চট্টগ্রাম নগরের কোতোয়ালি থানার দেওয়ান বাজারের রুমঘাটা এলাকায় গত শনিবার খাল থেকে অজ্ঞাতপরিচয় একটি লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরদিন রোববার দুপুরে ভোলা থেকে আসা উবাইদুল্লাহ নামের এক ব্যক্তি লাশটি তাঁর ছেলে আবদুর রহিমের বলে শনাক্ত করেন। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে লাশটি গ্রামের বাড়ি ভোলায় নিয়ে যান তিনি। সেখানে দাফনও করা হয়। কোতোয়ালি থানা-পুলিশ লাশের সুরতহাল করে লাশ হস্তান্তরও করে। তবে হঠাৎই নিহত আবদুর রহিমের মুঠোফোন সচল হয়। বিষয়টি নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) যাচাই-বাছাই শুরু করে। শেষে মুঠোফোন ট্র্যাক করে তাঁকে হেফাজতে নেয় পিবিআই। আনা হয় তাঁর বাবা উবাইদুল্লাহকেও।

বাবা ও ছেলেকে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর বেরিয়ে এল প্রকৃত ঘটনা। পাওনা টাকা ফেরত দিতে না পেরে মুঠোফোন বন্ধ করে আত্মগোপন করেছিলেন নির্মাণশ্রমিক আবদুর রহিম। পরিবারের সদস্যরা তাঁর খোঁজে বিভিন্ন জায়গায় যান। শেষে চট্টগ্রাম নগরের একটি খালে লাশ পাওয়ার কথা জানতে পারেন তাঁরা। রহিমের বাবা উবাইদুল্লাহ ভুলবশত লাশটি নিজের ছেলে রহিমের বলে শনাক্ত করে ভোলায় নিয়ে দাফন করেন।

গত রোববার খাল থেকে ওই অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির লাশ উদ্ধারের পর চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে লাশ শনাক্ত করেছিলেন উবাইদুল্লাহ। তখন তাঁর সন্দেহ ছিল ছেলে রহিমকে খুন করা হয়। প্রথম আলোকে সেদিন তিনি বলেছিলেন, আবদুর রহিম সপ্তাহখানেক আগে জানিয়েছিলেন মুঠোফোনে গেমস খেলে একটি আইফোনসহ চার লাখ টাকা জিতেছেন তিনি। যাঁরা এই পুরস্কার দেবেন, তাঁরা ৪০ হাজার টাকা চেয়েছেন। সেই টাকা জোগাড় করতে রহিম অনেকের কার থেকে ঋণ করেন। কিন্তু পুরস্কারের বিষয়টি ছিল প্রতারণা। ঋণ করে টাকা হারিয়ে আবদুর রহিম নিখোঁজ হয়ে যান। উবাইদুল্লাহর ধারণা ছিল, জুয়াড়ি চক্রের হাতে তিনি খুন হয়েছেন।

পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো পুলিশ সুপার নাইমা সুলতানা প্রথম আলোকে বলেন, অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির লাশ উদ্ধারের পর পিবিআই ছায়া তদন্ত শুরু করে। দাফন হওয়া আবদুর রহিমের মুঠোফোন চালু হলে পিবিআই যাচাই-বাছাই শুরু করে। একপর্যায়ে তিনি জীবিত নিশ্চিত হওয়া যায়। পরে তাঁকে পিবিআই হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, পাওনা টাকা না দিতে পেরে মুঠোফোন বন্ধ করে দিয়েছিলেন।

আবদুর রহিমের বাবা উবাইদুল্লাহ পিবিআইকে বলেন, নিখোঁজ থাকায় লাশটি দেখে মনে হয়েছিল ছেলের লাশ। অন্য কোনো উদ্দেশ্য ছিল না। পিবিআইও তদন্ত করে তা নিশ্চিত হয়েছে।

পুলিশ কর্মকর্তা নাইমা সুলতানা বলেন, রহিম পরিচয়ে যে লাশটি দাফন করা হয়েছে, তাঁর ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা আছে। নিখোঁজ কারও স্বজন দাবি করলে ডিএনএ মিলিয়ে দেখা হবে। এখন পর্যন্ত নিখোঁজ যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের ডিএনএর সঙ্গে লাশের ডিএনএ মেলেনি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প ব আই

এছাড়াও পড়ুন:

ডুবে যাওয়া ট্রলারের সঙ্গে কুয়াকাটায় ভেসে এল জেলের মরদেহ

ডুবে যাওয়ার প্রায় দুই সপ্তাহ পর পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকতে ভেসে এসেছে এফবি সাগরকন্যা নামের একটি মাছ ধরার ট্রলার। এতে মিলেছে এক নিখোঁজ জেলের মরদেহ। আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সৈকতের পূর্ব দিকে কুয়াকাটা ট্যুরিজম পার্কসংলগ্ন এলাকায় ট্রলারটি খুঁজে পাওয়া যায়।

মৃত ওই জেলের নাম ইদ্রিস হাওলাদার (৫০)। তিনি মিঠাগঞ্জ ইউনিয়নের পশ্চিম মধুখালী গ্রামের বাসিন্দা। এক ব্যক্তি নিজেকে ইদ্রিসের স্বজন দাবি করে লাশটিকে শনাক্ত করেছেন। ওই ট্রলারের থাকা আরও তিন জেলে এখনো নিখোঁজ বলে জানিয়েছে পুলিশ।

পুলিশ ও স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দার সূত্রে জানা গেছে, গত ২৫ জুলাই বঙ্গোপসাগরের শেষ বয়া থেকে ৭৫ কিলোমিটার গভীরে ১৫ জেলেসহ এফবি সাগরকন্যা নামের মাছধরার ট্রলারটি ডুবে যায়। সেখানে ৪ দিন ভেসে থাকার পর ১০ জেলেকে আরেকটি ট্রলারের সাহায্যে উদ্ধার করা হয়। পরে ১ আগস্ট নজরুল ইসলাম নামের ওই ট্রলারে থাকা এক জেলের মরদেহ ভেসে আসে কুয়াকাটা সৈকতের মীরা বাড়ি পয়েন্ট এলাকায়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে কুয়াকাটা নৌ পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ইদ্রিস হাওলাদারের মরদেহসহ ট্রলারটি উদ্ধার করা হয়েছে। এ বিষয়ে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ