ইরান-ইসরায়েল সংঘাত নবম দিনে প্রবেশ করেছে। গতকাল শনিবারও ইরান-ইসরায়েল দুই দেশই পাল্টাপাল্টি হামলা চালায়। ইসরায়েলি বাহিনী তেহরান, খোজেস্তান প্রদেশসহ ইরানের কয়েকটি শহরে হামলা করেছে। ইরানও নতুন করে ইসরায়েলে ড্রোন নিক্ষেপ করেছে। সংঘাতে উভয় পক্ষে বেসামরিক নাগরিক হতাহত হচ্ছে প্রতিদিন। গতকালের হামলায় তিন ইরানি কমান্ডারকে হত্যা করেছে। ইসরায়েল টার্গেট করে ইরানের সামরিক কমান্ডারদের হত্যা করছে বলে অভিযোগ করেছেন ইরানের কর্মকর্তারা। সংকট নিরসনে সমঝোতার কোনো লক্ষণ নেই। এ অবস্থায় সংঘাত দীর্ঘ হওয়ার শঙ্কায় উপসাগরীয় দেশগুলো।

সংঘাত বেশি দিন চলতে থাকলে ভয়াবহ পরিণতির মুখে পড়বে মধ্যপ্রাচ্য। কূটনীতিকরা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, আলোচনার মাধ্যমে সংঘাত থামানো না গেলে এ অঞ্চলে দীর্ঘ বিপর্যয় নেমে আসবে। ইসরায়েলের সামরিক প্রধান ইয়াল জামির সতর্ক করে দিয়েছেন, তাঁর দেশকে ইরানের বিরুদ্ধে দীর্ঘ সংঘাতের জন্য প্রস্তুত থাকা উচিত। 

সংঘাত দীর্ঘায়িত হলে ভয়াবহ পরিণতির ব্যাপারে সতর্ক করেছেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল-নাহিয়ানের কূটনৈতিক উপদেষ্টা আনোয়ার গারগাশ। তিনি বলেছেন, ইরান-ইসরায়েল সংঘাত উপসাগরীয় দেশগুলোকে পেছনে ফেলে দিচ্ছে। 

সংকট যতই দীর্ঘায়িত হবে, ততই এ অঞ্চল বিপজ্জনক হয়ে উঠবে। এ জন্য দু’পক্ষের উচিত উত্তেজনা হ্রাস করা। তিনি এ ব্যাপারে কূটনৈতিক পদক্ষেপের ওপর জোর দেন।

গারগাশ বলেন, উপসাগরীয় দেশগুলো যে আঞ্চলিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চায়, এ সংঘাত সেই স্বপ্ন ভেঙে দেবে। তিনি মনে করিয়ে দেন, ২০০৩ সালে ইরাকে যুক্তরাষ্ট্রের হামলার ফল এখন বহন করছে মধ্যপ্রাচ্য। ওই যুদ্ধের পরও মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিতিশীলতা নেমে এসেছিল। বর্তমান চলমান সংঘাতে হরমুজ প্রণালি ঝুঁকিতে রয়েছে। মধ্যপ্রাচ্য আবারও বিপর্যয়ের মুখে পড়বে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, যদি যুক্তরাষ্ট্র ইরানকে লক্ষ্যবস্তু করে, তাহলে উপসাগরীয় দেশগুলোর সামনে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় এসে যাবে। তারা ইরানের পক্ষে যাবে, নাকি ইসরায়েল ও মিত্রদের পক্ষে থাকবে। এই সংঘাত পারস্য উপসাগরীয় দেশগুলোকে ভূরাজনৈতিক বিপদের ঘূর্ণিতে ফেলে দিয়েছে। এ অবস্থায় উপসাগরীয় দেশগুলো সূক্ষ্ম ভারসাম্যমূলক পদক্ষেপ নেওয়ার চেষ্টা করছে। যাতে নিরাপত্তা, জ্বালানি রপ্তানি, বিমান চলাচলসহ গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলো ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচানো যায়। 

ইরান গতকাল শনিবার ভোরে মধ্য ইসরায়েলে ড্রোন হামলা চালিয়েছে। ইসরায়েল ৪০টি ড্রোন ভূপাতিত করার দাবি করেছে। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি বলেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যদি ইসরায়েলের আগ্রাসনে যোগ দেয়, তবে তা সবার জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক হবে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এর আগে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, ইসরায়েলকে তিনি আক্রমণাত্মক পদক্ষেপ কমাতে চাপ দেবেন এমন সম্ভবনা কম। তিনি মনে করেন, এই অনুরোধ করা কঠিন। তবে আমরা প্রস্তুত, আমরা ইরানের সঙ্গে কথা বলছি। ‘ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করছে, এমন কোনো প্রমাণ নেই’– এই মন্তব্যের জন্য ট্রাম্প মার্কিন জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক তুলসী গ্যাবার্ডকে প্রকাশ্যে তিরস্কার করছেন। তিনি মনে করেন, তুলসীর বক্তব্যটি ভুল। পরে তুলসী তাঁর বক্তব্য পরিবর্তন করে বলেন, ‘কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ইরান পরমাণু অস্ত্র বানানোর সক্ষমতা অর্জন করেছে।’ 

ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ বলেছেন, তিনি ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। এ সময় ইরানের প্রেসিডেন্ট বলেন, তাঁর দেশ পারমাণবিক কর্মসূচি থেকে সরবে না। সাইপ্রাসে ইসরায়েলি নাগরিকদের ওপর হামলার ইরানি ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করে দেওয়া দাবি করেছেন ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ।  

আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ) ইসরায়েলি হামলার পর ইরানের নাতাঞ্জ পারমাণবিক স্থাপনার ভেতরে তেজস্ক্রিয় ও রাসায়নিক দূষণের বিপদ সম্পর্কে সতর্ক করেছে। ইস্পাহানে পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার কথাও জানায় সংস্থাটি। জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস সব পক্ষকে শান্তিপূর্ণ সমাধানে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। তা না হলে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হলে তা নিয়ন্ত্রণ করার শক্তি কারও থাকবে না। 

গত ১৩ জুন ইসরায়েলি হামলা শুরুর পর থেকে কমপক্ষে ৪৩০ জন ইরানি নাগরিক নিহত ও ৩ হাজার ৫০০ জন আহত হয়েছেন। ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম নুর নিউজ দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস অ্যাক্টিভিস্টস নিউজ এজেন্সির মতে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় ইরানে ৬৩৯ জন নিহত হয়েছেন। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের মতে, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলে ২৪ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।

ইরান হুমকি দিয়েছে, যদি যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের সঙ্গে বোমা হামলায় যোগ দেয়, তাহলে তারা মধ্যপ্রাচ্যে অবস্থিত মার্কিন ঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা চালাবে। মধ্যপ্রাচ্যের একটি কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, আমেরিকা যদি হস্তক্ষেপ করে, তবে এটি আঞ্চলিক সব পক্ষকে যুদ্ধে ডেকে আনবে।

এদিকে রয়টার্স জানিয়েছে, বি-২ স্টিলথ বোমারু বিমান গুয়াম দ্বীপ থেকে স্থানান্তর করছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে এই কার্যক্রম ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয় বলে জানা গেছে।

দীর্ঘ যুদ্ধে ইরান বেশি শক্তিশালী
ইসরায়েলের প্রযুক্তিগত অগ্রগতি থাকলেও দীর্ঘ যুদ্ধে ইরানের শক্তি বেশি বলে মনে করছেন দোহা ইনস্টিটিউট ফর গ্র্যাজুয়েট স্টাডিজের এক গবেষক। ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক মুহানাদ সেলুম বলেন, এই যুদ্ধে ইসরায়েলের প্রযুক্তিগত অগ্রগতি থাকলেও ইরানের আরও অনেক শক্তি রয়েছে। তিনি বলেন, ইরানিরা অনেক আঘাত সহ্য করতে পারে। তা ছাড়া তাদের রয়েছে নিজস্ব অস্ত্র। যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হলে তা ইরানের পক্ষেই যাবে। কঠোর নিধেষাজ্ঞার মধ্যেই যুগ যুগ ধরে পার করছে ইরান। দেশটিতে ৪০ বছর ধরে জরুরি অবস্থা চলছে। এই অবস্থায় দীর্ঘ যুদ্ধে ইসরায়েলের চেয়ে ইরানের টিকে থাকার ক্ষমতা বেশি।


 
সংকটের মুখে ইরান ও ইসরায়েলের অর্থনীতি
সংঘাতে ইরানের অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপের দিকে যাচ্ছে। গ্লোবাল কাউন্সিল জানিয়েছে, ইরানের অবস্থা অনেক খারাপ। কয়েক দশক ধরে দেশটির ওপর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। মুদ্রাস্ফীতি ৪০ শতাংশে পৌঁছেছে। ইরানি রিয়াল অবাধে পড়ে যাচ্ছে এবং অনেক ইরানি দারিদ্র্যের মধ্যে জীবনযাপন করছেন। জনসংখ্যার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ চরম দারিদ্র্যের মধ্যে জীবনযাপন করছেন। যুদ্ধ কেবল পরিস্থিতিকে আরও বাড়িয়ে তুলবে। ইসরায়েল ইরানের অর্থনৈতিক অবকাঠামো, জ্বালানি অবকাঠামোকে হামলার লক্ষ্যবস্তু করছে। সংকটের মুখে ইসরায়েলও। গ্লোবাল কাউন্সিল জানায়, ইসরায়েলের আর্থিক রিজার্ভ কমে আসছে। তারা প্রচুর ঋণ করছে। যুদ্ধকালীন অর্থনীতি সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। দেশটির প্রতিরক্ষা ব্যয় ৭ অক্টোবরের আগের ৪ শতাংশ থেকে এখন প্রায় ৮ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। ঋণের কারণে জিডিপিতে ঋণের অনুবাদ ৬০ শতাংশ থেকে বেড়ে ৬৮ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। 

তিন ইরানি কমান্ডারকে হত্যা করল ইসরায়েল
গতকাল ইরানের বিপ্লবী গার্ডের দুই কমান্ডারসহ তিন কমান্ডারকে হত্যা করেছে ইসরায়েল। সামরিক বাহিনী দাবি করেছে, ইরানের কোম প্রদেশের একটি অ্যাপার্টমেন্টে হামলা চালিয়ে ইসলামিক বিপ্লবী গার্ড কর্পসের (আইআরজিসি) একজন প্রবীণ কমান্ডারকে হত্যা করেছে। প্রবীণ কমান্ডারের নাম বেনহাম শারিয়ারি। তিনি আইআরজিসির দ্বিতীয় কমান্ডার। হামলায় নিহত অন্য কমান্ডারের নাম আমিন পুর জোদখি। তিনি বিপ্লবী গার্ডের ইউএভি ব্রিগেডের প্রধান। কোম হামলায় কুদস ফিলিস্তিনি কর্পসের কমান্ডার সাইদ ইজাদিকেও হত্যা করেছে ইসরায়েল। এ ছাড়া তেহরানের ১৪০ কিলোমিটার দক্ষিণে শহরের একটি অ্যাপার্টমেন্টে বোমা হামলায় নিহত হয়েছে ১৬ বছর বয়সী কিশোর।

হাসপাতাল ও সামরিক স্থাপনা লক্ষ্যবস্তু বানাচ্ছে ইসরায়েল
ইরানের হাসপাতাল ও অ্যাম্বুলেন্সকে লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। ইরানের স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদরেজা জাফরঘান্দি বলেছেন, ইসরায়েল তিনটি হাসপাতালে আক্রমণ করেছে। এতে দুই স্বাস্থ্যকর্মী ও একটি শিশু নিহত হয়েছে। তাছাড়া ছয়টি অ্যাম্বুলেন্সকে লক্ষ্য করেও হামলা করেছে তারা।

ইরানের খোররামাবাদে ইসরায়েলি হামলায় পাঁচজন নিহত হয়েছে বলে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে। নুর নিউজ এজেন্সি আরও জানিয়েছে, সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে দেশটির বিমান প্রতিরক্ষা বাহিনীর ১৫ জন কর্মকর্তা ও সৈন্য নিহত হয়েছেন। হামলায় বিভিন্ন অঞ্চলে পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনাকে লক্ষ্যবস্তু বানাচ্ছে ইসরায়েল। 

প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেদ করে ইরানের ড্রোন
ইরানের দুটি ড্রোন ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেদ করে দেশটির উত্তরাঞ্চল ও দক্ষিণাঞ্চলে পৃথক হামলা চালিয়েছে; যা অনেকটা অবাক করেছে ইসরায়েলকে। হামলার বিষয়টি স্বীকার করে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, এটি একটি বিরল ঘটনা, যেখানে ইরানের একমুখী আক্রমণাত্মক ড্রোন সফলভাবে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা অতিক্রম করতে সক্ষম হয়েছে। সিএনএন জানায়, শনিবার ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলে জর্ডান সীমান্তসংলগ্ন বেইত শেইন শহরে একটি ড্রোন আঘাত হানে। এতে একটি দোতলা বাড়ি বিধ্বস্ত হয়। জরুরি উদ্ধারকর্মীরা জানান, বিস্ফোরণে বাড়িটির পাশে বড় ধরনের গর্ত সৃষ্টি হয়েছে, জানালা ও দরজা উড়ে গেছে। গত শুক্রবার রাতে ৪০টি ড্রোন অকেজো করতে সক্ষম হয় তারা। ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম হারেৎজ জানিয়েছে, শুক্রবার হাইফায় ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় আহত তিনজন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। তাদের মধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর। 
 
যুক্তরাষ্ট্র হামলা করলে সবার জন্য বিপজ্জনক হবে: আরাগচি
ইস্তাম্বুলে ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি) সম্মেলনের ফাঁকে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধে জড়ানোর কথা অস্বীকার করলেও আমরা মনে করি তারা যুদ্ধে পরোক্ষভাবে জড়িত। তারা যদি ইসরায়েলি আগ্রাসনের পক্ষে সরাসরি যুদ্ধে জড়ায় তাহলে সব পক্ষের জন্য তা ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনবে।

অন্যদিকে ইরান যে কোনো ধরনের হামলার প্রতিক্রিয়া জানানোর হুঁশিয়ারি দিয়েছে। জেনেভায় কূটনৈতিক সম্মেলনে ইরানের সরকারের মুখপাত্র ফাতেমেহ মোহাজেরানি এই হুঁশিয়ারি দেন। তিনি বলেন, বিশ্বকে প্রথমে স্বীকার করতে হবে, একটি সত্যিকারের আগ্রাসী সরকার মধ্যরাতে ইরানে আক্রমণ করেছে। ইরাকে যেমন মিথ্যা অজুহাতে যুক্তরাষ্ট্র হামলা করেছিল, তেমনি ইসরায়েলও একই কাজ করেছে। 

মাখোঁ ও পেজেশকিয়ানের ফোনালাপ 
ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ বলেছেন, তিনি তাঁর ইরানি প্রতিপক্ষ মাসুদ পেজেশকিয়ানের কাছ থেকে ফোন পেয়েছেন। ইউরোপীয় শক্তি ও ইরানের মধ্যে পারমাণবিক আলোচনা ত্বরান্বিত করার জন্য কাজ করতে দু’জন সম্মত হয়েছেন। পরে মাখোঁ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে লেখেন, ‘আমি দাবি করছি, ইরান কখনও পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন করবে না এবং ইরানের উদ্দেশ্য শান্তিপূর্ণ। আমি নিশ্চিত যে, যুদ্ধ থেকে বেরিয়ে আসার এবং বড় বিপদ এড়ানোর উপায় আছে।’

ইরান থেকে দ্বিতীয় দফায় নাগরিক সরিয়ে নিল ইতালি
ইরান-ইসরায়েল থেকে আরও পশ্চিমা নাগরিকদের সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। ইরান থেকে সরিয়ে নেওয়া দুই ডজন ইতালীয় আজারবাইজানে পৌঁছেছেন। সংঘাত থেকে সরিয়ে নেওয়া এটা ইতালির দ্বিতীয় দল। দলটিতে একজন ইতালীয় ডাক্তার ও তাঁর সঙ্গী, একজন ইরানি মহিলা ও তাদের ১৮ মাস বয়সী শিশু ছিল। ইতালির প্রথম দলে ৩৪ জন ইতালির নাগরিক ছিলেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র র ন ইসর য় ল ইসর য় ল র কম ন ড র ক টন ত ক ব যবস থ দ শট র লক ষ য র জন য ক র কর বল ছ ন করছ ন ইসর য গতক ল অবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

রোমান সম্রাজ্ঞী মেসালিনাকে যেকারণে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিলো

রোমান সম্রাজ্ঞী ভ্যালেরিয়া মেসালিনা ছিলেন ‘ভয়ংকর সুন্দরী’। তার সময়ে সময়ে রাজনীতিতে একজন নারীর হস্তক্ষেপ ভালোভাবে দেখা হতো না। কেউ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করলে তাকে নিয়ে নানা সরল ব্যাখ্যা তৈরি হয়ে যেতো। 

ইতিহাসবিদ রবার্ট গ্রেভস বলেছেন, ভ্যালেরিয়া মেসালিনার উচ্চ রাজনৈতিক জ্ঞান ছিলো এবং তিনি ব্যক্তিগত আকাঙ্ক্ষাকে প্রাধান্য দিতেন। অথচ তিনি ইতিহাসে একজন কুখ্যাত রোমান সম্রাজ্ঞী। ভ্যালোরিয়া মেসালিনা ছিলেন রোমান সম্রাট ক্লডিয়াসের তৃতীয় স্ত্রী। বলা হয়ে থাকে তিনি আলোচনায় রয়েছেন তার ক্ষমতা লিপ্সা, নৃশংসতা এবং চরম যৌন স্বেচ্ছাচারিতার জন্য। 

আরো পড়ুন:

সকালে গোসল করার উপকারিতা

ময়ূর সম্পর্কে এই তথ্যগুলো জানেন?

ভ্যালেরিয়া মেসালিনা সম্রাট নিরোর চাচাতো বোন, সম্রাট ক্যালিগুলার দ্বিতীয় চাচাতো বোন এবং সম্রাট অগাস্টাসের প্রপৌত্রী ছিলেন। ৩৮ বা ৩৯ খ্রিস্টাব্দে তিনি ক্লডিয়াসকে বিয়ে করেন। ৪১ খ্রিস্টাব্দে ক্যালিগুলা নিহত হলে ক্লডিয়াস সম্রাট হন এবং মেসালিনা সম্রাজ্ঞী হিসেবে ক্ষমতা লাভ করেন।

 ভ্যালেরিয়া মেসালিনা প্রায় এক দশক ধরে রোমের অন্যতম প্রভাবশালী নারী ছিলেন এবং রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতেন। নিজের অবস্থান ধরে রাখতে তিনি রাজনৈতিক বিরোধীদের নির্বাসন এবং মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার মতো ব্যবস্থা গ্রহণ করতেন।

তার সম্পর্কে প্রচলিত গল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে যে, তিনি রাতের বেলা গোপনে পতিতালয়ে যেতেন এবং সেখানে সেচ্ছাচারিতা করতেন। এমনকি তিনি নামকরা পতিতাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা শুরু করতেন। এক রাতে তিনি ২৫ জন পুরুষের শয্যাসঙ্গিনী হয়েছিলেন!

৪৮ খ্রিস্টাব্দে তিনি সম্রাট ক্লডিয়াসের অনুপস্থিতিতে তার প্রেমিক গাইয়াস সিলিয়াসের সাথে প্রকাশ্যেই বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন, যা ছিল রাষ্ট্রদ্রোহমূলক কাজ। পরে ক্লডিয়াস তাকে মৃত্যুদণ্ড দেন এবং তার নাম ও মূর্তি মুছে ফেলার জন্য ‘ড্যামনেশিও মেমোরি’ ঘোষণা করা হয়। রাজনীতিতে সরাসরি এক দশক প্রভাব রাখা সম্রাজ্ঞী ইতিহাসে একজন কলঙ্কিত নারীর তকমা পেয়ে যান।

তথ্যসূত্র: এনসিয়েন্ট ওয়ার্ল্ড ম্যাগাজিন

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নতুন বিশ্বের সন্ধিক্ষণে একজন মুসলিমের ১০ অপরিহার্য অঙ্গীকার
  • এ গ্যাদা, এবার আমার সিরিয়াল
  • যে রানিকে ‘জীবন্ত দেবী’ হিসেবে গণ্য করা হতো
  • আমি শালিনিকে অনেক কষ্ট দিয়েছি: অজিত
  • সিরিয়ায় বিমান ঘাঁটি করবে যুক্তরাষ্ট্র
  • অ-অভিবাসী ৮০ হাজার ভিসা বাতিল করেছে ট্রাম্প প্রশাসন
  • মুগ্ধের ভাই স্নিগ্ধ: বিএনপিতে যোগ দিলেন যে কারণে 
  • যে ৪ ‘মানি রুল’ ধনীরা কাউকে বলেন না
  • নিউ ইয়র্ক-এর ফাস্ট লেডি ‘রামা দুয়াজি’
  • রোমান সম্রাজ্ঞী মেসালিনাকে যেকারণে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিলো