খালে লাশ পাওয়ার পর দাফন, শেষে জানা গেল তিনি জীবিত
Published: 8th, May 2025 GMT
চট্টগ্রাম নগরের কোতোয়ালি থানার দেওয়ান বাজারের রুমঘাটা এলাকায় গত শনিবার খাল থেকে অজ্ঞাতপরিচয় একটি লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরদিন রোববার দুপুরে ভোলা থেকে আসা উবাইদুল্লাহ নামের এক ব্যক্তি লাশটি তাঁর ছেলে আবদুর রহিমের বলে শনাক্ত করেন। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে লাশটি গ্রামের বাড়ি ভোলায় নিয়ে যান তিনি। সেখানে দাফনও করা হয়। কোতোয়ালি থানা-পুলিশ লাশের সুরতহাল করে লাশ হস্তান্তরও করে। তবে হঠাৎই নিহত আবদুর রহিমের মুঠোফোন সচল হয়। বিষয়টি নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) যাচাই-বাছাই শুরু করে। শেষে মুঠোফোন ট্র্যাক করে তাঁকে হেফাজতে নেয় পিবিআই। আনা হয় তাঁর বাবা উবাইদুল্লাহকেও।
বাবা ও ছেলেকে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর বেরিয়ে এল প্রকৃত ঘটনা। পাওনা টাকা ফেরত দিতে না পেরে মুঠোফোন বন্ধ করে আত্মগোপন করেছিলেন নির্মাণশ্রমিক আবদুর রহিম। পরিবারের সদস্যরা তাঁর খোঁজে বিভিন্ন জায়গায় যান। শেষে চট্টগ্রাম নগরের একটি খালে লাশ পাওয়ার কথা জানতে পারেন তাঁরা। রহিমের বাবা উবাইদুল্লাহ ভুলবশত লাশটি নিজের ছেলে রহিমের বলে শনাক্ত করে ভোলায় নিয়ে দাফন করেন।
গত রোববার খাল থেকে ওই অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির লাশ উদ্ধারের পর চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে লাশ শনাক্ত করেছিলেন উবাইদুল্লাহ। তখন তাঁর সন্দেহ ছিল ছেলে রহিমকে খুন করা হয়। প্রথম আলোকে সেদিন তিনি বলেছিলেন, আবদুর রহিম সপ্তাহখানেক আগে জানিয়েছিলেন মুঠোফোনে গেমস খেলে একটি আইফোনসহ চার লাখ টাকা জিতেছেন তিনি। যাঁরা এই পুরস্কার দেবেন, তাঁরা ৪০ হাজার টাকা চেয়েছেন। সেই টাকা জোগাড় করতে রহিম অনেকের কার থেকে ঋণ করেন। কিন্তু পুরস্কারের বিষয়টি ছিল প্রতারণা। ঋণ করে টাকা হারিয়ে আবদুর রহিম নিখোঁজ হয়ে যান। উবাইদুল্লাহর ধারণা ছিল, জুয়াড়ি চক্রের হাতে তিনি খুন হয়েছেন।
পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো পুলিশ সুপার নাইমা সুলতানা প্রথম আলোকে বলেন, অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির লাশ উদ্ধারের পর পিবিআই ছায়া তদন্ত শুরু করে। দাফন হওয়া আবদুর রহিমের মুঠোফোন চালু হলে পিবিআই যাচাই-বাছাই শুরু করে। একপর্যায়ে তিনি জীবিত নিশ্চিত হওয়া যায়। পরে তাঁকে পিবিআই হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, পাওনা টাকা না দিতে পেরে মুঠোফোন বন্ধ করে দিয়েছিলেন।
আবদুর রহিমের বাবা উবাইদুল্লাহ পিবিআইকে বলেন, নিখোঁজ থাকায় লাশটি দেখে মনে হয়েছিল ছেলের লাশ। অন্য কোনো উদ্দেশ্য ছিল না। পিবিআইও তদন্ত করে তা নিশ্চিত হয়েছে।
পুলিশ কর্মকর্তা নাইমা সুলতানা বলেন, রহিম পরিচয়ে যে লাশটি দাফন করা হয়েছে, তাঁর ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা আছে। নিখোঁজ কারও স্বজন দাবি করলে ডিএনএ মিলিয়ে দেখা হবে। এখন পর্যন্ত নিখোঁজ যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের ডিএনএর সঙ্গে লাশের ডিএনএ মেলেনি।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প ব আই
এছাড়াও পড়ুন:
অসময়ের তরমুজ চাষে সফল বিদেশফেরত লোকমান
সারি সারি তরমুজগাছ, ফল-ফুলে ভরপুর। এদিক-সেদিক পাতার ফাঁকে ফাঁকে উঁকি দিচ্ছে সবুজ ডোরাকাটা তরমুজ। মালচিং পদ্ধতিতে এসব গাছে বর্ষাপরবর্তী সময়েও তরমুজ ফলেছে। উঁচু জমিতে এ পদ্ধতিতে ফলটির চাষ করে সফল হয়েছেন কৃষি উদ্যোক্তা লোকমান হোসেন (৩০)। কম খরচে বেশি ফলন ও বাজারে ভালো দাম পাওয়ায় তিনি সন্তুষ্ট।
পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার নদীবেষ্টিত চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের চরওয়াডেল গ্রামের বাসিন্দা লোকমান হোসেন। সম্প্রতি সেখানে গিয়ে দেখা যায়, বর্ষা মৌসুমে বাড়ির আঙিনায় ৫ শতাংশ জমিতে তৃতীয়বারের মতো তরমুজের আবাদ করছেন। পাশাপাশি কিছু ফুটির আবাদও চলছে।
প্রবাস থেকে দেশে, মন দিলেন চাষাবাদেস্নাতক পাসের পর ২০১৮ সালে জীবিকার তাগিদে প্রবাসে চলে যান লোকমান। ২০২২ সালের প্রথম দিকে দেশে ফিরে কৃষক বাবার সঙ্গে কৃষিকাজ শুরু করেন। লোকমান বলেন, ‘বেশ কয়েক বছর বিদেশে ছিলাম। সেখানে অনেক পরিশ্রমের কাজ করতে হতো। এ কারণে দেশে ফিরে বাবার সঙ্গে কৃষিকাজ শুরু করি। ধান চাষের পাশাপাশি বাড়ির পাশে পতিত জমিতে বিভিন্ন সবজি ও ফলমূলের চাষাবাদ শুরু করি। সাধারণত গ্রীষ্ম মৌসুমে তরমুজের আবাদ হয়ে থাকে। পরীক্ষামূলকভাবে বর্ষা মৌসুমে ৫ শতাংশ জমিতে হাইব্রিড জাতের তরমুজ ও ফুটি আবাদ করেছি। এবারও ভালো ফল হয়েছে। এই মৌসুমে পোকার আক্রমণ কম থাকায় কীটনাশক খরচও কম হয়েছে। সেই তুলনায় লাভ ভালো হয়েছে।’
আরও পড়ুনফলন হবে না ভেবে ফেলে রাখা নোনা জমিতে কোটি কোটি টাকার মিষ্টি তরমুজ০৭ এপ্রিল ২০২৫লোকমানের দাবি, এর আগেরবার মাত্র ২০ হাজার টাকা খরচ করে প্রায় এক লাখ টাকার তরমুজ বিক্রি করেছেন। চলতি বছরও ওই ৫ শতাংশ জমিতে এক লাখ টাকার মতো লাভ হতে পারে। ভবিষ্যতে আরও বেশি জমিতে তরমুজ চাষ করার ইচ্ছা তাঁর।
তরমুজ ও ফুটির খেতে পরিচর্যার কাজ চলছে