ঋতুপর্ণা এখন ‘মেয়েদের মেসি’, বললেন কিরণ
Published: 3rd, July 2025 GMT
ঋতুপর্ণা চাকমার জোড়া গোলে স্বাগতিক মিয়ানমারকে হারিয়ে ইতিহাস গড়েছে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল। ২০২৬ এএফসি নারী এশিয়ান কাপে জায়গা করে নিয়ে লাল-সবুজের মেয়েরা পৌঁছে গেছে এশিয়ার অভিজাত ফুটবলের আসরে। সেই সাফল্যের পর এবার নতুন স্বপ্ন, বিশ্বকাপে খেলা!
এই সাফল্যকে ‘কঠিন পরিশ্রমের ফসল’ বলছেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ। বৃহস্পতিবার বাফুফে ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কিরণ বলেন, ‘এই সুযোগ বারবার আসে না। আমাদের মেয়েরা দারুণ কিছু করেছে। এবার লক্ষ্য হবে বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত করা। সেই পরিকল্পনা আমাদের আছে এবং আমরা এখন থেকেই প্রস্তুতি শুরু করব।’
ঋতুপর্ণা চাকমার প্রশংসায় ভেসেছেন অনেকেই। তবে কিরণ তাকে তুলনা করেছেন সর্বকালের অন্যতম সেরা ফুটবলার লিওনেল মেসির সঙ্গে। তার ভাষায়, ‘ঋতুপর্ণা আমাদের মেয়েদের মেসি। ওর বল কন্ট্রোল, গতি আর ফিনিশিং সবই অসাধারণ। বল টেনে নিয়ে যাওয়ার স্টাইলে মেসির ছায়া দেখা যায়। হামজা দেওয়ান ছেলেদের দলে যেমন তারকা, মেয়েদের দলে ঠিক তেমনিই ঋতুপর্ণা।’
এদিকে বিশ্বকাপ এবং অলিম্পিকের সম্ভাবনা মাথায় রেখে এখন থেকেই কঠোর প্রস্তুতির কথাও জানিয়েছেন কিরণ। তিনি বলেন, ‘এশিয়ান কাপে চীন, জাপান, কোরিয়া, অস্ট্রেলিয়ার মতো দল খেলবে। আমাদের তাদের মতো শক্ত দলের বিপক্ষে খেলতে হবে। সেজন্য আমরা ভালো প্রস্তুতির সময়টুকু কাজে লাগাতে চাই।’
কিরণ জানান, ম্যাচের আগে তিনি খেলোয়াড়দের নিয়ে কথা বলেন, শপথ পড়ান। কিরণ যোগ করেন, ‘মেয়েরা আমার কথা শোনে। ম্যাচের আগে আমি তাদের শপথ পড়াই, কথা বলি। আমি যা যা বলি, ওরা ঠিক সেগুলো মাঠে বাস্তবায়ন করে। এ থেকেই বোঝা যায়, ওদের নিবেদন ও শৃঙ্খলা কতটুকু আছে। মিয়ানমার ম্যাচের আগে আমি তাদের বলেছিলাম ২০ মিনিটের ভেতর অবশ্যই গোল করবে। সেটার জন্যই মাঠে নামবে। এগিয়ে গেলে স্বাভাবিকভাবেই ওরা মানসিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়বে। ওদের মানসিকভাবে দুর্বল করার জন্য এটা তোমাদের করতে হবে। ঋতুপর্ণা কিন্তু ১৮ মিনিটে গোল করেছে। তারা সেই কথা রেখেছে এবং রুপনাকে যা বলেছি, গোলপোস্টে ঠিক সেটাই করেছে। প্রতিটা জিনিস যা যা বলেছি, সব খেলোয়াড় তা করেছে।’
এদিকে বিদেশি লিগে মেয়েদের পাঠানো নিয়ে কিরণ বলেন, ‘ভুটান লিগ খুব ভালো মানের নয়। ওখানে তারা মানসিক রিফ্রেশমেন্টের জন্য যাচ্ছে। তবে আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে ভালো মানের ইউরোপিয়ান বা মধ্যপ্রাচ্যের লিগে মেয়েদের খেলানো। অস্ট্রেলিয়ার মতো বড় মঞ্চে ভালো খেললে ওদের প্রতি নজর পড়বে ইউরোপিয়ান ক্লাবগুলোর।’
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
কঠোর অভিযানের মধ্যে কৌশলে পাথর ‘লুট’
নদীতে বড় বড় নৌযান সারিবদ্ধভাবে নোঙর করা, যা ‘বাল্কহেড’ নামে পরিচিত। শত শত শ্রমিক নদীর পাড়ে জমা করে রাখা পাথর টুকরিতে ভরে সেই সব নৌযানে ওঠাচ্ছেন। কাছেই নদীতে চলছে খননযন্ত্র (এক্সকাভেটর), যা দিয়ে পানির নিচ থেকে পাথর ওঠানো হচ্ছে।
সিলেটের বিভিন্ন জায়গায় পাথর লুটকারীদের বিরুদ্ধে চলমান অভিযানের মধ্যেও এই দৃশ্য দেখা গেল কানাইঘাট উপজেলার লোভা নদীতে। লোভা নদী সীমান্তের ওপার থেকে এসে সুরমায় মিশেছে। এই নদীতেও পানির স্রোতের সঙ্গে ওপার থেকে পাথর আসে।
লোভা নদীর বাংলাদেশ অংশের শুরুতে একটি পাথর কোয়ারি (যেখানে পাথর উত্তোলন করা হয়) রয়েছে। সেই কোয়ারিতে ২০২০ সাল পর্যন্ত পাথর উত্তোলন করা যেত। তারপর সরকার আর কোয়ারি ইজারা দেয়নি, মানে হলো পাথর তোলা নিষিদ্ধ। তবে নিলামে বিক্রি করা পাথর স্থানান্তরের নামে এখন সেখানে লুট চলছে বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। তাঁরা বলছেন, পাথর লুটের সঙ্গে জড়িত বেশির ভাগ আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা, যাঁরা বিএনপির কোনো কোনো নেতার সঙ্গে মিলে কাজটি করছেন। এ ক্ষেত্রে তাঁদের সঙ্গে নিলামে পাথর কেনা ঠিকাদারের যোগসাজশ রয়েছে।
লোভা নদী সিলেট শহর থেকে প্রায় ৬০ কিলোমিটার দূরে। কানাইঘাট উপজেলা শহর থেকে এর দূরত্ব আট কিলোমিটারের মতো। গতকাল রোববার বেলা একটা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত নৌপথে সুরমা নদী হয়ে ভারতের সীমান্তবর্তী লোভা নদীর জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ঘুরে দেখা যায়, সুরমা নদীর কানাইঘাট বাজারের বিপরীত অংশ স্টেশন এলাকায় একটি বাল্কহেডে অন্তত ১৫ জন শ্রমিক পাথর তুলছিলেন। আশপাশের অন্তত আধা কিলোমিটার এলাকাজুড়ে পাথরের এমন স্তূপ দেখা গেছে। পাশে ক্রাশার মেশিনে (পাথর ভাঙার কল) পাথর ভাঙার কাজও করছিলেন শ্রমিকেরা।
ভাঙার পর শ্রমিকেরা নৌকায় পাথর তুলছেন। গতকাল দুপুরে কানাইঘাটের লোভাছড়ায়