কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগী মৃত্যুর জেরে স্বজনরা ভাঙচুর চালিয়েছে। শুক্রবার রাতে জরুরি বিভাগে এ হামলা হয়। স্বজনের অভিযোগ, চিকিৎসক রোগীকে অক্সিজেন দিতে দেরি করায় ওই নারীর মৃত্যু হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ভাষ্য, চিকিৎসা শুরুর আগেই তিনি মারা যান।
খদেজা খাতুন (৩৮) নামের ওই নারী উপজেলার শিলাইদহ ইউনিয়নের নাউতি গ্রামের জামাল প্রামাণিকের স্ত্রী। জামাল পেশায় ভাঙাড়ি ব্যবসায়ী। তাঁর ভাষ্য, ‘আমার স্ত্রী কয়েক মাস আগে স্ট্রোক করেছিল। খুবই অসুস্থ ছিল। শুক্রবার আবারও অসুস্থ হলে হাসপাতালে নিয়ে আসি। কিন্তু বারবার বলা সত্ত্বেও তাকে অক্সিজেন দেননি চিকিৎসক। সময়মতো অক্সিজেন দিলে রোগী মারা যেত না।’
স্ত্রীর মৃত্যুর জন্য চিকিৎসকের অবহেলাকে দায়ী করে জামাল প্রামাণিক বলেন, আর কেউ যেন এভাবে মারা না যান, সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। গতকাল শনিবার দুপুরে মোবাইল ফোনে তিনি আরও বলেন, ‘যে চলে যাওয়ার সে তো চলেই গেছে। এখন অভিযোগ দিয়ে আর কী হবে?’
শনিবার সকালে দেখা যায়, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসকের কাচঘেরা কক্ষের কাচ ভাঙা। সেখান থেকে ভাঙা কাচের টুকরো অপসারণ করছেন এক নারী পরিচ্ছন্নকর্মী।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মী বলেন, রাত সোয়া ৯টার দিকে এক মুমূর্ষু রোগী আসেন। তাঁকে অক্সিজেনও দেওয়া হয়। কিন্তু আসার পাঁচ মিনিটের মধ্যেই রোগী মারা যান। স্বজনরা মরদেহটি তড়িঘড়ি করে নিয়ে যান। তাদের কয়েকজন কিছুক্ষণ পর এসে ভাঙচুর করে দ্রুত চলে যায়।
কুমারখালী থানার ওসি মো.

সোলায়মান শেখ বলেন, লিখিত পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোছা. শামীমা আক্তার বলেন, রোগীর অবস্থা 
খুবই খারাপ ছিল। অক্সিজেনও দেওয়া 
হয়েছিল। তবে পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা শুরুর আগেই তাঁর মৃত্যু হয়। আবেগ ধরে রাখতে না পেরে স্বজনরা ভাঙচুর করেছেন। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: চ ক ৎসক উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

শত কোটি টাকার নদী খনন কাজ বন্ধ

নদীর নাব্যতা ফেরাতে চেঙ্গী ও মাইনি নদীর খনন কাজ শুরু করেছিল পানি উন্নয়ন বোর্ড। কিন্তু কিছুদিন কাজ করার পর তা বন্ধ চলে যায় চুক্তি করা টিকাদারী প্রতিষ্ঠান। দ্রুত পুনরায় খনন কাজ শুরু করার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

জানা গেছে, খাগড়াছড়ি শহর ও তৎসংলগ্ন অবকাঠামো নদী ভাঙন থেকে সংরক্ষণ প্রকল্পের আওয়াতায় ২৫০ কোটি ব্যয়ে নদীর নাব্যতা ফেরাতে চেঙ্গী ও মাইনি নদীর ৫৮ কিলোমিটার খনন কাজ শুরু করেছিল পানি উন্নয়ন বোর্ড। প্রকল্প অনুযায়ি, চেঙ্গী নদীর মহালছড়ি থেকে নানিয়ারচর বুড়িঘাট শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফ স্মৃতি স্তম্ভ এবং মাইনি নদীর ইয়ারাংছড়ি থেকে লংগদু মুখ পর্যন্ত খনন করার কথা।

আরো পড়ুন:

ঢাকার ৪৪ খাস পুকুর-জলাশয় সংস্কার শুরু

মাদারীপুরে নদীর মাটি চুরি, ভাঙন আতঙ্ক

কিন্ত মাইনি নদীর খনন কাজ চললেও চেঙ্গী নদীর কাজ কিছুদিন করার পর বন্ধ করে চলে যায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। মহালছড়ি থেকে নানিয়ারচর অংশে কাজ নতুন করে শুরু হলেও রাঙ্গামাটি জেলার নানিয়ারচর থেকে বুড়িঘাট শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফ স্মৃতি স্তম্ভ পর্যন্ত অংশের খনন কাজ ৩-৪ মাস ধরে একেবারে বন্ধ।

এই প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে। ২০২৫ সালের ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা ছিল। নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ হওয়া নিয়ে আশঙ্কা তৈরি হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী।

নানিয়ারচর পুরাতন বাজার এলাকার বাসিন্দা মো. খোরশেদ আলম, মো. আনসার আলী ও হাসাপতাল এলাকা বাসিন্দা মো. নুরুল হক জানান, নদীর খনন কাজ শেষ হলে তারা উপকৃত হতেন। বিশেষ করে কাপ্তাই হ্রদের পানি যখন কমে যায়, শুকনা মৌসুমে নদী পথে তাদের মালামাল আনা-নেওয়া করতে সুবিধা হত। আর সেই মাটিগুলো দিয়ে যদি নিচু রাস্তাগুলো উচু করা যেত তাহলে তারা উপকৃত হতেন। তাদের দাবি আবার যেন দ্রুত খনন কাজ শুরু করে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

এনিয়ে কথা বলতে নানিয়ারচর অংশের টিকাদারী প্রতিষ্ঠান ওয়েল এডব্লিউআর (জেভি) এর ম্যানেজার মো. মাহবুবের ও মহালছড়ি অংশের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এআরকেএল-এসএমআইএল (জেবি) এর ম্যানেজার মো. সোয়েবের মোবাইল নাম্বারে কল দেওয়া হলে তারা রিসিভ করেননি।

পানি উন্নয়ন বোর্ড, চট্টগ্রাম পরিচালনা ও রক্ষনাবেক্ষন বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী ড. তানজির সাইফ আহমেদ জানান, চেঙ্গী নদীর মহালছড়ি থেকে নানিয়ার এর কাজ মাঝখানে বন্ধ হয়েছিল, ড্রেজার নিয়ে গিয়েছিল কন্ট্রাকটর। তখন কাজ বাতিলের নোটিশ করেছিলেন। তবে মহালছড়ি অংশের ঠিকাদার আবার নতুন করে ড্রেজার নিয়ে এসেছে। এখন থেকে নিয়মিত কাজ চলবে বলে আশা করা হচ্ছে।

তিনি জানান, নানিয়াচরে ঠিকাদার নিজস্ব ব্যবস্থাপনার কারণে কাজ করতে পারেনি। ফলে উপরের নির্দেশে কাজ বাতিলের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সেখানে নতুন করে ঠিকাদার নিয়োগ করতে হবে। আর মাইনী নদীর খনন কাজ চলমান আছে, আগামী জুন মাসে শেষ হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ