হাসিনার নামের মামলা ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তুলে নেওয়ার আবেদন
Published: 21st, May 2025 GMT
টাঙ্গাইলে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ডামি নির্বাচন ও ভোট চুরির অভিযোগে করা মামলা প্রত্যাহারে আবেদন করেছেন বাদী।
নানামুখী চাপ ও নিরাপত্তাহীনতার কারণ দেখিয়ে মামলা দায়েরের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তা প্রত্যাহারে বুধবার (২১ মে) জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ভূঞাপুর আমলি আদালতে আবেদন করেন তিনি। মামলা প্রত্যাহার বিষয়ে পরবর্তী ধার্য তারিখে আদেশ দেবেন আদালত।
বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবু রায়হান খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আরো পড়ুন:
নারায়ণগঞ্জে শেখ হাসিনাসহ ৬২ জনের বিরুদ্ধে মামলা
শেখ হাসিনাকে বৃহস্পতিবার দুদকে তলব
মামলার বাদীর নাম কামরুল হাসান (৫৫)। তিনি টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার ভারই গ্রামের মৃত মমতাজ উদ্দিন আহম্মেদের ছেলে। কামরুল হাসান ভূঞাপুরের অলোয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি।
বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবু রায়হান খান বলেন, “শেখ হাসিনাকে প্রধান আসামি করে ১৯৩ জনের বিরুদ্ধে গত সোমবার (১৯ মে) এই মামলা রুজু করা হয়। বিজ্ঞ আদালত ভূঞাপুর থানার ওসিকে মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।”
তিনি বলেন, “বুধবার বাদী আদালতে এসে মামলাটি প্রত্যাহারের দরখাস্ত দিয়েছেন। বিচারক রুমেলিয়া সিরাজাম বাদীর জবানবন্দি নিয়ে রেখেছেন। আগামী ১৩ আগস্ট মামলার পরবর্তী ধার্য তারিখে প্রত্যাহার বিষয়ে আদেশ দিবেন আদালত।”
এ বিষয়ে জানতে মামলার নথিতে উল্লেখিত বাদী কামরুল হাসানের ফোন নম্বরে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
বাদীর বরাত দিয়ে অ্যাডভোকেট আবু রায়হান খান বলেন, “মামলা দায়েরের পর বাদী কামরুল হাসান পারিবারসহ নানামুখী চাপে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তিনি এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এজন্য মামলা পরিচালনা করতে অপারগতা জানিয়ে তিনি তা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেন।”
নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি ডামি নির্বাচনের আয়োজন এবং ভোট চুরির অভিযোগে কামরুল হাসান গত সোমবার (১৯ মে) মামলা করেন। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী আব্দুল আওয়ালসহ ১৯৩ জনকে আসামি করা হয়।
মামলায় নাম না জানা আসামি করা হয় আরো ২০০ জনকে। মামলায় পাঁচজন সাংবাদিক ও একজন আইনজীবীর নামও রয়েছে আসামির তালিকায়। পুলিশ ও প্রিজাইডিং অফিসার, নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগ এবং তাদের সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের আসামি করা হয় মামলায়।
ঢাকা/কাওছার/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
প্লট বরাদ্দ নিয়ে দুদকের করা মামলায় অব্যাহতি পেলেন মির্জা আব্বাস
প্লট বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলা নিয়ে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের আপিল মঞ্জুর করেছেন সর্বোচ্চ আদালত। বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আপিল বিভাগ আজ বুধবার এ রায় দেন। ফলে ওই মামলা থেকে মির্জা আব্বাস অব্যাহতি পেলেন বলে জানিয়েছেন তাঁর আইনজীবী।
আদালতে মির্জা আব্বাসের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন ও মো. রুহুল কুদ্দুস শুনানি করেন। দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আসিফ হাসান।
সাংবাদিকদের জন্য প্লট বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগ এনে দুদক ওই মামলা করে বলে জানান জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. রুহুল কুদ্দুস। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এই মামলার এজাহারে মির্জা আব্বাসের নাম ছিল না, অভিযোগপত্রে নাম আসে। এরপর অব্যাহতি চেয়ে বিচারিক আদালতে আবেদন করেন তিনি, যা নামঞ্জুর হয়। এর বিরুদ্ধে তিনি হাইকোর্টে আবেদন করেন। হাইকোর্ট রুল দিয়ে মামলার কার্যক্রমে স্থগিতাদেশ দেন। শুনানি শেষে রুল খারিজ করে রায় দেন। অর্থাৎ তাঁর বিরুদ্ধে মামলা চলবে। এই রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল মঞ্জুরের পর তিনি আপিল করেন। এই আপিল মঞ্জুর করেছেন আপিল বিভাগ। এর অর্থ তাঁর বিরুদ্ধে ওই মামলা আর চলবে না। ওই মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন মির্জা আব্বাস।
দুদকের আইনজীবী আসিফ হাসান প্রথম আলোকে বলেন, আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে মির্জা আব্বাসের আপিল মঞ্জুর করেছেন। এই মামলার অভিযোগ থেকে তিনি অব্যাহতি পেয়েছেন।
আইনজীবীর তথ্য অনুসারে, সাংবাদিকদের জন্য মিরপুরে প্লট বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগে মির্জা আব্বাসসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে ২০১৪ সালের ৬ মার্চ শাহবাগ থানায় মামলাটি করে দুদক। এতে ১৫ কোটি ৫২ লাখ ৫০ হাজার ৯০০ টাকা রাষ্ট্রের আর্থিক ক্ষতির অভিযোগ আনা হয়। এ মামলায় ২০১৬ সালের ২০ অক্টোবর মির্জা আব্বাসসহ তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। এ অভিযোগ গঠনের বিরুদ্ধে মির্জা আব্বাস হাইকোর্টে আবেদন করেন। এর প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ওই বছরের ১৪ ডিসেম্বর হাইকোর্ট রুল দেওয়ার পাশাপাশি মামলার কার্যক্রম অন্তর্বর্তীকালীন সময়ের জন্য স্থগিত করেন। চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১৯ সালের ১৩ মে রুল খারিজ করে রায় দেন হাইকোর্ট।