জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলা ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে সুইডেন সরকারের সহায়তায় একটি নতুন প্রকল্প গ্রহণ করেছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। ‘স্ট্রেংথেনিং ক্যাপাসিটি অফ এমওএফইসিসি, ডিওই, অ্যান্ড বিএফডি ফর ন্যাচারাল রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ইমপ্রুভড ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্স’ শীর্ষক এই প্রকল্পের মাধ্যমে সরকারের তিনটি পরিবেশ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি, নদীদূষণ পর্যবেক্ষণ, সংরক্ষিত এলাকায় তদারকি জোরদার ও পরিবেশ পুনরুদ্ধার কার্যক্রম বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার ঢাকায় পরিবেশ অধিদপ্তরে এই প্রকল্পের অনুদান চুক্তি গ্রহণ অনুষ্ঠানে পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, সুইডেন সরকারের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগিতা সংস্থা সিডার অর্থায়নে নেওয়া এই প্রকল্প বাংলাদেশের পরিবেশ ব্যবস্থাপনায় একটি বড় সংযোজন হবে। 

তিনি জানান, প্রকল্পটির মাধ্যমে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়, পরিবেশ অধিদপ্তর এবং বন অধিদপ্তরের দক্ষতা বাড়বে। একইসঙ্গে প্রকল্পটি পরিবেশগত ও জলবায়ু সংশ্লিষ্ট চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় উদ্ভাবনী কৌশল গ্রহণ করবে।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব ড.

এ কে এম শাহাবুদ্দিন এবং ঢাকাস্থ সুইডেন দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ও সহযোগিতা প্রধান মারিয়া স্ট্রিডসম্যান। তাঁরা প্রকল্পের অনুদান চুক্তিতে সই করেন।

মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ৫০ লাখ সুইডিশ ক্রোনার ব্যয়ে পরিচালিত এই প্রকল্প তিনটি উপাদানের ভিত্তিতে বাস্তবায়িত হবে। এর আওতায় জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা ও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার সঙ্গে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণকে সামঞ্জস্যপূর্ণ করার কাজ করা হবে। তৈরি করা হবে নজরদারি পরিকল্পনা ও প্রশিক্ষণ কর্মসূচি। এছাড়া বুড়িগঙ্গা ও তুরাগ নদীর দূষণ পর্যবেক্ষণে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের উদ্যোগ নেওয়া হবে।

সোনাদিয়া দ্বীপসহ দেশের বিভিন্ন পরিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকায় উন্নত তদারকি ও পরিবেশ পুনরুদ্ধার কার্যক্রম চালানো হবে। এর আওতায় ম্যানগ্রোভ বন পুনঃস্থাপন, বালিয়াড়ি স্থিতিশীলকরণ, কচ্ছপের প্রজনন কেন্দ্র স্থাপন এবং প্রাথমিক পরিবেশগত মূল্যায়ন করা হবে। এসব কার্যক্রমে স্থানীয় জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে গঠন করা হবে ভিলেজ কনজারভেশন গ্রুপ।
এছাড়া প্রকল্পের অধীনে গঠিত হবে দেশের প্রথম ‘ওয়াইল্ড লাইফ ট্রাস্ট ফান্ড’। এর মাধ্যমে বিপন্ন প্রজাতি সংরক্ষণ ও মানব-প্রাণী দ্বন্দ্ব হ্রাসে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের কাঠামো গড়ে তোলা হবে, যা সরকারি বাজেটের ওপর নির্ভরতা কমাবে। ট্রাস্ট ফান্ড গঠনের আগে একটি বিস্তৃত স্কোপিং স্টাডি ও অংশীজন পরামর্শ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব লুবনা ইয়াসমিন, অতিরিক্ত সচিব মো. খায়রুল হাসান, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. কামরুজ্জামান, বন অধিদপ্তরের প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসেন চৌধুরী এবং সুইডেন দূতাবাসের ফার্স্ট সেক্রেটারি নাইওকা মার্টিনেজ ব্যাকস্ট্রম প্রমুখ।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: এই প রকল প প রকল প র পর ব শ স রক ষ জলব য় সরক র গ রহণ

এছাড়াও পড়ুন:

যানবাহনে ওঠার দোয়া

ইসলামে জীবনের প্রতিটি কাজের জন্য নির্দিষ্ট দোয়া ও জিকির রয়েছে, যা মুমিনকে আল্লাহর সঙ্গে সংযুক্ত রাখে এবং তাঁর সুরক্ষা প্রার্থনার সুযোগ করে দেয়। যানবাহনে ওঠার দোয়া এমনই একটি ফজিলতপূর্ণ আমল, যা যাত্রার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং আল্লাহর রহমত কামনায় পড়া হয়।

যানবাহনে ওঠার দোয়া

যানবাহনে উঠার সময় রাসুল (সা.)-এর শেখানো দোয়া পড়া সুন্নাহ। এই দোয়া যাত্রার নিরাপত্তা, আল্লাহর সুরক্ষা এবং যাত্রার কল্যাণ কামনা করে। নিচে দোয়াটি দেওয়া হলো:

মূল দোয়া

আলী (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) যখন কোনো যানবাহনে (যেমন উট, ঘোড়া) উঠতেন, তখন এই দোয়া পড়তেন:
উচ্চারণ: বিসমিল্লাহ, ওয়াল হামদুলিল্লাহ, সুবহানাল্লাজি সাখখারা লানা হাজা ওয়ামা কুন্না লাহু মুকরিনিন, ওয়া ইন্না ইলা রাব্বিনা লামুনকালিবুন।
অর্থ: আল্লাহর নামে শুরু করছি, সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য। পবিত্র তিনি, যিনি এই যানবাহনকে আমাদের জন্য বশীভূত করেছেন, যা আমরা নিজেরা বশ করতে পারতাম না। আর নিশ্চয়ই আমরা আমাদের প্রভুর কাছে ফিরে যাব। (সুনান তিরমিজি, হাদিস: ৩৪৪৬)

পড়ার নিয়ম:

যানবাহনে উঠার সময় প্রথমে “বিসমিল্লাহ” বলা।

তারপর উপরের দোয়া পড়া।

দোয়া পড়ার পর তিনবার “আল্লাহু আকবার” এবং তিনবার “আলহামদুলিল্লাহ” বলা।

দোয়া পড়ার সময় আন্তরিকতা ও আল্লাহর ওপর ভরসা রাখা।

আরও পড়ুননবীজি (সা.)–এর দোয়া০১ মে ২০২৫

অতিরিক্ত দোয়া

যাত্রার সময় সুরক্ষার জন্য অন্যান্য দোয়াও পড়া যায়, যেমন:
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা ফি সাফারি হাজা আল-বিররা ওয়াত তাকওয়া, ওয়া মিনাল আমালি মা তারদা।
অর্থ: হে আল্লাহ! আমি এই যাত্রায় তোমার কাছে পুণ্য ও তাকওয়া এবং এমন আমল কামনা করি, যা তুমি পছন্দ করো। (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ১৩৪৫)

ফজিলত

যানবাহনে উঠার দোয়ার ফজিলত অপরিসীম। হাদিসে এর গুরুত্ব ও পুরস্কার সম্পর্কে বর্ণনা পাওয়া যায়। রাসুল (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি যানবাহনে ওঠার সময় এই দোয়া পড়ে, আল্লাহ তাকে যাত্রার ক্ষতি থেকে রক্ষা করেন।” (সুনান আবু দাউদ, হাদিস: ২৬০২)

আধুনিক জীবনে যানবাহনের ধরন বদলেছে—উট বা ঘোড়ার পরিবর্তে এখন গাড়ি, বাস, ট্রেন, বিমান বা জাহাজ ব্যবহৃত হয়। তবে যানবাহনে ওঠার দোয়া সব ধরনের যানবাহনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। কোরআনে আল্লাহ বলেছেন, “তিনিই তিনি, যিনি তোমাদের জন্য পৃথিবীকে বশীভূত করেছেন।” (সুরা জাসিয়া, আয়াত: ১৩)

দোয়ার মাধ্যমে মুমিন আল্লাহর এই নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করে এবং তাঁর কাছে নিরাপত্তা প্রার্থনা করে। হাদিসে এই দোয়াকে যাত্রার নিরাপত্তার জন্য বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।

আরও পড়ুননববিবাহিতদের জন্য তিনটি দোয়া২১ জুলাই ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ