সালমান খান। পর্দায় গ্যাংস্টার কিংবা খলনায়কের সঙ্গে লড়াই করেছেন বহুবার। শেষ পর্যন্ত হয়েছেন জয়ী। নায়ক সব সময় জিতবেন। নায়ক হারতে পারেন না। ‘রাধে’, ‘চুলবুল পান্ডে’ বা ‘টাইগার’-এর মতো সব চরিত্রে অভিনয় করে দর্শক মাতিয়ে রেখেছেন। আবার ‘বজরঙ্গি ভাইজান’ থেকে হয়ে গেছেন সবার ভাইজান। সেই ভাইজান এখন বাস্তবে লড়ছেন। লড়ছেন একজন গ্যাংস্টারের বিরুদ্ধে। গেল বছর এপ্রিল মাসে সালমান খানের বাড়িতে গুলি চালানো হয়েছে। অবশ্য যে দুজন গুলি চালিয়েছিলেন, তাঁদের গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সেই সঙ্গে বাড়ানো হয় সালমান খানের নিরাপত্তা।

এখানে শেষ নয়। এক মাসের ব্যবধানে ভারতীয় অভিনেতা কপিল শর্মার কানাডার রেস্তোরাঁয় দুইবার হামলা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার ভোরে সারে শহরে কপিলের রেস্তোরাঁ কপ'স ক্যাফেতে অজ্ঞাতপরিচয় বন্দুকধারীরা গুলি চালায়। রেস্তোরাঁটির দিকে প্রায় ২৫টি গুলি চালানো হয়, যার মধ্যে অন্তত ছয়টি গুলি দেয়াল ও জানালায় লাগে। এক অডিও বার্তায় হামলার দ্বায় স্বীকার করেছে লরেন্স বিষ্ণোই গ্যাং। সালমান খানের সঙ্গে কপিলের ঘনিষ্টতার কারণেই এ হামলা চালানো হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। লরেন্স বিষ্ণোইয়ের ঘনিষ্ঠ গোল্ডি ব্রারের সহযোগী গোল্ডি ঢিল্লন এ হামলার দায় স্বীকার করেছেন।

চলুন জেনে নেওয়া যাক কে এই লরেন্স বিষ্ণোই? কেন তাঁর সালমান খানের সঙ্গে শত্রুতা?

ঘটনার শুরু
১৯৯৮ সালের ঘটনা। ভারতের যোধপুরে সালমান খান গিয়েছিলেন পুরো ইউনিট নিয়ে শুটিং করতে। ‘হাম সাথ সাথ হ্যায়’ সিনেমার শুটিং চলাকালে ঘটনাক্রমে দুটি কৃষ্ণকায় হরিণ হত্যা করেন সালমান খান। মামলা করে বিষ্ণোই সম্প্রদায়। বিরল প্রজাতির এই হরিণকে বিষ্ণোই সম্প্রদায়ের মানুষ অত্যন্ত পবিত্র বলে মনে করেন। মামলাটির পেছনে তাঁদের ক্রমাগত লেগে থাকার কারণে ২০ বছর পর ২০১৮ সালে এসে পাঁচ বছরের জেল হয় সালমানের। পরে অবশ্য জামিনে মুক্তি পান তিনি। সেখানেই ঘটনার সমাপ্তি ঘটতে পারত, কিন্তু তা হয়নি।

কৃষ্ণকায় হরিণ ও বিষ্ণোই সম্প্রদায়
প্রশ্ন জাগতেই পারে, কৃষ্ণকায় হরিণ হত্যার সঙ্গে বিষ্ণোই সম্প্রদায়ের সম্পর্ক কী? তারা কেন মামলা করেছে? কেনই-বা লরেন্স বিষ্ণোই ও তাঁর গ্রুপ এত বছরের ঘটনা বয়ে চলেছে?
এক প্রতিবেদনে বিবিসি জানায়, বিষ্ণোই সম্প্রদায় ভারতের প্রভাবশালী একটি সম্প্রদায়। তারা কয়েক শ বছর ধরে অক্ষরে অক্ষরে ২৯টি রীতি মেনে চলার চেষ্টা করে। সেসব রীতির মধ্যে প্রকৃতির সুরক্ষা, বৃক্ষ রক্ষা, জঙ্গলের প্রাণী রক্ষা অন্যতম। এ সম্প্রদায় যে কৃষ্ণকায় হরিণকে পবিত্র হিসেবে গণ্য করে, সেই হরিণই হত্যা করেছেন সালমান। যা তাদের ভাবাবেগে আঘাত করেছে। বিলুপ্তপ্রায় এই কৃষ্ণকায় হরিণ চিংকার নামেও পরিচিত।

আরও পড়ুনগুলিবর্ষণের ঘটনার পরেও ‘সিকান্দার’ ছবির শুটিং করবেন সালমান১৯ এপ্রিল ২০২৪

কে এই লরেন্স বিষ্ণোই
৩১ বছরের লরেন্স বিষ্ণোই প্রায় দুই ডজন হত্যা ও চাঁদাবাজির মামলায় আটক হয়ে বর্তমানে ভারতের তিহার জেলে বন্দী। পাঞ্জাবের ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে ফাজিলকা জেলার দত্তরানওয়ালি গ্রামে লরেন্সের জন্ম। গ্রামটিতে বিষ্ণোই সম্প্রদায়ের ব্যাপক প্রভাব রয়েছে।

সালমান খান.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

রূপগঞ্জে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায়  ২ বিশ্ব বিদ্যালয়  শিক্ষার্থী নিহত

রূপগঞ্জে পূর্বাচল ৩০০ ফিট সড়কে মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের ডিভাইডারের সঙ্গে ধাক্কায় প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও একজন। মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বিকালে রূপগঞ্জ উপজেলার পূর্বাচল লেংটার মাজার এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। 

নিহতরা হলেন রাজধানীর ইব্রাহীমপুর এলাকার জসীমউদ্দিনের ছেলে দীপ এবং মাটিকাটা এলাকার সেকান্দারের ছেলে সুমন। তারা দুজনই প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন। আহত শিক্ষার্থীর নাম রাব্বি। বর্তমানে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তার অবস্থাও আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।

কাঞ্চন হাইওয়ে পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ সোহেল রানা জানান, বিকেলে রাজধানী থেকে মোটরসাইকেলযোগে তিন বন্ধু—দীপ, সুমন ও রাব্বি—পূর্বাচলে বেড়াতে আসেন। বেপরোয়া গতিতে চলা মোটরসাইকেলটি লেংটার মাজার এলাকায় পৌঁছালে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের ডিভাইডারের সঙ্গে জোরে ধাক্কা খায়। এতে তারা ছিটকে পড়ে গুরুতর আহত হন এবং মোটরসাইকেলে আগুন ধরে যায়।

পরে স্থানীয়রা দ্রুত তাদের উদ্ধার করে প্রথমে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক সুমনকে মৃত ঘোষণা করেন। অবস্থার অবনতি হলে বাকিদের কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়, যেখানে সন্ধ্যায় দীপ মারা যান। আহত রাব্বিকে পরবর্তীতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

এ ঘটনায় পুলিশ দুর্ঘটনাকবলিত মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করেছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ