Samakal:
2025-05-14@01:14:26 GMT

ইতিহাসের প্রতি তাকাইতে হইবে

Published: 13th, May 2025 GMT

ইতিহাসের প্রতি তাকাইতে হইবে

সন্ত্রাসবিরোধী আইনের অধীনে অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সকল প্রকার কার্যক্রমের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোট করিয়াছে। সোমবার এই মর্মে জারীকৃত প্রজ্ঞাপনে দলটির পক্ষে যে কোনো অনলাইন-অফলাইন তৎপরতা নিষিদ্ধ করা হইয়াছে। সরকারের বক্তব্য অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দল হিসাবে আওয়ামী লীগ এবং ইহার নেতাদের বিচার সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকিবে। সরকারি এই প্রজ্ঞাপনকে অনুসরণ করিয়া নির্বাচন কমিশনও আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত করিয়াছে। উক্ত দুই সিদ্ধান্তের কারণে স্বাধীনতার পর হইতে কয়েক দফায় দেশ শাসনকারী ৭৬ বৎসর বয়সী আওয়ামী লীগ আপাতত রাজনীতির ময়দান হইতে এক প্রকার নির্বাসন লইতে বাধ্য হইতেছে। এই ঘটনা এমন সময়ে ঘটিতেছে, যখন গত দেড় দশকে নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস করিবার পাশাপাশি গুম-খুনসহ মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং বিশেষত গত জুলাই-আগস্টে আন্দোলনকারীদের উপর হত্যাযজ্ঞ পরিচালনার অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের সহিত বিগত সরকারসংশ্লিষ্ট প্রভাবশালী ব্যক্তিবর্গের বিচার চলমান। 

স্মরণ করা যাইতে পারে, গত আগস্ট-সেপ্টেম্বরে বিশেষত জুলাই আন্দোলনে নেতৃত্ব দানকারী কোনো কোনো ছাত্রনেতা যখন উক্ত বিচারের পাশাপাশি আওয়ামী লীগকেও নিষিদ্ধের দাবি তুলিয়াছিলেন, তখন সরকারের একাধিক উপদেষ্টা ও রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা বলিয়াছিলেন, কাহারও রাজনীতি ও সংগঠন করিবার সাংবিধানিক অধিকার সরকার খর্ব করিতে চাহে না। এমনকি আইসিটি আইনটি সংশোধনের সময় উহার দল ও সংগঠনের বিচার-সংক্রান্ত ধারাটিও রদ করা হইয়াছিল। তখন এমন কথাও হইয়াছিল, অপকর্মে যুক্ত কোনো দল বা সংগঠনকে প্রতিহত করিবার মোক্ষম উপায় হইল উহার আদর্শ বা রাজনৈতিক চিন্তাকে যথোপযুক্ত পাল্টা রাজনীতি বা আদর্শ দিয়া মোকাবিলা করা। নিছক আইনি প্রক্রিয়ায় বা বল প্রয়োগের মাধ্যমে উক্ত দল বা সংগঠনকে প্রতিহত করিবার চেষ্টা সাধারণত টেকসই হয় না। সত্য, সাবেক রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদের বিনা বাধায় দেশত্যাগের ঘটনা জাতীয় নাগরিক পার্টি ও অন্য কয়েকটি রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীকে ক্ষুব্ধ করিয়াছে, যাহা সরকারকে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিষয়ে তাহার পূর্বতন অবস্থান পরিবর্তনে বাধ্য করিয়াছে। কিন্তু ইহাতে কি একই বিষয়ে সরকারের পূর্বের অবস্থানের পশ্চাতের যুক্তিগুলি অসার প্রমাণিত হয়? এই সিদ্ধান্ত আমাদের রাজনীতি এবং গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের উপর কী প্রভাব ফেলিতে পারে– উহাও খতাইয়া দেখা প্রয়োজন।

রাজনৈতিক দল ও সংগঠন নিষিদ্ধ করিবার ঘটনা এই দেশে অতীতেও ঘটিয়াছে। স্বাধীনতার পর সংবিধানের ধারাবলে ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলির উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ হয়, যাহা পরবর্তী সময়ে রাজনৈতিক পালাবদলের পর উঠিয়া যায়। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারও উহার শেষ সময়ে জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করিয়াছিল। কিন্তু আজিকার বাস্তবতা হইল, জামায়াত বর্তমানে দেশের দ্বিতীয় প্রধান সক্রিয় রাজনৈতিক দল। 

দৃশ্যমান কর্মকাণ্ডে নিষেধাজ্ঞা যে এমনকি নিয়মতান্ত্রিক কোনো দলকেও দেশকে অস্থিতিশীল রাখিবার অদৃশ্য তৎপরতার দিকে ঠেলিয়া দিতে পারে, সেই অভিজ্ঞতাও দেশে-বিদেশে স্বল্প নহে। এই কারণে যদি চলমান বিচার প্রক্রিয়াসহ রাষ্ট্র সংস্কারের মূল কাজে সরকারের মনোযোগ ব্যাহত হয়, তাহা হইলে ইহা অপেক্ষা দুর্ভাগ্যজনক আর কিছুই হইবে না। তাই আমরা বরং মনে করি, সরকারের উচিত স্বচ্ছ ও যথাযথ বিচার প্রক্রিয়া অনুসরণের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সদস্যদের বিরুদ্ধে উত্থাপিত সকল অভিযোগের নিষ্পত্তি ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সরক র র কর য় ছ কর ব র র উপর আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

ক্যামেরার পেছনেও মন মনোজের

ওয়েব সিরিজ রঙিলা কিতাব, ঈদের সিনেমা দাগিতে স্বল্প উপস্থিতি দিয়েও নিজের ছাপ রেখেছেন মনোজ প্রামাণিক। তবে মনোজ এখন নির্মাণ আর প্রযোজনায় মনোযোগী বেশি। বুসান এশিয়ান ফিল্ম স্কুলের বৃত্তি নিয়ে তিনি এখন দক্ষিণ কোরিয়ায় আছেন। হোয়াটসঅ্যাপে তাঁর দিনযাপনের গল্প শুনেছেন লতিফুল হক

অভিনয়কে পেশা হিসেবে নেবেন, মনোজ এ সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ১০ কি ১২ বছর হবে। তবে এরপরই যুক্ত হন শিক্ষকতায়। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে চলচ্চিত্র বিষয়ে পড়ান। ধীরে ধীরে নির্মাণে আগ্রহ তৈরি হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সিনেমা বানান, সেসবের প্রযোজনায় যুক্ত থাকতে হয়। মনে হলো, কাজটা আরও ভালোভাবে শেখা দরকার। চোখ ছিল বুসান এশিয়ান ফিল্ম স্কুলের দিকে। আগে এখানে পড়ে গেছেন আবু শাহেদ ইমন, আরিফুর রহমান, তানভীর হোসেন, ফজলে হাসান প্রমুখ। আবেদন করার পর ‘প্রডিউসিং ট্র্যাক’ প্রোগ্রামে সাত মাসের আবাসিক শিক্ষার্থী হিসেবে বৃত্তি পেয়েছেন। গত ২১ মার্চ বুসানে যান মনোজ। এশিয়ার ১৭ দেশ থেকে এ প্রোগ্রামে অংশ নিচ্ছেন ১৯ জন। বিভিন্ন সংস্কৃতির ভিন্ন চিন্তার মানুষজনের সঙ্গে থাকা, রান্না করা, খাওয়া, পড়া থেকে ঘোরাঘুরি দারুণ উপভোগ করছেন তিনি।

মনোজ প্রামাণিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ