প্রযুক্তি জায়ান্ট মাইক্রোসফটের বিরুদ্ধে প্রায় দুই লাখ পাইরেটেড বই ব্যবহার করে একটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মডেল তৈরির অভিযোগ করেছেন একদল লেখক।

লেখকদের মধ্যে আছেন কাই বার্ড, জিয়া টোলেন্টিনো, ড্যানিয়েল ওক্রেন্টসহ অনেকে। তাঁদের অভিযোগ, মাইক্রোসফট তাদের বইয়ের পাইরেটেড ডিজিটাল সংস্করণ ব্যবহার করে মেগাট্রন এআইকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে। গত ২৪ জুন নিউইয়র্কের ফেডারেল আদালতে তাঁরা মামলাটি করেন। লেখকেরা মাইক্রোসফটের বিরুদ্ধে আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে প্রতিটি বইয়ের জন্য দেড় লাখ ডলার পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ চেয়েছেন।

মেগাট্রনের মতো জেনারেটেড কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মডেলগুলো মূলত ব্যবহারকারীদের অনুরোধে লেখা, সংগীত, ছবি ও ভিডিও তৈরি করে। এগুলো তৈরিতে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়াররা অনুরূপ আউটপুট তৈরি করতে এআই প্রোগ্রামের জন্য বিশাল ডাটাবেজ সংগ্রহ করেন। মামলার দাবি অনুযায়ী, মাইক্রোসফট বিশাল পাইরেটেড বইয়ের সংগ্রহ ব্যবহার করেছে একটি কম্পিউটার মডেল তৈরি করতে, যা লেখকদের লেখা ও ভাবভঙ্গি অনুকরণ করে। তবে মাইক্রোসফটের মুখপাত্ররা মামলার বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে মন্তব্য করেননি।

এ মামলা এমন এক সময় এসেছে, যখন কপিরাইট লঙ্ঘন নিয়ে প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে একের পর এক আইনি লড়াই চলছে। এর আগে ক্যালিফোর্নিয়ার একটি আদালত রায় দিয়েছিলেন, অ্যানথ্রোপিক কোম্পানি এআই প্রশিক্ষণে ন্যায্যভাবে লেখকদের লেখা ব্যবহার করেছে। মেটা–সম্পর্কিত আরেক মামলায় আদালত মেটার পক্ষে রায় দিয়েছেন। এআই কোম্পানিগুলোর যুক্তি, তারা কপিরাইট উপকরণ ‘নতুন ও রূপান্তরিত’ কনটেন্ট তৈরিতে ব্যবহার করে। লেখকদের অনুমতি ছাড়া এসব ব্যবহার নিষিদ্ধ হলে এআই প্রযুক্তির অগ্রগতি থেমে যেতে পারে।

মামলাগুলো কেবল লেখকদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই। নিউইয়র্ক টাইমস, ডিজনির মতো কোম্পানিগুলো বিভিন্ন এআই কোম্পানির বিরুদ্ধে কপিরাইট লঙ্ঘনের অভিযোগে মামলা করেছে।

সূত্র: গার্ডিয়ান

গ্রন্থনা: রবিউল কমল

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবহ র কর ল খকদ র

এছাড়াও পড়ুন:

মধ্যরাতেই এনসিটি ছাড়ল সাইফ পাওয়ার টেক

রোববার মধ্যরাতেই চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) ছেড়েছে টার্মিনাল অপারেটর সাইফ পাওয়ার টেক। রাত ১২টা ১ মিনিটেই তাদের কাছ থেকে টার্মিনাল বুঝে নেয় বন্দর কর্তৃপক্ষ। এর পর তারা নৌবাহিনীর তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হওয়া ড্রাইডক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নতুন চুক্তি করে টার্মিনালের দায়িত্ব হস্তান্তর করে। এ সময় বন্দর, ড্রাইডক ও সাইফ পাওয়ারটেকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। আজ সোমবার থেকে টার্মিনাল পরিচালনা করছে নৌবাহিনী। 

আইনী বাধ্যবাধকতা থাকায় সরাসরি নৌবাহিনীকে না দিয়ে তাদের নিয়ন্ত্রণাধীন প্রতিষ্ঠান ড্রাইডকের সঙ্গে এনসিটি পরিচালনার চুক্তি করেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।

চট্টগ্রাম ড্রাইডক লিমিটেড রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন এবং বাংলাদেশ নৌবাহিনী পরিচালিত একটি সামরিক জাহাজ মেরামতকারী প্রতিষ্ঠান। চট্টগ্রাম বন্দরের সীমানার মধ্যেই এটির অবস্থান।

চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব মো. ওমর ফারুক সমকালকে জানান, সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্ত পাবার পর ড্রাইডকের সঙ্গে এনসিটি পরিচালনার চুক্তির বিষয়টি বন্দর কর্তৃপক্ষের বোর্ড সভায় অনুমোদন হয়েছে। ৬ জুলাই রাত ১২টার পরে ড্রাইডকের সঙ্গে ছয় মাসের জন্য এনসিটি পরিচালনার চুক্তি করে বন্দর কর্তৃপক্ষ। একই সময় সাইফ পাওয়ার টেক আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব হস্তান্তর করে।

১৭ বছর ধরে এনসিটি পরিচালনা করা সাইফ পাওয়ার টেকের গতকাল ছিল শেষ দিন। ২০০৭ সাল থেকে তারা এটি পরিচালনা করছে। আজ ৭ জুলাই থেকে নৌবাহিনীর মাধ্যমে এটি পরিচালনা করছে চিটাগাং ড্রাইডক। তবে সাইফ পাওয়ার টেকের জনবল দিয়েই আপাতত এটি পরিচালনা করছে তারা।

সাইফ পাওয়ার টেকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তরফদার রুহুল আমীন সমকালকে বলেন, ‘মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মেনে বন্দরকে আমরা দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়েছি। একই সময় বন্দর নৌবাহিনীর তত্বাবধানে পরিচালিত ড্রাইডককে দায়িত্ব হস্তান্তর করেছে। নতুন চুক্তি করেছে। এনসিটি ছাড়লেও যে কোনো প্রয়োজনে বন্দরকে সেবা প্রদানে আমরা প্রস্তুত আছি সবসময়।’ প্রসঙ্গত, এনসিটি ছাড়লেও সাইফের কার্যক্রম চুক্তি অনুযায়ী বহাল আছে সিসিটিতে।

চট্টগ্রাম বন্দরে মোট ৪টি কনটেইনার টার্মিনাল আছে। এগুলো হলো- চিটাগাং কনটেইনার টার্মিনাল (সিসিটি), নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি), জেনারেল কারগো বার্থ (কনটেইনার ও বাল্ক-জিসিবি) এবং পতেঙ্গা কন্টেনার টার্মিনাল (পিসিটি)। চট্টগ্রাম বন্দরে ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে হ্যান্ডলিং হওয়া ৩২ লাখ টিইইউস কনটেইনারের মধ্যে ৪৪ শতাংশ এককভাবে পরিচালনা হয়েছে এনসিটি থেকে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ