লালমনিরহাটে ‘মব’ সন্ত্রাসের মাধ্যমে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ভুক্ত বাবা ও ছেলেকে হেনস্তা ও পুলিশের কাছে সোপর্দ করার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ; আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) এবং নারীপক্ষ। একই সঙ্গে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিচার দাবি করেছে সংগঠনগুলো। আজ মঙ্গলবার পৃথক বিবৃতিতে সংগঠনগুলো এ দাবি জানায়।

বিবৃতিতে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ বলেছে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির কারণে দেশের বিভিন্ন স্থানে মব ভায়োলেন্স, সাম্প্রদায়িক উসকানির মতো ঘটনাগুলো ঘটছে এবং এই ঘটনাগুলোর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে আইনের আওতায় আনার ব্যাপারে সে রকম জরুরি কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে দেখা যাচ্ছে না।

বিবৃতিতে ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে দোষী ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার ও উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানিয়েছে মহিলা পরিষদ। একই সঙ্গে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে সরকার, প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিশেষ মনোযোগ আকর্ষণ করেছে তারা।

‘মব’-এ জড়িতদের বিচার দাবি আসকের

ধর্মীয় অনুভূতি বা অবমাননার অভিযোগকে অত্যন্ত স্পর্শকাতর উল্লেখ করে এ ধরনের অভিযোগের তদন্তের স্বচ্ছতা, নিরপেক্ষতা এবং প্রমাণভিত্তিক বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)। বিবৃতিতে আসক জানায়, অপরাধের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার আগে কাউকে সামাজিকভাবে হেয় করা, নিপীড়নের মুখে ঠেলে দেওয়া বা সহিংসতার দিকে ঠেলে দেওয়া নিন্দনীয়।

‘মব’–এ জড়িত ব্যক্তিদের বিচার দাবি করে বিবৃতিতে আসক বলেছে, এ বিচারহীনতার সংস্কৃতি সামাজিক সম্প্রীতি ও আইনের শাসনের জন্য গভীর উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ক্ষুব্ধ ও হতাশ নারীপক্ষ

ধর্ম অবমাননাসহ নানা অজুহাতে দেশব্যাপী ক্রমাগতভাবে ‘মব’ সন্ত্রাস করে অত্যাচার-নির্যাতনের ঘটনায় নারীপক্ষ ভীষণভাবে ক্ষুব্ধ, হতাশ ও উদ্বিগ্ন। এসব ঘটনা বন্ধে সরকারের পক্ষ থেকে কার্যকর উদ্যোগ নেই উল্লেখ করে বিবৃতিতে নারীপক্ষ বলেছে, এ ধরনের প্রতিটি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দোষী ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনতে হবে এবং যাতে এ ধরনের আর একটি ঘটনাও না ঘটে, তার জন্য এখনই কঠোর ও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এ ধরন র ঘটন র

এছাড়াও পড়ুন:

নির্বাচন হলে দেশ ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল হবে: সেনাসদর

দেশের জনগণের মতো সেনাবাহিনীও চায় সরকারের রূপরেখা অনুযায়ী একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। নির্বাচন হলে দেশের স্থিতিশীলতা আরো ভালো হবে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হবে।

বুধবার (৫ নভেম্বর) সেনাসদরে সেনাবাহিনীর কার্যক্রম সম্পর্কিত আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন জেনারেল অফিসার কমান্ডিং, সদর দপ্তর আর্মি ট্রেনিং অ্যান্ড ডকট্রিন কমান্ড (জিওসি আর্টডক) লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. মাইনুর রহমান।

আরো পড়ুন:

‘নির্বাচনের সময় সেনাবাহিনীর ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা বহাল থাকবে’

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানের সাক্ষাৎ, নির্বাচনি প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা

তিনি বলেন, “দেশের জনগণের মতো সেনাবাহিনীও চায় সরকারের রূপরেখা অনুযায়ী একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। সে রূপরেখার মধ্যে সময়সীমাও দেওয়া আছে। আমরা আশা করি নির্বাচন হলে দেশের স্থিতিশীলতা আরো ভালো হবে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ধীরে ধীরে আারো স্বাভাবিক হবে এবং সেনাবাহিনী তখন সেনানিবাসে ফিরে যেতে পারবে। আমরা সেদিকে তাকিয়ে আছি।”

লেফটেন্যান্ট জেনারেল মাইনুর রহমান আরো বলেন, “সরকার এখন পর্যন্ত নির্বাচনের যেটুকু রূপরেখা প্রণয়ন করেছে সেটার ওপর ভিত্তি করে সেনাবাহিনী যথাযথ প্রস্তুতি গ্রহণ করছে। আমাদের যে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম এখন সীমিত আকারে চলছে তার মধ্যে নির্বাচনের সময় আমাদের কী করণীয় সেটাকে ফোকাসে রেখেই প্রশিক্ষণ করছি।”

তিনি আরো বলেন, “প্রশিক্ষণের সঙ্গে একটি বিষয় সম্পর্কিত তা হলো শান্তিকালীন সময়ে সেনাবাহিনীর দায়িত্ব হলো যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া। আমরা বলে থাকি ‘উই ট্রেইন এজ উই ফাইট'।”

গত ১৫ মাস সেনাবাহিনী বাইরে আছে উল্লেখ করে সেনাবাহিনীর এই কর্মকর্তা বলেন, “নির্বাচন পর্যন্ত বা তার কিছুটা পরেও যদি বাইরে থাকতে হয় তাহলে আরো কিছুদিন বাইরে থাকতে হবে। এতে করে আমাদের প্রশিক্ষণ বিঘ্নিত হচ্ছে।”

লেফটেন্যান্ট জেনারেল মাইনুর রহমান বলেন, “এর পাশাপাশি যে পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে গত ১৫ মাস যে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেছে সেনাবাহিনী, এটা সহজ পরিস্থিতি ছিল না। এ ধরনের পরিস্থিতি বাংলাদেশ প্রতিদিন ফেস করেনি। এজন্য আমরাও চাই একটা সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক এবং আমরা সেনানিবাসে ফেরত আসতে পারি।”

গত ১৫ মাস সেনাবাহিনী বেসামরিক প্রশাসনের সহয়তায় নিয়জিত আছে এবং অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং ও প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে দায়িত্ব পালন করছে। এই ১৫ মাস সেনাবাহিনী অত্যন্ত পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছে,” বলেও উল্লেখ করেন এই কর্মকর্তা।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নির্বাচন নিয়ে সংশয়ের সুযোগ নেই: প্রেস সচিব
  • সরকার, রাজনৈতিক দল সবার জন্য সতর্কবার্তা
  • যৌথ বাহিনীর অভিযান সারা দেশে গ্রেপ্তার ১৯৪
  • নির্বাচন হলে দেশ ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল হবে: সেনাসদর
  • সাংবাদিকেরা সত্য তুলে ধরায় পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে গুজব অনেকটা কমেছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
  • নিষিদ্ধ দুষ্কৃতকারীদের কার্যক্রম বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
  • আইনশৃঙ্খলার দায়িত্ব থেকে সেনাবাহিনীর ৫০ শতাংশ সদস্যকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে