সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচনী হলফনামায় অসত্য তথ্য দিয়েছিলেন—এমন তথ্যপ্রমাণ পাওয়ার কথা জানিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ বিষয়ে নির্বাচনী আইনবিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে দুদক নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) চিঠি দিয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান দুদকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেন।

দুদক জানায়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি দুকক সম্পদ বিবরণীর নোটিশ জারি করলে তিনি ২০০৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর সম্পদ বিবরণী দাখিল করেন। বর্তমান কমিশন ওই সম্পদ বিবরণী পুনঃ যাচাইয়ের সিদ্ধান্ত নেয়। সম্পদ বিবরণী পুনঃ যাচাইয়ের সময় বিভিন্ন উৎস থেকে পাওয়া তথ্য যাচাইয়ের পাশাপাশি ওই সময়ে শেখ হাসিনার দাখিল করা আয়কর নথি ও নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা হলফনামার তথ্য পর্যালোচনা করেন অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা।

দুদকের চেয়ারম্যান বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনের আগে নির্বাচনী হলফনামায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর নিজ নামে থাকা জমির পরিমাণ ৬ দশমিক ৫০ একর বলে ঘোষণা দেন। কেনার সময় এ জমির অর্থমূল্য দেখানো হয় ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। আর অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ৩ কোটি ৪৬ লাখ ৯৯ হাজার ৯০৪ টাকা বলে উল্লেখ করেন। এর বিপরীতে দুদক যাচাই করে এখন দেখতে পায়, ওই সময় শেখ হাসিনার নামে ২৮ একর ৪১ শতকেরও বেশি স্থাবর সম্পদ ছিল। সে হিসাবে ক্রয়কৃত স্থাবর সম্পদ বা জমির মূল্য দাঁড়ায় ৩৩ লাখ ৬৬ হাজার ১০ টাকা।

আবদুল মোমেন আরও বলেন, হলনামায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২১ একর ৯১ শতকেরও বেশি জমির তথ্য দেননি বা অসত্য তথ্য দিয়েছেন। আর তিনি যে অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ উল্লেখ করেছেন, টাকার অঙ্কে তা ৫ কোটি ১৮ লাখ ১০ হাজার ১৫৪ টাকা। হলফনামায় দেওয়া তথ্য এবং দুদকের প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, শেখ হাসিনা প্রায় ২২ একর সম্পত্তি সম্পর্কে অসত্য তথ্য দিয়েছেন এবং ৩১ লাখ ৯১ হাজার ১০ টাকার স্থাবর সম্পদের তথ্য লুকিয়েছেন।

সে সময় শেখ হাসিনা তাঁর ব্যবহৃত একটি গাড়ির তথ্য হলফনামায় দেননি বলে দুদক চেয়ারম্যান বলেন। তিনি বলেন, ওই গাড়ির দাম ২ লাখ ৩০ হাজার ইউরো ছিল। ও সময় প্রতি ইউরো ৮৪ টাকা হিসাবে ১ কোটি ৯৩ লাখ ২০ হাজার টাকা পরিশোধ করা হয়। হলনামায় দেওয়া তথ্য এবং বাস্তবে প্রাপ্ত তথ্যের মধ্যে বিশাল ব্যবধান দেখা যাচ্ছে। এটি তুলে ধরে দুদক নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচনী বিধিমালায় যা করণীয়, নির্বাচন কমিশন তা করবে।

এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, এখানে দুটি বিষয়। একটা অংশ নির্বাচন কমিশনে চলে গেছে। সেখানে নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে। আরেকটা অংশ দুদকের এখতিয়ারে, সে বিষয়ে দুদক আইনগত ব্যবস্থা নেবে।

আরও পড়ুনহাসিনা-রেহানাসহ ছয়জনের নামে প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানে দুদক২৬ ডিসেম্বর ২০২৪.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: হলফন ম য় ব যবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

২৫টি নতুন জিপ কেনার প্রস্তাব ফেরত, ১টিতে নীতিগত অনুমোদন

২৫টি জিপ কেনার প্রস্তাব নীতিগত অনুমোদন দেয়নি অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি।

মঙ্গলবার (২০ মে) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় কমিটির সদস্য ও কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সভা সূত্রে জানা যায়, জিটুজি ভিত্তিতে গম ক্রয়ের নীতিগত অনুমোদন এবং পিপিআর ২০০৮ এর বিধি ৮৩ (১) (ক) অনুযায়ী আন্তর্জাতিক দরপত্রে ক্রয় প্রক্রিয়ায় সময় হ্রাসকরণের খাদ্য মন্ত্রণালয়ের একটি প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। সরকারি বিতরণ ব্যবস্থা সচল রাখাসহ খাদ্য নিরাপত্তা বলয় ঠিক রাখার লক্ষ্যে জিটুজি ভিত্তিতে এবং আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে গম আমদানি করা আবশ্যক। এ অবস্থায়, (ক) রাষ্ট্রীয় জরুরি প্রয়োজনে পিপিএ ২০০৬ এর ধারা ৬৮(১) এবং পিপিআর, ২০০৮ এর বিধি ৭৬(২) অনুসরণে রপ্তানিকারক দেশ থেকে জিটুজি ভিত্তিতে ৩ লাখ মেট্রিক টন গম ক্রয় এবং (খ) আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ৪ লাখ মেট্রিক টন গম আমদানির লক্ষ্যে পিপিআর ২০০৮ এর বিধি ৮৩ এর (১) (ক) অনুযায়ী দরপত্র দাখিলের সময়সীমা পত্রিকা বিজ্ঞাপন প্রকাশের তারিখ থেকে ৪২ দিনের পরিবর্তে ১৫ দিন নির্ধারণ করার জন্য প্রস্তাব উপস্থাপন করা হলে কমিটি তাতে অনুমোদন দিয়েছে।

২০২৫-২০২৬ অর্থবছরে আন্তর্জাতিক উৎস থেকে ৭.২৫ লাখ মেট্রিক টন এবং অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ২৫ হাজার মেট্রিক টন গম সংগ্রহের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

সভায় উপদেষ্টা/মন্ত্রী ও সমমর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তিদের ব্যবহারের জন্য ২৫টি গাড়ি সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে ক্রয়ের জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেয়নি কমিটি।

ঢাকা/হাসনাত/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • হলফনামায় হাসিনার সম্প‌দের তথ্য গোপন, ব্যবস্থা নি‌তে ই‌সি‌কে চিঠি
  • ড্যাপ বাতিলের দাবিতে রাজউক ঘেরাও
  • বিধির অতিরিক্ত মূল্যে কেনার নীতিগত অনুমোদন মেলেনি
  • ভারত কেন যুদ্ধ করে পাকিস্তানের সঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী বিরোধের সমাধান করতে পারবে না
  • ২৫টি নতুন জিপ কেনার প্রস্তাব ফেরত, ১টিতে নীতিগত অনুমোদন
  • কিশোরগঞ্জে ছাত্র হত্যা মামলায় দুই নারীসহ ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড