বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ধনকুবের এবং বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ও স্পেসএক্স প্রধান ইলন মাস্ক নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন।

শনিবার নিজ মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ তিনি জানান, ‘আমেরিকা পার্টি’ নামে এই নতুন দলটি গঠিত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রচলিত রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাটদের দুইদলীয় ব্যবস্থার বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিতে।

তবে এখনো এই দলটি যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ইলেকশন কমিশনের (এফইসি) কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে নিবন্ধিত হয়েছে কি না, তা স্পষ্ট নয়।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে তীব্র রাজনৈতিক বিরোধে জড়ানোর কয়েক সপ্তাহের মাথায় ইলন মাস্ক এই ঘোষণা দিলেন। এক সময়ের ঘনিষ্ঠ মিত্র ট্রাম্পের প্রশাসনে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনের পর গত মে মাসে হঠাৎ করেই মাস্ক পদত্যাগ করেন। এরপরই দুজনের মধ্যে চলমান দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আসতে শুরু করে।

দুজনের চলমান এই দ্বন্দ্বের সময় মাস্ক এক্স-এ একটি জনমত জরিপ চালান। সেখানে তিনি জিজ্ঞেস করেন— যুক্তরাষ্ট্রে নতুন একটি রাজনৈতিক দল প্রয়োজন কি না?

সেই জরিপের ফলাফল প্রকাশ করে শনিবার মাস্ক বলেন, দুই-এক অনুপাতে আপনারা নতুন একটি রাজনৈতিক দল চান এবং আমি আপনাদের তা করে দেখাচ্ছি। আপনাদের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে আজ ‘আমেরিকা পার্টি’র জন্ম হলো।

তবে মাস্ক নিজে যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে জন্ম নেওয়ায় (দক্ষিণ আফ্রিকা) মার্কিন প্রেসিডেন্ট হওয়ার সাংবিধানিক যোগ্যতা নেই। এই নতুন দলের নেতৃত্বে কে থাকবেন তা তিনি এখনও জানাননি।

ট্রাম্পের সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদের আগে ইলন মাস্ক ছিলেন তার একজন বড় সমর্থক। নির্বাচনী প্রচারণায় মাস্ক ট্রাম্পের পাশে নেচেছেন, এমনকি তার চার বছর বয়সী ছেলেকে ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করাতে হোয়াইট হাউজে নিয়ে গিয়েছেন।

নির্বাচন ও নির্বাচন পরবর্তী সময় বিভিন্ন খবরে জানা যায়, ট্রাম্পকে ক্ষমতায় ফেরাতে প্রায় ২৫০ মিলিয়ন ডলার (বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ২৯০০ কোটি টাকা) ব্যয় করেছিলেন ইলন মাস্ক।

এর কৃতজ্ঞতাস্বরূপ অবশ্য নির্বাচনের পর ট্রাম্প তাকে ‘ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিসিয়েন্সি’র প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেন। এই দপ্তরের মূল দায়িত্ব ছিল ফেডারেল বাজেটে ব্যাপক কাটছাঁটের জন্য পরামর্শ দেওয়া।

তবে ট্রাম্পের কর ও ব্যয়ের পরিকল্পনার সমালোচনা করে মে মাসে তিনি প্রশাসন ছেড়ে দেন। এরপরই তাদের সম্পর্ক খারাপ হতে শুরু করে।

সম্প্রতি কংগ্রেসে অনুমোদিত এবং ট্রাম্প স্বাক্ষরিত নতুন এক ‘বৃহৎ, চমৎকার বিল’ নিয়ে মাস্কের আপত্তি ওঠে। এতে বিপুল পরিমাণ ব্যয় ও কর ছাড় অন্তর্ভুক্ত থাকলেও পরিবেশবান্ধব উদ্যোগ ও টেসলার মতো বৈদ্যুতিক গাড়ির জন্য কোনো প্রণোদনা রাখা হয়নি টাম্পের পক্ষ থেকে। যে কারণে প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হন মাস্ক। এ নিয়ে ট্রাম্পও একহাত নিয়েছেন মাস্ককে।

নিজ মালিকানাধীন সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যাল-এ ট্রাম্প লেখেন, ইলন সম্ভবত মানব ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ভর্তুকি পাওয়া ব্যক্তি। ভর্তুকি ছাড়া তাকে হয়তো দোকান বন্ধ করে দক্ষিণ আফ্রিকায় ফিরে যেতে হতো। এ ছাড়া ট্রাম্প মাস্কের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ভর্তুকি খতিয়ে দেখার হুমকিও দেন।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে দুইদলীয় ব্যবস্থার বাইরে রাজনৈতিক দলগুলোর টিকে থাকা বা ক্ষমতায় আসা অত্যন্ত কঠিন। লিবার্টেরিয়ান পার্টি, গ্রীন পার্টি কিংবা পিপলস পার্টির মতো দলগুলো অতীতে বেশ কজন প্রার্থী দিলেও মূলধারার প্রার্থীদের সামনে তারা টিকতে পারেনি। তবে ইলন মাস্কের মতো প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব ও বিপুল অর্থবল নিয়ে ‘আমেরিকা পার্টি’ আদৌ কতদূর যেতে পারে, তা এখন দেখার বিষয়।

সূত্র: এক্স পোস্ট, যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম, বিবিসি

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইলন ম স ক স প সএক স র জন ত ক দল ম র ক ন য ক তর ষ ট র য ক তর ষ ট র র ইলন ম স ক

এছাড়াও পড়ুন:

বিপদে দেবচন্দ্রিমা, জানালেন ‘ডেটিং অ্যাপ’ এ তিনি নেই

মনের মানুষ খুঁজে নেওয়ার জন্য প্রযুক্তি নির্ভর এই দুনিয়ায় অনেকেই ডেটিং অ্যাপ ব্যবহার করেন। সেখানে বড় বড় তারকাদের নামও খুঁজে পাওয়া যায়। 

বলিউডের লারা দত্ত থেকে টলিউড পরিচালক রাজ চক্রবর্তীর—‘ডেটিং অ্যাপ’-এ নাম ছিলো। কিন্তু  পরে জানা যায় সে সব প্রোফাইল ভুয়া ছিলো। এ বার যুক্ত হলো অভিনেত্রী দেবচন্দ্রিমা সিংহরায়ের নামও। সম্প্রতি নিজের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেছেন, “আমার নামে ভুয়া প্রোফাইল খোলা হয়েছে একটি ডেটিং অ্যাপে।” 

এতে কিছুটা আতঙ্কিত অভিনেত্রী। তার আশঙ্কা, ওই প্রোফাইল থেকে হয়তো কারও সঙ্গে কথা বলাও হয়েছে। যদি সেই ব্যক্তি ভেবে বসেন, অভিনেত্রী দেবচন্দ্রিমার সঙ্গে কথা বলছেন, সেটাই চিন্তার কারণ। জানাচ্ছেন নায়িকা। 

আরো পড়ুন:

আশা ভোঁসলের মৃত্যুর গুঞ্জনে যা বললেন তার পুত্র

স্ত্রীকে কেন ‘নিষ্ঠুর’ বললেন রাজকুমার?

তাই অভিনেত্রী লেখেন, “কোনো দিনই আমার ডেটিং অ্যাপে কোনো প্রোফাইল ছিল না। যদিও এই ধরনের অ্যাপের মাধ্যমে অনেকেই তাদের মনের মানুষ খুঁজে পেয়েছেন। আমি এই মাধ্যমের বিরোধিতা করছি না। কিন্তু এ সবে আমার কোনো আগ্রহ নেই। তাই যদি কেউ আমার নামে কোনো প্রোফাইলের (সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির) সঙ্গে কথা বলে থাকেন তাহলে তা একেবারে ভুয়া।” 

সবাইকে সাবধান করতেই এই পোস্ট করেন নায়িকা।

ভারতীয় গণমাধ্যমের তথ্য, বর্তমানে অভিনেত্রী থাইল্যান্ডে ঘুরছেন। সেখান থেকে নানা ধরনের ছবি পোস্ট করছেন। তিনি সেদেশে রয়েছেন বন্ধু অদৃজা রায়ের সঙ্গে। কিছু দিন আগেই তিনি জানিয়েছিলেন কয়েকমাস হয়ে গেল নিরামিষ খাবারই খাচ্ছেন তিনি। 

এ প্রসঙ্গে অভিনেত্রী বলেন, ‘‘কাউকে অনুসরণ করে মাছ-মাংস খাওয়া ছেড়েছি, এমনটা নয়। কোনো আধ্যাত্মিক কারণও নেই। আমার সত্যিই আর ইচ্ছা করে না এ সব খাবার খেতে। চার মাসের বেশি হয়ে গেল খাচ্ছি না। ছোটবেলা থেকে কোনো দিনই পাঁঠার মাংস খেতে ভালবাসি না। মাছও খুব খেতাম না।”

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ