বাংলাদেশ দলের অবস্থা ততক্ষণে তথৈবচ। ১৪ ওভারের মধ্যে ৮৪ রানে নেই ৮ উইকেট। তখনো ফেসবুকে বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের তেমন সাড়াশব্দ ছিল না।

এমনিতে বাংলাদেশ দল খেলতে নামলেই নানা পদের পোস্টে সয়লাব হয় ফেসবুক। কিন্তু শুধু কাল নয়, গত ফেব্রুয়ারি-মার্চে অনুষ্ঠিত আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি কিংবা গত মাসে জিম্বাবুয়ে সিরিজেও বাংলাদেশ দলের ম্যাচের দিন ভক্তদের তেমন শোরগোল ছিল না ফেসবুকে। যে ক্রিকেট নিয়ে দুই দশকের বেশি সময় ধরে তুমুল আগ্রহ ছিল জনতার, তাতে এখন সত্যিই ভাটার টান। আরব আমিরাত সিরিজে সেই পতনের টান আরও স্পষ্ট।

আরও পড়ুনসিরিজ হারকে ‘জীবনের অংশ’ বললেন লিটন৯ ঘণ্টা আগে

গতকাল আরব আমিরাতের ব্যাটিংয়ের সময় বাংলাদেশ দল যখন হারের দ্বারপ্রান্তে, তখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শোরগোল তুলল জনতা। অবশ্যই সব পোস্ট সমালোচনামূলক। কারণও সবার জানা, এই সিরিজটি ২-১-এ হেরেছে বাংলাদেশ। সিরিজ হার বাংলাদেশ ক্রিকেটে নতুন নয়, তবে টেস্ট খেলুড়ে দল হয়ে সহযোগী সদস্য দলের কাছে সিরিজ হারের সঙ্গে সমর্থকেরা তেমন পরিচিতও নন। এক বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হারে প্রথম পরিচয় এই তেতো স্বাদের সঙ্গে।

আরব আমিরাতের কাছে হারে আসলে কষ্টের চেয়ে ক্ষোভই বেশি। সিরিজটি তো হারের কথা ছিল না। সেটি শুধু টেস্ট খেলুড়ে দলের দৃষ্টিকোণ থেকে নয়। সিরিজটি হওয়ার কথা ছিল দুই ম্যাচের। কিন্তু ভারত-পাকিস্তান সংঘাত শুরুর পর পাকিস্তান সফর নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হওয়ায় আমিরাতে অবস্থানের সময় খরচ বাঁচাতে এবং সেখানে থাকাটা যৌক্তিক প্রমাণে আমিরাত ক্রিকেট বোর্ডকে আরও এক ম্যাচ খেলার প্রস্তাব দেয় বিসিবি। ভাবনাটা মন্দও ছিল না—আমিরাতের কাছে তো আর সিরিজ হারের ‘সম্ভাবনা নেই’ আর বাড়তি একটি ম্যাচে তো প্রস্তুতিও ভালো হবে।

আরব আমিরাতের কাছে সিরিজ হেরে নিজেদের সামর্থ্যকেই প্রশ্নবিদ্ধ করেছে বাংলাদেশ দল.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ল দ শ দল আম র ত র

এছাড়াও পড়ুন:

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় আরো ৮১ ফিলিস্তিনি নিহত

গাজায় যুদ্ধবিরতির আলোচনা চললেও জোরদার হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল। চিকিৎসা সূত্র ও স্থানীয় প্রতিবেদন অনুসারে, রবিবার (৬ জুলাই) গাজা উপত্যকায় ধারাবাহিক ইসরায়েলি বিমান হামলায় শিশুসহ কমপক্ষে ৮১ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। খবর আনাদোলু এজেন্সির।

একটি চিকিৎসা সূত্র জানিয়েছে, গাজা সিটিতে, শেখ রাদওয়ান এবং আল-নাসর পাড়ায় বাস্তুচ্যুত পরিবারগুলোকে আশ্রয় দেওয়া দুটি বাড়িতে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমানের বোমা হামলায় ২৫ জন নিহত হয়েছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, গভীর রাতে পরিবারগুলো যখন ঘুমে ছিল, তখন বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। নিহতদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়ে রয়েছে বেশ কয়েকজন।

আরো পড়ুন:

গাজায় মানবিক সহায়তা পাঠালেন জবি শিক্ষার্থীরা

গাজায় যুদ্ধ বিরতির আলোচনায় প্রতিনিধি পাঠাবে ইসরায়েল 

আল-আওদা হাসপাতালের এক বিবৃতি অনুসারে, মধ্য গাজায় একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রের কাছে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গুলি চালিয়ে চার ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে। এ ঘটনায় আরো ২৫ জন আহত হয়েছেন।

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, গাজা সিটি এবং মধ্য গাজার নুসাইরাত শরণার্থী শিবিরে দুটি বেসামরিক সমাবেশে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমানের হামলায় ছয়জন নিহত এবং আরো বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।

উত্তর গাজা সিটির আল-সাফতাউই পাড়ায় একটি বেসামরিক গাড়িতেও একটি ইসরায়েলি ড্রোন হামলা চালিয়ে তিন ভাইকে হত্যা করেছে।

স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের মতে, শেখ রাদওয়ানে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের আশ্রয়কেন্দ্রে আরেকটি ইসরায়েলি ড্রোন হামলায় তিনজন নিহত এবং আরো বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।

পশ্চিম গাজা সিটিতে, শাতি শরণার্থী শিবিরের একটি স্কুলে ইসরায়েলি বিমান হামলায় শিশুসহ সাতজন নিহত হয়েছেন বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।

গাজা সিটির অন্যত্র, আল-তুফাহ পাড়ার একটি আবাসিক বাড়িতে ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে দুজন নিহত এবং আরো অনেকে আহত হয়েছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বিপজ্জনক নিরাপত্তা পরিস্থিতির কারণে চিকিৎসা দল তাদের কাছে পৌঁছাতে পারেনি।

উত্তর গাজা সিটিতে একটি গাড়িতে ইসরায়েলি ড্রোন হামলায় তিনজন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

আল-আহলি ব্যাপটিস্ট হাসপাতালের একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে যে, রাতে গাজা সিটির আল-দারাজ পাড়ায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় একই পরিবারের তিনজন নিহত এবং আরো কয়েকজন আহত হয়েছেন।

দক্ষিণ গাজায়, খান ইউনিসের আল-মাওয়াসি এলাকায় বাস্তুচ্যুত বেসামরিক নাগরিকদের জন্য তৈরি অস্থায়ী তাঁবুতে ইসরায়েলি বিমান হামলায় শিশু ও একজন গর্ভবতী নারীসহ কমপক্ষে ১০ জন নিহত হয়েছেন, নাসের ও কুয়েত ফিল্ড হাসপাতালের মেডিকেল টিম এ তথ্য জানিয়েছে।

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, খান ইউনিসের আল-আলবানি মসজিদের কাছে তাঁবুতে আরেকটি ড্রোন হামলার পর ধ্বংসস্তূপ থেকে তিন শিশুসহ আরো চার জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

ইসরায়েলি বাহিনী রাতভর পূর্ব গাজা শহর এবং ছিটমহলের উত্তর অংশে আবাসিক ও বেসামরিক স্থাপনাগুলোতে বোমাবর্ষণ করেছে, বাসিন্দারা সারা রাত ধরে ক্রমাগত বিস্ফোরণের খবর দিয়েছে।

মধ্য গাজায়, দেইর আল-বালাহ উপকূলে কাজ করার সময় ইসরায়েলি গোলাবর্ষণে একজন ফিলিস্তিনি জেলে আহত হয়েছেন।

মধ্য গাজার নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে একটি তাঁবুতে ইসরায়েলি ড্রোন হামলায় একই পরিবারের আটজন নিহত হয়েছেন।

আরেকটি হামলায়, একই শরণার্থী শিবিরে তিনজন নিহত হয়েছেন। ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়াদের উদ্ধারের অভিযান এখনও চলছে।

আন্তর্জাতিকভাবে যুদ্ধবিরতির আহ্বান সত্ত্বেও ইসরায়েল গাজায় নির্বিচার হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে চলমান সামরিক অভিযানে ৫৭ হাজার ৪০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ