নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ বলেছেন, নারায়ণগঞ্জ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি জেলা। এই জেলায় সকল ধর্মের মানুষ আমরা একসাথে বসবাস করি।

সেই সুবাদে নারায়ণগঞ্জের অনেক ঐতিহ্য রয়েছে।  আসন্ন শারদীয় দুর্গোৎসবকে সফল করতে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা সব ধরনের সহযোগিতা করবে। জেলার প্রতিটি পূজা মন্ডপে মণ্ডপে পাহারায় থাকবে বিএনপি'র নেতৃবৃন্দরা। 

পূজা মন্ডপ পরিদর্শনের নামে আমাদের নেতাকর্মীরা যাতে হোন্ডা মোহড়া ও পাহারা এই দুটোই যেন কেউ না দেয়। তার জন্য আমাদের সবাইকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। আর পূজা মন্ডপে অনেক নারী পূজারীরা অংশগ্রহণ করে থাকে।

তাদের আসা-যাওয়ার পথে কেউ যেন ইভটিজিং না করে। তার জন্য আমাদের নিজস্ব ভলেন্টিয়াররা সজাগ দৃষ্টি রাখবেন। আর তার জন্য মণ্ডপ কর্তৃপক্ষ পর্যাপ্ত পরিমাণে আলোর ব্যবস্থা রাখবেন। 

শারদীয় দুর্গোৎসবকে আনন্দময় ও নিরাপদ করার লক্ষ্যে জেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের  মতবিনিময় সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথাগুলো বলেন।

সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায়  সিদ্ধিরগঞ্জের গ্রিন গার্ডেন পার্টি সেন্টারে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির উদ্যোগে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।

তিনি আরও বলেন, বিশেষ করে আযান ও নামাজের সময় অন্তত ৩০ মিনিট আপনারা পূজা অর্চনা খানিক খানের জন্য বিরতি রাখবেন। আপনারা ভিতরে আপনাদের পূজা করবেন কিন্তু ঢাকঢোল, গানবাজনা ও সাউন্ড সিস্টেম বন্ধ রাখবেন। এই বিষয়টি আপনার বিশেষ দৃষ্টিতে দেখবেন।

অনেক সময় দেখা দেয় এক দিকটা আজান হচ্ছে অন্য দিকটা মন্ডপে ঢাকঢোল বাজানো হচ্ছে। এতে করে একটি সিমপিতি তৈরি হতে পারে। সুতরাং এই জিনিসটা আপনারা বিশেষ ভাবে গুরুত্ব দিয়ে দেখবেন। 

মতবিনিময় সভায় পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দ বক্তব্যে তাদের চাহিদা ও প্রত্যাশার কথা তুলে ধরেন এবং দুর্গোৎসবকে আনন্দময় এবং নিরাপদ করতে মতবিনিময় সভার আয়োজন করায়  বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান এবং নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহবায়কসহ বিএনপি নেতৃবৃন্দকে অভিনন্দন জানান।

নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহবায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, জেলা বিএনপি যুগ্ম আহ্বায়ক মাসুকুল ইসলাম রাজীব, নারায়ণগঞ্জ জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শংকর কুমার দে, সাধারণ সম্পাদক শিখন সরকার শিপন, মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বিষ্ণুপ্রদ সাহা, রূপগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি এড.

মাহফুজুর রহমান হুমায়ুন, আড়াইহাজার উপজেলা বিএনপি'র সভাপতি ইউসুফ আলী ভূঁইয়া, সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন, ফতুল্লা থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এড. আব্দুল বারী ভূঁইয়াসহ জেলা বিএনপিসস, তারাবো, আড়াইহাজার ও সোনারগাঁ  পৌরসভা বিএনপির নেতৃবৃন্দ  এবং অঙ্গ সংগঠনের জেলা নেতৃবৃন্দ।

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: স দ ধ রগঞ জ ব এনপ ন র য়ণগঞ জ ন র য়ণগঞ জ জ ল ব এনপ র র জন য আপন র

এছাড়াও পড়ুন:

লক্ষ্মীনারায়ণ কটন মিলস পূজা মন্ডপ পরিদর্শনে পূজা ফ্রন্টের নেতারা

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে লক্ষ্মীনারায়ণ কটন মিলস পূজা মন্ডপ পরিদর্শন করেছে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর পূজা উদযাপন ফ্রন্টের নেতারা। রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) বিকালে স্থানীয় বিএনপি নেতাদের নিয়ে তারা এ পরিদর্শনে আসেন।

এসময় স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের নারী-পুরুষরা তাদের কাছে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরেন। নেতারা তাদের সমস্ত অভিযোগ অত্যান্ত মনোযোগ সহকারে শোনেন এবং দ্রুত এ সমস্যা সমাধানের আশ^াস দেন।

হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষেরা অভিযোগ করে বলেন, প্রতি বছর আমরা অনুরোধ করতে করতে অবশেষে গেট খুলে আমাদের পূজার করতে দেয়। পূজা শেষ গেটে তালা লাগিয়ে দেয়। আমরা আর এসে ধূপ-ধোয়া কিছুই করতে পারি না। এভাবেই থাকে। এ মন্দিরের জায়গাটাও আমাদের বুঝিয়ে দিচ্ছে না। তারা বলে জায়গা বুঝি দেবে কিন্তু আর দেয় না।

তারা বলে, ডিসি এসপি সহ সকলের কাছে আমাদের অনুরোধ আমাদের জায়গা আমাদের বুঝিয়ে দিক। আমরা আমাদের মত যাতে কোন বাধা বিঘ্ন ছাড়াই পূজা-অর্চনা করতে পারি।

সব কথা শুনে পরিদর্শনে আসা মহানগর পূজা উদযাপন ফ্রন্টের সদস্য সচিব শ্রী ঋষিকেশ মন্ডল মিঠু বলেন, আমাদের কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশে আজ আমরা এখানে এসেছি। আমরা সব সময় জেনেছি যে, এটা আমাদের সম্প্রীতির বাংলাদেশ। আমরা ঈদে যেমন আনন্দ করি, তেমনি পূজার মধ্যেও মুসলিম ভাইয়েরা আমাদের সহযোগীতা করে। কিন্তু এখানে এসে কিছুটা ভিন্নতা লাগলো।

শুনলাম প্রতিবছরই নাকি এখানে পূজা নিয়ে রীতিমত যুদ্ধ করতে হয়। এটা ঠিক নয়। বাংলাদেশের হাজার বছরের ঐতিহ্যে এটা কোনভাবেই শোভা পায় না। আমরা পূজা নিয়ে আর কোন যুদ্ধ চাই না। আমরা চাই সকলের সহযোগীতায় এখানে একটি উৎসমুখর পরিবেশে এবং শান্তিপূর্ণভাবে পূজা উদযাপন হোক।

আমি এ জন্য নীট কনর্সানের কর্তৃপক্ষ বিশেষ করে জয়নাল ও জাহাঙ্গীর ভাইকে হিন্দু সম্প্রদায়ের পাশে থাকার আহ্বান জানাবো। তারা যেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে মন্দির নিয়ে যে জটিলতা রয়েছে তার সমাধান করে এখানকার হিন্দু সম্প্রদায়ের মাঝে শান্তি ছড়িয়ে দেয়।

জেলা পূজা উদযাপন ফ্রন্টের সাংগঠনিক সম্পাদক অজিত দাস বলেন, আসলে এখানে যা দেখলাম, যা শুনলাম তা আমাদের কল্পনার মধ্যেও ছিলো না। সত্যিই প্রায় ৮৩ বছরের ঐহিত্যবাহী একটি মন্দিরকে এভাবে অবহেলিত দেখতে পেয়ে ভীষণ কষ্ট হচ্ছে। ভাবছি, এটাই কি আমাদের নতুন স্বাধীনতা! যেখানে হিন্দু সম্প্রদায় এখনও তাদের পূজা-অর্চনা করতে গিয়ে বাধা-বিঘ্নের শিকার হচ্ছে।

ফ্যাসিস্ট হাসিনার আমলে হলে এটা মেনে নিতাম। কিন্তু ছাত্র-জনতা বুকের তাজা রক্ত দিয়ে যে স্বাধীনতা আনলো প্রকৃত অর্থে সেই স্বাধীনতা কি সর্বক্ষেত্রে প্রতিফলিত হচ্ছে? যদি হয়ে থাকে, তাহলে আজও কেন এমন দৃশ্য দেখতে হচ্ছে, আজও কেন পূজা করার জন্য হিন্দু সম্প্রদায়ের চোঁখের কোণে জল জ¦লমল করবে? প্রশাসনের কাছে আমরা এর উত্তর চাই।

তিনি বলেন, লক্ষীনারায়ণ কটন মিলস পূজা মন্ডপটি শুধু সিদ্ধিরগঞ্জেরই নয়, এটা গোটা নারায়ণগঞ্জের একটি ঐতিহ্য। এর সাথে মিশে আছে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রায় ৮৩ বছরের স্মৃতি। তাই জেলা প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করবো, এই ঐতিহ্য সংরক্ষণ করার জন্য।

সকল বাধা বিপত্তির শিকর উপড়ে ফেলে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষেরা যাতে তার সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজাসহ সকল পূজা বাধাহীনভাবে করতে পারে সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য আমরা জেলা প্রশাসক ও জেলা পুলিশ সুপারের নিকট অনুরোধ করছি।

পাশাপাশি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন হিন্দু সম্প্রদায়ের পাশে দাঁড়াতে। তাই আমি আমার বিএনপি ভাইদেরও এ সমস্যা সমাধানে পাশে থাকার অনুরোধ করছি।

স্থানীয় ১০ ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মো: জামাল উদ্দিন প্রধান বলেন, আমরাও চাই এ সমস্যার একটা স্থায়ী সমাধান হোক। এ মন্দির নিয়ে প্রতিবছরই যে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয় সেই দ্বন্দ্বের সমাধান জরুরী। এক পক্ষ বলছে, তাদের জায়গা দ্রুত বুঝিয়ে দেয়া হবে। অন্যপক্ষ বলছে, এখনও জায়গা বুঝে পাচ্ছি না। তাই বলছি, পূজাটা শেষ হোক এরপর সবাই বসে এর স্থায়ী সমাধানের বন্দবস্ত করার ব্যবস্থা করা হোক। যাতে এটা নিয়ে প্রতিবছর আর কোন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না হয়।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, লক্ষীনারায়ণ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি মিন্টু চন্দ্র দাস, সাধারণ সম্পাদক বকুল বিশ^াস, সহ সভাপতি বিদ্যুৎ দে, সৌরভ বারৈই, উপদেষ্টা বাবু লাল, মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সহ সভাপতি মো: শফিকুল ইসলাম শফিক, ১০নং যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো: মঞ্জুর হোসেন, ১০নং ওয়ার্ড বিএনপির ত্রাণ বিষয়ক সম্পাদক দীপ্তি গাজী, সাহাবুদ্দিন, শেকান্তর, হারুন, নাজমুল, শাহীন, সজল প্রমূখ।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ফতুল্লায় শহীদ তিতুমীর একাডেমীর ২৮ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন
  • প্রতিটি পূজা মণ্ডপে মণ্ডপে পাহারায় থাকবে বিএনপির নেতৃবৃন্দরা : মামুন মাহমুদ
  • মিশনপাড়া পঞ্চায়েত পরিষদ কার্যালয়ের শুভ উদ্বোধন 
  • নাসিক প্রশাসককে আমরা নাঃগঞ্জবাসী’র স্মারকলিপি পেশ
  • শব্দ দূষণ বন্ধে পরিবেশ অধিদপ্তরের অভিযান, জরিমানা
  • মডেল গ্রুপের মাসুদুজ্জমানের বিএনপিতে যোগদান
  • পূজায় নিরাপত্তার ঝুঁকি নাই: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
  • লক্ষ্মীনারায়ণ কটন মিলস পূজা মন্ডপ পরিদর্শনে পূজা ফ্রন্টের নেতারা
  • ধর্মের মর্মবাণী মানব কল্যাণ, শান্তি ও দেশপ্রেম: নৌপরিবহন উপদেষ্টা