মা হওয়া মানে কেবল সন্তান জন্ম দেওয়া নয়—একটি মন তৈরি করা, একটি হৃদয় গড়া, একটি ছোট জীবনে বড় ভালোবাসার ছায়া হয়ে থাকা। সেই চেষ্টাই যেন করে চলেছেন অভিনেত্রী পরীমণি।

নায়িকা, উদ্যোক্তা, মা—তিনটি পরিচয়েই তিনি দৃঢ়। অভিনয়ের ব্যস্ততা, ব্যবসার দায়, স্টুডিওর শুটিং—সব কিছুর মাঝেও এক কোমল ভোরের নাম তার সন্তান ‘রাজ্য’। আর রাজ্যকে ঘিরেই তার নতুন অধ্যায়, নতুন এক জীবনদর্শন।

সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে নিজের মাতৃত্বের অভিজ্ঞতা নিয়ে একটি দীর্ঘ, হৃদয়ছোঁয়া লেখা প্রকাশ করেন পরীমণি। যেখানে উঠে আসে সন্তান পালনে পাওয়া নানা ভুলভাল পরামর্শ, অযাচিত ‘প্যারেন্টিং লেকচার’ এবং তার নিজের চিন্তা, উপলব্ধি ও বোধ।

আরো পড়ুন:

পুকুরে কাচের বাড়ি বানাচ্ছেন পরীমণি!

পরীমণির চমকপ্রদ স্বীকারোক্তি: ক্রাশ খান গোপনে, হাসেন একা 

লেখার শুরুতেই পরীমণি বলেন, “খেয়াল করে দেখবেন, আপনার চারপাশে এমন কিছু মানুষ থাকবে, যারা ভালোবাসা দেখানোর নামে উপদেশের বন্যা বইয়ে দেবে—তোমার বাচ্চার জন্য এটা করো, ওটা কোরো না। যাদের অনেকেই হয়তো নিজেরাই জানেন না তারা কী বলছেন।”

পরীমণির এক পরিচিতজন, ‘মায়ের সমতুল্য’ এক নারী পরামর্শ দিয়েছিলেন, তিন মাস বয়স থেকেই ডিমের কুসুম দিতে হবে, বসা শিখলেই ওয়াকার! কিন্তু পরীমণি তা করেননি। তার ভাষায়, “আমি দেইনি, ওই ম্যাডাম নিজেই কিনে এনে দিয়েছেন ওয়াকার। অথচ এখন তো সেটা সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ, মেরুদণ্ডের ক্ষতি করে, পঙ্গুত্ব পর্যন্ত হতে পারে!”

তবে সেই অভিভাবক শুধু ভুল নয়, কিছু ভালো জিনিসও শিখিয়েছেন। যেমন—ব্রেস্টফিড, তেল মালিশ, গ্যাস বের করার উপায়। সেইসবের জন্য কৃতজ্ঞ পরীমণি।

তবু এই লেখার মূল উদ্দেশ্য ছিল অন্য এক ভিডিও দেখে—যেখানে এক মা গুড প্যারেন্টিং-এর নামে বলছিলেন, সাধ্য থাকলেও সন্তানকে সব কিছু কিনে দেওয়া ঠিক নয়।

পরীমণি প্রশ্ন তোলেন, “ছোট্ট একটা শিশুকে আপনি কী শেখাতে চাইছেন? অভাব? না কি কৃপণতা? একটা শিশুর বয়স যদি হয় তিন, তখন তো তাকে শেখাতে হবে ভালোবাসা, অনুভব, উদারতা। অভাব শেখাতে গেলে সে বড় হয়ে শিখবে কেবল বঞ্চনা, কিপটেমি, ধোঁকা।”

পুত্রের একটি ঘটনা উল্লেখ করে পরীমণি বলেন, “আমি বলি, বাজান, যা ভালো লাগে নিয়ে নাও। তারপর আমি দেখি, সে বন্দুক বা পিস্তল নেয় না, যে খেলনাগুলো ক্ষতিকর সেগুলোকে পাশ কাটিয়ে যায়। আমি দেখি সে কিনে আনা খেলনাগুলো সবাইকে ভাগ করে দেয়।”

“আমি চাই না আমার ছেলেকে কেউ অভাব শেখাক। আমি চাই সে শিখুক মনুষ্যত্ব। আমি চাই, সে বড় হয়ে কারো থেকে কিছু লুকিয়ে না শিখে, উদারতার ভিতরে বেড়ে উঠুক।” বলেন পরীমণি।

পরীমণি জানেন, প্রত্যেক মা ও শিশুর পথ আলাদা। তবে এই লেখার শেষে তার অনুরোধ কেবল একটাই—“আপনারা সোশ্যাল কোনো কম্পিটিশনের মধ্যে বাচ্চদের নিয়ে মাইতেন না প্লিজ।”

ঢাকা/রাহাত/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

এক বছরে সড়কে ৬ হাজারের বেশি নিহত, কোথায় বেশি, কারণ কী

দেশে সড়কপথে এক বছরে ৬ হাজার ৪২০ জন নিহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ৪৮ শতাংশই নারী-শিশু ও পথচারী।

এ হিসাব গত বছরের অক্টোবর থেকে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। সড়কে নারী, শিশু, পথচারী এবং চালক-সহকারীরা বেশি ঝুঁকিতে থাকেন এবং এঁদের মৃত্যুর হারও বেশি।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের গত ১২ মাসের তথ্য বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। সংস্থাটির পরিসংখ্যান বলছে, সড়কে বেশি মৃত্যু হয়েছে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায়। ওই ১২ মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত মানুষের সংখ্যা ১২ হাজার ৫২৮। ১২ মাসে মোট সড়ক দুর্ঘটনার সংখ্যা ৬ হাজার ৪৩৭।

মোট নিহত ব্যক্তির মধ্যে নারী ৯০৮, শিশু ৮৭১ এবং পথচারী ১ হাজার ৩২২ জন—যা মোট মৃত্যুর ৪৮ দশমিক ৩০ শতাংশ। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে যানবাহনের চালক ও তাঁদের সহকারীর সংখ্যা ৮৫৫। সব মিলিয়ে এই চারটি ঝুঁকিপূর্ণ শ্রেণি (নারী, শিশু, পথচারী এবং চালক-সহকারী) মোট নিহতের প্রায় ৬১ দশমিক ৬২ শতাংশ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যা প্রমাণ করে দেশের সড়কে বিদ্যমান নিরাপত্তাকাঠামো সমাজের দুর্বলতম অংশকে সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ। দেশে সড়ক দুর্ঘটনা এখন আর বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা নয়; বরং এটি একটি ভয়াবহ জাতীয় সংকট।

সড়কে নারী, শিশু, পথচারী এবং চালক-সহকারীরা বেশি ঝুঁকিতে থাকেন এবং এঁদের মৃত্যুর হারও বেশি।সড়কে প্রধান ঘাতক ‘মোটরসাইকেল’মহাসড়কে বিপজ্জনক বাঁকে কাছাকাছি দূরত্বে বাস-ট্রাক-মোটরসাইকেল। রংপুর নগরের হাজিরহাট এলাকায় রংপুর-দিনাজপুর মহাসড়কের এই স্থানে প্রায়ই ঘটে দুর্ঘটনা। তবু ওভারটেকিং করে চলাচল করছে যানবাহন

সম্পর্কিত নিবন্ধ