ইসরায়েল গত ১৩ জুন ভোরে ইরানে হামলা করে। এর জবাবে ইসরায়েলে পাল্টা হামলা করছে ইরান। ইরানি কর্মকর্তারা বলছেন,সাধারণত ক্ষেপণাস্ত্র অগ্রভাবে থাকলেও গত ১৮টি হামলায় অগ্রভাগে ছিল ড্রোন। আর ইসরায়েলি আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা সেই ড্রোন ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছে। আজ শনিবারও একটি ড্রোন উত্তর ইসরায়েলে আঘাত হানে। 

ইরানের আধা সরকারি সংবাদমাধ্যম তাসনিম নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (আইআরজিসি) জানিয়েছে, ইসরায়েলি দখলদার শাসনের বিরুদ্ধে সবশেষ পাল্টা হামলায় আত্মঘাতী ও যুদ্ধ ড্রোনের পাশাপাশি নিখুঁতভাবে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম হয়েছে ক্ষেপণাস্ত্র।

এক বিবৃতিতে আইআরজিসি জানায়, ‘অপারেশন ট্রু প্রমিস ৩’—এর অংশ হিসেবে তারা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ১৮ দফা হামলা চালিয়েছে। ইসরায়েলের কেন্দ্রস্থল, বেন গুরিয়ন বিমানবন্দর এবং ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর রসদ ও পরিচালনা কেন্দ্রগুলোতে আঘাত হানতে তারা 'শাহেদ-১৩৬' নামের যুদ্ধ ও আত্মঘাতী ড্রোনের ঝাঁক ব্যবহার করেন। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ইরানের এই ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র সফলভাবে তাদের নির্ধারিত লক্ষ্যবস্তু ধ্বংস করেছে। 

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের খবরে বলা হয়েছে, ইরানের দুটি ড্রোন ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেদ করে দেশটির উত্তরাঞ্চলে ও দক্ষিণাঞ্চলে পৃথক হামলা চালিয়েছে। হামলার বিষয়টি স্বীকার করে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, এটি একটি বিরল ঘটনা, যেখানে ইরানের একমুখী আক্রমণাত্মক ড্রোন সফলভাবে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা অতিক্রম করতে সক্ষম হয়েছে।

তাসনিম নিউজের তথ্যমতে, আইআরজিসি জানায়, গতকাল শুক্রবার রাতভর দখলদার ভূখণ্ডের ওপর দিয়ে একাধিক স্কোয়াডে শাহেদ-১৩৬ ড্রোন টানা অভিযান চালিয়েছে।

সিএনএন জানিয়েছে, আজ শনিবার ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলে জর্ডান সীমান্তসংলগ্ন বেইত শেইন শহরে একটি ড্রোন আঘাত হানে। এতে একটি দুইতলা বাড়ি বিধ্বস্ত হয়। জরুরি উদ্ধারকর্মীরা জানান, বিস্ফোরণে বাড়িটির পাশে বড় ধরনের গর্ত সৃষ্টি হয়েছে, জানালা ও দরজা উড়ে গেছে।

ইসরায়েলের জরুরি সেবা সংস্থা মাগেন ডেভিড আডম (এমডিএ) জানিয়েছে, তারা ধ্বংসস্তূপের ভেতর তল্লাশি চালিয়ে যাচ্ছে। হতাহত কারও খোঁজ পায়নি। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর তথ্যমতে, ইরানের দ্বিতীয় ড্রোনটি ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলের একটি খোলা এলাকায় আঘাত হানে। এতে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।

ইসরায়েল ইরানে হামলা শুরু করার পর থেকে ইরান যে বিপুলসংখ্যক ড্রোন ছুড়েছে, তার মধ্যে বেশির ভাগই লক্ষ্যবস্তুতে পৌঁছানোর আগেই প্রতিহত করা হয় বলে দাবি ইসরায়েলি বাহিনীর।

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, ইরান আজ শনিবারের হামলায় অন্তত ছয়টি ড্রোন ছিল। এর মধ্যে কয়েকটি ড্রোন আরাভা মরুভূমি ও গোলান মালভূমিসহ অন্যান্য অঞ্চলে পৌঁছানোর আগেই ঠেকানো হয়।

ইসরায়েলের এক সামরিক কর্মকর্তার মতে, গত সপ্তাহে ইসরায়েল ইরানে হামলা শুরু করার পর থেকে ইরান হামলার জন্য হাজারের বেশি ড্রোন পাঠায়। যা লক্ষ্যবস্তুতে পৌঁছানোর আগেই নিষ্ক্রিয় করা হয়।

আইআরজিসির বিবৃতিতে বলা হয়, ইসরায়েলের সবচেয়ে উন্নত আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ইরানের এই ড্রোনগুলো আটকাতে ব্যর্থ হয়েছে। ফলে দখলদাররা আবারও আশ্রয়কেন্দ্রে পালাতে বাধ্য হয়েছে। 

এলিট বাহিনী জানিয়েছে, ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্রের সমন্বয়ে ইরানের এই ‘হাইব্রিড অপারেশন’ নিরবচ্ছিন্ন ও নির্ধারিত লক্ষ্য পূরণের উদ্দেশ্যে চালানো হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল ইসর য় ল র আইআরজ স ব যবস থ লক ষ য

এছাড়াও পড়ুন:

খুলনায় যানজট নিরসনের দাবিতে মানববন্ধন

খুলনা নগরীর যানজট নিরসন ও ফুটপাত অবৈধ দখলদারদের কবল থেকে মুক্ত করতে শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে কেএমপির সামনে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। গণতান্ত্রিক অধিকার সুরক্ষা মঞ্চ এ কর্মসূচির আয়োজন করে।

মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তারা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘‘অবিলম্বে নগরী যানজটমুক্ত না হলে নগর জীবন অচল হয়ে পড়বে।’’

আরো পড়ুন:

স্ত্রীকে নিয়ে ঘুরতে বের হয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় স্বামী নিহত

কুমিল্লায় অটোরিকশায় বাসের ধাক্কা, নিহত ২

এ কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের আহ্বায়ক ও খুলনা আয়কর আইনজীবী সমিতির সভাপতি খান মনিরুজ্জামান। বক্তৃতা করেন নাগরিক নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা আ ফ ম মহসিন, সরদার আবু তাহের, মানবাধিকার কর্মী জামাল মোড়ল, মেজবাহ উদ্দিন পাপ্পু, বৃহত্তর খুলনাবাসীর সভাপতি মোসাদ্দেক হোসেন বাবলু, সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুর রহমান খোকন, মির্জা নুরুজ্জামান, শেখ আব্দুল হালিম, আলমগীর হোসেন খান, সাংবাদিক কাজী মোতাহার রহমান বাবু, মাহাবুবুর রহমান মুন্না, শেখ আইনুল হক প্রমুখ। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন প্রাণিপ্রেমী এস এম সোহরাব হোসেন।

সভায় বক্তারা কুয়েট গবেষণার উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, ‘‘নগরীর পিটিআই মোড়, ময়লাপোতা মোড়, রয়্যাল মোড়, গল্লামারী, শিববাড়ি মোড়, ডাকবাংলা মোড়ে দিনে ও রাতে অচল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।’’ 

কুয়েট গবেষণা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, পিটিআই মোড়ে এক ঘণ্টায় ৩ হাজার ২৫৩টি ইজিবাইক চলাচল করেছে। লাইসেন্সপ্রাপ্ত ইজিবাইকের সংখ্যা ১০ হাজার। অথচ ৪৫ হাজারের বেশি ইজিবাইক চলাচল করায় ৩ লাখ যাত্রীর চলাচলে বিঘ্ন হচ্ছে। 

যানজটকে প্রধান সমস্যা হিসেবে উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, ‘‘রোগী পরিবহনে ও শিক্ষার্থীদের চলাচলে অসুবিধা হচ্ছে। লোয়ার যশোর রোড, ক্লে রোড, স্যার ইকবাল রোডের ফুটপাত অবৈধ দখলদারদের কবলে চলে যাওয়ায় পথচারী চলাচলে বিঘ্ন হচ্ছে।’’ 
 

ঢাকা/নুরুজ্জামান/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • খুলনায় যানজট নিরসনের দাবিতে মানববন্ধন