৭ সাল থেকে এ পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে। সাংবাদিকতা ছাড়াও সাহিত্য, সংগীত ও নাটকে বিশেষ অবদানের জন্য এ পুরস্কার দেওয়া হয়। কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটির একটি বোর্ড প্রতিবছর এ পুরস্কার ঘোষণা করে।
ভয়াবহ মাদক ফেন্টানিলকে কেন্দ্র করে রয়টার্সের সাত পর্বের ধারাবাহিক প্রতিবেদনের শিরোনাম ছিল ‘ফেন্টানিল এক্সপ্রেস’। এই মাদক সংকটে এখন পর্যন্ত ৪ লাখ ৫০ হাজারের বেশি আমেরিকান প্রাণ হারিয়েছেন। এই সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে।
নিউ ইয়র্ক টাইমস এবারে চারটি পুলিৎজার জিতে নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ব্যাখ্যামূলক সাংবাদিকতা বিভাগে আফগানিস্তান যুদ্ধের গভীর বিশ্লেষণ। আন্তর্জাতিক প্রতিবেদন বিভাগে সাংবাদিক ডেকলান ওয়ালশের সুদান যুদ্ধের প্রতিবেদন। ব্রেকিং নিউজ ফটোগ্রাফি বিভাগে ফটোসাংবাদিক ডাগ মিলসের তোলা ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওপর গুলির মুহূর্তের ছবি এবং স্থানীয় প্রতিবেদন বিভাগে ফেন্টানিল সংকটের স্থানীয় প্রভাব নিয়ে বাল্টিমোর ব্যানারের সঙ্গে যৌথ অনুসন্ধান প্রতিবেদন। এ নিয়ে নিউ ইয়র্ক টাইমসের মোট পুলিৎজার সংখ্যা দাঁড়ালো ১৩৯, যা সর্বোচ্চ।
এছাড়া বিশ্বের শীর্ষ ধনী ইলন মাস্কের রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত পর্যায়ে ধারাবাহিক পরিবর্তনের বিষয়ে প্রতিবেদন করে জাতীয় সংবাদ শাখায় সাংবাদিকতার জন্য পুলিৎজার গেছে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের ঝুলিতে।
গর্ভপাত নিয়ে কঠোর আইন থাকা অঙ্গরাজ্যগুলোয় জরুরি প্রয়োজনের সময় চিকিৎসকদের বিলম্বের জেরে মারা যাওয়া অন্তঃসত্ত্বা নারীদের মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে প্রতিবেদন করে পাবলিক সার্ভিস শাখায় পুলিৎজার পেয়েছে প্রোরিপাবলিকা।
সম্পাদকীয় শাখায় পুলিৎজার পেয়েছে হিউস্টন ক্রোনিকল। চিত্রায়িত প্রতিবেদন ও ধারাভাষ্য শাখায় পুরস্কার জিতে নিয়েছে ওয়াশিংটন পোস্ট।
ফিচার লিখে পুলিৎজার পেয়েছেন মার্কিন সাময়িকী এসকোয়ারের প্রদায়ক মার্ক ওয়ারেন। ধারাভাষ্যে পুরস্কার পেয়েছেন নিউইয়র্কার পত্রিকার প্রদায়ক ফিলিস্তিনের গাজার মোসাব আবু তোহা। আর সমালোচনামূলক লেখায় পুরস্কার পেয়েছেন ব্লুমবার্গ সিটি ল্যাবের প্রদায়ক আলেকজান্দ্রা লানজে।
পুলিৎজার পুরস্কার ২০২৫ বিজয়ীদের তালিকা
সাংবাদিকতা বিভাগ
* পাবলিক সার্ভিস: প্রো পাবলিকা
* ব্রেকিং নিউজ: দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট
* তদন্তমূলক প্রতিবেদন: রয়টার্স
* ব্যাখ্যামূলক প্রতিবেদন: আজম আহমেদ, ক্রিস্টিনা গোল্ডবাউম ও ম্যাথিউ আইকিন্স (দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস)
* স্থানীয় প্রতিবেদন: আলিসা ঝু, নিক থিয়েম ও জেসিকা গ্যালাঘার (দ্য বাল্টিমোর ব্যানার ও দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস)
* জাতীয় প্রতিবেদন: দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল
* আন্তর্জাতিক প্রতিবেদন: ডেকলান ওয়ালশ ও দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস
* ফিচার প্রতিবেদন: মার্ক ওয়ারেন (এসকোয়ার)
* মন্তব্য: মোসাব আবু তোহা (দ্য নিউ ইয়র্কার)
* সমালোচনা: আলেক্সান্দ্রা ল্যাঙ্গ (ব্লুমবার্গ সিটিল্যাব)
* সম্পাদকীয় লেখা: রাজ মাঙ্কাদ, শ্যারন স্টেইনম্যান, লিসা ফাল্কেনবার্গ ও লিয়া বিনকোভিৎজ (দ্য হিউস্টন ক্রনিকল)
* চিত্রিত প্রতিবেদন ও মন্তব্য: অ্যান টেলনেস (দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট)
* ব্রেকিং নিউজ ফটোগ্রাফি: ডগ মিলস (দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস)
* ফিচার ফটোগ্রাফি: মোজেস সামান (দ্য নিউ ইয়র্কার)
* অডিও প্রতিবেদন: দ্য নিউ ইয়র্কার
সাহিত্য বিভাগ
* গল্প: পার্সিভাল এভারেট (‘জেমস’)
* নাটক: ব্র্যান্ডেন জ্যাকবস-জেনকিন্স (‘পারপাস’)
* স্মৃতিকথা: টেসা হালস (‘ফিডিং গোস্টস’)
* জীবনী: জেসন রবার্টস (‘এভরি লিভিং থিং’)
* ইতিহাস: ক্যাথলিন ডুভাল (‘নেটিভ নেশনস’) ও এড্ডা এল.
* সাধারণ নন-ফিকশন: বেনজামিন নাথানস (‘টু দ্য সাকসেস অব আওয়ার হোপলেস কজ’)
* কবিতা: মেরি হাও (‘নিউ অ্যান্ড সিলেক্টেড পোয়েমস’)
* সংগীত: সুসি ইবারা (‘স্কাই আইল্যান্ডস’)
* বিশেষ উদ্ধৃতি: চাক স্টোন (মরণোত্তর)
ঢাকা/ফিরোজ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প রস ক র প য় ছ এ প রস ক র র ক ট ইমস টন প স ট রয়ট র স প বল ক ব দ কত
এছাড়াও পড়ুন:
তরুণদের উদ্ভাবনী চিন্তাশক্তিকে উৎসাহিত করতে অনুষ্ঠিত হলো এআই অলিম্পিয়াড বাংলাদেশ
এআই অলিম্পিয়াড বাংলাদেশ ২০২৫ রাজধানীর ধানমন্ডিতে গত শনিবার ড্যাফোডিল প্লাজায় অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ আয়োজনে সারা দেশের ৯ শতাধিক শিক্ষার্থী, তরুণ উদ্ভাবক ও প্রযুক্তিপ্রেমীর অংশগ্রহণে দিনটি পরিণত হয় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাবিষয়ক (এআই) এক অনন্য জাতীয় উদ্ভাবনী উৎসবে।
দিনব্যাপী আয়োজনে তিনটি কর্মশালায় আলোচনা হয় এআইয়ের বাস্তব জীবনে প্রয়োগ, নৈতিকতা ও উদ্ভাবনের সম্ভাবনা নিয়ে। অংশগ্রহণকারীরা প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক—এই তিন স্তরে প্রজেক্ট জমা দেন। বিচারকার্যে অংশ নেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সিএসই, সিআইএস ও সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ৩৬ জন অভিজ্ঞ শিক্ষক। জয়ীদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ প্রকল্প নির্বাচন করে পুরস্কার হিসেবে দেওয়া হয় চ্যাম্পিয়ন, প্রথম রানারআপ ও দ্বিতীয় রানারআপ ট্রফি এবং সর্বোচ্চ স্কোরারকে প্রদান করা হয় একটি ল্যাপটপ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী, সভাপতিত্ব করেন ড্যাফোডিল ফ্যামিলির চেয়ারম্যান মো. সবুর খান। বিশেষ অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক এম লুৎফর রহমান, প্রথম আলোর ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন, ইয়ুথ প্রোগ্রাম, ইভেন্টস অ্যান্ড অ্যাকটিভেশনের চিফ কো-অর্ডিনেটর মো. মুনির হাসান, ড্যাফোডিল ফ্যামিলির সিইও মোহাম্মদ নুরুজ্জামান এবং ডিআইইউয়ের ফ্যাকাল্টি অব সায়েন্স অ্যান্ড ইনফরমেশন টেকনোলজি (এফএসআইটি) ডিন অধ্যাপক সৈয়দ আখতার হোসেন।
অনুষ্ঠানে অলিম্পিয়াডের সার্বিক কার্যক্রম ও উদ্দেশ্য উপস্থাপন করেন এআই অলিম্পিয়াড বাংলাদেশ ২০২৫-এর কনভেনর ও ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল প্রফেশনাল ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক রথীন্দ্র নাথ দাস। তিনি বলেন, ‘এই অলিম্পিয়াড কেবল একটি প্রতিযোগিতা নয়; বরং একটি জাতীয় প্ল্যাটফর্ম, যেখানে শিক্ষার্থী ও তরুণেরা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে বাস্তব জীবনের সমস্যার সমাধানে নিজেদের দক্ষতা প্রয়োগের সুযোগ পেয়েছে।’
অনুষ্ঠানে অতিথিরা বলেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কেবল একটি প্রযুক্তি নয়; বরং এটি ভবিষ্যতের নেতৃত্ব, সমস্যা সমাধান ও মানবিক উন্নয়নের এক কার্যকর হাতিয়ার। এআই অলিম্পিয়াড বাংলাদেশ ২০২৫ সেই বাস্তবতা তরুণদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে সফল হয়েছে। এই আয়োজন প্রমাণ করে যে বাংলাদেশের তরুণেরা এখন শুধু প্রযুক্তির ব্যবহারকারী নন, বরং তাঁরা উদ্ভাবনের শক্তি নিয়েই ভবিষ্যতের নেতৃত্ব দিতে প্রস্তুত।
এ আয়োজনের অ্যাসোসিয়েট পার্টনার হিসেবে ছিল প্রথম আলো।
‘দূর পরবাস’-এ জীবনের গল্প, নানা আয়োজনের খবর, ভিডিও, ছবি ও লেখা পাঠাতে পারবেন পাঠকেরা। ই-মেইল: [email protected]