কোহলির দশম শ্রেণির নম্বরপত্র: অঙ্কে খারাপ, ইংরেজিতে ভালো, ক্রিকেটে কিংবদন্তি
Published: 18th, May 2025 GMT
গত এক সপ্তাহে ভারতে সবচেয়ে বেশি আলোচিত ঘটনার একটি ছিল বিরাট কোহলির অবসর। ১২ মে টেস্ট থেকে অবসরের ঘোষণা দেন ভারতের সাবেক অধিনায়ক।
এর পরদিন প্রকাশিত হয় ২০২৫ সালের দশম শ্রেণির সিবিএসই (সেন্ট্রাল বোর্ড অব সেকেন্ডারি এক্সামিনেশন) পরীক্ষার ফল। অংশগ্রহণকারী বিবেচনায় ভারতের সবচেয়ে বড় পরীক্ষা এটি। যেটিকে শিক্ষাজীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপও বিবেচনা করা হয়।
আরও পড়ুন৬ মাস পর ফিরে সাকিব যা বললেন১৪ ঘণ্টা আগেকোহলির অবসর ও সিবিএসই দশম শ্রেণির পরীক্ষার ফল—আলোচনায় থাকা এ দুটি বিষয়কে এবার একসঙ্গে সামনে এনেছেন আইএএস কর্মকর্তা জিতিন যাদব। কোহলির সিবিএসই পরীক্ষার মার্কশিট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তুলে ধরে জিতিন লিখেছেন, পরীক্ষায় পাওয়া নম্বরই সফলতা নয়, সাফল্য আসে উদ্দীপনা ও নিষ্ঠা থেকে।
কোহলি সবচেয়ে বেশি ৮৩ নম্বর পেয়েছেন ইংরেজিতে, আর সবচেয়ে কম ৫১ নম্বর গণিতে।জিতিনের পোস্ট করা কোহলির মার্কশিটটি ২০২৩ সালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছিল। এবার কোহলি অবসর নেওয়ায় তাঁর ক্যারিয়ার নিয়ে চারপাশে যে বন্দনা চলছে, তাতে পরীক্ষার নম্বরপত্রকে আবারও প্রাসঙ্গিক মনে করছেন কেউ কেউ। নম্বরপত্র পর্যবেক্ষণ করে দেখা যাচ্ছে, ২০০৪ সালে দিল্লির এ=২ পশ্চিম বিহারে অবস্থিত স্যাভিয়র কনভেন্ট সেকেন্ডারি স্কুল থেকে দশম শ্রেণির সিবিএসই পরীক্ষা দিয়েছিলেন কোহলি।
আরও পড়ুনতিন কারণে বিসিবিতে আবার দুদক১৩ ঘণ্টা আগেকোহলি সবচেয়ে বেশি ৮৩ নম্বর পেয়েছেন ইংরেজিতে, আর সবচেয়ে কম ৫১ নম্বর গণিতে। এ ছাড়া সমাজবিজ্ঞানে ৮১, হিন্দিতে ৭৫, ইন্ট্রোডাক্টরি আইটিতে ৭৪ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে ৫৫ নম্বর পেয়েছেন। ইন্ট্রোডাক্টরি আইটির তত্ত্বীয় অংশে পেয়েছিলেন ১৬ নম্বর, তবে ব্যবহারিকে বেশি পাওয়ায় সব মিলিয়ে তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ৬৯.
কোহলির নম্বরপত্রটি পোস্ট করে আইএএস কর্মকর্তা জিতিন লিখেছেন, ‘নম্বরই যদি সবকিছু হতো, তাহলে গোটা দেশ তাঁকে অনুসরণ করত না। (সাফল্য পাওয়ার জন্য) উদ্দীপনা আর নিষ্ঠাই আসল।’
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: দশম শ র ণ র পর ক ষ র র সবচ য় স ব এসই ক হল র
এছাড়াও পড়ুন:
মারা গেছেন কিংবদন্তি বব সিম্পসন
অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অধিনায়ক ও দেশটির প্রথম পূর্ণকালীন কোচ বব সিম্পসন সিডনিতে ৮৯ বছর বয়সে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছেন। তাঁর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া।
অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব হিসেবে ধরা হয় সিম্পসনকে। ১৯৫৭ থেকে ১৯৭৮ পর্যন্ত তিনি খেলেছেন ৬২ টেস্ট, ৪৬.৮১ গড়ে করেছেন ৪ হাজার ৮৬৯ রান, নিয়েছেন ৭১ উইকেট। ছিলেন দুর্দান্ত এক স্লিপ ফিল্ডারও।
তাঁর নামে পাশে আছে ১১০টি ক্যাচও। ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি লেগ স্পিনও করতেন সিম্পসন। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে তাঁর সংগ্রহে আছে ২১ হাজার ২৯ রান ও ৩৪৯ উইকেট।
১৯৬৮ সালে প্রথমবার অবসরে যাওয়ার আগে ১১ বছরে খেলেন ৫০ টেস্ট, এর মধ্যে ২৯টিতেই তিনি ছিলেন অধিনায়ক। পরবর্তীতে অবসর ১৯৭৭ সালে ৪১ বছর বয়সে আবার টেস্ট দলে ফেরেন সিম্পসন। তখন ভারতের বিপক্ষে ঘরে ও পূর্ণশক্তির ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে অ্যাওয়ে সিরিজে দলকে নেতৃত্ব দেন। সব মিলিয়ে অধিনায়ক হিসেবে ৩৯ ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে নেতৃত্ব দিয়েছেন সিম্পসন।
টেস্টে সিম্পসনের ১০ সেঞ্চুরির সবগুলোই এসেছে অধিনায়ক হিসেবে। ১৯৬৪ সালে ম্যানচেস্টারে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলেন ৩১১ রানের ঐতিহাসিক ইনিংস, যা তাঁর ক্যারিয়ার সেরা। অধিনায়ক হিসেবে তাঁর গড় ছিল ৫৪.০৭।
শুধু খেলোয়াড় হিসেবে নন, কোচ হিসেবেও দারুণ ভূমিকা রেখেছেন সিম্পসন। ১৯৮৬ সালে কোচের দায়িত্ব নিয়ে অধিনায়ক অ্যালান বোর্ডারের সঙ্গে মিলে তৈরি করেন নতুন সংস্কৃতি।
তিনি এমন একটা সময়ে কোচের দায়িত্ব নিয়েছিলেন, যখন এর আগের দুই বছরে কোনো টেস্ট সিরিজ জিততে পারেনি অস্ট্রেলিয়া। তাঁর হাত ধরে উঠে আসেন ডেভিড বুন, ডিন জোন্স, স্টিভ ওয়াহ, ক্রেইগ ম্যাকডারমট, মার্ভ হিউজের মতো খেলোয়াড়রা।
সিম্পসনের যুগেই শুরু হয় অস্ট্রেলিয়ার সোনালি অধ্যায়। ১৯৮৭ সালে কোচের পাশাপাশি তাঁকে নির্বাচক প্যানেলেও যুক্ত করা হয়। এ সময়ই সামনে আসেন মার্ক টেলর, ইয়ান হিলি, মার্ক ওয়াহ, শেন ওয়ার্ন, জাস্টিন ল্যাঙ্গার, ম্যাথু হেইডেন, ডেমিয়েন মার্টিন, গ্লেন ম্যাকগ্রা ও রিকি পন্টিংরা।
সিম্পসনের অধীনেই ১৯৮৭ সালে বিশ্বকাপ জেতে অস্ট্রেলিয়া। পাশাপাশি ১৯৮৯ সালে ফিরে পায় অ্যাশেজ এবং ১৯৯৫ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে সরিয়ে টেস্টে দখল করে নেয় বিশ্বের এক নম্বর আসন। শেন ওয়ার্নসহ অনেক তারকাই পরে বলেছিলেন—তাদের ক্যারিয়ারে সবচেয়ে বড় প্রভাবক ছিলেন সিম্পসন। নিজে দুর্দান্ত স্লিপ ফিল্ডার ছিলেন বলে কোচ হিসেবেও তিনি ফিল্ডিং ও ফিটনেসকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতেন।
১৯৯৬ সালে অস্ট্রেলিয়ার কোচের দায়িত্ব শেষে কাজ করেছেন ইংল্যান্ডের কাউন্টি ক্রিকেটে, ভারতের রঞ্জি ট্রফিতে রাজস্থান দলের হয়ে, এমনকি নেদারল্যান্ডসের কোচ হিসেবেও। তাঁর হাত ধরেই নেদারল্যান্ডস খেলেছিল ২০০৭ বিশ্বকাপে। ১৯৯৯ বিশ্বকাপে ভারতের পরামর্শকও ছিলেন তিনি।
১৯৭৮ সালে সিম্পসন পান অর্ডার অব অস্ট্রেলিয়ার সদস্যপদ, ২০০৭ সালে সেটি উন্নীত হয় অফিসার অব দ্য অর্ডারে। ১৯৬৫ সালে হন উইজডেন বর্ষসেরা ক্রিকেটার, আছেন আইসিসি ও অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেট হল অব ফেমেও।