গ্রামের নারীদের মানববন্ধন, পরিবারের পুরুষ সদস্যদের হয়রানির অভিযোগ
Published: 5th, August 2025 GMT
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার কড়ইবাড়ি গ্রামে দুই সন্তানসহ নারীকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় এক মাসের বেশি সময় ধরে পুরো গ্রাম প্রায় ‘পুরুষশূন্য’ বলে দাবি করেছেন নারীরা। আজ মঙ্গলবার কড়ইবাড়ি গ্রামের শতাধিক নারী এক মানববন্ধনে অংশ নিয়ে অভিযোগ করেন, তাঁদের পরিবারের পুরুষ সদস্যদের হয়রানি করা হচ্ছে। গ্রেপ্তার আতঙ্কে গ্রামের বেশির ভাগ পুরুষ এলাকাছাড়া। দীর্ঘ সময় তাঁরা এলাকাছাড়া থাকায় তাঁদের সংসারে টানাপোড়েন সৃষ্টি হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার কড়ইবাড়ি স্ট্যান্ড এলাকায় কোম্পানীগঞ্জ-নবীনগর সড়কে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেন নারীরা।
গত ৩ জুলাই সকালে উপজেলার কড়ইবাড়ি গ্রামে ‘মব’ সৃষ্টি করে মা, মেয়ে, ছেলেসহ একই পরিবারের তিনজনকে হত্যা করা হয়। তাঁরা হলেন কড়ইবাড়ি গ্রামের খলিলুর রহমানের স্ত্রী রোকসানা বেগম ওরফে রুবি (৫৩), তাঁর ছেলে রাসেল মিয়া (৩৫) ও মেয়ে তাসপিয়া আক্তার ওরফে জোনাকি (২৯)। হত্যাকাণ্ডের পরদিন ৩৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ২০ থেকে ২৫ জনকে আসামি করে উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানায় মামলা করেন রোকসানার বড় মেয়ে রিক্তা আক্তার।
মামলায় ইতিমধ্যে ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে আলোচিত তিন খুনের এক মাস পেরিয়ে গেলেও প্রধান আসামি স্থানীয় আকুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শিমুল বিল্লাহ এখনো গ্রেপ্তার হননি।
আজ দুপুরে মানববন্ধনে অংশ নেওয়া গ্রামের বাসিন্দা জামিলা আক্তার বলেন, তিন খুনের ঘটনায় প্রকৃত অপরাধী ছাড়াও নিরীহ গ্রামবাসীকে হয়রানি করা হচ্ছে। এতে আতঙ্কে গত এক মাসের বেশি ধরে পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে পুরো কড়ইবাড়ি গ্রাম। এ ছাড়া ঘটনাটি নিয়ে একটি পক্ষ ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করছে। যার কারণে গ্রামের পুরুষেরা গ্রেপ্তার আতঙ্কে এলাকায় ফিরে আসছেন না।
জায়েদা বেগম নামের আরেক নারী বলেন, ‘আমাদের পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ব্যক্তি বিনা অপরাধে বাড়িছাড়া। এতে পরিবারের সদস্যরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। আমরা চাই যারা প্রকৃত অপরাধী, তাদের বিচার হোক। কিন্তু গ্রামের সবাইকে যেন হয়রানি না করা হয়।’
সালমা বেগম বলেন, এক মাসের বেশি সময় ধরে গ্রাম পুরুষশূন্য থাকায় চুরি-ডাকাতিরও আশঙ্কা তৈরি হয়েছে গ্রামের সবার মধ্যে। সব মিলিয়ে গ্রামের নারীরা আতঙ্কে আছেন।
এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও জেলা ডিবির উপপরিদর্শক (এসআই) নয়ন কুমার চক্রবর্তী প্রথম আলোকে বলেন, এখন পর্যন্ত নিরীহ একজন মানুষকেও হয়রানি করা হয়নি। তাঁরা শুরু থেকেই মামলাটি নিয়ে সতর্ক। গ্রামবাসীর আতঙ্কের কোনো কারণ নেই। যারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়, তাদের গ্রামে ফিরে স্বাভাবিক জীবনযাপন করার আহ্বান জানান তিনি।
প্রধান আসামি গ্রেপ্তার না হওয়া প্রসঙ্গে নয়ন কুমার চক্রবর্তী বলেন, ‘আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যেই যারা ঘটনায় জড়িত, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। আমরা সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ও প্রমাণ ছাড়া কাউকে গ্রেপ্তার করছি না।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র কড়ইব ড় পর ব র র উপজ ল র এক ম স আতঙ ক হয়র ন
এছাড়াও পড়ুন:
নান্দাইলের ইউএনও’র দুর্নীতি তদন্তের দাবিতে মানববন্ধন
ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার সদ্য সাবেক নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সারমিনা সাত্তারের বিরুদ্ধে ওঠা ৩ কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত ও বিচার দাবিতে মানববন্ধন করেছে বিভিন্ন ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও স্থানীয়রা।
মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) দুপুর ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়কের নান্দাইল নতুন বাজার এলাকায় ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন করেন তারা।
আরো পড়ুন:
রাজশাহীতে ৫ কোল পরিবারকে উচ্ছেদের প্রতিবাদে মানববন্ধন
বিএলআরআই নিয়োগবিধিতে বৈষম্যের অভিযোগে গবিতে মানববন্ধন
উপজেলার শেরপুর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মাসহুদ পারভেজসহ অন্যান্য ইউপি সদস্যরা গত ২৮ মার্চ ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনারের কাছে সারমিনা সাত্তারের বিরুদ্ধে ৩ কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ করেন।
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা থাকাকালীনও সারমিনা সাত্তারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠে। যা নিয়ে তখন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর নান্দাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হিসেবে সারমিনা সাত্তার যোগ দেন। এরপর থেকে সীমাহীন দুর্নীতি করেছেন। উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজার ইজারা, পাথর কেলেঙ্কারি, খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির ডিলার নিয়োগ, নামজারিতে অতিরিক্ত টাকা আদায়, ভুয়া প্রকল্প থেকে টাকা উত্তোলনসহ নানা দুর্নীতি করেছেন।
বক্তব্যে ইউপি সদস্য মাসহুদ পারভেজ বলেন, ‘‘সারমিনা সাত্তার শুধু অনিয়ম-দুর্নীতিতে সীমাবদ্ধ ছিলেন না, ইউপি সদস্যদের সঙ্গে অসদাচরণসহ মিথ্যা মামলার হুমকিও দিয়েছেন। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে অভিযোগ দিয়েছি।’’
মানববন্ধনে আরো উপস্থিত ছিলেন খারুয়া ইউনিয়নের ইউপি সদস্য আব্দুস কদ্দুস মুন্সি, বাচ্চু মিয়া, শেরপুর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য শাহজাহান প্রমুখ।
এ বিষয়ে জানতে সারমিনা সাত্তারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
ঢাকা/মিলন/বকুল