আনন্দধারার প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী ও অভিষেক অনুষ্ঠান
Published: 8th, August 2025 GMT
সাংস্কৃতিক সংগঠন আনন্দধারার ৩৫ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী ও অভিষেক উপলক্ষে শুক্রবার (৮ আগস্ট) শহরের আলী আহাম্মদ চুনকা নগর মিলনায়তনে দিন ব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
সকালে চারটি বিভাগে সংগীত প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। বিকেলে সংগঠনের সভাপতি সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রফিউর রাব্বির সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক উত্তম সাহার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠনে বক্তব্য রাখেন শিক্ষাবিদ লেখক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, কবি সাংবাদিক হালিম আজাদ ও নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি জিয়াউল ইসলাম কাজল।
আনু মুহাম্মদ বলেন, আমরা আমাদের শিশু-কিশোর, তরুণদের ক্ষমতা বুঝতে পারিনা। চব্বিশের অভ্যুত্থান সহ বিভিন্ন সময়ের বিদ্রোহ, আন্দোলনে, অভ্যুত্থানে আমরা এ শক্তি দেখেছি। যারা সৃজনশীলতায় বিশ^াসী তারা এ শক্তি উপলব্ধি করতে পারে। সংস্কৃতি সে শক্তির আধার। সৃজনশীল চর্চার মধ্যদিয়ে আমাদের মানুষ গড়ে তুলতে হবে। এ চর্চা না থাকলে দেশে কেবল শামীম ওসমানরাই তৈরি হবে, মানুষ হবে না। দেশটা শামীম ওসমানদের নয় মানুষের, এ বিশ^স ও ভরসা আমাদের রাখতে হবে।
রফিউর রাব্বি বলেন, সংস্কৃতি প্রতিনিয়ত পরিবর্তনের মধ্যদিয়ে বিকশিত হয়। পরিবর্তন একটি অনিবার্য প্রক্রিয়া। সভ্যতার ইতিহাস এই পরিবর্তনেরই ইতিহাস, মানুষের ইতিহাস। সংস্কৃতি মানুষকে মানুষ হিসেবে গড়ে তোলে। মানুষের দায় মানুষের প্রতি, প্রাণ-প্রকৃতির প্রতি। মানুষই মানুষের পাশে দাঁড়াবে। মানুষ সমস্ত সৃষ্টিকে নিয়েই বাঁচে, মানুষ একা বঁচতে পারে না। মানুষের দায় হচ্ছে সমাজকে, এ বিশ^কে মানুষের বাস-উপযোগী করে গড়ে তোলার কাজে নিয়োজিত থাকা।
অনুষ্ঠানে আবৃত্তি করেন ভবানী শংকর রায় ও ফাহমিদা আজাদ। পরে প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ, সংগীত ও নৃত্য পরিবেষণ করা হয়।
আরো পড়ুন
সাংবাদিক তুহিনকে হত্যা : না’গঞ্জ টেলিভিশন জার্নালিষ্ট এসোসিয়েশনের নিন্দা
বাংলাদেশ নিটিং ওনার্স এসোসিয়েশনের নির্বাচন স্থগিত
শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী উৎসব পালনে পূজা পরিষদের মতবনিময় সভা
সাংবাদিক তুহিনকে কুপিয়ে হত্যা : নারায়ণগঞ্জ জেলা সাংবাদিক ইউনিয়নের নিন্দা
সাংবাদিক তুহিন হত্যায় ফতুল্লা প্রেস ক্লাবের তীব্র নিন্দা
সাংবাদিক হত্যার প্রতিবাদে বন্দর পেশাদার সাংবাদিক ফোরামের প্রতিবাদ
নিটিং ওনার্স এসোসিয়েশনের নির্বাচন বোর্ডের চেয়ারম্যান পদ থেকে সানির পদত্যাগ
না’গঞ্জ সংবাদপত্র বহুমুখী সমবায় সমিতির নতুন কমিটির পরিচিতি সভা
২৩১/১ বঙ্গবন্ধু সড়ক (৬ষ্ঠ তলা, লিফটের ৫)
নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাব ভবন, নারায়ণগঞ্জ
নির্বাহী সম্পাদক: মোশতাক আহমেদ (শাওন)
ফোন:+৮৮০১৯৩৩-৩৭৭৭২৪
ইমেইল : [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া অন্য কোথাও প্রকাশ বা ব্যবহার করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
© ২০২৫ | সকল স্বত্ব নারায়ণগঞ্জ টাইমস কর্তৃক সংরক্ষিত | উন্নয়নে ইমিথমেকারস.
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ অন ষ ঠ ন স ন রগ
এছাড়াও পড়ুন:
গরিবের কাছে স্বপ্নের মতো একটুকরো ইলিশ
ইলিশ শুধু মাছ নয়, বাঙালির খাদ্যসংস্কৃতি ও অনুভূতির এক অনন্য প্রতীক। পূর্ণিমার রাতে নদীতে জ্যোৎস্না পড়লে যেমন মনে হয় সোনালি রূপ ঝলমল করছে, তেমনি ইলিশের রুপালি ঝলক যেন বাঙালির খাবার টেবিলে আনন্দের আলো ছড়ায়। কিন্তু সেই আলো গরিব মানুষের ঘরে পৌঁছায় না। তাদের কাছে ইলিশ আজ স্বপ্নের মতো ছোঁয়া যায় না, শুধু কল্পনায় ভেসে ওঠে।
বাংলাদেশকে ইলিশের দেশ বলা হয়। বাংলাদেশে ইলিশ শুধু খাবার নয়, আবেগ। ঈদ হোক বা পূজা, অতিথি এলে কিংবা উৎসবের দিনে, ইলিশ ছাড়া খাবারের টেবিল অসম্পূর্ণ মনে করেন অনেক মানুষ। কিন্তু এই আনন্দ সব ঘরে ভাগ হয়ে যায় না। শ্রমিক, রিকশাওয়ালা, দিনমজুর কিংবা গ্রামীণ গরিব পরিবারগুলোর কাছে ইলিশ এখন বিলাসবস্তু। একসময় বাজারে গিয়ে ছোট একটা ইলিশ কেনা গেলেও এখন দাম আকাশচুম্বী হয়ে যাওয়ায় তাদের কাছে এটা একেবারেই নাগালের বাইরে চলে গেছে।
পদ্মা, মেঘনা, যমুনা কিংবা সাগর সব জায়গায় এই মাছের সমারোহ। প্রতিবছর দেশ-বিদেশে কোটি কোটি টাকার ইলিশ বিক্রি হয়। অথচ এ দেশের অনেক গরিব মানুষ বছরের পর বছর মুখে ইলিশ তুলে খেতে পারে না। দাম এত বেশি যে সাধারণ শ্রমিক বা দিনমজুর পরিবারের কাছে এটা এখন বিলাসিতা।
দেশের প্রান্তিক শ্রমজীবী পরিবারগুলোর বেশির ভাগই বছরে একবারও ইলিশ কিনতে পারে না। কখন সর্বশেষ তারা ইলিশ খেয়েছে, তাদের বেশির ভাগেরই হয়তো মনেই থাকে না। অথচ বিশ্বে উৎপাদিত ইলিশের ৭০ শতাংশের বেশি আসে এই দেশ থেকে। বর্তমানে মাঝারি আকারের এক কেজি ইলিশের দাম দেড় হাজার টাকার ওপরে। আর একজন তৈরি পোশাক শ্রমিকের মাসিক আয় গড়ে ১০-১২ হাজার টাকা। ফলে তাঁদের জন্য ইলিশ কেনা মানেই মাসের বাজেট ভেঙে যাওয়া।
ইলিশ নাগালের বাইরে চলে যাওয়ার পেছনে নানা কারণ কাজ করছে। নদীদূষণ, অতিরিক্ত নৌ চলাচল, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ইলিশের প্রজনন ব্যাহত হচ্ছে। ফলে ইলিশের প্রাপ্যতা কমে গেছে। জাটকা নিধন বন্ধ না হওয়া এবং প্রজনন মৌসুমে অবৈধ জালের ব্যবহার উৎপাদন কমিয়ে দিচ্ছে। দালাল ও ব্যবসায়ী চক্র কৃত্রিম সংকট তৈরি করে দাম বাড়িয়ে দেয়। ফলে মধ্যবিত্তও হিমশিম খায়, আর গরিবদের জন্য ইলিশ নাগালের বাইরেই থেকে যায়। উৎসবের মৌসুমে চাহিদা বেড়ে যায়, কিন্তু সরবরাহ সীমিত থাকে। এতে দাম দ্বিগুণ-তিনগুণ হয়ে যায়। সব মিলিয়ে ইলিশ এখন সাধারণ মানুষের স্বপ্নের খাদ্যে পরিণত হয়েছে।
ইলিশের স্বাদ যেন কেবল ধনীদের জন্য সীমাবদ্ধ না থাকে, সে জন্য সমস্যার সমাধান করতে হবে। কিছু বাস্তব পদক্ষেপ নিতে হবে। সরকারকে অবশ্যই সিন্ডিকেট ভাঙতে হবে এবং ইলিশের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। জাটকা নিধন কঠোরভাবে দমন করতে হবে এবং প্রজনন মৌসুমে নদীতে বিশেষ নজরদারি চালাতে হবে। নদীদূষণ রোধেও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। ইলিশ আহরণের মৌসুমে সঠিক সময়ে মাছ ধরার সুযোগ ও আর্থিক সহায়তা দিলে উৎপাদন বাড়বে। এসব উদ্যোগ কার্যকর হলে ইলিশের দাম কমে আসবে এবং সব শ্রেণির মানুষ সমানভাবে এর স্বাদ নিতে পারবে।
ইলিশকে যদি আমরা সত্যিই ‘জাতীয় মাছ’ বলি, তাহলে তার স্বাদ কেবল ধনী-সম্ভ্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য সীমাবদ্ধ থাকতে পারে না। গরিব শিশুরাও যেন উৎসবের দিনে অন্তত একটুকরো ইলিশ খেতে পারে। এটি আমাদের রাষ্ট্র ও সরকারকে নিশ্চিত করতে হবে।
ফারিহা জামান নাবিলা
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা