জুলাই ঘোষণাপত্রে কিছু বিষয় ‘অনুপস্থিত’, নির্বাচনের আগে কিছু বিষয়ে নিশ্চয়তা চাইল এনসিপি
Published: 6th, August 2025 GMT
জুলাই ঘোষণাপত্রে কিছু বিষয় অনুপস্থিত থেকে গেছে বলে মনে করছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। এ ছাড়া আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের আগেই সরকারের কাছে মাঠ প্রশাসনের নিরপেক্ষতা এবং লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড (সবার জন্য সমান সুযোগ) নিশ্চিতের বিষয়ে নিশ্চয়তা চেয়েছে দলটি৷
আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির অস্থায়ী কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির সদস্যসচিব আখতার হোসেন এ কথা বলেন। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে গতকাল মঙ্গলবার পঠিত জুলাই ঘোষণাপত্র এবং প্রধান উপদেষ্টার ভাষণের বিষয়ে দলীয় প্রতিক্রিয়া জানাতে এ সংবাদ সম্মেলন ডাকে এনসিপি।
সংবাদ সম্মেলনে এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, কিছু বিষয় যদি জুলাই ঘোষণাপত্রের মধ্যে উল্লেখ থাকত, তাহলে এটি পরিপূর্ণ হতো বলে তাঁরা মনে করছেন। এরপর জুলাই ঘোষণাপত্রে ‘অনুপস্থিত’ বিষয়গুলো তিনি তুলে ধরেন।
আখতার বলেন, ‘ঘোষণাপত্রে উপনিবেশবিরোধী লড়াইয়ের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু এই ভূখণ্ডের মানুষের উপনিবেশবিরোধী লড়াইয়ের অন্যতম রেফারেন্স পয়েন্ট ১৯৪৭-কে এখানে উল্লেখ করা হয়নি। আমরা মনে করি, এই বাংলাদেশের বা এই ভূখণ্ডের একটা সার্বভৌম রাষ্ট্র পাওয়ার পেছনে ১৯৪৭, ১৯৭১ এবং আমাদের চব্বিশের আন্দোলন—এই সবকিছুর একটি সম্মিলন এই ঘোষণাপত্রকে আরও সম্পৃক্ত করতে পারত। এ ঘোষণাপত্রে (চব্বিশের) শহীদের সংখ্যার ব্যাপারে “প্রায় এক হাজার” শব্দবন্ধ ব্যবহার করা হয়েছে। অথচ জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১ হাজার ৪০০ মানুষ এই অভ্যুত্থানের সময়কালে শহীদ হয়েছেন। এ পরিসংখ্যান আমাদের সবার জানা। সে ক্ষেত্রে এক বছর ধরে সরকার যে শহীদ ও আহত ব্যক্তিদের প্রকৃত সংখ্যা নির্ণয় করতে ব্যর্থ হয়েছে, তার একটা ছাপ আমরা এই ঘোষণাপত্রের মধ্যে দেখতে পেলাম।’
এনসিপির এই নেতা আরও বলেন, পিলখানা হত্যাকাণ্ড, শাপলা গণহত্যা, বিচারিক হত্যাকাণ্ড, ভ্যাটবিরোধী আন্দোলন, ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলন ও নিরাপদ সড়ক আন্দোলন, বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যার বিরুদ্ধে আগ্রাসনবিরোধী আন্দোলন, মোদিবিরোধী আন্দোলনের কথা এ ঘোষণাপত্রে উল্লেখ নেই। তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি, ১৬ বছর ধরে বাংলাদেশের মানুষ আরও অসংখ্য আন্দোলন সংগ্রাম করেছেন। কিন্তু ইতিহাসের এই পরতে যে ঘটনাগুলো আমাদের জাতীয় জীবনে দীর্ঘমেয়াদি ছাপ রেখে গেছে, সেই ঘটনাগুলোর উল্লেখ করা আমাদের জাতির জন্য গর্বের বিষয় হতে পারত। একই সঙ্গে ঘোষণাপত্রের মধ্য দিয়ে আমাদের সংগ্রামগুলোর আরও ঐতিহাসিক স্বীকৃতি সুনির্দিষ্টভাবে অর্জন করতে সক্ষম হতাম।’
এনসিপির সদস্যসচিব বলেন, ‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়টা আমাদের কাছে মনে হয়েছে, এই ঘোষণাপত্রের ২৫ ও ২৭ নম্বর পয়েন্টে আয়োজিত নির্বাচনের মধ্য দিয়ে নির্বাচিত সরকারের সংস্কারকৃত সংবিধানের তফসিলে এ ঘোষণাপত্রকে উল্লেখ করার কথা বলা হয়েছে।
এনসিপি দীর্ঘ সময় ধরে বাংলাদেশে একটি নতুন সংবিধানের দাবি জানিয়ে আসছে উল্লেখ করে আখতার হোসেন বলেন, সেই লক্ষ্যে গণপরিষদ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে নতুন সংবিধান, সংবিধান পুনর্লিখনের দাবি এনসিপি সরকারের কাছে করে আসছে। ঐকমত্য কমিশনে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংস্কারের বিভিন্ন বিষয়বস্তুতে ঐকমত্য তৈরি হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত সেখানে বাস্তবায়নের পথ কী হবে, তা নিয়ে আলোচনা করা হয়নি। সে ক্ষেত্রে যখন এই ঘোষণাপত্রকে পরবর্তী সংস্কারকৃত সংবিধানের ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়, স্বভাবতই এনসিপি যে নতুন সংবিধানের দাবি জানিয়েছে, গণপরিষদের কথা বলেছে, সংবিধানের অন্তর্ভুক্তির কথা বলেছে, সেই প্রক্রিয়াকে পাশ কাটিয়ে যাওয়া হয়।’
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে পঠিত জুলাই ঘোষণাপত্র এবং প্রধান উপদেষ্টার ভাষণের বিষয়ে দলীয় প্রতিক্রিয়া জানাতে সংবাদ সম্মেলন ডাকে এনসিপি.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এনস প র আম দ র আখত র সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
ঢাকার বিজয় র্যালিতে জেলা বিএনপির বিশাল শোডাউন
ঢাকায় জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ধারাবাহিকতায় ৫ই আগস্ট আওয়ামী ফ্যাসিবাদের পতন ও ছাত্র-জনতার বিজয়ের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে কেন্দ্র ঘোষিত বিএনপির বিজয় র্যালিতে নারায়ণগঞ্জ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের হাজা হাজার নেতাকর্মীদের নিয়ে বিশাল শোডাউন করে অংশগ্রহন করেছে।
বুধবার (৬ আগস্ট) দুপুর দুইটায় রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় এ কার্যালয়ের সামনে এই বিজয় র্যালির আয়োজন করা হয়। এতে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
এদিকে কেন্দ্র ঘোষিত বিজয় র্যালিকে সফল করার লক্ষ্যে দুপুর থেকেই নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, শ্রমিকদল, মহিলা দলসহ বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা ব্যানার ফেস্টুন সুসজ্জিত হয়ে শ্লোগানে শ্লোগানে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে নটরডেম কলেজের সামনে এসে জড়ো হতে থাকে। পরে বিশাল মিছিল নিয়ে বিজয় র্যালি অংশগ্রহণ করেন।
নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদের সার্বিক তত্ত্বাবধানে এসময়ে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির ঢাকা বিভাগীয় সহ- সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আজহারুল ইসলাম মান্নান, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাশুকুল ইসলাম রাজিব, যুগ্ম আহ্বায়ক শরীফ আহমেদ টুটুল, জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক লুৎফর রহমান আব্দু, আঃ হাই রাজু, আড়াইহাজার উপজেলা বিএনপির সভাপতি ইউসুফ আলী ভূঁইয়া, রূপগঞ্জ উপজেলা বিএনপি'র সভাপতি মাহফুজুর রহমান হুমায়ূন, সাধারণ সম্পাদক বাছির উদ্দিন বাচ্চু, সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপি'র সিনিয়র সহ-সভাপতি কাজী নজরুল ইসলাম টিটু, সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন, ফতুল্লা থানা বিএনপির সভাপতি শহিদুল, সাধারণ সম্পাদক এড. বারী ভূঁইয়া, জেলা যুবদলের আহ্বায়ক সাদেকুর রহমান সাদেক, সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনি, জেলা সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক খায়রুল ইসলাম সজিব, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মাহাবুবুর রহমান, জেলা কৃষকদলের আহ্বায়ক ডাঃ শাহিন, সদস্য সচিব আলম মিয়া, জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি মন্টু মেম্বার, আড়াইহাজার উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব খোরশেদ আলম ভূঁইয়া, জেলা মহিলা দলের সভানেত্রী রহিমা শরীফ মায়া, সাধারণ সম্পাদক রুমা আক্তারসহ জেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ।