ইরানের হামলার শিকার মার্কিন ঘাঁটি আল উদেইদে কী আছে
Published: 25th, June 2025 GMT
ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি জড়ানোর জবাবে মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন সামরিক ঘাঁটিগুলো লক্ষ্য করে পাল্টা হামলা চালিয়েছে তেহরান। সোমবার ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির উপদেষ্টা আলি আকবর বেলায়তি ঘোষণা দেন, ওই অঞ্চলে বা অন্য কোথাও যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবহৃত ঘাঁটিগুলো লক্ষ্য করে হামলা চালানো হবে। পরে ওই দিন রাতেই কাতারের রাজধানী দোহায় বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। সেখানে মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে বড় মার্কিন সামরিক ঘাঁটি আল উদেইদে হামলা চালায় ইরান।
কী আছে এ বিমানঘাঁটিতে
ইরান থেকে পারস্য উপসাগর পেরিয়ে মাত্র ১৯০ কিলোমিটার দক্ষিণে প্রাকৃতিক গ্যাসে সমৃদ্ধ দেশ কাতারের অবস্থান। এ দেশেই আল উদেইদ ঘাঁটি অবস্থিত। এটি মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় সামরিক ঘাঁটি।
১৯৯৬ সালে কাতারের রাজধানী দোহার কাছে মরু অঞ্চলে ২৪ হেক্টর জায়গাজুড়ে গড়ে তোলা হয় এ ঘাঁটি। এটি যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল কমান্ডের ফরোয়ার্ড হেডকোয়ার্টার্স বা অগ্রবর্তী সদরদপ্তর। মিসর থেকে শুরু করে কাজাখস্তান পর্যন্ত বিশাল অঞ্চলে মার্কিন সামরিক কার্যক্রম পরিচালিত হয় এই সদরদপ্তর থেকে।
এ ঘাঁটিতে কাতারের নিজস্ব বিমানবাহিনী ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও আরও কয়েকটি দেশের বাহিনী অবস্থান করছে। সেখানে প্রায় ১০ হাজার সেনা থাকেন। চলতি বছরের শুরুর দিকে ওয়াশিংটনভিত্তিক পত্রিকা দ্য হিলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, আল উদেইদ ঘাঁটিতে ভালোভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা দীর্ঘ রানওয়েগুলোর কারণে দ্রুত বাহিনী মোতায়েন করা যায়, যা যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক শক্তি প্রদর্শনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
কেন খবরের শিরোনামে
সোমবার কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক ঘোষণায় বলা হয়, ইরানের পাল্টা হামলার হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে তারা সাময়িকভাবে তাদের আকাশসীমা বন্ধ করে দিয়েছে। মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আঞ্চলিক পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে নেওয়া সতর্কতামূলক ব্যবস্থার অংশ হিসেবে দেশের আকাশসীমায় উড়োজাহাজের চলাচল সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে। আল উদেইদ ঘাঁটিতে কাতারের নিজস্ব বিমানবাহিনী ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও আরও কয়েকটি দেশের বাহিনীর অবস্থান রয়েছে। সেখানে প্রায় ১০ হাজার সেনা থাকেন।
হামলার জন্য প্রস্তুত ছিল কি
ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার আগে থেকেই যুক্তরাষ্ট্র সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নিচ্ছিল বলে মনে করা হচ্ছে। ট্রাম্প যখন ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে সরাসরি জড়ানোর কথা ভাবছিলেন, তখন স্যাটেলাইট চিত্র বিশ্লেষণ করে বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়, উদেইদ ঘাঁটির রানওয়ে থেকে বেশ কয়েকটি সামরিক বিমান সরিয়ে ফেলা হয়েছে।
ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় কি ঘাঁটির সম্পৃক্ততা ছিল?
এক কথায়, না। গত রোববার ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ওপর যুক্তরাষ্ট্রের হামলার সময় আল উদেইদসহ মধ্যপ্রাচ্যের কোনো মার্কিন ঘাঁটি ব্যবহার করা হয়নি। হামলার আগে দাবি করা হয়েছিল, যুক্তরাষ্ট্রের বি-২ বোমারু বিমানগুলো গুয়ামের দিকে যাচ্ছে। পরে দেখা যায়, এটি ছিল বিভ্রান্ত করার এক কৌশল।
হামলার ঘটনায় কাতারের প্রতিক্রিয়া
কাতার আল উদেইদ ঘাঁটিতে হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। একে নিজেদের সার্বভৌমত্বের গুরুতর লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করেছে তারা।পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল-আনসারি এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আমরা আল উদেইদ ঘাঁটিতে ইরানের রেভলিউশনারি গার্ড বাহিনীর হামলার তীব্র নিন্দা জানাই। এটি কাতারের সার্বভৌমত্ব, আকাশসীমা ও আন্তর্জাতিক আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন।’ খবর দ্য এক্সপ্লেইনারের।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র য ক তর ষ ট র র স অবস থ
এছাড়াও পড়ুন:
তেহরানের বাসিজ মিলিশিয়া সদরদপ্তরে হামলার দাবি ইসরায়েলের
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ জানিয়েছেন, তেহরানে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এসব হামলার লক্ষ্যবস্তু হিসেবে তিনি বাসিজ মিলিশিয়ার সদরদপ্তর এবং এভিন কারাগারের নাম উল্লেখ করেছেন।
সোমবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
এভিন কারাগারে রাজনৈতিক বন্দি ও সরকারবিরোধীদের আটক রাখা হয় বলে মানবাধিকার সংস্থাগুলোর অভিযোগ রয়েছে।
বিবিসি নিশ্চিত করেছে, হামলার সময় এভিন কারাগারের প্রধান ফটকে একটি বিস্ফোরণের সিসিটিভি ফুটেজ পাওয়া গেছে।
হামলার বিষয়ে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ এক বিবৃতিতে বলেছেন, ইসরায়েলের প্রতিরক্ষাবাহিনী তেহরানের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় আঘাত হানছে। দেশটির স্বেচ্ছাসেবী সশস্ত্র মিলিশিয়াগোষ্ঠী বাসিজের সদরদপ্তর, এভিন কারাগার, ইসরায়েলকে ধ্বংসের সময়গণনা করা ঘড়ি, বিপ্লবী গার্ডের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সদরদপ্তরসহ আরও কিছু সরকারি প্রতিষ্ঠানকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।
ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (আইআরজিসি)-সম্পর্কিত বার্তা সংস্থা ফারসও জানিয়েছে, এভিন কারাগারের প্রবেশদ্বার সম্ভবত ড্রোন বা সীমিত বিস্ফোরক ব্যবহার করে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো বন্দির পালিয়ে যাওয়ার খবর পাওয়া যায়নি।