শেয়ারের দর পতন ঠেকাতে সমাধান খুঁজছে সরকার
Published: 18th, May 2025 GMT
শেয়ারবাজারে লাগাতার দর পতন নিয়ে অস্বস্তিতে সরকার। গতকাল রোববার দিনের শুরুতে বেশির ভাগ শেয়ারের দর বৃদ্ধিতে প্রধান সূচক ডিএসইএক্স প্রায় ৩৮ পয়েন্ট বাড়লেও শেষ পর্যন্ত ২৯ পয়েন্ট পতনে লেনদেন শেষ হয়। এমন প্রেক্ষাপটে শেয়ারবাজারের পতন থামাতে আশু করণীয় হিসেবে কর ছাড় বিষয়ে কিছু পরিকল্পনা নিয়ে ভাবছে সরকার। এখনই আরও কিছু করার থাকলে তা গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করার আগ্রহও রয়েছে। এ জন্য গতকাল রোববার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং ব্রোকারদের সংগঠন ডিবিএ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড.
এদিকে অব্যাহত পতনে শেয়ারবাজার মারা গেছে, এমনটি বোঝাতে প্রতীকী কফিন নিয়ে ঢাকার মতিঝিলের রাস্তায় অবস্থান নেন কিছু বিনিয়োগকারী। তারা প্রতীকী কফিন সামনে রেখে জানাজা পড়েন।
গতকালের বৈঠকে সিডিবিএল ও সিসিবিএলের প্রতিনিধি এবং শেয়ারবাজার সংস্কারে গঠিত টাস্কফোর্স সদস্যরা অংশ নেন। এ ছাড়া বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ এবং তিন কমিশনার উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে অংশগ্রহণকারী আইডিএলসি সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সাইফউদ্দিন সমকালকে বলেন, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারীর কথা শুনে মনে হয়েছে, সরকার শেয়ারবাজারের চলতি সমস্যার আশু সমাধানে খুবই আন্তরিক। কিছু একটা করে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাতে চায় সরকার। অংশ নেন এমন আরও কয়েকজনের সঙ্গে কথা হয় এ প্রতিবেদকের। তাদের বক্তব্যের সারমর্ম হলো– বিনিয়োগকারীদের আস্থা পুনরুদ্ধার করে পতন থামাতে সরকার আন্তরিক। তবে পতন থামাতে এখন কী করণীয়, তা কারও বক্তব্যে খুব স্পষ্টভাবে আসেনি। কেউ বলেছেন, আগামী তিন মাসের মধ্যে কিছু ভালো শেয়ার আনতে পারলে পরিস্থিতি কিছুটা বদলাতে পারে। সরকারি নতুন কোম্পানির শেয়ার ছাড়তে কিছু সময় লাগবে। তবে পাওয়ার গ্রিডসহ বর্তমানে তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ার ছাড়ার সুযোগ আছে। এ ছাড়া ইউনিলিভারসহ যেসব বহুজাতিক কোম্পানিতে সরকারের শেয়ার আছে, সরকার চাইলে তা দ্রুতই বাজারে আনা যেতে পারে।
অনুষ্ঠানের শুরুত ডিএসইর চেয়ারম্যান শেয়ারবাজারের সামগ্রিক অবস্থা, কাঠামোগত সমস্যা, অর্থনীতিতে অবস্থান, নিয়ন্ত্রক সংস্থা, আইপিও, অডিট রিপোর্ট, সুশাসনসহ বহু বিষয়ে সমস্যাগুলো তুলে ধরেন। চলতি পতনের কারণ বিষয়ে তিনি বলেন, সরকারি বন্ডের অধিক সুদের হার, তালিকাভুক্ত কোম্পানির মুনাফা কমা, মার্জিন অ্যাকাউন্টে মূলধনি লোকসান এবং টাকার অবমূল্যায়নের প্রভাব রয়েছে। এর বাইরে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাতে বিও হিসাবের নবায়ন ফি ছাড়, মূলধনি মুনাফা কর অব্যাহতি এবং ১ লাখ টাকা পর্যন্ত লভ্যাংশ আয়ে করমুক্ত করার প্রস্তাব করেন তিনি। এ ছাড়া তালিকাভুক্ত ও অতালিকাভুক্ত কোম্পানির কর ব্যবধান ১০ শতাংশ করা, বহুজাতিক ও ভালো মৌলভিত্তির দেশীয় কোম্পানিগুলোকে তালিকাভুক্ত হতে উৎসাহিত করা, ৫০০ কোটি টাকার বেশি দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নে ব্যাংক ঋণের পরিবর্তে আইপিও/বন্ডের মাধ্যমে মূলধন সংগ্রহ বাধ্যতামূলক করার প্রস্তাব করেন ডিএসইর চেয়ারম্যান।
বৈঠক সূত্র জানায়, শেয়ারবাজারের উন্নয়নে নতুন কিছু বলার আহ্বান জানান ড. আনিসুজ্জামান। এদিকে গত ৯ মাসে সুশাসন বাড়াতে কী করেছেন, তা বলতে চাইলে বিএসইসির চেয়ারম্যাকে থামিয়ে দেন তিনি। ডিবিএর সভাপতি সাইফুল ইসলাম তাঁর বক্তব্যে বলেন, ডিমিউচুয়ালাইজেশন আইন করে স্টক এক্সচেঞ্জকে পোস্ট অফিস বানানো হয়েছে। সব ক্ষমতা কেড়ে নিয়েছে বিএসইসি। শেয়ারবাজারে ‘পারসেপশন’-এর বড় গুরুত্ব আছে। মানুষ যখন মনে করে, এখানে লাভ হবে না, তাহলেই সমস্যা। ডিএসইর পরিচালক শাকিল রিজভী বলেন, গত ১৫ বছরে বিএসইসি যত আইন করেছে, তার সবগুলো ছিল বিনিয়োগকারী তাড়ানোর জন্য।
ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী বলেন, শেয়ারবাজারে সমস্যা আছে। সবাই মিলে এর সমাধান করতে হবে। সরকার যা করার করবে। তবে যেসব সমস্যা বিএসইসি বা স্টক এক্সচেঞ্জ নিজেরা সমাধান করতে পারে, তা বিলম্ব না করতে নির্দেশ দেন তিনি।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: শ য় রব জ র শ য় রব জ র র ব এসইস সমস য সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
তিন ব্যাংকের ২৩০০ কোটি টাকার বন্ড অনুমোদন
তিন ব্যাংকের ২ হাজার ৩০০ কোটি টাকা মূল্যের বন্ডের প্রস্তাব অনুমোদন করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বিএসইসির ৯৭৫তম কমিশন সভায় এই বন্ড অনুমোদন করেছে কমিশন। বিএসইসি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
আরো পড়ুন:
প্রিফারেন্স শেয়ার, বন্ডের বিনিয়োগ সিআইবিতে রিপোর্ট করতে নির্দেশ
পুঁজিবাজারে সূচকের পতনে সপ্তাহ শুরু, কমেছে লেনদেন
ব্র্যাক ব্যাংক:
ব্র্যাক ব্যাংকের ১০০ কোটি টাকা মূল্যের আনসিকিউট, নন-কনভার্টিবল, ফুললি রিডিমেবল, কুপন রেয়ারিং, ফ্লোটিং রেট, সোস্যাল সাবর্ডিনেট বন্ডের প্রস্তাব অনুমোদন করেছে কমিশন। যার কুপন রেট হবে রেফারেন্স রেট প্লাস ২ দশমিক ৫০ শতাংশ কুপর মার্জিন। এটি প্রাইভেট প্লেসমেন্টের মাধ্যমে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের নিকট ইস্যু করা হবে। এই বন্ডের প্রতি ইউনিটের অভিহিত মূল্য ১০ লাখ টাকা।
বন্ড ইস্যুর মাধ্যমে অর্থ উত্তোলন করে ব্র্যাক ব্যাংকের টিআর-২ মূলধন ভিত্তি শক্তিশালী করা হবে। বন্ডটির ট্রাস্টি হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে প্রাইম ব্যাংক ইনভেস্টমেন্ট এবং অ্যারেঞ্জার হিসেবে কাজ করবে ব্র্যাক ইপিএল ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড। এছাড়াও বন্ডটি অল্টারনেটিভ ট্রেডিং বোর্ডে তালিকাভুক্ত হবে।
ইউনাইটেড কমার্শিয়াল:
কমিশন সভায় ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের ৮০০ কোটি টাকা মূল্যের আনসিকিউট, নন-কনভার্টিবল,রিডিমেবল, ফ্লোটিং রেট সাবর্ডিনেট বন্ডের প্রস্তাব অনুমোদন করেছে কমিশন। যার কুপন রেট হবে রেফারেন্স রেট প্লাস ৩ শতাংশ কুপন মার্জিন। এটি প্রাইভেট প্লেসমেন্টের মাধ্যমে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের নিকট ইস্যু করা হবে। এই বন্ডের প্রতি ইউনিটের অভিহিত মূল্য এক লাখ টাকা।
বন্ড ইস্যুর মাধ্যমে অর্থ উত্তোলন করে ইউনাইটেড কমার্সিয়াল ব্যাংকের টিআর-২ মূলধন ভিত্তি শক্তিশালী করা হবে। বন্ডটির ট্রাস্টি হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে ডিবিএইচ ফাইন্যান্স এবং অ্যারেঞ্জার হিসেবে কাজ করবে ইউসিবি ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড।এছাড়াও বন্ডটি অল্টারনেটিভ ট্রেডিং বোর্ডে তালিকাভুক্ত হবে।
ট্রাস্ট ব্যাংক:
কমিশন সভায় ট্রাস্ট ব্যাংকের ৫০০ কোটি টাকা মূল্যের আনসিকিউট, নন কনভার্টিবল, রিডিমেবল, ফ্লোটিং রেট সাবর্ডিনেট বন্ডের প্রস্তাব অনুমোদন করেছে কমিশন। যার কুপন রেট হবে রেফারেন্স রেট প্লাস ৩ শতাংশ কুপন মার্জিন। এটি প্রাইভেট প্লেসমেন্টের মাধ্যমে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের নিকট ইস্যু করা হবে। এই বন্ডের প্রতি ইউনিটের অভিহিত মূল্য এক লাখ টাকা।
বন্ড ইস্যুর মাধ্যমে অর্থ উত্তোলন করে ট্রাস্ট ব্যাংকের টিআর-২ মূলধন ভিত্তি শক্তিশালী করা হবে। বন্ডটির ট্রাস্টি হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে ডিবিএইচ ফাইন্যান্স এবং অ্যারেঞ্জার হিসেবে কাজ করবে ইউসিবি ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড। এছাড়াও বন্ডটি অল্টারনেটিভ ট্রেডিং বোর্ডে তালিকাভুক্ত হবে।
ঢাকা/নাজমুল/সাইফ