মিশা সওদাগরকে মারধরের ভিডিও ভাইরাল, আসল ঘটনা কী
Published: 15th, May 2025 GMT
ঢালিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা মিশা সওদাগরের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, কয়েকজন মানুষ রাস্তায় তাকে মারধর করেছেন। দাবি করা হয়, অভিনেতা মবের শিকার হয়েছেন।
বুধবার রাতে ভিডিওটি ভাইরাল হয়। এরপর তার হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে থাকার একটি ছবিও ছড়িয়ে পড়ে। যা দেখে অনেকে মনে করছেন, আহত হয়ে তিনি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
তবে মিশার সেই মারধরের ভিডিওটি সত্য নয়। তার নামে ভুয়া একটি ভিডিওই ঘুরে বেড়াচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। কিন্তু তার হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে থাকার ছবিটি সত্য। সম্প্রতি হাঁটুর অস্ত্রোপচারের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে একটি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন তিনি। সেখানেই ছবিটি তোলা।
প্রায় ৯ বছর আগে ‘মিসড কল‘ নামে একটি সিনেমার শুটিং করতে গিয়ে গুরুতর আহত হয়েছিলেন খলনায়ক মিশা সওদাগর। সে সময় তার ডান পায়ের লিগামেন্ট ছিঁড়ে গিয়েছিল। চিকিৎসা নিয়ে সুস্থও হয়েছিলেন। এরপর আবারও সেই একই জায়গায় আঘাতপ্রাপ্ত হন এ অভিনেতা। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে সুস্থও হয়ে ওঠেন তিনি। সুস্থ হয়ে উঠলেও চিকিৎসকের পরামর্শ ছিল হাঁটুর অস্ত্রোপচার করা। সে উদ্দেশেই বেশ কিছুদিন আগে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান মিশা সওদাগর।
বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় সকালে তার হাঁটুর অস্ত্রোপচার করা হয় বলে জানা গেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অভিনেতা জায়েদ খান। তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্রের ডালাসের একটি হাসপাতালে মিশা সওদাগরের হাঁটুর সফল অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়েছে। আপনারা সবাই দোয়া করবেন তার জন্য।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
রোজার আগেই নির্বাচন, এরপর আগের কাজে ফিরে যাবেন
অন্তর্বর্তী সরকার সময়মতো ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে পবিত্র রমজানের আগেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের পর তিনি তাঁর আগের কাজে ফিরে যাবেন।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভাকে এসব কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওয়াশিংটন থেকে ভিডিও ফোনকলে অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে কথা বলেন জর্জিয়েভা।
এ সময় তাঁরা বাংলাদেশের চলমান অর্থনৈতিক সংস্কার, আঞ্চলিক পরিস্থিতি এবং আগামী ফেব্রুয়ারিতে সাধারণ নির্বাচনের পূর্ববর্তী চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করেন।
আলোচনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা। তিনি বলেন, অধ্যাপক ইউনূস দায়িত্ব গ্রহণের পর বাংলাদেশের অর্থনীতি উল্লেখযোগ্যভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে এবং এই কৃতিত্ব তাঁর নিজের।
অর্থনীতির সংকটকালীন পরিস্থিতি স্মরণ করে আইএমএফ প্রধান বলেন, ‘আপনার অর্জন আমাকে মুগ্ধ করেছে। অল্প সময়ে আপনি অনেক কিছু করেছেন। যখন অবনতির ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি ছিল, তখন আপনি দেশের দায়িত্ব নিয়েছেন। আপনি সঠিক সময়ে সঠিক ব্যক্তি।’
ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা বিশেষভাবে বৈদেশিক মুদ্রা বাজারের স্থিতিশীলতা এবং রিজার্ভ পুনরুদ্ধারের জন্য সরকারের সাহসী পদক্ষেপ, বাজারভিত্তিক বিনিময় হার প্রবর্তনের প্রশংসা করেন।
অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশের এক সংকটময় সময়ে আইএমএফ প্রধানের অবিচল সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘চমৎকার সহায়তার জন্য ধন্যবাদ।’ তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, গত বছর নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে তাঁদের প্রথম সাক্ষাৎ বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পথ সুগম করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল।
কথোপকথনে আইএমএফ প্রধান অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আয় বৃদ্ধি এবং ব্যাংকিং খাতে গভীর সংস্কার বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, ‘শক্ত অবস্থানে থাকতে হলে সংস্কার অনিবার্য। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসের এক অমূল্য মুহূর্ত।’
অধ্যাপক ইউনূস জানান, তাঁর সরকার ইতিমধ্যে ব্যাংকিং খাত পুনর্গঠন এবং রাজস্ব সংগ্রহ জোরদারের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, ‘আমরা এক বিধ্বস্ত ও সম্পূর্ণ ভেঙে পড়া অর্থনীতি উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছি। কিছু ব্যক্তি আক্ষরিক অর্থে ব্যাগভর্তি টাকা ব্যাংক থেকে নিয়ে পালিয়ে গেছে।’
এ ছাড়া আঞ্চলিক পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়। এর মধ্যে ছিল নেপালে চলমান যুব আন্দোলন এবং আসিয়ানভুক্তির জন্য বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষা। অধ্যাপক ইউনূস আঞ্চলিক কানেক্টিভিটি জোরদারের লক্ষ্যে ঢাকার বৃহৎ অবকাঠামো উদ্যোগ—যেমন নতুন বন্দর ও টার্মিনাল প্রকল্প—সম্পর্কেও অবহিত করেন।
আলোচনাকালে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং অর্থসচিব খায়রুজ্জামান মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।