নেত্রকোনায় উদ্ধার হওয়া ব্যক্তির পরিচয় মিলেছে
Published: 12th, May 2025 GMT
নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার উব্দাখালী নদীর তীর থেকে মৃত ভেবে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার ব্যক্তির পরিচয় মিলেছে। এ ছাড়া আজ সোমবার বেলা ১১টার দিকে হাসপাতালে তাঁর চেতনা ফিরেছে। তবে এখনো কোনো কথা বলতে পারছেন না তিনি। কলমাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ হোসেন এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
স্বজনদের দেখানো জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী ওই ব্যক্তির নাম জসিম থিগিডি (৩০)। তিনি উপজেলার রংছাতি ইউনিয়নের বড় মনগড়া গ্রামের মৃত মাখন নংমিন ও মৃত অবলিক থিগিডির ছেলে।
আরও পড়ুনমৃত ভেবে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠাচ্ছিল পুলিশ, হঠাৎ নড়ে উঠল নিথর দেহ২২ ঘণ্টা আগেওসি ফিরোজ হোসেন বলেন, ওই ব্যক্তিকে উদ্ধারের পর তাঁর ছবি বিভিন্ন সোর্স ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া হয়েছিল। পরে তাঁর স্বজনেরা যোগাযোগ করেন। এখন হাসপাতালে তাঁর (জসিম থিগিডি) চাচা আমরোজ নংমিনসহ আত্মীয়স্বজন আছেন। তাঁরা জানিয়েছেন, জসিম কয়েক বছর ধরে মানসিকভাবে অসুস্থ। তাই তাঁকে বাড়িতে আটকে রাখা হতো। গত তিন মাস তিনি নিরুদ্দেশ ছিলেন। পরিবারটি দরিদ্র হওয়ায় তাঁর চিকিৎসার জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে কিছু আর্থিক সহযোগিতা করা হয়েছে। তিনি কেন নদীর পাড়ে বস্ত্রহীন ও রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে ছিলেন এবং তাঁর পিঠে এল আকৃতির মতো আঘাতের চিহ্ন কীভাবে হলো, এসব বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে।
জসিমের চাচা দাবি করে আমরোজ নংমিন বলেন, পুলিশের মাধ্যমে খবর পেয়ে তাঁরা ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়েছেন। জসিমকে বেশ কিছুদিন বাড়িতে আটকে রাখা হয়েছিল। এরপর সে বাড়ি থেকে বের হয়ে সীমান্ত পার হয়ে ভারতে চলে যায়। তারপর বিএসএফ দেশে ফেরত পাঠায়। বাড়িতে এনে আটকে রাখলে কয়েক মাস পর আবার পালিয়ে যায় জসিম। কিন্তু তাকে কে বা কারা এভাবে আহত করে ফেলে রেখেছে, এ বিষয়ে কিছুই জানেন না। জড়িত ব্যক্তিদের বিচার দাবি করেছেন তিনি।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রোববার সকালে কলমাকান্দা উপজেলার মনতলা এলাকার উব্দাখালী নদীর তীরে ওই ব্যক্তিকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয় কয়েকজন। তাঁকে মৃত ভেবে পুলিশে খবর পাঠান কয়েকজন। পরে পুলিশ গিয়ে উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিল। হঠাৎ ওই ব্যক্তির চোখ ও হাত নড়ে ওঠে। এ অবস্থায় তাৎক্ষণিকভাবে তাঁকে কলমাকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: কলম ক ন দ অবস থ য় র জন য উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
ইউক্রেনকে ‘শক্তিশালী নিরাপত্তা নিশ্চয়তা’ দিতে রাজি হয়েছেন পুতিন: ট্রাম্পের দূত
ইউক্রেনকে ‘শক্তিশালী নিরাপত্তা নিশ্চয়তা’ দিতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন রাজি হয়েছেন। রোববার সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে এ তথ্য জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ। এটিকে মোড় বদলে দেওয়ার মতো ঘটনা বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।
ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে গত শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কায় বৈঠক করেন ট্রাম্প ও পুতিন। ওই বৈঠক থেকে যুদ্ধ বন্ধের চুক্তির ঘোষণা আসবে বলে আশা করা হচ্ছিল। তবে শেষ পর্যন্ত এমন কিছু ঘটেনি। কোনো চুক্তি ছাড়াই মস্কো ফিরে যান পুতিন। আর কয়েক দিন আগেও দ্রুত যুদ্ধবিরতির কথা বলা ট্রাম্প সুর বদলে বলেন, যুদ্ধ বন্ধের চুক্তি রাশিয়া ও ইউক্রেনকে করতে হবে।
এরপর সোমবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন ট্রাম্প। সেখানে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানিসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশের নেতারা যোগ দেবেন। তাঁদের আহ্বান—যুদ্ধ বন্ধের কোনো চুক্তির ক্ষেত্রে যেন ইউক্রেনের নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রাখা হয়।
এমন পরিস্থিতির মধ্যে ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চয়তা নিয়ে পুতিনের রাজি হওয়ার বিষয়টি সামনে আনলেন উইটকফ। সিএনএনকে তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ইউক্রেনকে শক্তিশালী নিরাপত্তা নিশ্চয়তা দেওয়ার বিষয়টিতে রাজি হয়েছেন পুতিন। একে আমি মোড় বদলে দেওয়ার মতো ঘটনা বলে উল্লেখ করব।’
উইটকফ বলেন, ‘আমরা একমত হয়েছি যে ইউক্রেনকে নিরাপত্তা নিশ্চয়তা দেওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্য দেশগুলো অনুচ্ছেদ–৫–এর মতো ভাষা কার্যকরভাবে ব্যবহার করতে পারবে।’ অনুচ্ছেদ–৫ বলতে উইটকফ পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর বিধানের পাঁচ নম্বর অনুচ্ছেদের কথা বুঝিয়েছেন।
এই অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, জোটের কোনো সদস্যদেশ আক্রান্ত হলে অন্য সদস্যরা তাকে রক্ষায় এগিয়ে আসবে। অনেক আগে থেকেই ন্যাটোর সদস্য হতে চায় ইউক্রেন। তবে এ নিয়ে আপত্তি রয়েছে রাশিয়ার। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার অভিযান শুরুর অন্যতম প্রধান কারণ ছিল, ইউক্রেনের ন্যাটোর সদস্য হওয়ার প্রচেষ্টা।
সোমবার ট্রাম্প–জেলেনস্কি বৈঠক থেকে ভালো কিছুর আশা করছেন স্টিভ উইটকফ। তিনি বলেন, আলাস্কা থেকে ফেরার পথে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের খুঁটিনাটি আলাপ হয়েছে। ওয়াশিংটনে সোমবারের বৈঠক ফলপ্রসূ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।