আইভীকে বহনকারী পুলিশের গাড়িতে হামলা, ককটেল বিস্ফোরণ
Published: 9th, May 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি সেলিনা হায়াৎ আইভীকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়ার সময় তাকে বহন করা পুলিশের গাড়ি বহরে ও কর্মী সমর্থকদের ওপর দুর্বৃত্তরা হামলা করেছে।
শুক্রবার (৯ মে) সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে নারায়ণগঞ্জ শহরের বিবি রোডের কালির বাজার মোড়ে এ ঘটনা ঘটে।
এ সময় র্যাব ও পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এতে পুলিশের দুই সদস্যসহ পাঁচজন আহত হয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার সকালে সেলিনা হায়াৎকে গ্রেপ্তারের পর তাকে নিয়ে র্যাব ও পুলিশের ১৫টি গাড়ি ডিবি কার্যালয়ের দিকে রওনা হয়। এ সময় ৩০-৪০ জনের একটি দল হামলা চালায়। তারা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে।
একপর্যায়ে একটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এ সময় সেলিনা হায়াৎ আইভীর সমর্থকদের ধাওয়া দিলে তারা পালিয়ে যান।
হামলাকারীদের ইটপাটকেলের আঘাতে পুলিশের দুই সদস্যসহ পাঁচজন আহত হন। তাৎক্ষণিকভাবে আহত ব্যক্তিদের নাম ও পরিচয় পাওয়া যায়নি।
এদিকে গ্রেপ্তারের সময় সেলিনা হায়াৎ আইভী সাংবাদিকদের বলেন, পুলিশ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা না দেখিয়ে আমাকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে। জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু বলা যদি অপরাধ হয়ে থাকে তাহলে আমি অপরাধী। কিন্তু নারায়ণগঞ্জে ২১ বছরের সেবায় কোন দল কিংবা ব্যক্তিকে আঘাত করার মতো কিছু কখনো করিনি।
যখনি নারায়ণগঞ্জে হত্যাকাণ্ড ঘটেছে তখনি প্রতিবাদ করেছি। কোনো অপরাধ না করে অপরাধী হিসেবে আমাকে গ্রেপ্তার করা বৈষম্য হয়েছে। আমি বিগত সময়ের মতো নারায়ণগঞ্জবাসীকে পাশে চাই।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক-সার্কেল) মো.
এতে দুই পুলিশ সদস্যসহ কয়েকজন আহত হয়েছেন। তবে সেলিনা হায়াতের কোনো ক্ষতি হয়নি। তাকে সিদ্ধিরগঞ্জের মিনারুল হত্যা মামলায় আদালতে হাজির করে শুনানী শেষে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এরআগে বৃহস্পতিবার (৮ মে) দিবাগত রাতে পুলিশ গ্রেপ্তার করতে গেলে রাত ১২টার দিকে শহরের দেওভোগ এলাকায় আইভীর বাসবভনের সামনে শত শত মানুষ অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন।
এ সময় তারা স্লোগান দেন, আইভী আপার কিছু হলে জ্বলবে আগুন ঘরে ঘরে। আইভী আপা আটক কেন, জানতে চাই প্রশাসন, এরকম নানা স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত করে রেখেছেন পুরো এলাকা।
একপর্যায়ে তারা আইভীর বাড়ির প্রবেশ পথের দুই রাস্তায় বাঁশ, ঠেলাগাড়ি, ভ্যানগাড়ি ফেলে অবরুদ্ধ করে রাখে। আশেপাশের এলাকার মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে স্থানীয়দের রাস্তায় নেমে আসারও আহ্বান জানানো হয়।
প্রসঙ্গত, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন নারায়ণগঞ্জে একটি হত্যা মামলায় নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার বাদী নাজমুল হক বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন গুলিতে নিহত পোশাক শ্রমিক মিনারুল ইসলামের ভাই। মামলায় ১৩২ জনের নাম উল্লেখ করে আরও ২০০-৩০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়।
সেলিনা হায়াৎ আইভী ২০০৩ সালে বিএনপি জোট সরকারের আমলে প্রথম নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এরপর ২০১১ সালে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচনে শামীম ওসমানকে লক্ষাধিক ভোটে হারিয়ে দেশের প্রথম নারী মেয়র নির্বাচিত হন তিনি।
গণঅভ্যূত্থানের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত ১৯ আগস্ট দেশের বাকি সিটি করপোরেশনগুলোর মতো টানা তিনবার নির্বাচিত সিটি মেয়র আইভীকেও অপসারণ করে অন্তর্বর্তী সরকার।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটলেও সেলিনা হায়াৎ আইভীকে এই ধরনের কোনও পরিস্থিতির মুখে পড়তে হয়নি।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ গ র প ত র কর হ য় ৎ আইভ ক ন র য়ণগঞ জ অপর ধ এ সময় আওয় ম সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
ঢাকার বিজয় র্যালিতে জেলা বিএনপির বিশাল শোডাউন
ঢাকায় জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ধারাবাহিকতায় ৫ই আগস্ট আওয়ামী ফ্যাসিবাদের পতন ও ছাত্র-জনতার বিজয়ের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে কেন্দ্র ঘোষিত বিএনপির বিজয় র্যালিতে নারায়ণগঞ্জ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের হাজা হাজার নেতাকর্মীদের নিয়ে বিশাল শোডাউন করে অংশগ্রহন করেছে।
বুধবার (৬ আগস্ট) দুপুর দুইটায় রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় এ কার্যালয়ের সামনে এই বিজয় র্যালির আয়োজন করা হয়। এতে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
এদিকে কেন্দ্র ঘোষিত বিজয় র্যালিকে সফল করার লক্ষ্যে দুপুর থেকেই নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, শ্রমিকদল, মহিলা দলসহ বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা ব্যানার ফেস্টুন সুসজ্জিত হয়ে শ্লোগানে শ্লোগানে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে নটরডেম কলেজের সামনে এসে জড়ো হতে থাকে। পরে বিশাল মিছিল নিয়ে বিজয় র্যালি অংশগ্রহণ করেন।
নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদের সার্বিক তত্ত্বাবধানে এসময়ে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির ঢাকা বিভাগীয় সহ- সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আজহারুল ইসলাম মান্নান, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাশুকুল ইসলাম রাজিব, যুগ্ম আহ্বায়ক শরীফ আহমেদ টুটুল, জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক লুৎফর রহমান আব্দু, আঃ হাই রাজু, আড়াইহাজার উপজেলা বিএনপির সভাপতি ইউসুফ আলী ভূঁইয়া, রূপগঞ্জ উপজেলা বিএনপি'র সভাপতি মাহফুজুর রহমান হুমায়ূন, সাধারণ সম্পাদক বাছির উদ্দিন বাচ্চু, সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপি'র সিনিয়র সহ-সভাপতি কাজী নজরুল ইসলাম টিটু, সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন, ফতুল্লা থানা বিএনপির সভাপতি শহিদুল, সাধারণ সম্পাদক এড. বারী ভূঁইয়া, জেলা যুবদলের আহ্বায়ক সাদেকুর রহমান সাদেক, সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনি, জেলা সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক খায়রুল ইসলাম সজিব, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মাহাবুবুর রহমান, জেলা কৃষকদলের আহ্বায়ক ডাঃ শাহিন, সদস্য সচিব আলম মিয়া, জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি মন্টু মেম্বার, আড়াইহাজার উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব খোরশেদ আলম ভূঁইয়া, জেলা মহিলা দলের সভানেত্রী রহিমা শরীফ মায়া, সাধারণ সম্পাদক রুমা আক্তারসহ জেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ।