চুরির বিচার করায় মাতবরের ছেলেকে বিষ পান করিয়ে হত্যার অভিযোগ, গ্রেপ্তার ২
Published: 19th, June 2025 GMT
কুমিল্লার বুড়িচংয়ে গ্রাম্য সালিসে চুরির বিচার করায় মাতবরের ১৪ বছর বয়সী ছেলেকে তুলে নিয়ে বিষ পান করানোর পর অণ্ডকোষে অ্যাসিড ঢেলে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। গুরুতর আহত ওই কিশোর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত বুধবার মারা যায়। এ ঘটনায় মামলার পর প্রধান দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত মধ্যরাতে জেলার চান্দিনা উপজেলায় আসামিদের নিকটাত্মীয়ের বাড়ি থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। বুড়িচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আজিজুল হক বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেন।
গ্রেপ্তার দুজন হলেন বুড়িচং উপজেলার মোকাম ইউনিয়নের শিকারপুর গ্রামের সোলাইমানের ছেলে আলাউদ্দিন (২১) ও তাঁর ১৬ বছর বয়সী ছোট ভাই। নিহত কিশোরের নাম হোসাইন। সে একই গ্রামের আবু তাহেরের ছেলে ও স্থানীয় শিকারপুর উচ্চবিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় দুই মাস আগে উপজেলার মোকাম ইউনিয়নের শিকারপুর গ্রামের মইনুল হোসেনের মুদিদোকানে একটি চুরির ঘটনা ঘটে। এতে গ্রেপ্তার ১৬ বছর বয়সী কিশোর জড়িত থাকার অভিযোগ গ্রাম্য সালিসে প্রমাণিত হলে তাকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। সালিসে গ্রাম্য মাতবরদের সঙ্গে হোসাইনের বাবা আবু তাহের উপস্থিত ছিলেন এবং তিনি রায় দেওয়ায় যুক্ত ছিলেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে গত ৩১ মে গ্রেপ্তার কিশোর ও তার ভাই আলাউদ্দিন নিহত হোসাইনকে রাস্তা থেকে ধরে নির্জন স্থানে নিয়ে বিষ পান করান এবং তার অণ্ডকোষে অ্যাসিড ঢেলে ঝলসে দেন। এরপর থেকে হোসাইন কুমিল্লা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল।
সর্বশেষ গত বুধবার বিকেলে কুমিল্লা জেনারেল হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই কিশোরের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় ওই দিন রাতে নিহত হোসাইনের মা শাহিনা আক্তার বাদী হয়ে বুড়িচং থানায় দুজনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। পরে রাতে চান্দিনা উপজেলায় অভিযান চালিয়ে দুজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
কুমিল্লা জেনারেল হাসপাতালের আইসিইউ ইউনিটের চিকিৎসক অরূপ কুমার রায় জানান, বিষক্রিয়ায় শিশুটির গলা ফুলে গিয়েছিল। যার কারণে সে শ্বাসকষ্টে ভুগছিল। এ ছাড়া তার অণ্ডকোষ ঝলসে গিয়েছিল।
নিহত কিশোরের বাবা আবু তাহের বলেন, ‘আমি খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। আমার ছেলেটা তো কোনো অন্যায় করেনি। তাঁকে কেন এভাবে হত্যা করা হলো।’
বুড়িচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আজিজুল হক বলেন, শিশু হোসাইন হত্যার ঘটনায় দুজনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা হয়েছে। পুলিশ গতকাল মধ্যরাতে চান্দিনা উপজেলায় আসামিদের মামার বাড়ি থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করে। আজ দুপুরে আদালতের মাধ্যমে তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গ র প ত র কর হ স ইন উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
এক বছরে সড়কে ৬ হাজারের বেশি নিহত, কোথায় বেশি, কারণ কী
দেশে সড়কপথে এক বছরে ৬ হাজার ৪২০ জন নিহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ৪৮ শতাংশই নারী-শিশু ও পথচারী।
এ হিসাব গত বছরের অক্টোবর থেকে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। সড়কে নারী, শিশু, পথচারী এবং চালক-সহকারীরা বেশি ঝুঁকিতে থাকেন এবং এঁদের মৃত্যুর হারও বেশি।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের গত ১২ মাসের তথ্য বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। সংস্থাটির পরিসংখ্যান বলছে, সড়কে বেশি মৃত্যু হয়েছে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায়। ওই ১২ মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত মানুষের সংখ্যা ১২ হাজার ৫২৮। ১২ মাসে মোট সড়ক দুর্ঘটনার সংখ্যা ৬ হাজার ৪৩৭।
মোট নিহত ব্যক্তির মধ্যে নারী ৯০৮, শিশু ৮৭১ এবং পথচারী ১ হাজার ৩২২ জন—যা মোট মৃত্যুর ৪৮ দশমিক ৩০ শতাংশ। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে যানবাহনের চালক ও তাঁদের সহকারীর সংখ্যা ৮৫৫। সব মিলিয়ে এই চারটি ঝুঁকিপূর্ণ শ্রেণি (নারী, শিশু, পথচারী এবং চালক-সহকারী) মোট নিহতের প্রায় ৬১ দশমিক ৬২ শতাংশ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যা প্রমাণ করে দেশের সড়কে বিদ্যমান নিরাপত্তাকাঠামো সমাজের দুর্বলতম অংশকে সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ। দেশে সড়ক দুর্ঘটনা এখন আর বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা নয়; বরং এটি একটি ভয়াবহ জাতীয় সংকট।
সড়কে নারী, শিশু, পথচারী এবং চালক-সহকারীরা বেশি ঝুঁকিতে থাকেন এবং এঁদের মৃত্যুর হারও বেশি।সড়কে প্রধান ঘাতক ‘মোটরসাইকেল’মহাসড়কে বিপজ্জনক বাঁকে কাছাকাছি দূরত্বে বাস-ট্রাক-মোটরসাইকেল। রংপুর নগরের হাজিরহাট এলাকায় রংপুর-দিনাজপুর মহাসড়কের এই স্থানে প্রায়ই ঘটে দুর্ঘটনা। তবু ওভারটেকিং করে চলাচল করছে যানবাহন