ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেছেন, নিষিদ্ধ রাজনৈতিক দলের কার্যক্রম ও নাশকতার ব্যাপারে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হবে। জনগণের নিরাপত্তা ও সেবা দিতে সর্বোচ্চ পেশাদারিত্বের সাথে কাজ করতে হবে।  

বৃহস্পতিবার (১৫ মে) রাজধানীর রাজারবাগে বাংলাদেশ পুলিশ অডিটোরিয়ামে এপ্রিল মাসের অপরাধ পর্যালোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশে ডিএমপি কমিশনার বলেছেন, পুলিশ আইন ও বিধি দ্বারা পরিচালিত সুশৃঙ্খল বাহিনী। পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে পোশাকে, উপস্থাপনায়, সেবায় এবং দৃঢ়তায় নিজেদের অনন্য   উচ্চতায় তুলে ধরতে হবে। দায়িত্ব পালনে কোনো প্রকার অপেশাদার আচরণ ও শিথিলতা প্রদর্শন করার বিন্দুমাত্র সুযোগ নেই। মানুষের সাথে আচরণে বিনয়ী হতে হবে।  প্রতিটি থানায় আলাদা আলাদা টিম করে তদন্ত, মাদক, চোরাই মাল উদ্ধারে কাজ করতে হবে। অপরাধ নিয়ন্ত্রণে আরো বেশি তৎপর হতে হবে এবং মামলা নিষ্পত্তির হার আরো বাড়াতে হবে।

তিনি আরো বলেন, বিরাজমান পরিস্থিতিতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের প্রতিটি সদস্য দৃঢ় মনোবল নিয়ে  পেশাদারিত্বের সাথে তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে চেষ্টা করে যাচ্ছে।

ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার (ক্রাইম) মো.

ফারুক হোসেন ২০২৫ সালের এপ্রিল মাসের সার্বিক অপরাধ পরিস্থিতি, যেমন: ডাকাতি, দস্যুতা, চুরি, সিঁধেল চুরি, খুন, অপমৃত্যু, সড়ক দুর্ঘটনা, নারী ও শিশু নির্যাতন, ধর্ষণ, মাদকদ্রব্য ও অস্ত্র উদ্ধারসহ বিভিন্ন মামলা সংক্রান্ত তথ্য উপস্থাপন করেন। এ সময় ডিএমপি কমিশনার উপস্থিত পুলিশ সদস্যদের বিভিন্ন নির্দেশনা দেন।

মাসিক অপরাধ সভায় এপ্রিল মাসে ঢাকা মহানগরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, অপরাধ নিয়ন্ত্রণসহ উত্তম কাজের স্বীকৃতি হিসেবে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে বিভিন্ন পদমর্যাদার কর্মকর্তাদেরকে পুরস্কার দেন ডিএমপি কমিশনার।

অপরাধ পর্যালোচনা সভায় ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মো. সরওয়ার, অতিরিক্ত কমিশনার (অ্যাডমিন) ফারুক আহমেদ, অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) এস এন মো. নজরুল ইসলাম, অতিরিক্ত কমিশনার (কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম) মো. মাসুদ করিম, অতিরিক্ত কমিশনার (লজিস্টিকস, ফিন্যান্স অ্যান্ড প্রকিউরমেন্ট) হাসান মো. শওকত আলীসহ যুগ্ম কমিশনারগণ, উপ-কমিশনারগণ, ডিএমপির সকল থানার অফিসার ইনচার্জগণ ও বিভিন্ন পদমর্যাদার পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা/এমআর/রফিক

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপস থ অপর ধ ড এমপ

এছাড়াও পড়ুন:

একটা ‘ঘৃণা নিয়ন্ত্রণ কমিশন’ এখন সময়ের দাবি: সায়ান

গানে-কবিতায় প্রতিবাদী এক কণ্ঠস্বরের নাম ফারজানা ওয়াহিদ সায়ান। শুধু তা–ই নয়, রাজপথেও থাকেন সামনের সারিতে। ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে সোচ্চার ছিলেন সায়ান। পরবর্তী সময়েও অন্যায় অবিচারে নিজের প্রতিবাদ থামিয়ে রাখেননি। এবার তিনি সমাজ ও রাষ্ট্রে ঘৃণা এবং সহিংসতার চর্চা বন্ধে নিজের অবস্থান জানিয়ে কথা বলেছেন।

সোমবার দেওয়া ফেসবুক পোস্টে সায়ান বর্তমান সরকারকে ঘৃণা, সহিংসতা ও হত্যার হুমকির মতো বিষয়গুলো নিয়ে কঠোর হওয়ার জোর দাবি জানিয়েছেন

তিনি লিখেছেন, ‘আপনারা ঘৃণা চর্চার বয়ানকে চিহ্নিত করুন, আক্রমণাত্মক ভাষাভঙ্গি নিয়ে কাজ করুন। মানুষের জন্য মানবিক আচরণের ন্যূনতম একটা মানদণ্ড তৈরির কথা ভাবুন। বিভিন্ন মঞ্চে গিয়ে একে বেশ্যা, তাকে দালাল-এগুলো তো প্রতিদিনের ব্যাপার হয়েছে, তার সঙ্গে এই যে জবাই করার কথা বলা, “ধরে ধরে জবাই কর”, এটা পৃথিবীর যেকোনো সমাজে, যেকোনো রাষ্ট্রে কীভাবে গ্রহণযোগ্য? এভাবে ঘৃণার ও হত্যা হুমকির খুল্লামখুল্লা চর্চা চালিয়ে যাবে কেউ, আর তারপর সেটার কোনো পরিণতি হবে না, এটা কেন গ্রহণযোগ্য? এখানে তো ব্যক্তিকে হত্যা করার কথা বলা হচ্ছে। এটা কীভাবে স্বাভাবিক? এটা স্লোগান হিসেবে কেন আপত্তিকর নয়? হত্যার উসকানি নয়?’

সায়ান তার ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘এ ধরনের ভাষা তিনি ২০১৩ সালে শুনেছেন, যখন গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলন চলছিল। তখনো এসব শুনে তাঁর আনন্দ হয়নি প্রাণে। শিহরিত হননি তিনি। সায়ান লিখেছেন, ‘বিচার চাওয়া আর জবাই করা এক ব্যাপার না। বিচারের সংস্কৃতিই সেটা নয়।’

সায়ানের মতে, ‘ঘৃণা নিয়ন্ত্রণ কমিশন’ এখন সময়ের দাবি—এই প্রসঙ্গ উল্লেখ করে শিল্পী বললেন, ‘সাধারণ জনতার ভিড়ে সুশীলও থাকেন, উন্মাদ মব-জনতাও থাকেন। তাদের কাছে কিছু আশা করি না বাড়তি। তারা রাষ্ট্রের দায়িত্বে নাই। তারা যে যার নীতি-গতি-বিবেক অনুযায়ী আচরণ করবেন, সকলেরই দেশ, সকলেই স্বাধীন। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দিক থেকে তো একটা মানদণ্ড থাকতে হবে আচরণের। কেন একটা মানুষ আরেকটা মানুষকে বেশ্যা ডেকে পার পাবেন? কেন যে কেউ যে কাউকে ভালো না লাগলেই জবাই করার হুমকি দেবেন এবং তার স্বাভাবিকীকরণ হবে? কেন বিভিন্ন মাহফিলে ঘৃণা ছড়ানোর বয়ান চলতে পারে যুগের পর যুগ, অন্য ধর্মের মানুষের প্রতি? মেয়েদের প্রতি? তাই একটা “ঘৃণা নিয়ন্ত্রণ কমিশন” এখন সময়ের দাবি।’

সাম্প্রতিক এক উদাহরণ টেনে সায়ান লেখেন, ‘সেদিন দেখলাম কোনো এক মঞ্চ থেকে কেউ কেউ তালে তালে বলছেন, “একটা একটা লীগ ধর, ধরে ধরে জবাই কর।” রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে থাকা মানুষেরা কেন এই চর্চায় কোনো সমস্যা পাচ্ছেন না? মব-জনতা উন্মাদনায় ভেসে যাচ্ছে জংলিপনায়। কিন্তু রাষ্ট্রের নিযুক্ত সেবকেরা কী করে এখানে নির্বিকার থাকবেন? এগুলোকে দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবে দেখতে চাই। কেউ অপরাধ করলে তার বিচার করবেন আদালতে। জবাই করার স্লোগানের মধ্যে ২০১৩–তেও দেশপ্রেম ছিল না, এখনো নাই। বিচারের মানসিকতা ছিল না, এখনো নাই।’

পোস্টের শেষ দিকে তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘গা ছেড়ে দিয়ে বসে থাকলে সংস্কৃতি পাল্টাবে না। কাজ করতে হবে। প্রচারণা করতে হবে। এখানে মানুষ গালি দেওয়া এবং জবাই করার হুমকি দেওয়ার মধ্য দিয়ে দেশপ্রেমিকের দায়িত্ব শেষ করে। এগুলো বন্ধ করতে হবে। সরকারকে বলছি, কাউকে কেউ কিছু বললেই গায়েবি মামলা দিয়ে তুলে নিয়ে যাইয়েন না। কোন কথাগুলো উগ্র-হিংসাত্মক ও আপত্তিকর, সেগুলোর তালিকা করেন। আইনিভাবে ঘৃণা চর্চাকে নিষিদ্ধ করেন। এটা কোনো রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করার জটিল প্রক্রিয়ার চেয়ে কিছুটা সহজ হবে করা। ঘৃণা চর্চাকে খাটো করে দেখবেন না। সেখান থেকে বৈধতা আসে বড় বড় অপরাধের।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সদাচরণ ইসলামের অন্যতম শিক্ষা
  • ভারতের আচরণ বন্ধুসুলভ নয়
  • উপদেষ্টা মাহফুজকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা কোনোভাবেই প্রত্যাশিত ন
  • হলের কক্ষ থেকে মাদকদ্রব্য উদ্ধারের ঘটনায় ৪ শিক্ষার্থী সাময়িক বহিষ্কার
  • জবি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশি হামলার নিন্দা ছাত্র ইউনিয়নের
  • ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে অব্যাহত মিথ্যাচারের নিন্দা ও প্রতিবাদ
  • একটা ‘ঘৃণা নিয়ন্ত্রণ কমিশন’ এখন সময়ের দাবি: সায়ান
  • ‘একটা মানুষ আরেকটা মানুষকে বেশ্যা ডেকে কেন পার পাবেন?’