মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েলকে ‘অবিলম্বে পদত্যাগ’ করার আহ্বান জানিয়েছেন। ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে একটি পোস্টে বলেছেন, ‘খুব দেরি হয়ে যাচ্ছে, দ্রুত পদত্যাগ করা উচিত’।

এছাড়া একটি সংবাদ প্রতিবেদনও শেয়ার করেছেন ট্রাম্প, যেখানে ফেডারেল হাউজিং ফিন্যান্স এজেন্সির পরিচালক বিল পল্টে জেরোম পাওয়েলের বিরুদ্ধে তদন্তের দাবি জানান। তার অভিযোগ, ফেডের ওয়াশিংটন সদর দপ্তরের সংস্কার ব্যয় সংক্রান্ত শুনানিতে পাওয়েল মিথ্যা সাক্ষ্য দিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

আরো পড়ুন:

পুত্রবধূকে সিনেট নির্বাচনের প্রার্থী করছেন ট্রাম্প

জাপানকে ৩৫ শতাংশ শুল্কের হুমকি ট্রাম্পের

ট্রাম্প তার প্রথম মেয়াদে পাওয়েলকে ফেড চেয়ারম্যান হিসেবে মনোনীত করেছেন। তারপর থেকে, তিনি বারবার সুদের হার না কমানোর জন্য তার সমালোচনা করেছেন। তবে ট্রাম্পের তাকে পদ থেকে অপসারণ করার ক্ষমতা আছে কিনা তা স্পষ্ট নয়।

এ বছর শুরুর দিকে ট্রাম্প বলেছিলেন, তিনি পাওয়েলকে বরখাস্ত করার কোনো পরিকল্পনা করছেন না। কিন্তু অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়ানোর জন্য সুদ কমানোর দাবিতে ট্রাম্পের চাপ ক্রমশই বেড়েছে।

সম্প্রতি জেরোম পাওয়েল মন্তব্য করেন, ট্রাম্পের শুল্ক নীতির প্রভাব না থাকলে ফেড ইতিমধ্যেই সুদের হার কমিয়ে দিত। পর্তুগালে কেন্দ্রীয় ব্যাংকারদের এক সভায় যখন জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল যে প্রশাসন যদি বিশ্বজুড়ে দেশগুলোতে দ্রুত শুল্ক বৃদ্ধির পরিকল্পনা ঘোষণা না করত তবে এই বছর মার্কিন সুদের হার আবার কমানো হত কিনা? পাওয়েল উত্তর দিয়েছিলেন, ‘আমি মনে করি এটি ঠিক’।

এদিকে পাওয়েল নিজেই জানিয়ে দিয়েছেন, প্রেসিডেন্টের চাপে তিনি পদত্যাগ করবেন না। এবং যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী, ফেডের মতো স্বাধীন সংস্থার বোর্ড সদস্যদের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে সরানো যায় শুধুমাত্র গুরুতর কারণ দেখাতে পারলে। ১৯৩৫ সালের সুপ্রিম কোর্টের একটি ঐতিহাসিক রায়ে এ কথা স্পষ্ট বলা আছে।

তবে ট্রাম্প অতীতেও বিভিন্ন স্বশাসিত সংস্থার প্রধানদের বা শীর্ষ কর্মকর্তাদের অপসারণের চেষ্টা করেছেন, যার অনেকগুলো আদালতে চ্যালেঞ্জ হয়েছে।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর য ক তর ষ ট র পদত য গ কর ছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

সিলেট ওসমানী হাসপাতালের বারান্দায় দুই প্রসূতির সন্তান প্রসব, এক নবজাতকের মৃত্যু

সিলেটের এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একটি ওয়ার্ডের বারান্দায় দুই প্রসূতির সন্তান প্রসবের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল বুধবার বিকেলে হাসপাতালের দ্বিতীয় তলার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের সামনের বারান্দায় এ ঘটনা ঘটে।

স্বজনদের ভাষ্য, হাসপাতালে ভর্তি থাকা অবস্থায় দুই প্রসূতির প্রসববেদনা ওঠে। তবে চিকিৎসক ও নার্সদের সহযোগিতা চেয়েও না পেয়ে স্বজনসহ অন্যদের সহযোগিতায় তাঁরা বারান্দায় সন্তানের জন্ম দেন। এর মধ্যে এক নবজাতকের মৃত্যু হয়।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, হাসপাতালের ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত রোগী ভর্তি থাকায় তাঁরা শয্যা পাননি। দুই প্রসূতি জরুরি অবস্থায় গিয়েছিলেন। ভিড় থাকায় ভেতরে জরুরি অবস্থার বিষয়টি তাঁরা জানাতে পারেননি। এক প্রসূতি সময়ের আগেই সন্তান জন্ম দেওয়ায় নবজাতকটিকে বাঁচানো যায়নি। তবে মা সুস্থ আছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের চাটিবহর গ্রামের শাহিন মিয়ার স্ত্রী সুমি বেগম (১৯) ও গোলাপগঞ্জের দক্ষিণ রামপাশা গ্রামের রতন চন্দ্র দাসের স্ত্রী সুপ্রিতা রানী দাস (২৫) বুধবার হাসপাতালে ভর্তি হন। তাঁদের মধ্যে সুমি বেগমের সন্তান জন্মের পরই মারা যায়। দুই প্রসূতি এখনো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

সুমি বেগমের মা রাজিয়া বেগম জানান, মেয়েকে বুধবার বেলা তিনটার দিকে হাসপাতালে ভর্তি করান। এরপর প্রসূতি ওয়ার্ডে নিয়ে যাওয়ার পর জায়গা পাননি। এ সময় মেয়ের প্রসববেদনা উঠলে ওয়ার্ডের ভেতরে যেতে চাইলেও যেতে দেওয়া হয়নি। একপর্যায়ে উপস্থিত অন্যরা ভেতরে নার্সদের খবর দিলেও বিষয়টি আমলে নেওয়া হয়নি। পরে হাসপাতালের বারান্দাতেই তিনিসহ অন্যদের সাহায্যে নবজাতকের জন্ম হয়। সন্তান প্রসবের পর ওয়ার্ডের নার্সরা গিয়েছিলেন। পরে তাঁর মেয়েকে ওয়ার্ডের ভেতরে নেওয়া হয়।

রাজিয়া বেগম আরও জানান, তাঁর মেয়ে ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় সন্তান প্রসব করেন। সময়ের আগে সন্তান প্রসব ও হাসপাতালের অসহযোগিতায় তাঁর মেয়ের বাচ্চাটি মারা গেছে। তার মেয়ের সন্তান প্রসব হওয়ার প্রায় ১০ মিনিট পর আরও এক প্রসূতির প্রসববেদনা ওঠে। তিনিও বারান্দায় একইভাবে সন্তান প্রসব করেন।

জানতে চাইলে হাসপাতালের উপপরিচালক সৌমিত্র চক্রবর্তী প্রথম আলোকে বলেন, হাসপাতালের ধারণক্ষমতা ৯০০। চিকিৎসাধীন আছেন প্রায় দুই হাজার ৮০০ রোগী। হাসপাতালের প্রসূতি ওয়ার্ডে ২৪ ঘণ্টায় রোগী ভর্তি করা হয়। একসঙ্গে ২৫ থেকে ৩০ জন প্রসূতি ভর্তির জন্য চলে আসেন। ভর্তির কক্ষে শয্যা আছে পাঁচটি। সেখানে প্রসূতিদের পরীক্ষা করার পর ভর্তি করা হয়। প্রসূতিদের অবস্থা দেখেই প্রসব করানোর জন্য শয্যা দেওয়া হয়।

সৌমিত্র চক্রবর্তী বলেন, ‘ওই দুই প্রসূতি জরুরি অবস্থায় এসেছিলেন। সেখানে ভিড় থাকায় ভেতরে জরুরি অবস্থার বিষয়টি তাঁরা জানাতে পারেননি। এ ছাড়া যে কক্ষে পরীক্ষা করা হয়, সেটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত হওয়ায় বাইরের শব্দ ভেতরে যায়নি। চিকিৎসক ও নার্সরা সেবা দেননি কিংবা সেবা দেওয়ার মনোভাব নেই—এমনটি না। ৯০০ শয্যার হাসপাতালে তিন হাজারের কাছাকাছি রোগীকে সেবা দেওয়া হচ্ছে, বিষয়টি বুঝতে হবে।’ প্রসূতি দুই নারী সুস্থ আছেন জানিয়ে তিনি বলেন, এক প্রসূতি সময়ের আগেই সন্তান জন্ম দিয়েছেন। এ জন্য শিশুটিকে বাঁচানো যায়নি। মা সুস্থ আছেন। অন্য শিশু ও মা ভালো আছেন। আজ-কালকের মধ্যে তাঁদের ছাড়পত্র দেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ