জলবায়ু মোকাবিলা ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সুইডেনের সহায়তায় বিশেষ প্রকল্প
Published: 3rd, July 2025 GMT
জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলা ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে সুইডেন সরকারের সহায়তায় একটি নতুন প্রকল্প গ্রহণ করেছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। ‘স্ট্রেংথেনিং ক্যাপাসিটি অফ এমওএফইসিসি, ডিওই, অ্যান্ড বিএফডি ফর ন্যাচারাল রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ইমপ্রুভড ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্স’ শীর্ষক এই প্রকল্পের মাধ্যমে সরকারের তিনটি পরিবেশ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি, নদীদূষণ পর্যবেক্ষণ, সংরক্ষিত এলাকায় তদারকি জোরদার ও পরিবেশ পুনরুদ্ধার কার্যক্রম বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ঢাকায় পরিবেশ অধিদপ্তরে এই প্রকল্পের অনুদান চুক্তি গ্রহণ অনুষ্ঠানে পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, সুইডেন সরকারের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগিতা সংস্থা সিডার অর্থায়নে নেওয়া এই প্রকল্প বাংলাদেশের পরিবেশ ব্যবস্থাপনায় একটি বড় সংযোজন হবে।
তিনি জানান, প্রকল্পটির মাধ্যমে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়, পরিবেশ অধিদপ্তর এবং বন অধিদপ্তরের দক্ষতা বাড়বে। একইসঙ্গে প্রকল্পটি পরিবেশগত ও জলবায়ু সংশ্লিষ্ট চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় উদ্ভাবনী কৌশল গ্রহণ করবে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব ড.
মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ৫০ লাখ সুইডিশ ক্রোনার ব্যয়ে পরিচালিত এই প্রকল্প তিনটি উপাদানের ভিত্তিতে বাস্তবায়িত হবে। এর আওতায় জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা ও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার সঙ্গে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণকে সামঞ্জস্যপূর্ণ করার কাজ করা হবে। তৈরি করা হবে নজরদারি পরিকল্পনা ও প্রশিক্ষণ কর্মসূচি। এছাড়া বুড়িগঙ্গা ও তুরাগ নদীর দূষণ পর্যবেক্ষণে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
সোনাদিয়া দ্বীপসহ দেশের বিভিন্ন পরিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকায় উন্নত তদারকি ও পরিবেশ পুনরুদ্ধার কার্যক্রম চালানো হবে। এর আওতায় ম্যানগ্রোভ বন পুনঃস্থাপন, বালিয়াড়ি স্থিতিশীলকরণ, কচ্ছপের প্রজনন কেন্দ্র স্থাপন এবং প্রাথমিক পরিবেশগত মূল্যায়ন করা হবে। এসব কার্যক্রমে স্থানীয় জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে গঠন করা হবে ভিলেজ কনজারভেশন গ্রুপ।
এছাড়া প্রকল্পের অধীনে গঠিত হবে দেশের প্রথম ‘ওয়াইল্ড লাইফ ট্রাস্ট ফান্ড’। এর মাধ্যমে বিপন্ন প্রজাতি সংরক্ষণ ও মানব-প্রাণী দ্বন্দ্ব হ্রাসে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের কাঠামো গড়ে তোলা হবে, যা সরকারি বাজেটের ওপর নির্ভরতা কমাবে। ট্রাস্ট ফান্ড গঠনের আগে একটি বিস্তৃত স্কোপিং স্টাডি ও অংশীজন পরামর্শ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব লুবনা ইয়াসমিন, অতিরিক্ত সচিব মো. খায়রুল হাসান, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. কামরুজ্জামান, বন অধিদপ্তরের প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসেন চৌধুরী এবং সুইডেন দূতাবাসের ফার্স্ট সেক্রেটারি নাইওকা মার্টিনেজ ব্যাকস্ট্রম প্রমুখ।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: এই প রকল প প রকল প র পর ব শ স রক ষ জলব য় সরক র গ রহণ
এছাড়াও পড়ুন:
দরপত্র বাক্স খোলার আগেই মুদ্রিত ক্যালেন্ডার বিতরণ
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দেয়াল ও টেবিল ক্যালেন্ডার মুদ্রণের টেন্ডার প্রক্রিয়ায় অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। দরপত্র জমা দেওয়ার পর বাক্স না খুলেই ক্যালেন্ডারের মুদ্রণ কপি বিতরণ করা হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে ‘পছন্দের’ ঠিকাদারকে আগেই কাজটি দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক আখতার হোসেন মজুমদার।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দরপত্র জমা দেওয়ার পর মূল্যায়ন কমিটি সেগুলো যাচাই-বাছাই করে। অথচ কমিটির অনেক সদস্যই এ বিষয়ে কিছু জানেন না। আসলে প্রক্রিয়াটি ছিল ‘লোক দেখানো’ এবং পূর্বনির্ধারিত ঠিকাদারের হাতে আগেই কাজ তুলে দেওয়া হয়েছে। তারা আগেই কাজ করে ক্যালেন্ডার বিতরণ করেছেন।
কোষাধ্যক্ষ ও দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সভাপতি অধ্যাপক (অবসরপ্রাপ্ত) মতিয়ার রহমান বলেন, নিয়ম মেনেই দরপত্র আহ্বান করা হয়। তবে বিষয়টি নিয়ে এখন কিছু বলতে পারছি না। কাগজপত্র দেখে তারপর কথা বলতে হবে।
কোষাধ্যক্ষের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ জুন রাজশাহী ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষের ক্যালেন্ডার মুদ্রণের জন্য দরপত্র আহ্বান করে জনসংযোগ দপ্তর। দরপত্র জমার শেষ সময় ছিল ৩০ জুন বেলা সাড়ে ১১টা। একই দিন দুপুর ১২টায় ঠিকাদারদের উপস্থিতিতে কোটেশন বাক্স খোলার কথা ছিল। সেই বাক্স এখন পর্যন্ত খোলা হয়নি। অথচ এরই মধ্যে ক্যালেন্ডার মুদ্রণ শেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন দপ্তরে বিতরণ করা হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ঠিকাদার জানান, সাধারণত দরপত্র যাচাই-বাছাইয়ের পর সর্বনিম্ন দরদাতাকে কাজ দেওয়া হয়। এ প্রক্রিয়া সবার সামনে কোষাধ্যক্ষের কার্যালয়ে সম্পন্ন হয়। এবার তা মানা হয়নি। তারা প্রশ্ন তুলেছেন, দরপত্র গ্রহণের পরদিনই কীভাবে মুদ্রণ কাজ শেষ হলো?
কোষাধ্যক্ষ দপ্তরের উপ-রেজিস্ট্রার মো. আনোয়ারুজ্জামান বলেন, ‘প্রতি বছর জুলাই মাসের শুরুতে ক্যালেন্ডার বিতরণ করা হয়। এবার ক্যালেন্ডার মুদ্রণে দরপত্র জমা দেওয়ার ও ঠিকাদার নির্বাচনের শেষ সময় ছিল ৩০ জুন। প্রতিবার সাধারণত আরও আগে দরপত্র আহ্বান করা হয়। জনসংযোগ দপ্তরকে বারবার তাগাদা দেওয়ার পরও তারা সাড়া দেয়নি। সেই দরপত্র জমার বাক্স এখনও আমাদের দপ্তরেই পড়ে আছে।’
অভিযোগের বিষয়ে জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক আখতার হোসেন মজুমদার বলেন, ‘আমি এখন রাজশাহীর বাইরে। ফিরে এসে বিষয়টি দেখব এবং আপনার সঙ্গে কথা বলব।’
উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীবের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি সাড়া দেননি।