নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি সেলিনা হায়াৎ আইভীকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়ার সময় তাকে বহন করা পুলিশের গাড়ি বহরে ও কর্মী সমর্থকদের ওপর দুর্বৃত্তরা হামলা করেছে।

শুক্রবার (৯ মে) সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে নারায়ণগঞ্জ শহরের বিবি রোডের কালির বাজার মোড়ে এ ঘটনা ঘটে।

এ সময় র‌্যাব ও পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এতে পুলিশের দুই সদস্যসহ পাঁচজন আহত হয়েছেন।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার সকালে সেলিনা হায়াৎকে গ্রেপ্তারের পর তাকে নিয়ে র‌্যাব ও পুলিশের ১৫টি গাড়ি ডিবি কার্যালয়ের দিকে রওনা হয়। এ সময় ৩০-৪০ জনের একটি দল হামলা চালায়। তারা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে।

একপর্যায়ে একটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এ সময় সেলিনা হায়াৎ আইভীর সমর্থকদের ধাওয়া দিলে তারা পালিয়ে যান।

হামলাকারীদের ইটপাটকেলের আঘাতে পুলিশের দুই সদস্যসহ পাঁচজন আহত হন। তাৎক্ষণিকভাবে আহত ব্যক্তিদের নাম ও পরিচয় পাওয়া যায়নি।

এদিকে গ্রেপ্তারের সময় সেলিনা হায়াৎ আইভী সাংবাদিকদের বলেন, পুলিশ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা না দেখিয়ে আমাকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে। জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু বলা যদি অপরাধ হয়ে থাকে তাহলে আমি অপরাধী। কিন্তু নারায়ণগঞ্জে ২১ বছরের সেবায় কোন দল কিংবা ব্যক্তিকে আঘাত করার মতো কিছু কখনো করিনি। 

যখনি নারায়ণগঞ্জে হত্যাকাণ্ড ঘটেছে তখনি প্রতিবাদ করেছি। কোনো অপরাধ না করে অপরাধী হিসেবে আমাকে গ্রেপ্তার করা বৈষম্য হয়েছে। আমি বিগত সময়ের মতো নারায়ণগঞ্জবাসীকে পাশে চাই।

এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক-সার্কেল) মো.

হাসানুজ্জামান বলেন, সেলিনা হায়াৎ আইভীকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে আসার সময় পুলিশের গাড়িবহরে হামলা ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। আমরা বিস্ফোরণের শব্দও শুনেছি।

এতে দুই পুলিশ সদস্যসহ কয়েকজন আহত হয়েছেন। তবে সেলিনা হায়াতের কোনো ক্ষতি হয়নি। তাকে সিদ্ধিরগঞ্জের মিনারুল হত্যা মামলায় আদালতে হাজির করে শুনানী শেষে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

এরআগে বৃহস্পতিবার (৮ মে) দিবাগত রাতে পুলিশ গ্রেপ্তার করতে গেলে রাত  ১২টার দিকে শহরের দেওভোগ এলাকায় আইভীর বাসবভনের সামনে শত শত মানুষ অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন।


এ সময় তারা স্লোগান দেন, আইভী আপার কিছু হলে জ্বলবে আগুন ঘরে ঘরে। আইভী আপা আটক কেন, জানতে চাই প্রশাসন, এরকম নানা স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত করে রেখেছেন পুরো এলাকা।

একপর্যায়ে তারা আইভীর বাড়ির প্রবেশ পথের দুই রাস্তায় বাঁশ, ঠেলাগাড়ি, ভ্যানগাড়ি ফেলে অবরুদ্ধ করে রাখে। আশেপাশের এলাকার মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে স্থানীয়দের রাস্তায় নেমে আসারও আহ্বান জানানো হয়। 

প্রসঙ্গত, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন নারায়ণগঞ্জে একটি হত্যা মামলায় নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীকে আসামি করা হয়েছে।

মামলার বাদী নাজমুল হক বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন গুলিতে নিহত পোশাক শ্রমিক মিনারুল ইসলামের ভাই। মামলায় ১৩২ জনের নাম উল্লেখ করে আরও ২০০-৩০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়।

সেলিনা হায়াৎ আইভী ২০০৩ সালে বিএনপি জোট সরকারের আমলে প্রথম নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এরপর ২০১১ সালে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচনে শামীম ওসমানকে লক্ষাধিক ভোটে হারিয়ে দেশের প্রথম নারী মেয়র নির্বাচিত হন তিনি।

গণঅভ্যূত্থানের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত ১৯ আগস্ট দেশের বাকি সিটি করপোরেশনগুলোর মতো টানা তিনবার নির্বাচিত সিটি মেয়র আইভীকেও অপসারণ করে অন্তর্বর্তী সরকার।

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটলেও সেলিনা হায়াৎ আইভীকে এই ধরনের কোনও পরিস্থিতির মুখে পড়তে হয়নি।

  
 

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ গ র প ত র কর হ য় ৎ আইভ ক ন র য়ণগঞ জ অপর ধ এ সময় আওয় ম সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

নারায়ণগঞ্জে আইভীকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়ার পথে পুলিশের গাড়িবহরে হামলা

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীকে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়ার সময় তাঁকে বহনকারী গাড়ির ওপর হামলা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে নারায়ণগঞ্জ শহরের বিবি রোডের কালির বাজার মোড়ে এ ঘটনা ঘটে।

এ সময় র‌্যাব ও পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এতে পুলিশের দুই সদস্যসহ পাঁচজন আহত হয়েছেন।

এর আগে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে সেলিনা হায়াৎকে গ্রেপ্তারের জন্য শহরের দেওভোগ এলাকায় তাঁর নতুন বাড়িতে অভিযান চালায় পুলিশ। প্রায় সাড়ে ছয় ঘণ্টা পর সকাল পৌনে ছয়টার দিকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ সময় সেখানে তাঁর বিপুলসংখ্যক সমর্থক অবস্থান করছিলেন।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, আজ সকালে সেলিনা হায়াৎকে গ্রেপ্তারের পর তাঁকে নিয়ে র‌্যাব ও পুলিশের ১৫টি গাড়ি ডিবি কার্যালয়ের দিকে রওনা হয়। এ সময় ৩০-৪০ জনের একটি দল হামলা চালায়। তারা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। একপর্যায়ে একটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এ সময় সেলিনা হায়াৎ আইভীর সমর্থকদের ধাওয়া দিলে তাঁরা পালিয়ে যান। হামলাকারীদের ইটপাটকেলের আঘাতে পুলিশের দুই সদস্যসহ পাঁচজন আহত হন। তাৎক্ষণিকভাবে আহত ব্যক্তিদের নাম–পরিচয় পাওয়া যায়নি।

আরও পড়ুনঅভিযান শুরুর ৬ ঘণ্টা পর আইভীকে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ৩ ঘণ্টা আগে

ওই অভিযানে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক-সার্কেল) মো. হাসানুজ্জামান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘সেলিনা হায়াৎকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে আসার সময় পুলিশের গাড়িবহরে হামলা ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। আমরা বিস্ফোরণের শব্দও শুনেছি। এতে দুই পুলিশ সদস্যসহ কয়েকজন আহত হয়েছেন। তবে সেলিনা হায়াতের কোনো ক্ষতি হয়নি।’

গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর সাবেক মেয়র সেলিনা হায়াতের নামে একাধিক মামলা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, জুলাই–আগস্ট গণ–অভ্যুত্থানে হত্যা, হত্যার চেষ্টাসহ বিভিন্ন অভিযোগে সেলিনা হায়াতের নামে পাঁচটি মামলা আছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ে তাদের পাশে থাকতে হবে : মাও. জব্বার
  • আইভীর গ্রেপ্তারে রফিউর রাব্বির প্রতিক্রিয়া
  • সেলিনা হায়াৎ আইভী কাশিমপুর মহিলা কারাগারে
  • কাশিমপুর মহিলা কারাগারে আইভী
  • আইভীকে বহনকারী পুলিশের গাড়িতে হামলাকারীদের প্রতিহত করল যুবদল
  • নারায়ণগঞ্জের সাবেক মেয়র আইভী কারাগারে
  • নারায়ণগঞ্জে গণ–অভ্যুত্থানের হত্যা মামলায় সাবেক মেয়র আইভী কারাগারে
  • অভিযান শুরুর ৬ ঘণ্টা পর আইভীকে গ্রেপ্তার
  • নারায়ণগঞ্জে আইভীকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়ার পথে পুলিশের গাড়িবহরে হামলা