খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র হতে চান এস এম শফিকুর রহমান। ২০২৩ সালে অনুষ্ঠিত খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে জামানত হারিয়েছিলেন তিনি। এখন প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) সঙ্গে দেখা করে সেই নির্বাচনে নিজেকে বিজয়ী ঘোষণা করার দাবি জানিয়েছেন শফিকুর।

গত শনিবার খুলনায় সংবাদ সম্মেলন করে ২০২৩ সালের নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলে নিজেকে খুলনা সিটির বৈধ মেয়র হিসেবে ঘোষণা করার দাবি জানিয়েছিলেন শফিকুর। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে দেখা করে একই দাবি জানান তিনি।

পরে শফিকুর রহমান সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। আপনার চাওয়াটা কী— সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে শফিকুর রহমান বলেন, ‘চাওয়াটা হলো, আমি জয়ী হয়েছি, এটাই চাওয়া, এটা ডিক্লেয়ার দেওয়ার জন্য.

.।’

শফিকুর রহমান বলেন, ছাত্র–জনতার আন্দোলনে ফ্যাসিস্ট সরকার চলে যাওয়ার পর তিনি সিইসি, নির্বাচন কমিশনের সচিব ও স্থানীয় সরকার বিভাগে তিনটি দরখাস্ত করেন। সেখানে তিনি উল্লেখ করেছেন, তিনি নির্বাচনে পরাজিত হননি। যে ভোট হয়েছে, সেটা গণনা করা হলে তিনি জয়ী হবেন। কোনো জবাব না পেয়ে তিনি উচ্চ আদালতে রিট করেন। তাঁর দাবি, উচ্চ আদালত তাঁর পক্ষে রায় দিয়েছেন। দরখাস্ত ৩টি ৩০ দিনের মধ্যে ‘ডিসপোজাল’ করার জন্য বলেছেন। এ বিষয়ে তিনি আজ সিইসির সঙ্গে দেখা করেছেন। সিইসি তাঁকে আশ্বস্ত করেছেন, আইনের ব্যাখ্যা অনুযায়ী ইসি কাজ করবে।

২০২৩ সালের খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে ২ লাখ ৫৬ হাজার ২৭৭টি ভোট পড়ে। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের প্রার্থী তালুকদার আবদুল খালেক ১ লাখ ৫৪ হাজার ৮২৫ পেয়ে নির্বাচিত হন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী আবদুল আউয়াল পেয়েছিলেন ৬০ হাজার ৬৪ ভোট। এ ছাড়া জাতীয় পর্টির শফিকুল ইসলাম ১৮ হাজার ৭৮ ভোট এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী এস এম শফিকুর রহমান পান ১৭ হাজার ২১৮ ভোট। ওই নির্বাচনে চতুর্থ স্থানে থাকা শফিকুর জামানত হারান। এর আগে ২০১৮ সালের সিটি নির্বাচনেও জাপার প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করে জামানত হারিয়েছিলন তিনি।

আরও পড়ুনখুলনা সিটির মেয়র ঘোষণার দাবি জামানত হারানো শফিকুরের১০ মে ২০২৫

ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত বছরের ১৯ অক্টোবর ঢাকা দক্ষিণ, ঢাকা উত্তর, চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী, সিলেট, বরিশাল, নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা, রংপুর, গাজীপুর ও ময়মনসিংহ—এই ১২ সিটি করপোরেশনের মেয়রদের অপসারণ করে অন্তর্বর্তী সরকার। পরে সিটি করপোরেশনগুলোতে প্রশাসক নিয়োগ করা হয়।

তবে ৫ আগস্টের পর এখন পর্যন্ত আদালতের রায়ে বিএনপির দুজন প্রার্থীকে দুটি সিটি করপোরেশনের মেয়র ঘোষণা করা হয়েছে। গত বছরের ১ অক্টোবর আদালতের রায়ে বিএনপি নেতা শাহাদাত হোসেনকে চট্টগ্রাম সিটির মেয়র ঘোষণা করা হয়। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নির্বাচন হয়েছিল ২০২১ সালে। শাহাদাত এখন মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

অন্যদিকে ২০২০ সালে অনুষ্ঠিত ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী ইশরাক হোসেনকে গত ২৭ মার্চ মেয়র ঘোষণা করে রায় দেন আদালত। গত ২৭ এপ্রিল তাঁকে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। তবে তাঁকে এখনো মেয়র হিসেবে শপথ পড়ানো হয়নি। ইশরাক হোসেনকে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে আজ সকাল থেকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান কার্যালয় নগর ভবনের সামনে ও ভেতরে অবস্থান নিয়েছেন তাঁর সমর্থকেরা।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: জ ম নত হ র সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

প্রথমবারের মতাে ৩০ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল রেমিট্যান্স

চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের দু’দিন বাকি থাকতেই  ৩০ বিলয়ন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স এসেছে। গত ২৮ জুন পর্যন্ত বৈধ চ্যানেলে এসেছে ৩০ দশমিক শূন্য ৪ বিলিয়ন বা ৩ হাজার ৪ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স। গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় যা ৬৩০ কোটি ডলার বা ২৬ দশমিক ৫৪ শতাংশ বেশি। এর আগে করোনার প্রকোপ শুরুর পর ২০২০-২১ অর্থবছরে ২৪ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন ডলার এসেছিল। এতদিন সেটিই ছিল অর্থবছরের হিসাবে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স। এদিকে রেমিট্যান্সে উচ্চ প্রবৃদ্ধিসহ নানা কারণে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়ে ২৮ মাস পর ৩১ দশমিক ৩১ বিলিয়ন ডলার হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি জুন মাসের ২৮ দিনে প্রবাসীরা ২৫৪ কোটি ডলার সমপরিমাণ অর্থ দেশে পাঠিয়েছেন। আগের অর্থবছরের একই সময়ে এসেছিল ২৩৭ কোটি ডলার। রেমিট্যান্স বেড়েছে প্রায় ১৬ কোটি ৭০ লাখ ৭ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ বেশি। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেন, ঋণ জালিয়াতি বন্ধ ও অর্থ পাচারকারীদের বিরুদ্ধে অন্তর্বর্তী সরকারের কঠোর অবস্থানের কারণে হুন্ডি চাহিদা কমেছে। যে কারণে বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স বাড়ছে। 

রেমিট্যান্সে উচ্চ প্রবৃদ্ধির পাশাপাশি রপ্তানি আয়ে ৯ শতাংশের মতো প্রবৃদ্ধি হয়েছে। আবার বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ, এডিবিসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা থেকে ৫ বিলিয়ন ডলারের বেশি ঋণ পেয়েছে সরকার। সব মিলিয়ে বৈদেশিক মুদ্রার গ্রস রিজার্ভ ৩১ দশমিক ৩১ বিলিয়ন ডলার হয়েছে। গত ২৮ মাসের মধ্যে যা সর্বোচ্চ। সর্বশেষ ২০২৩ সালের মার্চের শুরুতে রিজার্ভ ৩২ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমেছিল। এর পর ওই মাসের ১৫ তারিখ সর্বোচ্চ ৩১ দশমিক ২৯ বিলিয়ন ডলার হয়। এ ছাড়া সব সময়ই এখনকার চেয়ে রিজার্ভ কম ছিল। গত মে মাসে ডলারের দর পুরোপুরি বাজারের ওপর ছেড়ে দিয়েছে সরকার। তবে বৈদেশিক মুদ্রার উচ্চ প্রবাহের কারণে ডলার দীর্ঘদিন ধরে ১২২ থেকে ১২৩ টাকায় সীমাবদ্ধ রয়েছে।

২০২৩ সালে আইএমএফের ঋণ কর্মসূচি চালুর পর থেকে রিজার্ভের তিনটি হিসাব হচ্ছে। ইডিএফসহ বিভিন্ন তহবিলে জোগান দেওয়া ঋণসহ গ্রস রিজার্ভের হিসাব করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আর বিভিন্ন তহবিলে জোগান দেওয়া ঋণ বাদ দিয়ে আইএমএফের বিপিএম৬ ম্যানুয়াল এবং আগামী এক বছরে সরকারি পরিশোধের হিসাব বাদ দিয়ে নিট রিজার্ভের হিসাব করা হচ্ছে। গতকাল বিপিএম৬ অনুযায়ী রিজার্ভ ২৬ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন ডলার হয়েছে। ২০২৩ সালের জুন থেকে এই পদ্ধতিতে হিসাব প্রকাশ শুরুর পর যা সর্বোচ্চ। ওই মাসে রিজার্ভ ছিল ২৪ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন ডলার। এ ছাড়া গতকাল নিট রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২০ দশমিক ৩২ বিলিয়ন ডলার। আইএমএফের ঋণ কর্মসূচির আওতায় যেখানে জুন শেষে লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ১৭ দশমিক ২৯ বিলিয়ন ডলার। এর মানে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে নিট রিজার্ভ বেশি রয়েছে ৩ বিলিয়ন ডলারের বেশি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, দেশের ইতিহাসে রিজার্ভ প্রথমবারের মতো ৪৮ বিলিয়ন ডলারের ঘর অতিক্রম করে ২০২১ সালের আগস্টে। অর্থ পাচার ব্যাপক বেড়ে যাওয়ায় রিজার্ভ ধারাবাহিকভাবে কমে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের আগে গত জুলাই শেষে বিপিএম৬ অনুযায়ী ২০ দশমিক ৪৮ বিলিয়ন ডলারে নেমে যায়। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর
আগের সরকারের ৩৭০ কোটি ডলারের বকেয়া পরিশোধ করেছে। এর পরও গত ১০ মাসে রিজার্ভ বেড়েছে ৬ বিলিয়ন ডলারের বেশি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • প্রথমবারের মতাে ৩০ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল রেমিট্যান্স
  • গল্পের প্রয়োজনে অন্তরঙ্গ দৃশ্য করেছি: রাজ রিপা
  • ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহত আরো ৮১ ফিলিস্তিনি
  • সিলিকন ভ্যালিতে চাকরি পেলেন ইরফান, বেতন বছরে সাড়ে তিন কোটি
  • ইসরায়েলের হামলায় গাজায় প্রায় ১ লাখ ফিলিস্তিনি নিহত
  • ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহত আরও ৭২
  • প্লাস্টিকখেকো ছত্রাক
  • জাপান ও ভারতে তৈরি পোশাক রপ্তানি বাড়ছে
  • গাজায় ইসরায়েলি হামলায় শুধু ২৪ ঘণ্টায় নিহত ৭২
  • মধ্যপ্রাচ্যে যেভাবে সংঘাত ছড়িয়ে দিচ্ছে ইসরায়েল