তিন কারণে রপ্তানিখাতে আর্থিক প্রণোদনা সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাহারের সময়সীমা আরো ৫ মাস পিছিয়ে দিয়েছে সরকার। আগামী বছরের (২০২৬) জুলাই থেকে এটি কার্যকর করার কথা ছিল। এখন তা পিছিয়ে আগামী বছরের নভেম্বর মাস নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ সময়সীমা বাড়ানোর বিষয়টি অনুমোদনও করেছেন। 

যে  কারণগুলোর কারণে সময়সীমা পিছিয়ে দেয়া হয়েছে তা হলো, আমেরিকা কর্তৃক বাংলাদেশের পণ্যের ওপর অধিকহারে শুল্কারোপ, স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানিতে ভারতের বিধিনিষেধ এবং গত বছরে রাজনৈতিক কারণে শিল্পখাতে অস্থিরতা। ইতোমধ্যে ২০২৪ সাল থেকে এই রপ্তানি প্রণোদনা ধাপে ধাপে কমিয়ে দেয়া হচ্ছে।

বিগত সাত অর্থবছরে রপ্তানিখাতে প্রণোদনার দেয়ার পরিমাণ ছিল ৪৬ হাজার ৭১৫ কোটি টাকা। এই আর্থিক প্রণোদনা সিংহভাগ (৮০ ভাগেরও বেশি) পেয়েছে রপ্তানিমুখী তৈরিপোশাক শিল্প।  

আরো পড়ুন:

পাঁচ বছরে কার্ডের মাধ্যমে লেনদেন বেড়েছে ২২৮ শতাংশ

জবিতে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদদের নিয়ে গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন

অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, জাতিসংঘের নির্ধারিত মানদণ্ড অনুযায়ী সংস্থাটির কমিটি ফর ডেভলেপমেন্ট পলিসির (সিডিপি) সুপারিশ অনুসারে আগামী ২৪ নভেম্বর ২০২৬ সালে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হবে। স্বল্পোন্নত দেশ হতে উত্তরণের পরবর্তী সময়ে বিশ্ববাণিজ্য সংস্থা (ডব্লিউটিও) এগ্রিমেন্ট অন সাবসিডিস অ্যান্ড কাউন্টারভেলিং মেজারস (এএসসিএম) অনুসারে রপ্তানি নির্ভর সাবসিডি অর্থ্যাৎ কোনো আর্থিক প্রণোদনা দেয়াা যাবে না। 

এ অবস্থায় রপ্তানিতে বিদ্যমান প্রণোদনা বা আর্থিক সহায়তা একসঙ্গে প্রত্যাহার করা হলে রপ্তানিকারকেরা হঠাৎ করে চ্যালেঞ্জর সম্মুখিন হতে পারেন বা রপ্তানি বাণিজ্য নেতিবাচক প্রভাব পরতে পারে। সেই বাস্তবতায় ২০২৬ সালের মধ্যে রপ্তানি প্রণোদনা বা নগদ সহায়তা ধাপে ধাপে বা  ক্রমান্নয়ে কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত রয়েছে, যা পূর্ববর্তী সরকারের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক অনুমোদিত। উক্ত কর্মপরিকল্পনা অনুসারে প্রথম ধাপে সব পণ্যের (৪৩টি খাতের) রপ্তানি প্রণোদনা বা নগদ সহায়তা ২০১৪ সালের ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত আংশিক হ্রাস করা হয়েছে।  দ্বিতীয় ধাপে ২০২৪ সালের ১ জুলাই থেকে ২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত সময়ে এ নগদ সহায়তা আরো কিছুটা হ্রাস করা হয়েছে।

অর্থ বিভাগ এ বিষয়ে জানিয়েছে, এই  কর্মপরিকল্পনা অনুসারে তৃতীয় ধাপে  ২০২৫ সালের ১ জুলাই থেকে রপ্তানি প্রণোদনা/নগদ সহায়তার যার আংশিক হ্রাস করার কথা ছিল। তবে, সাম্প্রতিক সময়ে আমেরিকা কর্তৃক বাংলাদেশের উপর প্রতিযোগী দেশের তুলনায় অধিক হারে শুল্ক আরোপ, স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন পণ্য আমদানিতে ভারত সরকার দেয় বিধিনিষেধ এবং গত অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে শিল্পখাতে কিছুটা অস্থিরতা থাকার কারণে দেশের রপ্তানিখাত চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে। পরিবর্তিত এ বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে রপ্তানি প্রণোদনার হার এ মুহূর্তে আরো হ্রাস করা হলে রপ্তানিকারকেরা অধিকতর সমস্যার সম্মুখীন হবেন। এ পর্যায়ে তৃতীয় ধাপে নগদ সহায়তা হ্রাসের পরিকল্পনা ৬ (ছয়) মাসের জন্য বিলম্বিত করা যেতে পারে। সে প্রেক্ষিতে, নগদ সহায়তার  তৃতীয় ধাপে হ্রাসের লক্ষ্যে ইতোপূর্বে গৃহীত সিদ্ধান্ত শিথিল করে আগামী ২০২৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে কার্যকর করা যুক্তিযুক্ত হবে।  একইভাবে, ২০২৬ সালের ১ জুলাই থেকে চতুর্থ ধাপে নগদ সহায়তা হ্রাস কিছুটা বিলম্বিত করে এলডিসি উত্তোরণের দিন হতে অর্থাৎ এর ২০২৬ নভেম্বর থেকে কার্যকর করা সমীচীন হবে।

অর্থ বিভাগ সূত্র জানায়, এই সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব অর্থ উপদেষ্টার কাছে পাঠানো হলে তিনি তা অনুমোদন করেছেন। ফলে রপ্তানি সহায়তা প্রত্যাহার প্রায় এক বছর পিছিয়ে গেল। এতে দেশের রপ্তানিকেরা বিদ্যমান চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা আরো খানিকটা সময় পেলেন।

ঢাকা/হাসনাত/বকুল 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ২০২৬ স ল হ র স কর অন স র আর থ ক

এছাড়াও পড়ুন:

ঋতুর গ্রামে বইছে আনন্দ

ঋতুপর্ণা চাকমার জোড়া গোলে স্বাগতিক মিয়ানমারকে হারিয়ে ইতিহাস গড়েছে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল। ২০২৬ এএফসি নারী এশিয়ান কাপে জায়গা করে নিয়ে লাল-সবুজের মেয়েরা পৌঁছে গেছে এশিয়ার অভিজাত ফুটবলের আসরে। 

বাঁ পায়ে ঋতুর ট্রেডমার্ক গোলে মোহিত হয়েছে সবাই। মিয়ানমারের বিপক্ষে বাংলাদেশের ২–১ গোলের জয়ে একাই জোড়া গোল করেন ঋতুপর্ণা চাকমা। তার জাদুকরী পারফরম্যান্সে আনন্দে ভাসছে তার মা, আত্বীয়-স্বজন ও গ্রামের লোকজন।

বৃহস্পতিবার সকালের দিকে ঋতুর্পণা চাকমার রাঙামাটির কাউখালী উপজেলার মগাছড়ি গ্রামের বাড়ীতে গিয়ে দেখা গেছে পরিবারের লোকজনের চোখে-মুখে আনন্দ। তবে বাড়ীতে রয়েছেন শুধুমাত্র ঋতুর্পণার মা বসুপতি চাকমা, বড় বোন পুতুলি চাকমা ও তার ছোট ছেলে। ঋতুর্পণা মা বসুপতি চাকমা দীর্ঘ দিন ধরে শরীরিক অসুস্থতায় ভূগছেন। তাকে দু-তিন পর পর চট্টগ্রামে গিয়ে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। তারা জানিয়েছেন, বুধবার রাতে সবাই মিলে ঋতুর্পণার খেলা মোবাইলে দেখছেন।

ঋতুর্পণার গ্রামে লোকজনদের চোখে-মুখেও একই খুশির আনন্দ দেখা গেছে।  গ্রামের লোকজন কৃষি কাজসহ শ্রমজীবি হওয়ায় এ আনন্দ-উচ্ছাস তেমন একটা ছিল না। গ্রামের লোকজন জানায় বুধবার ইয়াঙ্গুনে এশিয়ান কাপ বাছাই পর্বে ঋতুর্পণা চাকমার খেলাটি তাদের খুব ভালো লেগেছে।

ঋতুর্পণা চাকমার বড় বোন পুতুলি চাকমা বলেন, ‘ঋতুর্পণার গোলের কারণে আগামী ২০২৬ সালের এশিয়া কাপ খেলার জন্য বাংলাদেশ যোগ্যতা অর্জন করেছে তাই আমরা খুবই  আনন্দিত ও গর্ববোধ করছি। এশিয়ান কাপ যাতে বাংলাদেশের ঘরে আনতে পারে তার বোনের জন্য দেশবাসীর প্রতি দোয়া ও আর্মীবাদ কামনা করেছেন।’ 

ঋতুর্পণা চাকমার মা বসুপতি চাকমা বলেন, ‘বুধবার রাতে মিয়ানমার থেকে মেয়ে ফোন করেছিলেন খেলা দেখেছি কিনা। আমি বলেছি দেখেছি এবং খুশি হয়েছি।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আশুরায় বেনাপোল বন্দরে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ
  • হিলি স্থলবন্দরে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ 
  • এক বছর পেছাল ভারতের বাংলাদেশ সফর
  • এ বছর নয়, ২০২৬ সালের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশে আসবে ভারত
  • বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের মৌখিক পরীক্ষার সূচি প্রকাশ
  • বেনাপোল বন্দরে সার্বিয়ার ভিসাযুক্ত বাংলাদেশের ২০টি পাসপোর্টসহ ভারতীয় ট্রাকচালক আটক
  • ওয়াক অব ফেমের জন্য দীপিকাকে গুনতে হবে ১ কোটি টাকা, কারণ...
  • টেকনাফ বন্দরের কার্যক্রম ২ মাস ধরে বন্ধ, বাড়ছে চোরাচালান
  • ঋতুর গ্রামে বইছে আনন্দ