গ্রামের নাম দিগন্তপুর। এখানকার মানুষের জীবিকা ধান, পাট আর প্রকৃতি। আষাঢ় এলে আশার হাওয়া বইতে শুরু করে। এই এলাকার রহিম শেখ একজন দরিদ্র কৃষক। সারাবছর মাটি চষে, কাজ করে। তার ছোট ছেলে লিয়ন, শহরে পড়ে সরকারি কলেজে। বাবার স্বপ্ন, ‘ছেলেটা যেন হাল চাষ না করে, কলম চাষ করে।’
আষাঢ়ের শুরুর দিনেই চারদিক মেঘে ছেয়ে যায়। রহিম শেখ ক্ষেতে নেমেছে বীজ ছিটাতে, মাথার ওপর গাঢ় মেঘ। সঙ্গে ছেলে লিয়নও এসেছে, বাবার পিছু পিছু।
হঠাৎ মেঘ গর্জে ঝেঁপে নামে বৃষ্টি। কাজ ফেলে সবাই গাছের নিচে, ঘরের ভেতরে। কিন্তু রহিম শেখ তখনও ক্ষেতে। লিয়ন চিৎকার করে– বাবা, চলো। ভিজে যাবে, ঠান্ডা লাগবে।
রহিম হেসে বলে, এ বৃষ্টিই আমার স্বপ্ন রে। এ জলের ওপরেই তোর লেখাপড়ার ভরসা।
সেদিন সন্ধ্যায়, ছাপরা ঘরের মাটিতে পা মুছে ঢুকে লিয়ন চুপচাপ বসে। মা জিজ্ঞেস করে, ‘কি রে, কথা বলছিস না কেন?’
ছেলে বলে, ‘আমার মনে হয়, আমার পড়াশোনা যদি তোমাদের কষ্টকে কমাতে না পারে, তাহলে এ লেখাপড়ারই কী দাম?’
তারপর থেকে লিয়ন কৃষিতে আগ্রহী হয়ে ওঠে।
পড়াশোনা শেষে সে গ্রামে ফিরে আসে। একসঙ্গে ক্ষেতে নামে বাবা-ছেলে, কিন্তু এবার আধুনিক পদ্ধতি নিয়ে।
আষাঢ় আসে প্রতি বছর। কিন্তু সেই বছরের আষাঢ়ই বদলে দিয়েছিল ভবিষ্যৎ একজন কৃষক পিতার আর একজন শিক্ষিত পুত্রের।
আষাঢ় শুধু প্রকৃতির ঋতু নয়, এটি পরিশ্রম, অপেক্ষা আর আশার মাস। পরিবার, মাটি আর শিক্ষা তিনটিকেই সমান ভালোবাসা দিতে শিখলে তবেই আসে সত্যিকারের বদল। v
সুহৃদ তিতুমীর কলেজ
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স হ দ সম ব শ
এছাড়াও পড়ুন:
রোমান সম্রাজ্ঞী মেসালিনাকে যেকারণে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিলো
রোমান সম্রাজ্ঞী ভ্যালেরিয়া মেসালিনা ছিলেন ‘ভয়ংকর সুন্দরী’। তার সময়ে সময়ে রাজনীতিতে একজন নারীর হস্তক্ষেপ ভালোভাবে দেখা হতো না। কেউ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করলে তাকে নিয়ে নানা সরল ব্যাখ্যা তৈরি হয়ে যেতো।
ইতিহাসবিদ রবার্ট গ্রেভস বলেছেন, ভ্যালেরিয়া মেসালিনার উচ্চ রাজনৈতিক জ্ঞান ছিলো এবং তিনি ব্যক্তিগত আকাঙ্ক্ষাকে প্রাধান্য দিতেন। অথচ তিনি ইতিহাসে একজন কুখ্যাত রোমান সম্রাজ্ঞী। ভ্যালোরিয়া মেসালিনা ছিলেন রোমান সম্রাট ক্লডিয়াসের তৃতীয় স্ত্রী। বলা হয়ে থাকে তিনি আলোচনায় রয়েছেন তার ক্ষমতা লিপ্সা, নৃশংসতা এবং চরম যৌন স্বেচ্ছাচারিতার জন্য।
আরো পড়ুন:
সকালে গোসল করার উপকারিতা
ময়ূর সম্পর্কে এই তথ্যগুলো জানেন?
ভ্যালেরিয়া মেসালিনা সম্রাট নিরোর চাচাতো বোন, সম্রাট ক্যালিগুলার দ্বিতীয় চাচাতো বোন এবং সম্রাট অগাস্টাসের প্রপৌত্রী ছিলেন। ৩৮ বা ৩৯ খ্রিস্টাব্দে তিনি ক্লডিয়াসকে বিয়ে করেন। ৪১ খ্রিস্টাব্দে ক্যালিগুলা নিহত হলে ক্লডিয়াস সম্রাট হন এবং মেসালিনা সম্রাজ্ঞী হিসেবে ক্ষমতা লাভ করেন।
ভ্যালেরিয়া মেসালিনা প্রায় এক দশক ধরে রোমের অন্যতম প্রভাবশালী নারী ছিলেন এবং রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতেন। নিজের অবস্থান ধরে রাখতে তিনি রাজনৈতিক বিরোধীদের নির্বাসন এবং মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার মতো ব্যবস্থা গ্রহণ করতেন।
তার সম্পর্কে প্রচলিত গল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে যে, তিনি রাতের বেলা গোপনে পতিতালয়ে যেতেন এবং সেখানে সেচ্ছাচারিতা করতেন। এমনকি তিনি নামকরা পতিতাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা শুরু করতেন। এক রাতে তিনি ২৫ জন পুরুষের শয্যাসঙ্গিনী হয়েছিলেন!
৪৮ খ্রিস্টাব্দে তিনি সম্রাট ক্লডিয়াসের অনুপস্থিতিতে তার প্রেমিক গাইয়াস সিলিয়াসের সাথে প্রকাশ্যেই বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন, যা ছিল রাষ্ট্রদ্রোহমূলক কাজ। পরে ক্লডিয়াস তাকে মৃত্যুদণ্ড দেন এবং তার নাম ও মূর্তি মুছে ফেলার জন্য ‘ড্যামনেশিও মেমোরি’ ঘোষণা করা হয়। রাজনীতিতে সরাসরি এক দশক প্রভাব রাখা সম্রাজ্ঞী ইতিহাসে একজন কলঙ্কিত নারীর তকমা পেয়ে যান।
তথ্যসূত্র: এনসিয়েন্ট ওয়ার্ল্ড ম্যাগাজিন
ঢাকা/লিপি