দাবি আদায়ে আবারও আন্দোলনে নামার ঘোষণা দিয়েছেন সরকারি-বেসরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। এবার ক্রাফট ইন্সট্রাক্টরদের পদোন্নতির রায় বাতিলের দাবিতে আজ সারাদেশে বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দিয়েছেন তারা।

সরকারি ও বেসরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা আবারও আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন। সম্প্রতি হাইকোর্টে ক্রাফট ইন্সট্রাক্টরদের জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর পদে পদোন্নতির রায় স্থগিত হওয়াকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীরা ওই রায় সম্পূর্ণ বাতিলের দাবি জানিয়ে দেশব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন।

আজ দেশের সব পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে একযোগে এ কর্মসূচি পালন করা হবে। একইসঙ্গে ঢাকার পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটগুলোর শিক্ষার্থীরা হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করবেন।

কারিগরি ছাত্র আন্দোলনের নেতারা জানান, আজ হাইকোর্টে সংশ্লিষ্ট মামলার শুনানি রয়েছে। এই শুনানিকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীরা মাঠে নেমে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করতে চায়।

সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা জানান, ক্রাফট ইন্সট্রাক্টরদের প্রাথমিক কাজ মূলত ল্যাব পরিচালনায় সহায়তা ও প্র্যাকটিক্যাল ক্লাসে যন্ত্রাংশ সরবরাহ। তাদের শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসি অথবা এইচএসসি ভোকেশনাল পর্যায়ের, যা দিয়ে ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষার্থীদের পাঠদান করা অযৌক্তিক ও অযোগ্যতা প্রমাণ করে। শিক্ষকের পদে পদোন্নতির জন্য ন্যূনতম যোগ্যতা ও মানদণ্ড থাকা উচিত। 
জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর পদে কেবল পিএসসি কর্তৃক নির্বাচিত ডিপ্লোমা ডিগ্রিধারীরাই নিয়োগ পাওয়ার কথা। এই নিয়ম লঙ্ঘন করে ভিন্ন কোনো প্রক্রিয়ায় পদোন্নতির সুযোগ তৈরি হলে তা শিক্ষার মান ও স্বচ্ছতার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াবে।

শিক্ষার্থীরা আশা প্রকাশ করেন, হাইকোর্ট শিক্ষার্থীদের অবস্থান বিবেচনায় এনে আজ মামলাটি বাতিল করবেন এবং কারিগরি শিক্ষায় গুণগত মান ও স্বচ্ছতা বজায় রাখবেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

কোটিপতি হলেও পরিচ্ছন্নতা কর্মীর কাজ করেন তিনি

পর্যাপ্ত অর্থ সঞ্চয় করতে পারলেই আমাদের অনেকে কায়িক পরিশ্রম ছেড়ে দেন। আরাম-আয়েশে জীবন কাটান। কিন্তু সবাই তা করেন না। এমন একজন জাপানের কোইচি মাতসুবারা। ৫৬ বছর বয়সী এই জাপানি নাগরিকের বার্ষিক আয় প্রায় ৩ কোটি ইয়েন (প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা) হওয়া সত্ত্বেও তিনি এখনো নিয়মিত পরিচ্ছন্নতাকর্মীর কাজ করেন।

মাতসুবারা সপ্তাহে তিন দিন, প্রতিদিন চার ঘণ্টা করে কাজ করেন। তিনি সরকারি পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে কাজ করেন। এ কাজের অংশ হিসেবে তাঁকে ছোটখাটো রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করতে হয়।

এ কাজ থেকে মাতসুবারা মাসে ১ লাখ ইয়েন (প্রায় ৮২ হাজার ৬৪ টাকা) আয় করেন, যা টোকিওর গড় বেতনের তুলনায় অনেক কম। তারপরও তিনি এ কাজ করেন। কারণ, তিনি এটাকে শারীরিক সক্রিয়তা ও মানসিক প্রশান্তির উপায় হিসেবে দেখেন।

মাতসুবারা ছোটবেলা থেকেই সঞ্চয়ী ছিলেন। মাধ্যমিকের পর তিনি একটি কারখানায় মাসে ১ লাখ ৮০ হাজার ইয়েন (প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা) বেতনে কাজ শুরু করেন। খরচ বাঁচিয়ে কয়েক বছরে প্রায় ৩০ লাখ ইয়েন (২৯ লাখ ২৫ হাজার টাকা) সঞ্চয় করে তিনি প্রথম স্টুডিও ফ্ল্যাট কিনেছিলেন।

পরে বাড়ি কেনার ঋণ আগেভাগে পরিশোধ করে ধীরে ধীরে আরও ফ্ল্যাট কেনেন এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধি করেন মাতসুবারা। এখন টোকিও ও এর শহরতলিতে তাঁর সাতটি ফ্ল্যাট রয়েছে, যার সবই ভাড়া দিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করেছেন।

ধনবান হলেও মাতসুবারা সাদাসিধে জীবন যাপন করেন। এখনো তিনি সস্তা ফ্ল্যাটে থাকেন, নিজের খাবার নিজে বানান, নতুন জামাকাপড় কেনেন না, সাধারণ স্মার্টফোন ব্যবহার করেন এবং প্রধানত সাইকেলে চলাচল করেন। তাঁর জীবনদর্শন—‘প্রতিদিন কিছু না কিছু করার আশা করি, সুস্থ থাকতে চাই এবং নিজেকে নিয়ে চিন্তা করতে চাই।’

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে মাতসুবারাকে ‘অদৃশ্য কোটিপতি’ বলে উল্লেখ করা হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর গল্প ছড়িয়ে পড়েছে। জাপানে ধনীদের এমন সাধারণ জীবনধারা অস্বাভাবিক নয়। দেশটিতে সাদাসিধে জীবনযাপন অনেকের মধ্যে দেখা যায়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ