স্পেনের পার্লামেন্ট গাজায় সামরিক অভিযানের প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলের ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য সরকারকে আহ্বান জানিয়ে একটি নন-বাইন্ডিং (বাধ্যতামূলক নয়) প্রস্তাব পাস করেছে। খবর আনাদোলুর।

স্পেনের সংবাদমাধ্যম এল পাইস জানিয়েছে, ক্ষমতাসীন জোটের অংশ বামপন্থি সুমার জোট, বিরোধী দল পোডেমোস এবং রিপাবলিকান লেফট অব কাতালোনিয়া দ্বারা উত্থাপিত এই প্রস্তাবটি স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২০ মে) ১৭৬-১৭১ ভোটে পাস হয়েছে।

রক্ষণশীল পিপলস পার্টি (পিপি) ও অতি-ডানপন্থি ভক্স প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ভোট দিলেও, অন্যান্য সব দল প্রস্তাবটিকে সমর্থন করেছে।।

আরো পড়ুন:

পর্তুগাল ও স্পেনে নজিরবিহীন বিদ্যুৎ বিপর্যয়, পর্যুদস্তু জনজীবন

ডাচদের বিপক্ষে হার এড়াল স্পেন

পক্ষে থাকা আইনপ্রণেতারা প্রস্তাবটিকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। তারা স্পেন সরকারকে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীকে শক্তিশালী করতে পারে এমন যেকোনো উপকরণ- যার মধ্যে হেলমেট, ভেস্ট এবং সম্ভাব্য সামরিক ব্যবহারের জন্য জ্বালানি রয়েছে, রপ্তানি নিষিদ্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে।

প্রস্তাবটিতে গণহত্যা বা মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত যেকোনো রাষ্ট্রের সঙ্গে সামরিক চুক্তি নিষিদ্ধ করার জন্য স্পেনের বৈদেশিক বাণিজ্য আইন সংস্কারেরও সুপারিশ করা হয়েছে, বিশেষ করে গাজায় ইসরায়েলের আক্রমণের কথা উল্লেখ করে।

সুমার মুখপাত্র ভেরোনিকা মার্টিনেজ বলেছেন, স্পেন ‘গণহত্যা বা যুদ্ধাপরাধ সংঘটিত রাষ্ট্রের সঙ্গে সহযোগিতা করতে পারে না’। তিনি আরো বলেন, “গাজার বর্তমান পরিস্থিতিতে ইসরায়েলের অস্ত্র ভাণ্ডারকে সমর্থন করা উচিত নয়।”

পোদেমোসের নেতা ইওন বেলারা স্পেনের মন্ত্রিসভার প্রতি এই সপ্তাহে জরুরি অধিবেশন আহ্বান করে ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র বিক্রি নিষিদ্ধ করার জন্য একটি আনুষ্ঠানিক ডিক্রি জারি করার আহ্বান জানিয়েছেন।

বিরোধী দলীয় নেতা আরো বলেন, “ফিলিস্তিনিরা আর অপেক্ষা করতে পারে না। নেতানিয়াহু একদিকে হত্যা, বোমাবর্ষণ চালাচ্ছেন, অন্যদিকে ফিলিস্তিনিদের অনাহার রাখছেন ও চিকিৎসা সেবা থেকেও বঞ্চিত করছেন। যা ঘটছে তা একবিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে বড় জাতিগত নির্মূল।

তিনি ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে ‘এ যুগের হিটলার’ হিসেবে অভিহিত করেন।

ব্রাসেলসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র বিষয়ক কাউন্সিলের বৈঠকে যোগদানকারী প্রতিরক্ষামন্ত্রী মার্গারিটা রোবলস দাবি করেছেন, ৭ অক্টোবর, ২০২৩ তারিখে গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে স্পেন ইসরায়েলের সঙ্গে অস্ত্র ব্যবসা করেনি।

রোবলস বলেন, “আমরা ইসরায়েল থেকে অস্ত্র কিনছি না এবং এটি স্পষ্টভাবে বলা উচিত। ৭ অক্টোবর থেকে, ইসরায়েল থেকে একটিও অস্ত্র কেনা হয়নি। স্প্যানিশ নিরাপত্তা বাহিনীর জন্য কেবল হেলমেট এবং ভেস্টের মতো প্রতিরক্ষামূলক সরঞ্জাম কেনা হয়েছে।”

তবে, সংসদের বাইরে বিক্ষোভকারী নাগরিক সমাজের গোষ্ঠীগুলো দাবি করেছে, স্পেন এখনো ইসরায়েলি অস্ত্র কোম্পানিগুলোর সাথে নয়টি সক্রিয় চুক্তি বজায় রেখেছে এবং সেই চুক্তির অধীনে লাখ লাখ ইউরো প্রদান করে চলেছে।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসর য় ল প রস ত ব র জন য ইসর য

এছাড়াও পড়ুন:

হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত

ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।

মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স। 

গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’

পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।

হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।

আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।

সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’ 

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’

তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।

রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গাজায় ইসরায়েলি অভিযানের ‘কঠোরতম ভাষায়’ নিন্দা জানিয়েছে সৌদি আরব
  • যারা জাতীয় পার্টিসহ ১৪ দলকে নিষিদ্ধ চায়, তারা আদালতে অভিযোগ দিতে পারে: সালাহউদ্দিন আহমদ
  • গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যার প্রমাণ পেয়েছে জাতিসংঘের তদন্ত কমিশন
  • হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত
  • ‘গাজায় গণহত্যা চলছে, আমি সেই গণহত্যার নিন্দা করছি’