জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম মুখ্য সংগঠক ডা. মাহমুদা মিতুর কাছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কর্মকর্তা ঘুস চেয়েছেন বলে দাবি করেছেন দলটির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। তিনি বলেন, ‘আমরা দুদকের এই দুর্নীতির বিচার চাই। আমলাদের এক লাখ টাকার চা খাওয়ানোর জন্যই কি জুলাইতে বাংলাদেশের মানুষ জীবন দিয়েছিল?’

মঙ্গলবার রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে এ দাবি করেন হাসনাত। ওই পোস্টের সঙ্গে তিনি তিনটি ভিডিও ক্লিপ যুক্ত করেছেন।

‘স্বাধীন বাংলাদেশে দুদকের চা খাওয়ার বিল ১ লাখ টাকা’ শিরোনামে পোস্টে হাসনাত আবদুল্লাহ লেখেন, ‘আপনার নামে দুর্নীতির কোনো অভিযোগ না থাকলেও সেটার ক্লিয়ারেন্স নিতে আপনাকে এক লাখ টাকা দিতে হবে। সম্প্রতি মাহমুদা মিতুর কাছে থেকে এই টাকা চাওয়া হয়েছে দুদকের ডিজি আকতার আর তার ডিডি পরিচয়ে। মাহমুদা মিতুকে বলা হয় আপনি একজন ডাক্তার, আপনার তো টাকা-পয়সার অভাব থাকার কথা না। আপনি এক লাখ টাকা দিয়ে ক্লিয়ারেন্স নিয়ে যান।’

তিনি লেখেন, ‘দুদকের সর্বনিম্ন রেট নাকি এক লাখ টাকা। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে আকতার আবার ফোন দিয়ে জানতে চান টাকা দেবে কি না? টাকা না দিলে নাকি খবর করে ছেড়ে দেওয়া হবে। রেড ক্রিসেন্টে মাহমুদা মিতু যোগ দিয়েছেন ৫ আগস্টের পরে। দুদক এখন তদন্ত করছে আওয়ামী লীগের সময়ের দুর্নীতি নিয়ে।’

হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘অথচ হাস্যকরভাবে আওয়ামী আমলের কর্মকর্তাদের নাম না দিয়ে তখনকার দায় চাপানোর চেষ্টা করা হচ্ছে এখনকার লোকজনের ওপর। এখানে বড় অঙ্কের টাকার লেনদেনের সমূহ সম্ভাবনা আছে। কিছু না করাদের কাছে থেকেই যদি এক লাখ করে নেয়, আওয়ামী লীগ আমলের কর্মকর্তাদের থেকে তাহলে কত করে নিয়েছে?’

এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক বলেন, ‘দুদকের এসব কাজকারবার এই প্রথম না। শেখ হাসিনার আমলে খালেদা জিয়াসহ বিরোধী দলের বহু নেতাকে এরা হয়রানি করেছে। অথচ আওয়ামী লীগের হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি নিয়ে এরা কিছুই বলেনি। আমরা আশা করেছিলাম, ৫ আগস্টের পর এদের মধ্যে পরিবর্তন আসবে। কিন্তু আসেনি। বরং এরা এখন চা খাওয়ার জন্য এক লাখ করে টাকা চাওয়া শুরু করেছে। মাহমুদা মিতু সাহস করে ভিডিও করে রেখেছেন, অন্যায় ঘুস দেন নাই। কিন্তু কত সাধারণ মানুষ এদের এই চায়ের বিল দিতে বাধ্য হয়েছে জানা নেই।’

তিনি আরও লেখেন, ‘আমাদের অবস্থান পরিষ্কার- মাহমুদা মিতু কেন, যদি আমার নামেও এক পয়সা দুর্নীতির অভিযোগ আসে, সেটা মানুষের সামনে প্রকাশ করে দিন। কাউকে ফোন করারও দরকার নেই, দুর্নীতি পেলেই সেগুলো প্রকাশ করে মামলা করে দেন। আইনের হাতে তুলে দেন। তা না করে নিরীহ লোকজনের ওপরে এই চাঁদাবাজি কেন করছেন? কেন চা খাওয়ার বিল চান, কেন টাকা না দিলে হুমকি দেন? ফ্যাসিবাদের পতনের পর আমরা একটা নতুন বাংলাদেশ চাই।’

হাসনাত বলেন, ‘শেখ হাসিনার করে যাওয়া দুর্নীতির পথে যেন আর কেউ না যেতে পারে সেজন্য দুদককেও আমরা নতুন রূপে দেখতে চেয়েছিলাম। কিন্তু নতুন বাংলাদেশেও দুদক সেই পুরোনো পথেই হাঁটা শুরু করেছে। আমলাতন্ত্র আবারও বিষদাঁত নিয়ে কামড় বসাতে হাজির হয়েছে। এই বিষদাঁত ভাঙতে না পারলে নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন হেরে যাবে, আমরাও হেরে যাবো। আমরা দুদকের এই দুর্নীতির বিচার চাই। আমলাদের এক লাখ টাকার চা খাওয়ানোর জন্যই কি জুলাইতে বাংলাদেশের মানুষ জীবন দিয়েছিল?’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: এনস প এক ল খ ট ক আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

এক বছরে সড়কে ৬ হাজারের বেশি নিহত, কোথায় বেশি, কারণ কী

দেশে সড়কপথে এক বছরে ৬ হাজার ৪২০ জন নিহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ৪৮ শতাংশই নারী-শিশু ও পথচারী।

এ হিসাব গত বছরের অক্টোবর থেকে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। সড়কে নারী, শিশু, পথচারী এবং চালক-সহকারীরা বেশি ঝুঁকিতে থাকেন এবং এঁদের মৃত্যুর হারও বেশি।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের গত ১২ মাসের তথ্য বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। সংস্থাটির পরিসংখ্যান বলছে, সড়কে বেশি মৃত্যু হয়েছে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায়। ওই ১২ মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত মানুষের সংখ্যা ১২ হাজার ৫২৮। ১২ মাসে মোট সড়ক দুর্ঘটনার সংখ্যা ৬ হাজার ৪৩৭।

মোট নিহত ব্যক্তির মধ্যে নারী ৯০৮, শিশু ৮৭১ এবং পথচারী ১ হাজার ৩২২ জন—যা মোট মৃত্যুর ৪৮ দশমিক ৩০ শতাংশ। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে যানবাহনের চালক ও তাঁদের সহকারীর সংখ্যা ৮৫৫। সব মিলিয়ে এই চারটি ঝুঁকিপূর্ণ শ্রেণি (নারী, শিশু, পথচারী এবং চালক-সহকারী) মোট নিহতের প্রায় ৬১ দশমিক ৬২ শতাংশ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যা প্রমাণ করে দেশের সড়কে বিদ্যমান নিরাপত্তাকাঠামো সমাজের দুর্বলতম অংশকে সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ। দেশে সড়ক দুর্ঘটনা এখন আর বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা নয়; বরং এটি একটি ভয়াবহ জাতীয় সংকট।

সড়কে নারী, শিশু, পথচারী এবং চালক-সহকারীরা বেশি ঝুঁকিতে থাকেন এবং এঁদের মৃত্যুর হারও বেশি।সড়কে প্রধান ঘাতক ‘মোটরসাইকেল’মহাসড়কে বিপজ্জনক বাঁকে কাছাকাছি দূরত্বে বাস-ট্রাক-মোটরসাইকেল। রংপুর নগরের হাজিরহাট এলাকায় রংপুর-দিনাজপুর মহাসড়কের এই স্থানে প্রায়ই ঘটে দুর্ঘটনা। তবু ওভারটেকিং করে চলাচল করছে যানবাহন

সম্পর্কিত নিবন্ধ