রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর বিভাগের নাম সংস্কারসহ তিন দাবিতে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে অনশন কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ ইসমাইল হোসেন সিরাজী ভবনে ফোকলোর বিভাগের সামনে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে এ কর্মসূচি শুরু করেন তারা। বিকেল ৩টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলছে। 

শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবির প্রথমটি হলো- ফোকলোর বিভাগের নাম পরিবর্ধন বা সংস্কার করতে হবে, যাতে বিষয়টির স্বীকৃতি ও গ্রহণযোগ্যতা বাড়ে। দ্বিতীয় দাবি- পিএসসি ও ইউজিসিতে ফোকলোর বিষয়ের নাম সংযুক্ত করে কোড প্রদান নিশ্চিত করতে বিভাগীয় উদ্যোগ নিতে হবে। তুতীয় দাবিটি হলো- পরীক্ষার ফলাফল এক মাসের মধ্যে প্রকাশ এবং নির্ধারিত সময়ে ক্লাস রুটিন প্রকাশ করতে হবে।

অনশন কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীরা ‘এই মুহূর্তে দরকার, ফোকলোর বিভাগ সংস্কার’, ‘আমাদের দাবি-আমাদের দাবি, মানতে হবে-মানতে হবে’, ‘সিন্ডিকেট না মুক্তি, মুক্তি মুক্তি’, ‘আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’ ইত্যাদি লেখা সংবলিত প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন ও স্লোগান দেন।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, ফোকলোর বিভাগ সংস্কারের দাবিতে তারা তিন দফা দাবি জানিয়েছিলেন। শিক্ষকেরা দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিলেও তা বাস্তবায়ন করার বদলে বিভিন্ন ছলচাতুরি করছেন। এজন্য তারা আজ অনশনে বসেছেন। দাবি না মানা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।

বিভাগের শিক্ষার্থী আল শাহরিয়ার শুভ বলেন, ফোকলোর একটি বহুমাত্রিক বিষয়ভিত্তিক বিভাগ, যেখানে আমরা শুধুমাত্র লোককাহিনী বা গান-নৃত্য নয়, বরং সমাজ, উন্নয়ন, স্বাস্থ্য, তথ্যপ্রযুক্তি ও সংস্কৃতির সমন্বিত পাঠ গ্রহণ করে থাকি। আমাদের পাঠ্যক্রমটি আধুনিক, প্রাসঙ্গিক এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের চাহিদা পূরণে সক্ষম। তবে অনেকেই বিভাগের পরিধি ও গুরুত্ব বুঝতে পারে না। অনেকেই মনে করে- এটি শুধু পুরনো গান, নাচ বা লোকগল্পের পড়াশোনা, যা বাস্তব জীবনের কাজে লাগবে না। চাকরিক্ষেত্রেও শিক্ষার্থীরা হীনমন্যতায় ভোগেন। শুধুমাত্র এই নামের কারণে আমরা অবহেলিত হচ্ছি।’

বিভাগের ২০২১-২২ বর্ষের শিক্ষার্থী নিলয় দে বলেন, বিভাগের শিক্ষকরা বলছেন আমাদের দাবি মেনে নেওয়া হবে। কিন্তু কবে আমাদের আন্দোলনের ফলাফল পাব সে বিষয়ে আমরা নিশ্চিত নই। আমরা কালক্ষেপণ নয় দ্রুত অফিশিয়াল সিদ্ধান্ত চাই। আমরা আমাদের দাবির প্রেক্ষিতে সিদ্ধান্ত না পাওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাব।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর বিভাগের অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়ে ২০ মে একটি উপ-কমিটি গঠন করেছি। সেই কমিটি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করে একটি প্রস্তাবনা পেশ করবে। ইতোমধ্যে সেই কমিটি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বসে আলোচনা করেছে। তাদের দাবিগুলোর সঙ্গে আমরাও একমত। তবুও তারা আজ কেন আন্দোলন করছে, বুঝতে পারছি না। শিক্ষার্থীরা চাচ্ছে, দাবিগুলো তাৎক্ষণিকভাবে মেনে নিতে হবে। কিন্তু সেটি তো সম্ভব না।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: অনশন ফ কল র ব ভ গ র আম দ র দ ব

এছাড়াও পড়ুন:

ডাকসু নির্বাচন কমিশন ও তফসিল ঘোষণা দাবিতে প্রশাসনকে ‘সালাম’

‘২ জুন কি পেলাম? কি পাওয়ার কথা ছিল? সালাম প্রশাসন!’- লেখা প্ল্যাকার্ড নিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা। তাদের দাবি- অবিলম্বে ডাকসু নির্বাচনের কমিশন গঠন করতে হবে এবং নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করতে হবে। 

রবিবার (১৫ জুন) দুপুর থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের সামনে এ কর্মসূচি পালন করছেন তারা।

সোমবার (১৬ জুন) বিকাল ৫টায় অনুষ্ঠিতব্য হতে যাওয়া সিন্ডিকেট সভায় ডাকসু নির্বাচন কমিশন গঠনের বিষয়টি এজেন্ডাভূক্ত রয়েছে বলে জানা গেছে। আগামীকালের এ সভায় যেকোনোভাবে যেন ডাকসু নির্বাচন সংশ্লিষ্ট ইস্যুগুলো পাশ হয়, সেজন্যই তাদের এমন তোড়জোড়।

আরো পড়ুন:

ঢাবিতে নামাজের কক্ষ নিয়ে বিতর্ক

ছাত্রদলের ফ্যাসিবাদী মনোভাবের প্রতিবাদ ডুজার

ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের আশঙ্কা, একটি পক্ষ ডাকসু নির্বাচন চায় না এবং এই পক্ষ বিভিন্নভাবে ষড়যন্ত্র করছে।

অনশনরত শিক্ষার্থী ও ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা রাইজিংবিডি ডটকমকে বলেন, “ডাকসু নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য বিভিন্ন মহল থেকে শক্তিশালী ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। বিভিন্ন গোষ্ঠী বলার চেষ্টা করছে যে ডাকসু নির্বাচনের পরিবেশ নেই, বিশ্ববিদ্যালয়ে নিরাপত্তা নেই, বিশ্ববিদ্যালয়ে আওয়ামী লীগের দোসর আছে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করতে পুরোপুরি সক্ষম নয়; সুতরাং ডাকসু নির্বাচন দেওয়া যাবে না।”

তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার দায়িত্ব কি কেবল প্রশাসন-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের? কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ এবং হল সংসদে নির্বাচিত শিক্ষার্থীরাসহ প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের যে ব্যর্থতাগুলো লক্ষণীয়, সেগুলো ঘোচানোর জন্যই ডাকসু নির্বাচন প্রয়োজন।”

তিনি আরো বলেন, “আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় ছিল, ছাত্রলীগ যেভাবে হল নিয়ন্ত্রণ করা, দখলদারিত্ব কায়েম করা, টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ করা এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ভিতর ক্ষমতার বলয় তৈরি করত-ঠিক এখনো আমরা এই প্রক্রিয়া দেখছি। আর এই প্রক্রিয়ার যারা এজেন্ট হিসেবে কাজ করছে, তারাই মূলত ডাকসু নির্বাচনে বাঁধা দিতে চায়।”

এর আগে, ডাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার দাবিতে বিন আমিন মোল্লার নেতৃত্বে আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করেছিল বিশ্ববিদ্যালয় কয়েকজন শিক্ষার্থী।

গত ২৩ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা ও প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমদ ২ জুনের মধ্যে নির্বাচন কমিশন গঠনের ওয়াদা করলে অনশন ভাঙ্গেন তারা। সে সময় অনশন শেষে ইয়ামিনসহ দুই শিক্ষার্থীকে হাসপাতলে ভর্তি করা হয়েছিল।

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ডাকসু নির্বাচন কমিশন ও তফসিল ঘোষণা দাবিতে প্রশাসনকে ‘সালাম’