গাজায় ‘ফ্রেন্ডলি ফায়ারে’ ৩১ ইসরায়েলি সেনা নিহত
Published: 5th, July 2025 GMT
গাজায় চলমান অভিযানে নিজেদের মধ্যে ভুলবশত ছোড়া গুলিতে (ফ্রেন্ডলি ফায়ার) ইসরায়েলের অন্তত ৩১ সেনা নিহত হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার ইসরায়েলি আর্মি রেডিওর এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে গাজায় ‘স্থল অভিযান’ শুরু করার পর থেকে এ পর্যন্ত ইসরায়েলি ৪৪০ সেনা নিহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ৭২ জন অভিযান পরিচালনাসংক্রান্ত দুর্ঘটনায় নিহত হন, যা মোট মৃত্যুর প্রায় ১৬ শতাংশ।
এ ছাড়া সেনাদের মধ্যে ৩১ জন নিজেদের মধ্যে ভুলবশত ছোড়া গুলিতে, ২৩ জন গোলাবারুদ–সংশ্লিষ্ট দুর্ঘটনায়, ৭ জন সাঁজোয়া যানের চাকায় পিষ্ট হয়ে ও ৬ জন অজ্ঞাত গুলিবর্ষণের ঘটনায় নিহত হন।
ইসরায়েলি আর্মি রেডিওর খবরে আরও বলা হয়, গত ১৮ মার্চ ইসরায়েল গাজায় সামরিক অভিযান আবার শুরু করার পর এখন পর্যন্ত সেখানে ইসরায়েলি ৩২ সেনা নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে শুধু দুজন ‘অভিযান পরিচালনা–সংশ্লিষ্ট দুর্ঘটনায়’ নিহত হয়েছেন।
গাজায় ‘স্থল অভিযান’ চালাতে গিয়ে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি ৪৪০ সেনা নিহত হয়েছেন বলে ইসরায়েলি আর্মি রেডিওর এক প্রতিবেদন বলা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ৭২ জন অভিযান পরিচালনাসংক্রান্ত দুর্ঘটনায় নিহত হন, যা মোট সেনা মৃত্যুর প্রায় ১৬ শতাংশ।যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোগে এবং কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতায় এ বছরের জানুয়ারিতে গাজায় একটি যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠা হয়েছিল, যা মার্চের শেষভাগে ভেঙে পড়ে।
ইসরায়েলের আরও পাঁচ সেনা কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন বলেও খবরে বলা হয়েছে। এর মধ্যে উঁচু জায়গা থেকে পড়ে যাওয়া এবং প্রকৌশল সরঞ্জাম ব্যবহারে অসাবধানতার কারণও রয়েছে।
এ ধরনের একটি ঘটনা গত বৃহস্পতিবার রাতেও ঘটেছে। তবে খবরে এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দেওয়া হয়নি।
আরও পড়ুনগাজায় ৪ ইসরায়েলি সেনা নিহত০৬ জুন ২০২৫ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর দেওয়া তথ্যানুযায়ী, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর এ সংঘাতে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি ৮৮২ সেনা নিহত (স্থল অভিযানে নিহত ৪৪০ সেনাসহ) ও ৬ হাজার ৩২ সেনা আহত হয়েছেন।
আন্তর্জাতিক অঙ্গন থেকে বারবার যুদ্ধবিরতির আহ্বান সত্ত্বেও ইসরায়েল গাজায় তাদের গণহত্যা অব্যাহত রেখেছে। গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে, এ পর্যন্ত এই যুদ্ধে ৫৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাঁদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।
গত নভেম্বরে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে গণহত্যার (জেনোসাইড) মামলা চলছে।
আরও পড়ুনগাজা যুদ্ধের বিরুদ্ধে মুখ খুলছেন ইসরায়েলি সেনারা, নেতানিয়াহুর ওপর চাপ বাড়ছে০২ মে ২০২৫আরও পড়ুনগাজায় ইসরায়েলের ৭ সেনাসদস্য নিহত২৫ জুন ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইসর য় ল র দ র ঘটন য় আরও প
এছাড়াও পড়ুন:
ইসরায়েলের সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্য বন্ধ করুন: জাতিসংঘ বিশেষজ্ঞ
অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডবিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ র্যাপোর্টিয়ার ফ্রানচেসকা আলবানিজ ইসরায়েলের সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্যিক ও আর্থিক সম্পর্ক ছিন্ন করতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছে, ইসরায়েলকে দেওয়া আন্তর্জাতিক সহায়তা বন্ধ করা ও দেশটির ওপর পুরোপুরি অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়ও।
গতকাল বৃহস্পতিবার জেনেভায় জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদে বক্তব্য দেওয়ার সময় আলবানিজ এমন আহ্বান জানান। তিনি ইসরায়েলের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে ‘গণহত্যার অর্থনীতি’ বলে আখ্যা দেন।
মানবাধিকার পরিষদে এদিন আলবানিজ নতুন একটি প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন। সেখানে ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি দমন–পীড়ন ও সহিংসতায় সহায়তাকারী বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ করা হয়।
আলবানিজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলের দখলদারি ও উপনিবেশ গঠনের পরিকল্পনাকে টিকিয়ে রাখতে বড় কোম্পানিগুলো একধরনের করপোরেট যন্ত্র হিসেবে কাজ করছে। এই যন্ত্রই ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ করে সেখানে বসতি স্থাপনের পরিকল্পনায় ইন্ধন জোগাচ্ছে।ফ্রানচেসকা আলবানিজ বলেন, ‘অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের অবস্থা ভয়াবহ। ইসরায়েল আধুনিক ইতিহাসের অন্যতম নিষ্ঠুর গণহত্যার জন্য দায়ী।’
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি হামলা চলছে। জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, গাজা যুদ্ধ শুরু করার পর থেকে ইসরায়েলি হামলায় এ উপত্যকায় প্রায় ৫৭ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, কয়েক লাখ মানুষ একাধিকবার বাস্তুচ্যুত হয়েছেন, বিভিন্ন শহর ও গ্রাম মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। হাসপাতাল ও স্কুলগুলোও হামলার লক্ষ্যবস্তু হয়েছে। অবরুদ্ধ ও বোমা হামলায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া গাজা উপত্যকার ৮৫ শতাংশ এলাকাই এখন ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে।
আলবানিজের উপস্থাপন করা প্রতিবেদনটির শিরোনাম দেওয়া হয়েছে, ‘ফ্রম ইকোনমি অব অকুপেশন টু ইকোনমি অব জেনোসাইড (দখলদারির অর্থনীতি থেকে গণহত্যার অর্থনীতি)’। কীভাবে বড় করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো ইসরায়েলের দখলদারি ও উপনিবেশ গঠনের পরিকল্পনাকে টিকিয়ে রাখছে, তা এ প্রতিবেদনে বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়েছে।
আরও পড়ুনগাজায় ইসরায়েলের গণহত্যায় সহায়তা করছে মাইক্রোসফটসহ বহু প্রতিষ্ঠান০২ জুলাই ২০২৫ইসরায়েলি হামলায় নিহত ফিলিস্তিনিদের জানাজায় অংশ নিতে মানুষের ভিড়। গত মঙ্গলবার রাতে হামলায় তাঁরা নিহত হন। ২ জুলাই ২০২৫, খান ইউনিস, গাজা