বলা হয়ে থাকে রেকর্ড গড়াই হয় ভাঙার জন্য। আর পৃথিবীজুড়ে ক্রীড়াবিজ্ঞান, খেলোয়াড়দের পুষ্টি, অনুশীলনপদ্ধতি আর প্রযুক্তি ব্যবহারের মতো বিষয়গুলোর যোগফলে পুরোনো রেকর্ড ভেঙে নতুন রেকর্ড গড়ার ঘটনাও প্রতিনিয়ত বেড়ে চলেছে।

তবে বেশির ভাগ খেলায় রেকর্ড, পাল্টা রেকর্ডের ঘটনা প্রায় নিয়মিত হয়ে উঠলেও কিছুটা উল্টো চিত্র অ্যাথলেটিকসে। এই খেলায় এমন কিছু রেকর্ড আছে, যা যুগের পর যুগ ধরে টিকে আছে। প্রতি দুই বছরে একবার বিশ্ব অ্যাথলেটিকস চ্যাম্পিয়নশিপ এবং চার বছরে একবার অলিম্পিকের আসর বসলেও রেকর্ডগুলো দীর্ঘদিন ধরে কেউ ভাঙতে পারছে না।

অ্যাথলেটিকসে মোটের ওপর তিন ধরনের ইভেন্ট হয়ে থাকে। এর মধ্যে ট্র্যাকে হয়ে থাকে স্প্রিন্টস, মিডল ডিসট্যান্স, লং ডিসট্যান্স, হার্ডলস এবং রিলে। ফিল্ড পর্যায়ে হয়ে থাকে জাম্প ও থ্রো। আর ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ড মিলিয়েও হয়ে থাকে পেনতাথলন, হেপতাথলন ও ডেকাথলনের মতো ইভেন্ট।

তিন দশক বা এর বেশি সময় ধরে টিকে আছে পাঁচটি ইভেন্টের রেকর্ড।

১.

হ্যামার থ্রো

হ্যামার থ্রোর বিশ্ব রেকর্ডটি ইউরি সেদিখের। সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের এই অ্যাথলেট স্টুটগার্টে ১৯৮৬ ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে ৮৬.৭৪ মিটার বা ২৮৪ ফুট ৬ ইঞ্চি দূরত্বে হ্যামার থ্রো করেছিলেন। এরপর ৩৯ বছর ধরে কেউ এর ধারেকাছে যেতে পারেননি। যাবেনই বা কীভাবে, দ্বিতীয় ও তৃতীয় সর্বোচ্চ দূরত্বের রেকর্ড সেদিখেরই।

সাবেক সোভিয়েত তারকার রেকর্ডটি যে কত বেশি সুরক্ষিত, সেটা বোঝা যাবে আরেকটি তথ্যের দিকে তাকালে। একবিংশ শতাব্দীতে ২০০৫ সালে সর্বোচ্চ ৮৪.৯০ মিটারে হ্যামার ছুড়তে পেরেছেন বেলারুশের ভ্যামিদ দেব্যতোভস্কি। দূরত্বের দিক থেকে তিনি এখন ১৪তম।

আরও পড়ুনরাগবি, অ্যাথলেটিকস, বক্সিং, ফুটবলের পর ক্রিকেট—কোন খেলায় নেই তিনি০১ মার্চ ২০২৫২. লং জাম্প

১৯৯১ সালে বিশ্ব অ্যাথলেটিকস চ্যাম্পিয়নশিপের লং জাম্পে ৮.৯৫ মিটার অতিক্রম করেছিলেন মাইক পাওয়েল। যুক্তরাষ্ট্রের এই অ্যাথলেট ভেঙেছিলেন ১৯৬৮ সালের বব বিমনের রেকর্ড। পাওয়েল ২৩ বছর পর রেকর্ড ভাঙতে পারলেও তাঁর রেকর্ডটি ৩৪ বছরেও কেউ পেছনে ফেলতে পারেননি। তাঁর বিশ্ব রেকর্ডের পর কাছাকাছি যেতে পেরেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ডোয়াইট ফিলিপস, তবে ২০০৯ সালের সেই দীর্ঘ লাফ ছিল ৮.৭৪ মিটার, দূরত্বের দিক থেকে যা যৌথভাবে দশম।

৩. হাই জাম্প

হাই জাম্পের বিশ্ব রেকর্ডটি হাভিয়ের সোতোমায়োরের। উচ্চতা অতিক্রমের এই খেলায় কিউবার এই অ্যাথলেট ১৯৯৩ বিশ্ব অ্যাথলেটিকসে ২.৪৫ মিটার লাফিয়েছিলেন। ১৯৯২ অলিম্পিকে একই ইভেন্টে সোনা জেতা সোতোমায়োর একমাত্র অ্যাথলেট, যিনি এখন পর্যন্ত দুবার ৮ ফুট বা তার বেশি লাফিয়েছেন। আর কোনো হাই জাম্পার আট মিটার উঁচুতে উঠতে পারেননি। ২০১৪ সালে ডায়মন্ড লিগে ২.৪৩ মিটার লাফিয়ে তাঁর কাছাকাছি গিয়েছেন কাতারের মুসাত এসা বারশিম।

আরও পড়ুনহাঁটু গেড়ে বিয়ের প্রস্তাব, বিশ্ব অ্যাথলেটিকসে ভালোবাসার অন্য রকম গল্প লিখলেন তাঁরা২৪ আগস্ট ২০২৩৪.  ৪X৪০০ মিটার রিলে

দীর্ঘদিন টিকে থাকা বিশ্ব রেকর্ডগুলোর মতো এটি ব্যতিক্রম—একমাত্র দলগত। ১৯৯৩ সালে জার্মানির স্টুটগার্টে অনুষ্ঠিত বিশ্ব অ্যাথলেটিকসে ৪ গুণিতক ৪০০ মিটার রিলে ২ মিনিট ৫৪.২৯ সেকেন্ডে শেষ করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। দলটির হয়ে খেলেছিলেন তিন অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ন মিখায়েল জনসন, বাচ রেনোল্ডস, কুইনসি ওয়াটস ও অ্যান্ড্রু ভালমন। এই রেকর্ডটি টিকে আছে ৩২ বছর ধরে।

৫. ট্রিপল জাম্প

হপ, স্টেপ আর জাম্প—তিনটি ধাপে সম্পন্ন হয় ট্রিপল জাম্প। মোটের ওপর অতিক্রম্য দূরত্বই এখানে জয়ের মানদণ্ড। অ্যাথলেটিকসের এই ইভেন্টের বিশ্ব রেকর্ডটি ইংল্যান্ডের জনাথন এডওয়ার্ডসের। ১৯৯৫ সালে সুইডেনের গুটেনবার্গে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে ১৮.২৯ মিটার অতিক্রম করেছিলেন তিনি, যা এখনো কেউ পার হতে পারেননি। ২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রিস্টিয়ান টেলর বেইজিংয়ে ১৮.২১ মিটার পর্যন্ত পেরেছেন, গত বছর স্পেনের জর্ডান দিয়াজ পেরেছেন ১৮.১৮ মিটার দূরত্বে যেতে। কিন্তু এডওয়ার্ডস রয়ে গেছেন শীর্ষেই।

দীর্ঘদিন ধরে রেকর্ডের মালিক হয়ে থাকা গর্বের হলেও অ্যাথলেটিকসের স্বার্থে বিষয়টি যথাযথ নয় বলে মনে করেন এডওয়ার্ডস। সম্প্রতি বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় না কোনো অ্যাথলেটিকস রেকর্ড ৩০ বছর ধরে অক্ষত থাকাটা খেলা হিসেবে অ্যাথলেটিকসের জন্য ভালো লক্ষণ।’

আরও পড়ুনইউরোপীয় অ্যাথলেটিকসে ধারাভাষ্য দেবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা১৪ জুন ২০২৩

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র ব শ ব র কর ড চ য ম প য়নশ প য ক তর ষ ট র র র কর ড প র নন কর ছ ল

এছাড়াও পড়ুন:

রূপগঞ্জে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায়  ২ বিশ্ব বিদ্যালয়  শিক্ষার্থী নিহত

রূপগঞ্জে পূর্বাচল ৩০০ ফিট সড়কে মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের ডিভাইডারের সঙ্গে ধাক্কায় প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও একজন। মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বিকালে রূপগঞ্জ উপজেলার পূর্বাচল লেংটার মাজার এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। 

নিহতরা হলেন রাজধানীর ইব্রাহীমপুর এলাকার জসীমউদ্দিনের ছেলে দীপ এবং মাটিকাটা এলাকার সেকান্দারের ছেলে সুমন। তারা দুজনই প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন। আহত শিক্ষার্থীর নাম রাব্বি। বর্তমানে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তার অবস্থাও আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।

কাঞ্চন হাইওয়ে পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ সোহেল রানা জানান, বিকেলে রাজধানী থেকে মোটরসাইকেলযোগে তিন বন্ধু—দীপ, সুমন ও রাব্বি—পূর্বাচলে বেড়াতে আসেন। বেপরোয়া গতিতে চলা মোটরসাইকেলটি লেংটার মাজার এলাকায় পৌঁছালে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের ডিভাইডারের সঙ্গে জোরে ধাক্কা খায়। এতে তারা ছিটকে পড়ে গুরুতর আহত হন এবং মোটরসাইকেলে আগুন ধরে যায়।

পরে স্থানীয়রা দ্রুত তাদের উদ্ধার করে প্রথমে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক সুমনকে মৃত ঘোষণা করেন। অবস্থার অবনতি হলে বাকিদের কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়, যেখানে সন্ধ্যায় দীপ মারা যান। আহত রাব্বিকে পরবর্তীতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

এ ঘটনায় পুলিশ দুর্ঘটনাকবলিত মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করেছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ