সাত ঘণ্টা পর রাজধানীর শাহবাগ মোড় থেকে সরে গেছেন ছাত্রদলের নেতা–কর্মীরা। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে রাজধানীর শাহবাগ মোড় ও হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়ে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন তাঁরা।

বিকেল পাঁচটার দিকে ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম এদিনের মতো অবস্থান কর্মসূচির সমাপ্তি ঘোষণা করেন। এ সময় ছাত্রদলের নেতা–কর্মীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচারের দৃশ্যমান অগ্রগতির দাবি জানান।

শাহবাগ মোড়ে অবস্থান কর্মসূচির নেতৃত্ব দেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম। হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়ে অবস্থান কর্মসূচির নেতৃত্ব দেন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন।

শাহবাগ ও ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়ে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা ‘কী করো ইন্টেরিম, হয়ে গেল ৯ দিন’, ‘বাঁচতে হলে লড়তে হবে, সেই লড়াইয়ে জিততে হবে’, ‘৯ মাসে দুই খুন, ভিসি তোমার অনেক গুণ’, ‘৯ দিন হয়ে গেল, কেউ কিছু জানে না’, ‘এই লড়াইয়ে জিতবে কারা, শহীদ জিয়ার সৈনিকেরা’, ‘বিচার চাই, বিচার চাই, সাম্য হত্যার বিচার’, ‘উই ওয়ান্ট উই ওয়ান্ট, জাস্টিস জাস্টিস’, ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাইরে’, ‘খুন হয়েছে আমার ভাই, খুনি তোদের রক্ষা নাই’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।

শাহবাগ মোড়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, তেজগাঁও কলেজ, ঢাকা কলেজ, ঢাকা মহানগর পূর্বসহ ছাত্রদলের বিভিন্ন শাখার নেতা-কর্মীদের অবস্থান করতে দেখা যায়। আর ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়ে রাজধানীর সরকারি বাঙলা কলেজ, তিতুমীর কলেজ, ঢাকা মহানগর পশ্চিমসহ ছাত্রদলের বিভিন্ন শাখার নেতা-কর্মীরা অবস্থান নেন।

কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া ছাত্রদলের নেতা–কর্মীরা অভিযোগ করেন, শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যার ৯ দিন পার হলেও প্রশাসন জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করতে ব্যর্থ হয়েছে। তারা দ্রুততম সময়ে এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিচারের মুখোমুখি করার দাবি জানান।

আরও পড়ুন শাহবাগের পাশাপাশি ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়েও ছাত্রদলের অবস্থান, তীব্র যানজট৩ ঘণ্টা আগে

কর্মসূচি তুলে নেওয়ার ঘোষণা দিয়ে ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা বৃষ্টি উপেক্ষা করেও কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছি। নেতা–কর্মীরা সাম্য হত্যার বিচার না হওয়া পর্যন্ত রাস্তায় থাকতে প্রস্তুত।’

অন্তর্বর্তী সরকারকে ছাত্রদল নেতা–কর্মীদের মনোভাব বোঝার আহ্বান জানিয়ে রাকিবুল বলেন, ‘আমরা সব সময় শান্ত থাকব না। সাম্য হত্যাকাণ্ডের বিচারে দৃশ্যমান অগ্রগতি না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।’

রাকিবুল ইসলাম বলেন, সাম্য হত্যাকাণ্ডের ৯ দিন পার হলেও প্রশাসন তিনজনকে গ্রেপ্তারের তথ্য দিয়েছে। কিন্তু এই তিনজন খুনের সঙ্গে জড়িত কি না, এ বিষয়ে প্রশাসন তাঁদের আশ্বস্ত করতে পারেনি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র ক ব ল ইসল ম ছ ত রদল র ন ত হত য ক ণ ড র ন ছ ত রদল র অবস থ ন কর স ম য হত য শ হব গ ম ড় ন শ হব গ ইন ট র কর ম র

এছাড়াও পড়ুন:

চা–বাগানের ৩৪ শতাংশ নারী শ্রমিক যৌন নির্যাতনের শিকার: গবেষণা

চা–বাগানে কাজ করা দেশের ৩৪ দশমিক ৮ শতাংশ নারী শ্রমিক কর্মস্থলে যৌন নির্যাতনের শিকার হন। ৩০ শতাংশ নারী শ্রমিক মৌখিক এবং ১৪ শতাংশ নারী শ্রমিক শারীরিক নির্যাতনের (গৃহে নির্যাতনসহ) শিকার হন।

সম্প্রতি পরিচালিত ‘নারী চা–শ্রমিকদের অধিকার, সেবাপ্রাপ্তিতে প্রবেশগম্যতা: বাস্তবতা ও আইনগত প্রেক্ষাপট’ শীর্ষক গবেষণার ফলাফলে এ চিত্র উঠে এসেছে। আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় গবেষণার ফলাফল তুলে ধরা হয়।

‘অক্সফাম ইন বাংলাদেশের’ সহযোগিতায় ‘ব্রেকিং দ্য সাইলেন্স’ সংগঠনের অধীন সিলেট বিভাগের ৩টি জেলার ১১টি উপজেলায় ‘স্ট্রেনদেনিং ইউমেন ভয়েসেস ইন টি গার্ডেন’ প্রকল্পের আওতায় এ গবেষণা করা হয়। প্রকল্পটি ২০২৪ সালের অক্টোবর মাস থেকে বাস্তবায়িত হচ্ছে। বেসরকারি ইনোভেটিভ রিসার্চ অ্যান্ড কনসালট্যান্সি (আইআরসি) এ গবেষণা পরিচালনা করে। সংস্থাটির লিড কনসালট্যান্ট পলিন কুমার সাহা গবেষণার ফলাফল উপস্থাপন করেন।

গবেষণার ফলাফলে বলা হয়, ২৪ দশমিক ৩ শতাংশ নারী কর্মক্ষেত্রকে নিরাপদ মনে করেন না। চা–বাগানে কাজ করা নারী শ্রমিকদের মধ্যে ১৬ দশমিক ১ শতাংশ সহিংসতার কারণে, ১২ দশমিক ৩ শতাংশ মালিকের কাছ থেকে হুমকি, ৮ দশমিক ২ শতাংশ অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ, ৪ দশমিক ১ শতাংশ চুরি এবং বাকিরা অন্যান্য কারণে কর্মক্ষেত্রকে অনিরাপদ মনে করেন।

৩৭ দশমিক ৭ শতাংশ নারী এসব ঘটনার প্রতিবাদ করেন বলে জানিয়েছেন গবেষণায় অংশ নেওয়া নারী শ্রমিকেরা।

গবেষণায় অংশ নেওয়া সিলেট অঞ্চলের বিভিন্ন চা–বাগানে কাজ করা ৩ শতাধিক নারী শ্রমিকের মধ্যে ২৩ জন তাঁদের ওপর হওয়া অপরাধগুলোর প্রকারভেদ বিস্তারিত জানিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ৯৫ দশমিক ৭ শতাংশ নারী অশ্লীল বা অপমানজনক কথা ও অঙ্গভঙ্গির শিকার হয়েছেন, এ ছাড়া ৩০ দশমিক ৪ শতাংশ অনাকাঙ্ক্ষিত স্পর্শ, ২৬ দশমিক ১ শতাংশ যৌন হয়রানি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন এবং ১৭ দশমিক ৪ শতাংশ নারী শ্রমিক অন্যান্য নির্যাতনের শিকার হওয়ার তথ্য জানিয়েছেন।

গবেষণার ফলাফল উপস্থাপন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চা–শ্রমিকেরা। ঢাকা, ২২ মে

সম্পর্কিত নিবন্ধ