হজযাত্রীদের জন্য প্রথম আলোর হজ গাইড
Published: 22nd, May 2025 GMT
প্রতিবছর কমবেশি ১ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসলমান বাংলাদেশ থেকে পবিত্র হজ ও ওমরাহ পালনের জন্য সৌদি আরব যাত্রা করেন। ভিন্ন সংস্কৃতি, ভাষা ও পরিবেশের কারণে তাঁদের নানা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়। তাই হজ ও ওমরাহ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে প্রয়োজন সঠিক প্রস্তুতি ও নির্দেশনা। প্রথম আলো এই লক্ষ্যে হজযাত্রীদের জন্য বিনা মূল্যে বিতরণ করছে হজ গাইড। এ ছাড়া হজের পর ওমরাহ পালনকারীদের জন্য এ বছর একটি ওমরাহ গাইডও প্রকাশ করেছে প্রথম আলো।
প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক ফেরদৌস ফয়সাল ২০ বছর ধরে হজ পালন করেছেন। তিনি তাঁর অভিজ্ঞতার আলোকে হজ ও ওমরাহ গাইড তৈরি করেছেন। ২০০৭ সাল থেকে প্রকাশিত হজ গাইডের এ বছর ১৭তম মুদ্রণ ছাপা হয়েছে। এবার ছাপা হয়েছে ১ লাখ কপি। গত ১৬ বছরে প্রায় ২১ লাখ কপি হজ গাইড বিনা মূল্যে হজযাত্রীদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে।
হজ গাইডে কী আছে?
ছোট কলেবরের মাত্র ৪৮ পৃষ্ঠার এই হজ গাইডে হজ পালনের সব কটি ধাপের সহজ বর্ণনা রয়েছে, যা নতুন ও অভিজ্ঞ উভয় হজযাত্রীদের জন্য সমানভাবে উপকারী। এর মধ্যে ঢাকার হজ ক্যাম্পে প্রস্তুতি ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রস্তুত করা থেকে শুরু করে ইহরামের নিয়মকানুন, সময় নির্ধারণ, বিমানবন্দরে ব্যাগেজ নিয়ম, জেদ্দা ও মক্কায় পৌঁছে করণীয়, তিন প্রকারের হজ, তাওয়াফ, সাঈ, মাথা মুণ্ডন বা চুল ছোট করা, দুই রাকাত নামাজের নিয়ম, হজের দিনগুলোতে করণীয়, স্বাস্থ্যসতর্কতা, নতুন হজযাত্রীদের জন্য ১০টি প্রয়োজনীয় পরামর্শসহ অল্প পরিসরে গ্র্যাফিক্যাল নির্দেশনা স্থান পেয়েছে।
আরও পড়ুনঅতি মূল্যবান ও পবিত্র হাজরে আসওয়াদ১০ জুন ২০২৩নতুন সংযোজন ওমরাহ গাইড.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
২০ পেরিয়ে ২১–এ পদার্পণ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের
ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সাক্ষী পুরান ঢাকার বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ে ২০০৫ সালের ২০ অক্টোবর যাত্রা শুরু করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। ২০০৫ সালে জাতীয় সংসদে গৃহীত ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইন’ (২৮ নম্বর আইন) অনুসারে জগন্নাথ কলেজকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত করা হয়। ২০ বছরের সাফল্য ও গৌরবের পর সোমবার ২১ বছরে পদার্পণ করেছে এ বিশ্ববিদ্যালয়। শিক্ষা ও গবেষণার মান উন্নয়ন, শতভাগ ভর্তি নিশ্চিতকরণ, সবার আগে ক্লাস শুরু করা, পূর্বে স্থগিত দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের দুটি ভবন পুনরায় চালু করা, ছাত্র সংসদের নির্বাচনের জন্য জকসু বিধি প্রণয়ন, প্রশাসনিক শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা এবং অস্থায়ী হল নির্মাণের কাজও বিশ্ববিদ্যালয় ইতিমধ্যে শুরু করেছে।
প্রতিবছর ২০ অক্টোবর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় দিবস পালিত হলেও এবার কালীপূজা বা শ্যামাপূজার ছুটি উপলক্ষে তা দুই দিন পিছিয়ে ২২ অক্টোবরে উদ্যাপন করা হবে। ২০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর প্রতিপাদ্য হলো—‘ঐক্যবদ্ধ জবিয়ান, স্বপ্নে জয়ে অটল প্রাণ’। দিনটিকে কেন্দ্র করে প্রতিবছরের মতো এবারও ক্যাম্পাসকে বর্ণিল সাজে সাজানো হয়েছে।
অনেক সংগ্রাম ও সাফল্যের মাধ্যমে গড়ে উঠেছে এই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস ঘেঁটে দেখা যায়, ১৮৫৮ সালে ঢাকা ব্রাহ্ম স্কুল নামে প্রতিষ্ঠানটির যাত্রা শুরু হয়। এরপর ১৮৭২ সালে বালিয়াটির জমিদার কিশোরীলাল রায় চৌধুরী তাঁর বাবার নামে জগন্নাথ স্কুল নামকরণ করেন। ১৮৮৪ সালে এটি একটি দ্বিতীয় শ্রেণির কলেজ এবং ১৯০৮ সালে প্রথম শ্রেণির কলেজে রূপ নেয়। ১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা শুরু হলে জগন্নাথ কলেজের স্নাতক কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়। জগন্নাথ কলেজের ডিগ্রির শিক্ষার্থী, শিক্ষক, গ্রন্থাগারের বইপুস্তক, জার্নাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থানান্তর করা হয়। পুরান ঢাকার নারীশিক্ষায় বাধা দূর করতে ১৯৪২ সালে সহশিক্ষা চালু করা হয়। ১৯৪৮ সালে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে ১৯৪৯ সালে আবার এ কলেজে স্নাতক পাঠ্যক্রম শুরু হয়। ১৯৬৩ সালে অধ্যক্ষ সাইদুর রহমান পুনরায় কো-এডুকেশন চালু করেন। ১৯৬৮ সালে এটিকে সরকারি করা হয়, কিন্তু পরের বছরেই আবার এটি বেসরকারি কলেজের মর্যাদা পায়।
১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ জগন্নাথ কলেজে পাকিস্তানি সেনারা হামলা চালায়। ছাত্ররা অনেকে পালিয়ে প্রাণরক্ষা করেন। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে গণহত্যা চালানো হয়। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে জগন্নাথের কয়েকজন শিক্ষক ও শিক্ষার্থী শহীদ হন। ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে এবং মুক্তির সংগ্রামে অংশ নেয়। জগন্নাথ কলেজে পাকিস্তানি সেনাদের ক্যাম্প করা হয়। যুদ্ধ শেষে এখানে গণকবরের সন্ধান মেলে; উদ্ধার করা হয় কয়েক ট্রাক মানব–কঙ্কাল।
১৯৮২ সাল থেকে শুরু হয় এলাকার প্রভাবশালীদের জগন্নাথ কলেজের হল দখলের পাঁয়তারা। ছাত্রদের সঙ্গে এলাকাবাসীর সংঘর্ষ বাধে বারবার। প্রথমে বেদখল হয়ে যায় কুমারটুলি ছাত্রাবাস। এরপর একের পর এক বেদখল হয় ৮৪ জিএল পার্থ লেন, কুমারটুলিতে (ওয়াইজঘাট স্টার সিনেমা হলের পেছনে) অবস্থিত হলগুলো। ১৯৯২ সালে ১৪টি ছাত্রাবাসের মধ্যে মাত্র ৩টি কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণে থাকে। বাকিগুলো পুলিশ ও এলাকাবাসী দখল করে নেয়। তিনটি ছাত্রাবাসের দুটি (মাহমুদা স্মৃতি ভবন ও এরশাদ হল) বর্তমানে ভেঙে মসজিদ ও কলা অনুষদ করা হয়েছে। ২০০৫ সালে জাতীয় সংসদে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০০৫ পাসের মাধ্যমে এটি একটি পরিপূর্ণ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত হয়। আগেকার জগন্নাথ কলেজের শিক্ষার্থীরা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে গণ্য হন। তাঁদের নিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় যাত্রা শুরু করে। ২০০১-০২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা প্রথমবারের মতো জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষা সনদ লাভ করেন। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন ২০০৫-০৬ শিক্ষাবর্ষ থেকে শিক্ষার্থীরা ভর্তি হওয়ার সুযোগ পান।
বিশ্ববিদ্যালয়টি ১১ দশমিক ১১ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত হলেও বর্তমানে সাড়ে সাত একর জায়গায় রয়েছে। যার মধ্যে একটি প্রশাসনিক ভবন, কলাভবন, বিজ্ঞান ভবন, ব্যবসায় প্রশাসন ভবন, সামাজিক বিজ্ঞান ভবন, নতুন নির্মিত শহীদ সাজিদ একাডেমিক ভবন, অবকাশ ভবনসহ ১০টি ভবন রয়েছে। একটি শহীদ মিনার ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারকগুচ্ছ ভাস্কর্য ‘একাত্তরের গণহত্যা ও মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি’ বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে অবস্থিত। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাকালে ৪টি অনুষদ ও ২২টি বিভাগে প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষার্থী নিয়ে যাত্রা শুরু করে।
বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রথম উপাচার্য ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এ কে এম সিরাজুল ইসলাম খান। এ পর্যন্ত সাতজন উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে রয়েছে ৭টি অনুষদ, ৩৮টি বিভাগ ও ২টি ইনস্টিটিউট।
বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের প্রকল্পের মাধ্যমে নেটওয়ার্কিং অ্যান্ড আইটি দপ্তরের তত্ত্বাবধানে প্রতিটি বিভাগ এবং দপ্তরে দ্রুতগতির ইন্টারনেট–সেবা প্রদান করার জন্য ফাইবার অপটিক কেব্লের সাহায্যে একটি ব্যাকবোন নেটওয়ার্ক তৈরি করা হয়েছে। এতে শিক্ষার্থীরা তারবিহীন দ্রুতগতির ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ পাচ্ছেন। এ ছাড়া অতিসম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়টি ই-নথির যুগে প্রবেশ করেছে।
২০২২-২৩ অর্থবছরে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি (এপিএ) মূল্যায়নে দেশের ৪৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ষষ্ঠ অবস্থানে জায়গা পেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে স্পেনের সিমাগো ইনস্টিটিউশনের র্যাংকিংয়ে রসায়ন বিষয়ে গবেষণা সূচকে বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম স্থান অর্জন করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনে নতুন শ্রেণিকক্ষ বরাদ্দের মাধ্যমে শ্রেণিকক্ষ–সংকট কাটানো ছাড়াও ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগে আধুনিক ‘কার্টোগ্রাফি ল্যাব’ চালু, বিভিন্ন বিভাগে কম্পিউটার ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে। এ ছাড়া করোনার সময়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সেমিস্টার পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা, শিক্ষার্থীদের নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থাপনায় বাড়ি পাঠানোর উদ্যোগ, পড়াশোনায় মনোনিবেশ করার জন্য ডিনস অ্যাওয়ার্ড চালুর উদ্যোগ এবং তাঁদের মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতির লক্ষ্যে কাউন্সেলিং সেন্টার চালু, ডে কেয়ার সেন্টারসহ বছরব্যাপী সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড চালানোর পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে।
বর্তমানে বাংলা নববর্ষ ছাড়াও শরৎ উৎসব, বসন্ত উৎসব, রবীন্দ্র উৎসব, নজরুল উৎসবসহ শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে বার্ষিক চিত্রকর্ম প্রদর্শনী, নিয়মিত বিভিন্ন নাটক ও সিনেমার প্রদর্শনীর আয়োজন করা হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে সকাল-দুপুরে ঢাকার ভেতর চক্রাকারে শাটল বাস সার্ভিস চালু করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়টিতে বর্তমানে ১৬ হাজার ৮৪৩ জন ছাত্র-ছাত্রী অধ্যয়নরত। প্রায় ১৭ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য ৬৬৫ জন শিক্ষক রয়েছেন। যাঁদের মধ্যে অধ্যাপক ১৫৫, সহযোগী অধ্যাপক ১৮৩, সহকারী অধ্যাপক ২৭৬ এবং ৫২ জন প্রভাষক রয়েছেন। এ ছাড়া উচ্চতর ডিগ্রি এবং গবেষণার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়টিতে এমফিল কোর্সে ২৭৯, পিএইচডি কোর্সে ১৮৬ জন শিক্ষার্থী এবং পাশাপাশি দেশের বাইরে ১৫৫ জন শিক্ষক উচ্চতর ডিগ্রির জন্য শিক্ষানবিশ হিসেবে অধ্যয়নরত। তা ছাড়া ২৩৮ জন কর্মকর্তা ও ২২১ জন কর্মচারী, ১৭৫ জন তৃতীয়-চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী এবং ২০৪ জন বিভিন্ন পেশায় দৈনিক হাজিরাভিত্তিক হিসেবে নিয়োজিত আছেন।
প্রাচীন এই বিদ্যাপীঠটির প্রায় ১৭ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে নতুন সাততলা ভবনের ছয় তলায় অবস্থিত একটি কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার এবং ভিন্ন ভিন্ন দুটি উন্মুক্ত গ্রন্থাগার রয়েছে। এর মধ্যে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে বইয়ের সংখ্যা ৩১ হাজার ৩২৬টি। গ্রন্থাগারে ইন্টারনেট–সুবিধাসহ বিভিন্ন দেশি-বিদেশি বইয়ের সমাহার বিস্তৃত। বর্তমানে ছাত্রীদের আবাসিক সমস্যা নিরসনে ‘নওয়াব ফয়জুন্নেসা চৌধুরানী হল’ নামে একটি ১৬ তলাবিশিষ্ট ১ হাজার ২০০ আসনের হল রয়েছে।
তা ছাড়া অনাবাসিকখ্যাত এ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের নিয়মিত যাতায়াতের জন্য রয়েছে নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থা। এক ও দুই তলা বাস, মাইক্রোবাস এবং বিআরটিসির ভাড়া করা লাল রঙের দ্বিতল বাসসহ মোট ৫৬টি যানবাহন প্রতিদিন চলাচল করে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এ ক্যাম্পাসেই রয়েছে একটি কেন্দ্রীয় মিলনায়তন, নিজস্ব মেডিকেল সেন্টার, কাউন্সেলিং সেন্টার, শরীরচর্চা শিক্ষা কেন্দ্র ও ডে কেয়ার সেন্টার। শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের জন্য রয়েছে দুটি পৃথক আধুনিক ক্যাফেটেরিয়া আর ছাত্র-ছাত্রীদের নামাজ আদায়ের জন্য রয়েছে দুই তলাবিশিষ্ট পৃথক মসজিদ। পাশাপাশি মিডিয়া, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও সেবামূলক ২০টিরও বেশি সংগঠন নিয়মিত কার্যক্রম পরিচালনা করছে প্রাণবন্ত এই ক্যাম্পাসজুড়ে।
অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের হল আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে অনাবাসিক সমস্যা সমাধানে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য কেরানীগঞ্জের তেঘুরিয়ায় নতুন ক্যাম্পাস স্থাপন প্রকল্পের কাজ চলছে। ২০০ একর জমির ওপর নির্মিত হচ্ছে আধুনিক মানসম্মত এই ক্যাম্পাস। প্রকল্পটি শেষ হবে ডিসেম্বর ২০২৬ সালে। যদিও ইতিমধ্যে নতুন ক্যাম্পাসের প্রথম পেজের ৫৬ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী হেলাল উদ্দিন পাটোয়ারী।
অস্থায়ী আবাসন প্রকল্পের আওতায় কেরানীগঞ্জের জেলখানার বিপরীতে সাড়ে সাত একর জায়গায় ১ হাজার ৬২০ জনের আবাসিক হল নির্মাণ এবং পুরান ঢাকার বাণী ভবন ও হাবিবুর রহমান হলে অস্থায়ী আবাসন ব্যবস্থা করা রয়েছে। গত জুন মাস থেকে বিভিন্ন পর্যায়ে আস–সুন্নাহ ফাউন্ডেশন হলে প্রায় সাড়ে ৬০০ শিক্ষার্থী আবাসন সুবিধা পাচ্ছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়টির ২০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক রেজাউল করিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘২০ বছরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এখন ভর্তি–ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের প্রথম পছন্দের একটি। গবেষণাসহ সব খাত এগিয়ে যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রধান প্রাণ হচ্ছে এখানকার শিক্ষার্থীরা। তাদের পরিশ্রমের জন্য আজ দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশেও আমাদের ক্যাম্পাসের সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে। শিক্ষা ও গবেষণার উত্তরোত্তর উন্নতির মাধ্যমে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে সেন্টার অব এক্সেলেন্স হিসেবে গড়ে তুলে শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা পূরণ করাই আমাদের প্রতিজ্ঞা। সে লক্ষ্য অর্জনে শিক্ষা ও গবেষণা, শিক্ষার্থীদের আবাসন ও দ্বিতীয় ক্যাম্পাস বাস্তবায়ন আমাদের অগ্রাধিকার। সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতায় আমরা সফল হব।’